রাঙ্গামাটি জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''রাঙ্গামাটি জেলা''' ([[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম বিভাগ]])  আয়তন: ৬১১৬.১৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৭´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৬´ থেকে ৯২°৩৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে বান্দরবান জেলা, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য ও মায়ানমারের চিন প্রদেশ, পশ্চিমে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলা।
'''রাঙ্গামাটি জেলা''' ([[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম বিভাগ]])  আয়তন: ৬১১৬.১১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৭´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৬´ থেকে ৯২°৩৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে বান্দরবান জেলা, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য ও মায়ানমারের চিন প্রদেশ, পশ্চিমে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলা।


''জনসংখ্যা'' ৫০৮১৮২; পুরুষ ২৭৪৫৫১, মহিলা ২৩৩৬৩১। মুসলিম ১৮৭১৩২, হিন্দু ২৬৯৪৪, বৌদ্ধ ৮৭৮১, খ্রিস্টান ২৮৪৯০৬ এবং অন্যান্য ৪১৯। চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, বম, চাক, খুমি, খিয়াং, লুসাই, ম্রো, মুরং, পাংখোয়া, সাঁওতাল, মণিপুরী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠির বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ৫৯৫৯৭৯; পুরুষ ৩১৩০৭৬, মহিলা ২৮২৯০৩। মুসলিম ২০৯৪৬৫, হিন্দু ৩০২৪৪, বৌদ্ধ ৩৪৭০৩৮, খ্রিস্টান ৮৬৬৩ এবং অন্যান্য ৫৬৯। চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, বম, চাক, খুমি, খিয়াং, লুসাই, ম্রো, মুরং, পাংখোয়া, সাঁওতাল, মণিপুরী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠির বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' কর্ণফুলি, কাসালং, চেঙ্গী ও মাইনী নদী এবং কাপ্তাই হ্রদ উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' কর্ণফুলি, কাসালং, চেঙ্গী ও মাইনী নদী এবং কাপ্তাই হ্রদ উল্লেখযোগ্য।


''প্রশাসন'' ১৯৮৩ সালে রাঙ্গামাটি মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। জেলার দশটি উপজেলার মধ্যে বাঘাইছড়ি উপজেলা সর্ববৃহৎ (১৯৩১.২৮ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা রাজস্থলী (১৪৫.০৪ বর্গ কিমি)।
