লেবু: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:Lemon.jpg|thumb|right|এলাচি লেবু  কাগজি লেবু]]
'''লেবু''' (Lemon)  ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় লেবুজাতীয় ফল (Citrus spp)। লেবু বাংলাদেশে সর্বত্র জন্মালেও বাণিজ্যিক উৎপাদন সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমাবদ্ধ। প্রধানত জোড়কলম ও কলম থেকে বসতবাড়ির আশেপাশে বা বাগানে এর চাষ হয়। লেবুর গাছ মাঝারি আকারের, ছড়ানো। পাতা সবুজ, লম্বা-ডিম্বাকৃতি, আগা চোখা। ফুলের কুঁড়ি লালচে, পাপড়ি উপরে সাদা, নিচে বেগুনি অাঁচ। ফল ডিম্বাকার অথবা উপবৃত্তাকার; বাকল পুরু, পাকলে হালকা হলুদ, টক, ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ, রসালো। তাজা রস শরবৎ তৈরিতে ব্যবহূত হয়। লেবুতেল কোমল পানীয়, রুটি ও বিস্কুট সামগ্রীর উত্তম সুগন্ধি। কিছু স্থানীয় লেবু বীজশূন্য যেমন, এলাচি লেবু, পাতিলেবু, কালীগঞ্জ লেবু, শাসনি লেবু ইত্যাদি। সম্প্রতি বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারিলেবু-১ নামে একটি নতুন জাতের লেবু উদ্ভাবন করেছে। এলাচের গন্ধ ছাড়াও ফলটি বড়, আয়তাকার, ওজন হয় প্রায় ২৬০ গ্রাম, বাকল অমসৃণ, রসালো (২৬%), টক ও বীজ থাকে। গাছ প্রতি ফলন হয় বছরে ৬২টি থেকে ১০০টি।
'''লেবু''' (Lemon)  ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় লেবুজাতীয় ফল (Citrus spp)। লেবু বাংলাদেশে সর্বত্র জন্মালেও বাণিজ্যিক উৎপাদন সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমাবদ্ধ। প্রধানত জোড়কলম ও কলম থেকে বসতবাড়ির আশেপাশে বা বাগানে এর চাষ হয়। লেবুর গাছ মাঝারি আকারের, ছড়ানো। পাতা সবুজ, লম্বা-ডিম্বাকৃতি, আগা চোখা। ফুলের কুঁড়ি লালচে, পাপড়ি উপরে সাদা, নিচে বেগুনি অাঁচ। ফল ডিম্বাকার অথবা উপবৃত্তাকার; বাকল পুরু, পাকলে হালকা হলুদ, টক, ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ, রসালো। তাজা রস শরবৎ তৈরিতে ব্যবহূত হয়। লেবুতেল কোমল পানীয়, রুটি ও বিস্কুট সামগ্রীর উত্তম সুগন্ধি। কিছু স্থানীয় লেবু বীজশূন্য যেমন, এলাচি লেবু, পাতিলেবু, কালীগঞ্জ লেবু, শাসনি লেবু ইত্যাদি। সম্প্রতি বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারিলেবু-১ নামে একটি নতুন জাতের লেবু উদ্ভাবন করেছে। এলাচের গন্ধ ছাড়াও ফলটি বড়, আয়তাকার, ওজন হয় প্রায় ২৬০ গ্রাম, বাকল অমসৃণ, রসালো (২৬%), টক ও বীজ থাকে। গাছ প্রতি ফলন হয় বছরে ৬২টি থেকে ১০০টি।


