শিরনী

শিরনী  পীরের উদ্দেশে নিবেদিত  মিষ্টান্ন বা চাল-আটা-দুধ-কলা-চিনির তৈরি খাদ্যবিশেষ। ‘শিরনী’ শব্দটি ফারসি; বাংলার মুসলিম সমাজে এটি ‘শিন্নি’ নামেও প্রচলিত। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বরকত ও পুণ্য লাভের আশায় স্রষ্টার প্রতি নিবেদন করে শিরনী বিতরণ করা মুসলমান সমাজের একটি রেওয়াজ। মসজিদ,  মাদ্রাসা, খানকাহদরগাহমাযার প্রভৃতি স্থানে মানুষ শির্নী বিতরণ করে এই উদ্দেশ্যে যে, এতে স্রষ্টা সন্তুষ্ট হয়ে তাদের বিপদ-আপদ ও রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা করবেন। কাজের সফলতা ও উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যেও শির্নী মানত করা হয়।

শিরনী প্রথার প্রচলন ইসলামের প্রাথমিক যুগে ছিল না; পীরবাদের সঙ্গে এর প্রচলন ঘটে। সাধারণ লোকের বিশ্বাস, পীরেরা কারামতের অধিকারী। লোকজন পীরের খানকাহ্কে পৃথিবীতে শান্তির আশ্রয় হিসেবে মনে করে। এরূপ অসাধারণ ব্যক্তির প্রতি তাঁরা গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এবং তাঁদের নামে শিরনী দেয়। ক্রমে এ ব্যবস্থা বিস্তার লাভ করে এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, কোনো কোনো অঞ্চলে মুসলমানদের মধ্যেও পীরভক্তির প্রচলন ঘটে।  [মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ]