রোগের প্রাদুর্ভাব

রোগের প্রাদুর্ভাব (Disease Outbreak) হলো কোনো একটি নির্দিষ্ট এলাকা বা ঋতুতে প্রত্যাশিত সীমার উপরে একটি রোগের আকস্মিক বৃদ্ধি। এই পরিস্থিতি যেমন কোনো ছোট ও স্থানীয় গোষ্ঠিকে প্রভাবিত করতে পারে, আবার সমগ্র মহাদেশ জুড়ে হাজার হাজার মানুষকেও প্রভাবিত করতে পারে। রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর প্রকৃতি, পূর্ববর্তী সংক্রমণের ইতিহাস ও ধরণ সাপেক্ষে সংক্রমণের হার পরিবর্তত হয়ে থাকে। পরপর বেশ কয়েকটি প্রাদুর্ভাবের ধরণ পর্যালোচনার দ্বারা সংক্রমণ পদ্ধতি বা উৎস সনাক্তকরণ এবং ভবিষ্যতে সংক্রমণের হারের পূর্বাভাস নির্ধারণ সম্ভব।

বিভিন্ন উপায়ে প্রাদুর্ভাব শুরু হতে পারে- সাধারণ উৎস থেকে সমস্ত ভুক্তভোগী একই উৎস থেকে সংক্রমিত হয় (যেমন- দূষিত পানি সরবরাহের দ্বারা)। এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সংক্রমণের উৎস থেকে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার ও মাত্রা অত্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকে।

ব্যাপক পরিসরে এক্ষেত্রে সংক্রমণ ধাপে ধাপে হয়ে থাকে। সরাসরি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির যোগাযোগের মাধ্যমে (যেমন- সিলিলিস) বা যন্ত্রপাতি থেকে (যেমন- জীবাণু বহনকারী সূঁচ হতে হেপাটাইটিস বি বা এইচআইভি) কিংবা ভেক্টরজনিত (যেমন- মশা দ্বারা পীতজ্বর) বাহক দ্বারা এই প্রকারের সংক্রমণ হতে পারে।

প্রাদুর্ভাব বিভিন্ন ধরনের হয়- স্থানীয় প্রাদুর্ভাব যখন কোনো সংক্রামক রোগ একটি ভৌগোলিক এলাকার নির্দিষ্ট স্থান ও জনগোষ্ঠির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। যেমন- ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ইত্যাদি।

মহামারী এক্ষেত্রে কোনো সংক্রামক রোগ একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় সীমাবদ্ধ না থেকে একই সময়ে বিস্তৃত পরিসরে এক বা একাধিক জনগোষ্ঠির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেই জনসংখ্যার মধ্যে সাধারণের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেশিসংখ্যক লোককে প্রভাবিত করতে দেখা যায়। [মামুন রশিদ চৌধুরী]