[[Image:Lemon.jpg|thumb|right|400px|এলাচি লেবু  কাগজি লেবু]]
'''''কাগজি লেবু''''' এ লেবু (''Citrus aurantifolia'') সাধারণ লেবু থেকে আকারে ছোট, কিন্তু বাংলায় উভয়ই লেবু নামে পরিচিত। কাগজি লেবু''' '''ও লেবুর চাষাধীন জমি প্রায় ৯,০০০ একর। বসতবাড়ির আশেপাশে বা বাগানে সাধারণত জোড়কলম, কলম, কখনও বীজ থেকে চাষ হয়। ছয়-সাত বছরের একটি গাছে বছরে ১৫০ থেকে ২০০টি ফল ফলে। গাছ ছোটখাটো ৩-৫ মিটার লম্বা, ঝোপালো, ডালপালা এলোমেলো এবং কাঁটাগুলি ধারালো। পাতা ছোট, বৃন্ত পক্ষল। ফুল ছোট, হালকা সুগন্ধি ও সাদা। ফল ছোট, গোলাকার, রসালো, বাকল পাতলা ও মসৃণ, অত্যন্ত টক। পাকা ফল সবুজ-হলুদ, তাতে বহু ভ্রূণধর ছোট ছোট বীজ থাকে। বর্ষা মৌসুমেই বেশি ফলন হয়। তাজা রস ছাড়াও ফল আচার ও শরবতে ব্যবহার্য। প্রধানত কাগজি লেবু নামেই পরিচিত হলেও কিছু স্থানীয় নামও আছে যেমন, ঈশ্বরদীতে (পাবনা জেলা) কাগজা এবং চট্টগ্রামে পটিয়া কাগজি। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারিলেবু-২ ও বারিলেবু-৩ নামে দুটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। প্রথমটির ফল গোলাকার, মাঝারি, ওজন প্রায় ৮১ গ্রাম, টক ও রসালো (৩৩%) এবং দ্বিতীয়টি গোলাকার, ছোট, ওজন প্রায় ৫৫ গ্রাম, কম টক ও অত্যন্ত রসালো (৩৮%)।
'''''কাগজি লেবু''''' এ লেবু (''Citrus aurantifolia'') সাধারণ লেবু থেকে আকারে ছোট, কিন্তু বাংলায় উভয়ই লেবু নামে পরিচিত। কাগজি লেবু''' '''ও লেবুর চাষাধীন জমি প্রায় ৯,০০০ একর। বসতবাড়ির আশেপাশে বা বাগানে সাধারণত জোড়কলম, কলম, কখনও বীজ থেকে চাষ হয়। ছয়-সাত বছরের একটি গাছে বছরে ১৫০ থেকে ২০০টি ফল ফলে। গাছ ছোটখাটো ৩-৫ মিটার লম্বা, ঝোপালো, ডালপালা এলোমেলো এবং কাঁটাগুলি ধারালো। পাতা ছোট, বৃন্ত পক্ষল। ফুল ছোট, হালকা সুগন্ধি ও সাদা। ফল ছোট, গোলাকার, রসালো, বাকল পাতলা ও মসৃণ, অত্যন্ত টক। পাকা ফল সবুজ-হলুদ, তাতে বহু ভ্রূণধর ছোট ছোট বীজ থাকে। বর্ষা মৌসুমেই বেশি ফলন হয়। তাজা রস ছাড়াও ফল আচার ও শরবতে ব্যবহার্য। প্রধানত কাগজি লেবু নামেই পরিচিত হলেও কিছু স্থানীয় নামও আছে যেমন, ঈশ্বরদীতে (পাবনা জেলা) কাগজা এবং চট্টগ্রামে পটিয়া কাগজি। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারিলেবু-২ ও বারিলেবু-৩ নামে দুটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। প্রথমটির ফল গোলাকার, মাঝারি, ওজন প্রায় ৮১ গ্রাম, টক ও রসালো (৩৩%) এবং দ্বিতীয়টি গোলাকার, ছোট, ওজন প্রায় ৫৫ গ্রাম, কম টক ও অত্যন্ত রসালো (৩৮%)।



