রাঙ্গাবালী উপজেলা

রাঙ্গাবালী উপজেলা (পটুয়াখালী জেলা)  আয়তন: ৩৪৩.৬৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৫১´ থেকে ২২°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯০°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে আমতলী এবং গলাচিপা উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে গলাচিপা এবং চরফ্যাশন উপজেলা, পশ্চিমে আমতলী উপজেলা ।

জনসংখ্যা ১০৩০০৩; পুরুষ ৫২৪০৩, মহিলা ৫০৬০০। মুসলিম ১০১০৪৬, হিন্দু ১৮৬৮, বৌদ্ধ ৮৭, খ্রিস্টান ১ এবং অন্যান্য ১। এ উপজেলায় আদিবাসী রাখাইন জনগোষ্ঠীর বাস রয়েছে।

জলাশয় কাজল, আগুনমুখা ও চরকলমি প্রধান নদী এবং রাবনাবাদ চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ১৪ মার্চ ২০১১ সালে গলাচিপা উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা গঠিত হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৪৮ ৯৪ - ১০৩০০৩ ৩০০ - ৩৯.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
চর মোনতাজ ৩৪ ১৩৯৯৭ ১০১৩০ ৯৪৩৯ ৪৩.৩
চালিতাবুনিয়া ৩২ ৬৭৫৮ ৩৭৮৭ ৩৬১৩ ৩৫.৫
ছোট বাইশদিয়া ৪৪ ১৩৪৯২ ৯৯৮৬ ১০০৮৪ ৩৫.৪
বড় বাইশদিয়া ২৭ ২৩৮৩৮ ১৩২৮৬ ১৩১৮৮ ৪৪.০
রাঙ্গাবালী ৮৩ ২৬৮৪৩ ১৫২১৪ ১৪২৭৬ ৪১.৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি  বার্মা রাজা কর্তৃক বিতাড়িত রাখাইনদের একটি দল ১৭৮৪ সালে গলাপিচা উপজেলার রাঙ্গাবালী দ্বীপে বসতি গড়ে তোলে এবং চাষাবাদ শুরু করে। রাখাইনরাই এই এলাকায় প্রথম বসতি স্থাপন করে।

মুক্তিযুদ্ধ রাঙ্গাবালী উপজেলায় হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো যুদ্ধ হয়নি। তবে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা গলাচিপা, খেপুপাড়া ও অন্যান্য স্থানে যুদ্ধে অংশ নেন।

বিস্তারিত দেখুন রাঙ্গাবালী উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩১২, মন্দির ২০, প্যাগোডা ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: রতনদির একগম্বুজবিশিষ্ট গুরিন্দা মসজিদ (১৮ শতক)।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৯.৯%; পুরূষ ৪০.১%, মহিলা ৩৯.৫%। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫, মাদ্রাসা ৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রাঙ্গাবালী হাইস্কুল, রাঙ্গাবালী সালেহা জুনিয়র হাইস্কুল।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২, যাত্রাপার্টি ২, মহিলা সংগঠন ১, খেলার মাঠ ৩২।

দর্শনীয় স্থান এ উপজেলার রাবনাবাদ দ্বীপ থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৮.১৮%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৫২%, শিল্প ০.৪০%, ব্যবসা ১৭.১৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৭.৪১%, চাকরি ৯.৩৩%, নির্মাণ ১.৯১%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৫৭% এবং অন্যান্য ১১.৭৯%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৩.২৫%, ভূমিহীন ৪৬.৭৫%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান,  গম, আলু, পিঁয়াজ, ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, চিংড়ি, গবাদিপশু  ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা বরফকল, চালকল, ওয়েলডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লোহার কাজ, মৃৎশিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ ইত্যাদি।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২২, মেলা ২। চালিতাবুনিয়া বাজার, কোরালিয়া বাজার, ফেলাবুনিয়া বাজার, গহিন কালী বাজার, মোনতাজ বাজার, বাহের চর বাজার, কাটাখালী বাজার, টাকটা বুনিয়া বাজার, নিতা বাজার, তুলাতলি লঞ্চঘাট বাজার, বেসটিন বাজার, পুলঘাট হাট, মোল্লার হাট, মৌডুবি হাট এবং চর নলুয়ার হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, মাছ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২২.৭৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যাবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৮.০% এবং অন্যান্য ২.০%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৫.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ২, ক্লিনিক ৩।

এনজিও আশা, ব্র্যাক, প্রশিকা, কারিটাস।  [রাজীব মন্ডল]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, রাঙ্গাবালী উপজেলার মাঠ পর্যয়ের তথ্য ২০১২।