''প্রশাসন'' ১৯৮৩ সালে রাঙ্গামাটি মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। জেলার দশটি উপজেলার মধ্যে বাঘাইছড়ি উপজেলা সর্ববৃহৎ (১৯৩১.২৫ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা রাজস্থলী (১৪৫.০৩ বর্গ কিমি)।


{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-
|-
| ৬১১৬.১৩  || ১০ || ১  || ৪৮  || ১৬২ || ১৩৪৪  || ১৭০১৮৮  || ৩৩৭৯৯৪  || ৮৩  || ৪৩.৬০
| ৬১১৬.১১ || ১০ || || ৪৯ || ১৬২ || ১৫৫৫ || ১৫৯৬২৭ || ৪৩৬৩৫২ || ৯৭ || ৪৯.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| উপজেলার নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলার নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| কাউখালী || ৩৩৯.২৯  || -- || ৪ || ১০ || ১৬২  || ৪৮২৪০  || ১৪২  || ৩৮.
| কাউখালী || ৩৩৯.২৮ || - || ৪ || ১০ || ১৮০ || ৫৯৫৭৮ || ১৭৬ || ৪৪.
|-
|-
| কাপ্তাই || ২৫৯.০০  ||  || ৫ || ১০ || ১৪৮ || ৬৬১৩৫  || ২৫৫  || ৬০.
| কাপ্তাই || ২৫৮.৯৯ ||  || ৫ || ১০ || ১৪৮ || ৫৯৬৯৩ || ২৩০ || ৬০.
|-
|-
| জুরাছড়ি || ৬০৬.০৫ || -|| ৪ || ১১ || ৮৯  || ২২২৭৭  || ৩৭  || ২৭.
| জুরাছড়ি || ৬০৬.০৫ || - || ৪ || ১১ || ১০৫ || ২৭৭৮৬ || ৪৬ || ৪৬.
|-
|-
| নানিয়ারচর || ৩৯৩.৬৮  ||  || ৪ || ২০ || ১৪৬  || ৩৯১৯০  || ১০০  || ৩৮.
| নানিয়ারচর || ৩৯৩.৬৭ ||  || ৪ || ২০ || ১৫৮ || ৪৩৬১৬ || ১১১ || ৪৭.
|-
|-
| বরকল || ৭৬০.৮৮  || -|| ৫ || ২৮ || ১৬৪  || ৩৯৭৮১  || ৫২  || ৩৬.
| বরকল || ৭৬০.৮৯ || - || ৫ || ২৮ || ১৮০ || ৪৭৫২৩ || ৬২ || ৪৪.
|-
|-
| বাঘাইছড়ি || ১৯৩১.২৮  || --  || ৭  || ১৯ || ১৭৭  || ৭৮৫১৯  || ৪১  || ৩৫.
| বাঘাইছড়ি || ১৯৩১.২৫ || || || ১৯ || ৩০৩ || ৯৬৮৯৯ || ৫০ || ৪১.
|-
|-
| বিলাইছড়ি || ৭৪৫.৯২  || -|| ৩ || ৯ || ৫৯ || ২৪১৫৪  || ৩২  || ২৬.
| বিলাইছড়ি || ৭৪৫.৯১ || - || ৩ || ৯ || ৫৯ || ২৮৫২৫ || ৩৮ || ৩২.
|-
|-
| রাঙ্গামাটি সদর || ৫৪৬.৪৯  || ১ || ৬ || ২১ || ১৬২  || ৯৯২৬১  || ১৮২  || ৬০.
| রাঙ্গামাটি সদর || ৫৪৬.৪৮ || ১ || ৬ || ২১ || ১৭৮ || ১২৪৭২৮ || ২২৮ || ৬৪.
|-
|-
| রাজস্থলী || ১৪৫.০৪  || -|| ৩ || ৯ || ১০২  || ২২৬১১  || ১৫৬  || ৩৪.
| রাজস্থলী || ১৪৫.০৩ || - || ৩ || ৯ || ১০৬ || ২৬০৮৩ || ১৮০ || ৪৪.
|-
|-
| লংগদু || ৩৮৮.৫০  || -|| ৭ || ২৫ || ১৩৫  || ৬৮০১৪  || ১৭৫  || ৩৫.
| লংগদু || ৩৮৮.৪৯ || - || ৭ || ২৫ || ১৩৮ || ৮১৫৪৮ || ২১০ || ৪৪.
|}
|}
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


