রশীদ, আ.ন.ম বজলুর

আ.ন.ম বজলুর রশীদ

রশীদ, আ.ন.ম বজলুর (১৯১১-১৯৮৬)  শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক। পুরো নাম আবু নয়ীম মুহম্মদ বজলুর রশীদ। ১৯১১ সালের ৮ মে ফরিদপুর শহরে তাঁর জন্ম। পিতা হারুন-অর-রশীদ ছিলেন আইনজীবী।

বজলুর রশীদ ফরিদপুর জি.টি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তারপর তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯২৮), রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আইএ (১৯৩১) ও বিএ (১৯৩৩) এবং ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিটি (১৯৩৮) পাস করেন। দীর্ঘকাল পর প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ (১৯৫৪) ডিগ্রি লাভ করেন।

বজলুর রশীদ ১৯৩৪ সালে ঢাকা সরকারি মুসলিম হাইস্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে বিভিন্ন সরকারি স্কুলে চাকরি করার পর ১৯৫৫ সালে তিনি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন এবং এখান থেকেই ১৯৭২ সালে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৩-৭৫) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (১৯৭৫-৮০) ইংরেজি বিভাগে খন্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে ছিলেন।

বজলুর রশীদ বিভিন্ন আঙ্গিকে সাহিত্যচর্চা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাবলি: কাব্য পান্থবীণা (১৯৪৭), মরুসূর্য (১৯৬০), শীতে বসন্তে (১৯৬৭), রং ও রেখা (১৯৬৯), এক ঝাঁক পাখি (১৯৬৯), মৌসুমী মন (১৯৭০), মেঘ বেহাগ (১৯৭১); নাটক ঝড়ের পাখি (১৯৫৯), উত্তরফাল্গুনী (১৯৬৪), শিলা ও শৈলী (১৯৬৭), ধানকমল (১৯৬৯), রূপান্তর (১৯৭০); ভ্রমণকাহিনী পথ বেঁধে দিল (১৯৬০), দুই সাগরের দেশে (১৯৬৭), পথ ও পৃথিবী (১৯৬৭), ওগো বিদেশিনী; উপন্যাস মনে-মনান্তরে (১৯৬২), নীল দিগন্ত (১৯৬৭); প্রবন্ধ আমাদের নবী (১৯৪৬), জীবন বিচিত্রা (১৯৬২), জীবনবাদী রবীন্দ্রনাথ (১৯৭২) প্রভৃতি। বাংলাদেশের সমাজ ও প্রকৃতি তাঁর রচনার প্রধান বিষয়। সাহিত্যিক অবদানের জন্য তিনি পাকিস্তান সরকারের তমঘা-ই-ইমতিয়াজ (১৯৬৯) উপাধি এবং বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭৬) লাভ করেন। ১৯৮৬ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।  [মুহম্মদ মজিরউদ্দীন মিয়া]