রাজাপুর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''রাজাপুর উপজেলা''' (ঝালকাঠি জেলা)  আয়তন: ১৬৪.৩৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৯´ থেকে ২২°৩৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৩´ থেকে ৯০°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঝালকাঠি সদর ও কাউখালী (পিরোজপুর) উপজেলা, দক্ষিণে ভান্ডারিয়া, কাঁঠালিয়া ও বেতাগী উপজেলা, পূর্বে নলছিটি ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা এবং গজালিয়া নদী, পশ্চিমে ভান্ডারিয়া ও কাউখালী উপজেলা।
'''রাজাপুর উপজেলা''' ([[ঝালকাঠি জেলা|ঝালকাঠি জেলা]])  আয়তন: ১৬৪.৩৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৯´ থেকে ২২°৩৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৩´ থেকে ৯০°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঝালকাঠি সদর ও কাউখালী (পিরোজপুর) উপজেলা, দক্ষিণে ভান্ডারিয়া, কাঁঠালিয়া ও বেতাগী উপজেলা, পূর্বে নলছিটি ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা এবং গজালিয়া নদী, পশ্চিমে ভান্ডারিয়া ও কাউখালী উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ১৪৯৩৩২; পুরুষ ৭৪০৭২, মহিলা ৭৫২৬০। মুসলিম ১৩৯৯৩৭, হিন্দু ৯৩৬৭, বৌদ্ধ ২, খ্রিস্টান ১৯ এবং অন্যান্য ৭।
''জনসংখ্যা'' ১৪৯৩৩২; পুরুষ ৭৪০৭২, মহিলা ৭৫২৬০। মুসলিম ১৩৯৯৩৭, হিন্দু ৯৩৬৭, বৌদ্ধ ২, খ্রিস্টান ১৯ এবং অন্যান্য ৭।
১০ নং লাইন: ১০ নং লাইন:
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
! colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
! rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
! rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| -  || ৬  || ৭২  || ৭৫  || ১৩৫৯৭  || ১৩৫৭৩৫  || ৯০৯  || ৭৪.১  || ৬৭.৪
| -  || ৬  || ৭২  || ৭৫  || ১৩৫৯৭  || ১৩৫৭৩৫  || ৯০৯  || ৭৪.১  || ৬৭.৪
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" |  উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৯.৭৫  || ৩  || ১৩৫৯৭  || ১৩৯৫  || ৭৪.১
| ৯.৭৫  || ৩  || ১৩৫৯৭  || ১৩৯৫  || ৭৪.১
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" |  ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
৬০ নং লাইন: ৫৩ নং লাইন:
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' মুগল আমলের সুরিচোড়া জামে মসজিদ ও সুজাবাদ কিল­া।
[[Image:RajapurUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' মুগল আমলের সুরিচোড়া জামে মসজিদ ও সুজাবাদ কিল্লা।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর রাজাপুর উপজেলা প্রাঙ্গনে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা রাজাপুর উপজেলা অক্রমণ করে। ২৭ নভেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর রাজাপুর উপজেলা প্রাঙ্গনে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা রাজাপুর উপজেলা অক্রমণ করে। ২৭ নভেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৪৪১, মন্দির ৫৪, ঈদগাহ ২১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সুরিচোড়া জামে মসজিদ।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৪৪১, মন্দির ৫৪, ঈদগাহ ২১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সুরিচোড়া জামে মসজিদ।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৬৮%; পুরুষ ৭০.৬%, মহিলা ৬৫.৬%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৬, কমিউনিটি স্কুল ১৪, মাদ্রাসা ১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রাজাপুর ডিগ্রি কলেজ, রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), আফাজউদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গালুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নিজামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, করিমননেছা বালিকা বিদ্যালয়, রাজাপুর ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৪০)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৬৮%; পুরুষ ৭০.৬%, মহিলা ৬৫.৬%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৬, কমিউনিটি স্কুল ১৪, মাদ্রাসা ১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রাজাপুর ডিগ্রি কলেজ, রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), আফাজউদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গালুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নিজামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, করিমননেছা বালিকা বিদ্যালয়, রাজাপুর ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৪০)।
[[Image:RajapurUpazila.jpg|thumb|right|রাজাপুর উপজেলা]]


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' ধাঁনসিড়ি সাহিত্য সৈকত (১৯৯২)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' ধাঁনসিড়ি সাহিত্য সৈকত (১৯৯২)।
৮৪ নং লাইন: ৭৪ নং লাইন:
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' সরিষা, তিল, আখ, মিষ্টি আলু।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' সরিষা, তিল, আখ, মিষ্টি আলু।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' সুপারি, কলা, আমড়া, নারিকেল, কাঁঠাল, আম, লিচু।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' সুপারি, কলা, আমড়া, নারিকেল, কাঁঠাল, আম, লিচু।


''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫, গবাদিপশু ১, হাঁস-মুরগি ৩০।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫, গবাদিপশু ১, হাঁস-মুরগি ৩০।
১০৬ নং লাইন: ৯৬ নং লাইন:
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৭১.৪৩% (গ্রামে ৬৯.৮৫% ও শহরে ৮৮.১১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৫.৩১% (গ্রামে ২৭.১৩% ও শহরে ৬.০৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.২৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৭১.৪৩% (গ্রামে ৬৯.৮৫% ও শহরে ৮৮.১১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৫.৩১% (গ্রামে ২৭.১৩% ও শহরে ৬.০৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.২৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৬।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৬।