''প্রাচীন নিদর্শন ও প্রত্নসম্পদ''  রাজা জানবখশ্ খানের রাজপ্রাসাদ, দীঘি ও মসজিদ, রাজা হরিশচন্দ্র রায়ের বাড়ি (১৮৭৩), ঝুলন্ত সেতু, জেলা প্রশাসকের বাংলো (১৮৬৮)।
''প্রাচীন নিদর্শন ও প্রত্নসম্পদ''  রাজা জানবখশ্ খানের রাজপ্রাসাদ, দীঘি ও মসজিদ, রাজা হরিশচন্দ্র রায়ের বাড়ি (১৮৭৩), ঝুলন্ত সেতু, জেলা প্রশাসকের বাংলো (১৮৬৮)।
৫০ নং লাইন: ৫০ নং লাইন:
[[Image:RangamatiDistrict.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:RangamatiDistrict.jpg|thumb|right|400px]]


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে ১ নং সেক্টরের অধীনে ছিল রাঙামাটি জেলা। ২৭ মার্চ স্টেশন ক্লাবের মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী ট্রেনিং ক্যাম্প খোলা হয়। ২৯ মার্চ ৬০ জনের ১টি দল যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ভারতে যায়। ২ এপ্রিল তৎকালীন জেলা প্রশাসক হোসেন তৌহিদ ইমাম রাজকোষ থেকে প্রচুর অর্থ এবং অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের  হাতে তুলে দেন। ১০ এপ্রিল ১ম দল যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে আসে এবং পরবর্তিতে তারা বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়। ২০ এপ্রিল নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে ৮ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ একাই ২ টি লঞ্চ ও ১ টি স্পীডবোট ডুবিয়ে দেন। এতে এক প­াটুন শত্রু সৈন্য নিহত হয়। বরকল, ফারুয়া ও শুকুরছড়িতে পাকবাহিনীর সামরিক ঘাঁটি ছিল। ফারুয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি খন্ড যুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটি জেলা শত্রুমুক্ত হয়।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে ১ নং সেক্টরের অধীনে ছিল রাঙামাটি জেলা। ২৭ মার্চ স্টেশন ক্লাবের মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী ট্রেনিং ক্যাম্প খোলা হয়। ২৯ মার্চ ৬০ জনের ১টি দল যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ভারতে যায়। ২ এপ্রিল তৎকালীন জেলা প্রশাসক হোসেন তৌহিদ ইমাম রাজকোষ থেকে প্রচুর অর্থ এবং অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের  হাতে তুলে দেন। ১০ এপ্রিল ১ম দল যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে আসে এবং পরবর্তিতে তারা বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়। ২০ এপ্রিল নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ একাই ২ টি লঞ্চ ও ১ টি স্পীডবোট ডুবিয়ে দেন। এতে এক প্লাটুন শত্রু সৈন্য নিহত হয়। বরকল, ফারুয়া ও শুকুরছড়িতে পাকবাহিনীর সামরিক ঘাঁটি ছিল। ফারুয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি খ- যুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটি জেলা শত্রুমুক্ত হয়।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৩.৬০%; পুরুষ ৫১.৪৭%, মহিলা ৩৪.২১%। প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কলেজ ১৩, পালি কলেজ ৩, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫১২, কিন্ডার গার্টেন ১৩, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১০, মাদ্রাসা ১১। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কাচাল ডিগ্রি কলেজ, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ, রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজ, কাউখালী কলেজ, বাঙ্গালহালিয়া কলেজ, নানিয়ারচর কলেজ, রাজস্থলী কলেজ, বরকল উচ্চ বিদ্যালয়, নারানগিরি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঘাঘড়া উচ্চ বিদ্যালয়, মাইনিমুখ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, লংগদু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নানিয়ারচর ইসলামপুর দাখিল মাদ্রাসা, সিদ্দিকী আকবর দাখিল মাদ্রাসা, বেতবুনিয়া মঈনুল উলুম রেজভিয়া দাখিল মাদ্রাসা।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৯.%; পুরুষ ৫৬.%, মহিলা ৪২.%। প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কলেজ ১৩, পালি কলেজ ৩, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫১২, কিন্ডার গার্টেন ১৩, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১০, মাদ্রাসা ১১। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কাচাল ডিগ্রি কলেজ, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ, রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজ, কাউখালী কলেজ, বাঙ্গালহালিয়া কলেজ, নানিয়ারচর কলেজ, রাজস্থলী কলেজ, বরকল উচ্চ বিদ্যালয়, নারানগিরি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঘাঘড়া উচ্চ বিদ্যালয়, মাইনিমুখ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, লংগদু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নানিয়ারচর ইসলামপুর দাখিল মাদ্রাসা, সিদ্দিকী আকবর দাখিল মাদ্রাসা, বেতবুনিয়া মঈনুল উলুম রেজভিয়া দাখিল মাদ্রাসা।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫৯.০৮%, অকৃষি শ্রমিক ৬.০৬%, শিল্প ০.৪৬%, ব্যবসা ১০.৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.০৬%, নির্মাণ ০.৮৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, চাকরি ১৩.৪৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৩% এবং অন্যান্য ৭.৪১%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫৯.০৮%, অকৃষি শ্রমিক ৬.০৬%, শিল্প ০.৪৬%, ব্যবসা ১০.৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.০৬%, নির্মাণ ০.৮৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, চাকরি ১৩.৪৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৩% এবং অন্যান্য ৭.৪১%।
৬৪ নং লাইন: ৬৪ নং লাইন:
''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রাঙ্গামাটি জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; রাঙ্গামাটি জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রাঙ্গামাটি জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; রাঙ্গামাটি জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Rangamati District]]
[[en:Rangamati District]]

১৬:৫৩, ৩০ মে ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

রাঙ্গামাটি জেলা (চট্টগ্রাম বিভাগ)  আয়তন: ৬১১৬.১১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৭´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৬´ থেকে ৯২°৩৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে বান্দরবান জেলা, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য ও মায়ানমারের চিন প্রদেশ, পশ্চিমে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলা।

জনসংখ্যা ৫৯৫৯৭৯; পুরুষ ৩১৩০৭৬, মহিলা ২৮২৯০৩। মুসলিম ২০৯৪৬৫, হিন্দু ৩০২৪৪, বৌদ্ধ ৩৪৭০৩৮, খ্রিস্টান ৮৬৬৩ এবং অন্যান্য ৫৬৯। চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, বম, চাক, খুমি, খিয়াং, লুসাই, ম্রো, মুরং, পাংখোয়া, সাঁওতাল, মণিপুরী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠির বসবাস রয়েছে।

