শরিয়তপুর সদর উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৯:০৭, ৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

শরিয়তপুর সদর উপজেলা (শরিয়তপুর জেলা) আয়তন: ১৭৫.০৯ বর্গ কিমি।অবস্থান: ২৩°০৮´ থেকে ২৩°১৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৪´ থেকে ৯০°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলা, দক্ষিণে কালকিনি উপজেলা, পূর্বে ডামুড্যা, ভেদরগঞ্জ ও নড়িয়া উপজেলা, পশ্চিমে মাদারীপুর সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ২১০২৫৯; পুরুষ ১০৪১৪৯, মহিলা ১০৬১১০। মুসলিম ১৯৯১১১, হিন্দু ১১০৭৮, বৌদ্ধ ১৩, খ্রিস্টান ৫৪ এবং অন্যান্য ৩।

জলাশয় বিনোদপুর ও পালং নদী এবং নড়িয়া খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন শরিয়তপুর সদর (পূর্ব নাম পালং) থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯০ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১১ ৮৬ ১৫২ ৪৯৫৩৫ ১৬০৭২৪ ১২০১ ৬২.৫ ৪৭.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৪.৯২ ২৭ ৪৯৫৩৫ ১৯৮৮ ৬২.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আঙ্গারিয়া ১৭ ৪৯১৭ ১২৩৫৭ ১১৮০৫ ৪৬.৯
চন্দ্রপুর ২৮ ৩৮৬০ ৬১০১ ৬৭২৬ ৪৩.২
চিকন্দি ৩৮ ৩৮৮৩ ৭৪৫৫ ৮২১৭ ৪৫.৫
চিতলিয়া ৪৭ ২৯৭২ ৭১০০ ৭১৯০ ৪৯.৩
ডোমসার ৫৭ ৩৪২২ ৭৫২৮ ৮০৫২ ৪৭.৩
তুলাসার ৯৫ ১৯৫৮ ৪৬৫৫ ৪৮৫৯ ৪২.৯
পালং ৬৬ ১৩৭৪ ৪৬১৫ ৪৫৩৯ ৫৮.০
বিনোদপুর ১৯ ৩৮৮২ ৬৯৬৩ ৭৭৫৫ ৪৩.১
মোহাম্মদপুর ৬২ ২০৩৭ ৩১৯৯ ৩৩৬৬ ৪৪.৬
রুদ্রকর ৭৬ ৫৫৯৮ ১২২৯৪ ১২১০৪ ৫২.৪
শৌলপাড়া ৮৫ ৩০৫৯ ৬৭৬৯ ৭০৭৫ ৪৮.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ দক্ষিণ বালুচর মসজিদ, বিলাসখান মসজিদ (মুগল আমল)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের মে মাসে উপজেলার কয়েকটি স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসব সংঘর্ষে ৩১৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। উপজেলার আটিপাড়ায় ১টি গণকবর রয়েছে; ১টি স্মৃতিসৌধ এবং মনোহর বাজারে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন শরিয়তপুর সদর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৫৭০, মন্দির ২৭, মঠ ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: বুড়ির হাট মসজিদ, মনসার মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫১.২%; পুরুষ ৫৩.০%, মহিলা ৪৯.৫%। কলেজ ৩, কারিগরি কলেজ ২, প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৪, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২৮, কিন্ডার গার্টেন ১৮, মাদ্রাসা ১১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শরিয়তপুর সরকারি কলেজ, শরিয়তপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পালং বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউিশন (১৯০৭), চিকন্দি শরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), রুদ্রকর নীলমনি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), শরিয়তপুর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, আঙ্গারিয়া ওসমানিয়া কওমিয়া মাদ্রাসা, কাউয়াদি দাখিল মাদ্রাসা।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: হুংকার; সাপ্তাহিক: শরিয়তপুর, রুদ্রকণ্ঠ, মুক্তির কণ্ঠ, সেতু, কাগজের পাতা, সপ্তপলী সমাচার; অবলুপ্ত: সাপ্তাহিক জবানবন্দি, চিকন্দিবার্তা, শরিয়তপুর বার্তা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, শিল্পকলা একাডেমি ১, সংগীত একাডেমি ২, শিশু একাডেমি ১, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ১, সিনেমা হল ২, অডিটোরিয়াম ৩, কমিউনিটি সেন্টার ১, কাব ৬।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আঙ্গারিয়া ব্রিজ, রাজাগঞ্জ ব্রিজ, গয়াতোলা ব্রিজ।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৯.৫৮%, অকৃষি শ্রমিক ৩.০৮%, শিল্প ১.০৩%, ব্যবসা ১৪.২৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৫৩%, চাকরি ৮.১৩%, নির্মাণ ১.৬০%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৯৪% এবং অন্যান্য ৭.৫০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৫.৫৮%, ভূমিহীন ৩৪.৪২%। শহরে ৪৬.৬০% এবং গ্রামে ৭০.৬৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট ও গম।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, অড়হর, চিনা, শণপাট।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কলা, নারিকেল, বেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২০, গবাদিপশু ২৫, হাঁস-মুরগি ১৩০৩।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৬১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩১১ কিমি; নৌপথ ২০ কিমি; ব্রিজ ১৮৫, সেতু ১।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা জুতা কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ, তামা-কাঁসাশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৮, মেলা ১। আঙ্গারিয়া ও শৌলপাড়া হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য তামা ও কাঁসার তৈজসপত্র।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৯.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৩%, ট্যাপ ১.৮% এবং অন্যান্য ০.৯%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮২.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৫.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৫, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪, কিনিক ১, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ৪, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ২, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা। [মোঃ শাহজাহান খান]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শরিয়তপুর সদর উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১১।