''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' এ উপজেলায় ১৭৮৬ সালের বন্যা, ১৮২২, ১৯০৯ ও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে অনেক মানুষ প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' এ উপজেলায় ১৭৮৬ সালের বন্যা, ১৮২২, ১৯০৯ ও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে অনেক মানুষ প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।


''এনজিও'' ইন্টিগ্রেটেড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট।
''এনজিও'' ইন্টিগ্রেটেড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। [মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফা সিদ্দিকি]
 
[মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফা সিদ্দিকি]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রাজাপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রাজাপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Rajapur Upazila]]
[[en:Rajapur Upazila]]

০৫:৫২, ৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

রাজাপুর উপজেলা (ঝালকাঠি জেলা)  আয়তন: ১৬৪.৩৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৯´ থেকে ২২°৩৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৩´ থেকে ৯০°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঝালকাঠি সদর ও কাউখালী (পিরোজপুর) উপজেলা, দক্ষিণে ভান্ডারিয়া, কাঁঠালিয়া ও বেতাগী উপজেলা, পূর্বে নলছিটি ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা এবং গজালিয়া নদী, পশ্চিমে ভান্ডারিয়া ও কাউখালী উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৪৯৩৩২; পুরুষ ৭৪০৭২, মহিলা ৭৫২৬০। মুসলিম ১৩৯৯৩৭, হিন্দু ৯৩৬৭, বৌদ্ধ ২, খ্রিস্টান ১৯ এবং অন্যান্য ৭।

জলাশয় গজালিয়া, জঙ্গলিয়া, বিশখালী, নালবুনিয়া ও ধানসিঁড়ি নদী এবং রাজাপুর খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন রাজাপুর থানা গঠিত হয় ১৯২০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৭২ ৭৫ ১৩৫৯৭ ১৩৫৭৩৫ ৯০৯ ৭৪.১ ৬৭.৪
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৯.৭৫ ১৩৫৯৭ ১৩৯৫ ৭৪.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গালুয়া ২৭ ৫৭৫০ ১৬৬৪৬ ১৭২১৬ ৬৬.৯৫
বড়ইয়া ১৩ ৬৭৩৮ ১১১৮৯ ১০৭২১ ৬১.৫০
মঠবাড়ী ৪০ ৬৩৫৫ ১০৪৬৬ ১১০৩৫ ৬৪.১৩
রাজাপুর ৫৪ ৭৩৯১ ১৬২০২ ১৬৬৩২ ৭২.১৯
সাতুরিয়া ৬৭ ৬১৩৭ ৯৩৯৯ ৯৩৫০ ৭৩.৪২
শুক্তাগড় ৮১ ৬৪৭৬ ১০১৭০ ১০৩০৬ ৬৯.১০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মুগল আমলের সুরিচোড়া জামে মসজিদ ও সুজাবাদ কিল্লা।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর রাজাপুর উপজেলা প্রাঙ্গনে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা রাজাপুর উপজেলা অক্রমণ করে। ২৭ নভেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৪৪১, মন্দির ৫৪, ঈদগাহ ২১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সুরিচোড়া জামে মসজিদ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬৮%; পুরুষ ৭০.৬%, মহিলা ৬৫.৬%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৬, কমিউনিটি স্কুল ১৪, মাদ্রাসা ১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রাজাপুর ডিগ্রি কলেজ, রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), আফাজউদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গালুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নিজামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, করিমননেছা বালিকা বিদ্যালয়, রাজাপুর ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৪০)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী ধাঁনসিড়ি সাহিত্য সৈকত (১৯৯২)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩২, ক্লাব ৬৭, মহিলা সমিতি ১, এতিমখানা ২০, কল্যাণ সংগঠন ৬৭, সাংস্কৃতিক দল ২, কমিউনিটি সেন্টার ১, সিনেমা হল ১, খেলার মাঠ ১০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫২.৩৭%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৯৮%, শিল্প ০.৮৪%, ব্যবসা ১৪.৩৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৬৩%, চাকরি ১৩.৪%, নির্মাণ ২.০৩%, ধর্মীয় সেবা ০.৪২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৪২% এবং অন্যান্য ৬.৫৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭২%, ভূমিহীন ২৮%। শহরে ৬৪.৯২% এবং গ্রামে ৭২.৬৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, ডাল, পান, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি সরিষা, তিল, আখ, মিষ্টি আলু।

প্রধান ফল-ফলাদি সুপারি, কলা, আমড়া, নারিকেল, কাঁঠাল, আম, লিচু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫, গবাদিপশু ১, হাঁস-মুরগি ৩০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৮২ কিমি; নৌপথ ৭ নটিক্যাল মাইল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, বিড়ি ফ্যাক্টরি, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩৫, মেলা ৭। লেবুবুনিয়ার হাট, বলারজোর হাট, চড়খালি হাট, বাঘড়ী হাট, উত্তমপুর হাট ও বাদুরতলার হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   কলা, নারিকেল, পান, সুপারি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৭.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.৯৫%, পুকুর ৫.৪৯%, ট্যাপ ০.১২% এবং অন্যান্য ১.৪৪%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭১.৪৩% (গ্রামে ৬৯.৮৫% ও শহরে ৮৮.১১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৫.৩১% (গ্রামে ২৭.১৩% ও শহরে ৬.০৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.২৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৬।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ উপজেলায় ১৭৮৬ সালের বন্যা, ১৮২২, ১৯০৯ ও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে অনেক মানুষ প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ইন্টিগ্রেটেড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। [মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফা সিদ্দিকি]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রাজাপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।