জলাশয় কর্ণফুলি, কাসালং, চেঙ্গী ও মাইনী নদী এবং কাপ্তাই হ্রদ উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ১৯৮৩ সালে রাঙ্গামাটি মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। জেলার দশটি উপজেলার মধ্যে বাঘাইছড়ি উপজেলা সর্ববৃহৎ (১৯৩১.২৫ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা রাজস্থলী (১৪৫.০৩ বর্গ কিমি)।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
৬১১৬.১১ ১০ ৪৯ ১৬২ ১৫৫৫ ১৫৯৬২৭ ৪৩৬৩৫২ ৯৭ ৪৯.৭
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলার নাম আয়তন(বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
কাউখালী ৩৩৯.২৮ - ১০ ১৮০ ৫৯৫৭৮ ১৭৬ ৪৪.২
কাপ্তাই ২৫৮.৯৯ ১০ ১৪৮ ৫৯৬৯৩ ২৩০ ৬০.০
জুরাছড়ি ৬০৬.০৫ - ১১ ১০৫ ২৭৭৮৬ ৪৬ ৪৬.৮
নানিয়ারচর ৩৯৩.৬৭ ২০ ১৫৮ ৪৩৬১৬ ১১১ ৪৭.৭
বরকল ৭৬০.৮৯ - ২৮ ১৮০ ৪৭৫২৩ ৬২ ৪৪.৫
বাঘাইছড়ি ১৯৩১.২৫ ১৯ ৩০৩ ৯৬৮৯৯ ৫০ ৪১.৯
বিলাইছড়ি ৭৪৫.৯১ - ৫৯ ২৮৫২৫ ৩৮ ৩২.৮
রাঙ্গামাটি সদর ৫৪৬.৪৮ ২১ ১৭৮ ১২৪৭২৮ ২২৮ ৬৪.৫
রাজস্থলী ১৪৫.০৩ - ১০৬ ২৬০৮৩ ১৮০ ৪৪.২
লংগদু ৩৮৮.৪৯ - ২৫ ১৩৮ ৮১৫৪৮ ২১০ ৪৪.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শন ও প্রত্নসম্পদ  রাজা জানবখশ্ খানের রাজপ্রাসাদ, দীঘি ও মসজিদ, রাজা হরিশচন্দ্র রায়ের বাড়ি (১৮৭৩), ঝুলন্ত সেতু, জেলা প্রশাসকের বাংলো (১৮৬৮)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে ১ নং সেক্টরের অধীনে ছিল রাঙামাটি জেলা। ২৭ মার্চ স্টেশন ক্লাবের মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী ট্রেনিং ক্যাম্প খোলা হয়। ২৯ মার্চ ৬০ জনের ১টি দল যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ভারতে যায়। ২ এপ্রিল তৎকালীন জেলা প্রশাসক হোসেন তৌহিদ ইমাম রাজকোষ থেকে প্রচুর অর্থ এবং অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তুলে দেন। ১০ এপ্রিল ১ম দল যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে আসে এবং পরবর্তিতে তারা বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়। ২০ এপ্রিল নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ একাই ২ টি লঞ্চ ও ১ টি স্পীডবোট ডুবিয়ে দেন। এতে এক প্লাটুন শত্রু সৈন্য নিহত হয়। বরকল, ফারুয়া ও শুকুরছড়িতে পাকবাহিনীর সামরিক ঘাঁটি ছিল। ফারুয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি খ- যুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটি জেলা শত্রুমুক্ত হয়।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৯.৭%; পুরুষ ৫৬.৪%, মহিলা ৪২.৩%। প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কলেজ ১৩, পালি কলেজ ৩, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫১২, কিন্ডার গার্টেন ১৩, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১০, মাদ্রাসা ১১। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কাচাল ডিগ্রি কলেজ, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ, রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজ, কাউখালী কলেজ, বাঙ্গালহালিয়া কলেজ, নানিয়ারচর কলেজ, রাজস্থলী কলেজ, বরকল উচ্চ বিদ্যালয়, নারানগিরি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঘাঘড়া উচ্চ বিদ্যালয়, মাইনিমুখ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, লংগদু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নানিয়ারচর ইসলামপুর দাখিল মাদ্রাসা, সিদ্দিকী আকবর দাখিল মাদ্রাসা, বেতবুনিয়া মঈনুল উলুম রেজভিয়া দাখিল মাদ্রাসা।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৯.০৮%, অকৃষি শ্রমিক ৬.০৬%, শিল্প ০.৪৬%, ব্যবসা ১০.৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.০৬%, নির্মাণ ০.৮৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, চাকরি ১৩.৪৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৩% এবং অন্যান্য ৭.৪১%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: গিরিদর্পণ, রাঙামাটি, পার্বত্যবার্তা; সাপ্তাহিক: বনভূমি, পার্বত্যবার্তা; মাসিক: স্কুলবার্তা।

লোকসংস্কৃতি বিজু, সংগ্রাই, বৈসুক উৎসব, হাল পালানী উৎসব, পুন্দা পুজা, পালাগান, পাহাড়ি লোকগীতি, গীতি নৃত্য নাট্য, গরাইয়া নৃত্য, জুম নৃত্য, বাঁশ নৃত্য, বোতল নৃত্য উল্লেখযোগ্য।

দর্শনীয় স্থান রাঙ্গামাটি হ্রদ, চাকমা রাজবাড়ি, রাজবন বৌদ্ধ বিহার, পর্যটন ঝুলন্ত ব্রিজ, শুভলং ঝর্ণা, ফুরামোন পর্বত, উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য, বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূকেন্দ্র, পুলিশ স্পেশাল ট্রেনিং স্কুল, কাপ্তাই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলি কাগজ মিল। [আতিকুর রহমান]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রাঙ্গামাটি জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; রাঙ্গামাটি জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।