১০:১৫, ১১ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

লেবু (Lemon)  ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় লেবুজাতীয় ফল (Citrus spp)। লেবু বাংলাদেশে সর্বত্র জন্মালেও বাণিজ্যিক উৎপাদন সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমাবদ্ধ। প্রধানত জোড়কলম ও কলম থেকে বসতবাড়ির আশেপাশে বা বাগানে এর চাষ হয়। লেবুর গাছ মাঝারি আকারের, ছড়ানো। পাতা সবুজ, লম্বা-ডিম্বাকৃতি, আগা চোখা। ফুলের কুঁড়ি লালচে, পাপড়ি উপরে সাদা, নিচে বেগুনি অাঁচ। ফল ডিম্বাকার অথবা উপবৃত্তাকার; বাকল পুরু, পাকলে হালকা হলুদ, টক, ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ, রসালো। তাজা রস শরবৎ তৈরিতে ব্যবহূত হয়। লেবুতেল কোমল পানীয়, রুটি ও বিস্কুট সামগ্রীর উত্তম সুগন্ধি। কিছু স্থানীয় লেবু বীজশূন্য যেমন, এলাচি লেবু, পাতিলেবু, কালীগঞ্জ লেবু, শাসনি লেবু ইত্যাদি। সম্প্রতি বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারিলেবু-১ নামে একটি নতুন জাতের লেবু উদ্ভাবন করেছে। এলাচের গন্ধ ছাড়াও ফলটি বড়, আয়তাকার, ওজন হয় প্রায় ২৬০ গ্রাম, বাকল অমসৃণ, রসালো (২৬%), টক ও বীজ থাকে। গাছ প্রতি ফলন হয় বছরে ৬২টি থেকে ১০০টি।

এলাচি লেবু কাগজি লেবু

কাগজি লেবু এ লেবু (Citrus aurantifolia) সাধারণ লেবু থেকে আকারে ছোট, কিন্তু বাংলায় উভয়ই লেবু নামে পরিচিত। কাগজি লেবু ও লেবুর চাষাধীন জমি প্রায় ৯,০০০ একর। বসতবাড়ির আশেপাশে বা বাগানে সাধারণত জোড়কলম, কলম, কখনও বীজ থেকে চাষ হয়। ছয়-সাত বছরের একটি গাছে বছরে ১৫০ থেকে ২০০টি ফল ফলে। গাছ ছোটখাটো ৩-৫ মিটার লম্বা, ঝোপালো, ডালপালা এলোমেলো এবং কাঁটাগুলি ধারালো। পাতা ছোট, বৃন্ত পক্ষল। ফুল ছোট, হালকা সুগন্ধি ও সাদা। ফল ছোট, গোলাকার, রসালো, বাকল পাতলা ও মসৃণ, অত্যন্ত টক। পাকা ফল সবুজ-হলুদ, তাতে বহু ভ্রূণধর ছোট ছোট বীজ থাকে। বর্ষা মৌসুমেই বেশি ফলন হয়। তাজা রস ছাড়াও ফল আচার ও শরবতে ব্যবহার্য। প্রধানত কাগজি লেবু নামেই পরিচিত হলেও কিছু স্থানীয় নামও আছে যেমন, ঈশ্বরদীতে (পাবনা জেলা) কাগজা এবং চট্টগ্রামে পটিয়া কাগজি। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারিলেবু-২ ও বারিলেবু-৩ নামে দুটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। প্রথমটির ফল গোলাকার, মাঝারি, ওজন প্রায় ৮১ গ্রাম, টক ও রসালো (৩৩%) এবং দ্বিতীয়টি গোলাকার, ছোট, ওজন প্রায় ৫৫ গ্রাম, কম টক ও অত্যন্ত রসালো (৩৮%)।

টক কাগজি লেবু ছাড়াও বাংলাদেশে মিঠালেবু বা মিঠানেম্বু বা শরবতী লেবু (c. limettoides) পাওয়া যায়। এটির গাছ, ফুল ও ফল আকারে বড়। ফল অত্যন্ত রসালো (৪২.৫%) তাতে অম্লত্ব কম (০.০৯%), গোল বা লম্বাটে, আগায় একটি সুস্পষ্ট গুটিকা, তেমন টক নয়।  [এস.এম মনোয়ার হোসেন]