রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৫ নং লাইন: ৫ নং লাইন:


''সারণি'' ১  ২০০৮-২০০৯-এ বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহ
''সারণি'' ১  ২০০৮-২০০৯-এ বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহ
অবস্থান, প্রতিষ্ঠানকাল ইউনিট সংখ্যা বিনিয়োগ (মিলিয়ন ডলার) রপ্তানি (মিলিয়ন ডলার) কর্মসংস্থান (সংখ্যা)
{| class="table table-bordered table-hover"
চালু আছে নতুন
|-
চট্টগ্রাম, ১৯৮৩ ১৫৭ ১৭ ৭৭২.৬৪ ১১৫১১.৯১ ১৫০,৭৮৩
| rowspan="2" | অবস্থান, প্রতিষ্ঠানকাল || colspan="2" | ইউনিট সংখ্যা || rowspan="2" | বিনিয়োগ (মিলিয়ন ডলার) || rowspan="2" | রপ্তানি (মিলিয়ন ডলার) || rowspan="2" | কর্মসংস্থান (সংখ্যা)
ঢাকা, ১৯৮৩ ৯৬ ৭ ৭১৩.৫৫ ৯৪৮৮.২২ ৭৪,৬২৮
|-
কুমিল্লা, ২০০০ ২৩ ৬ ১০০.৩১ ৪১৮.৪৮ ৬,৯৬৪
| চালু আছে || নতুন
মংলা, খুলনা, ১৯৯৯ ০৮ ০১ ৪.৩৬ ৪৬.৫৮ ৩৫২
|-
উত্তরা, নীলফামারী, ২০০১ ০৬ ০১ ৪.৭৫ ২.৩১ ৩,৫৪৩
| চট্টগ্রাম, ১৯৮৩ || ১৫৭ || ১৭ || ৭৭২.৬৪ || ১১৫১১.৯১ || ১৫০,৭৮৩
ঈশ্বরদী, পাবনা, ২০০১ ০৭ ০৫ ২৮.৪৯ ১৫.৩৯ ৩,০২৮
|-
আদমজী, নারায়ণগঞ্জ, ২০০৬ ১৭ ১৬ ৯২.৬৩ ১৮৮.৫৭ ১১,৭৮৯
| ঢাকা, ১৯৮৩ || ৯৬ || || ৭১৩.৫৫ || ৯৪৮৮.২২ || ৭৪,৬২৮
কর্ণফুলি, চট্টগ্রাম, ২০০৬ ১৯ ২৯ ৮৭.৭৩ ১০৫.৮০ ১১,৬৭৪
|-
মোট ৩৩৩ ৮২ ১৮০৪.১৬ ২১৭৩৭.২৮ ২৬২,৭৫৭
| কুমিল্লা, ২০০০ || ২৩ || || ১০০.৩১ || ৪১৮.৪৮ || ৬,৯৬৪
|-
| মংলা, খুলনা, ১৯৯৯ || ০৮ || ০১ || ৪.৩৬ || ৪৬.৫৮ || ৩৫২
|-
| উত্তরা, নীলফামারী, ২০০১ || ০৬ || ০১ || ৪.৭৫ || ২.৩১ || ৩,৫৪৩
|-
| ঈশ্বরদী, পাবনা, ২০০১ || ০৭ || ০৫ || ২৮.৪৯ || ১৫.৩৯ || ৩,০২৮
|-
| আদমজী, নারায়ণগঞ্জ, ২০০৬ || ১৭ || ১৬ || ৯২.৬৩ || ১৮৮.৫৭ || ১১,৭৮৯
|-
| কর্ণফুলি, চট্টগ্রাম, ২০০৬ || ১৯ || ২৯ || ৮৭.৭৩ || ১০৫.৮০ || ১১,৬৭৪
|-
| মোট || ৩৩৩ || ৮২ || ১৮০৪.১৬ || ২১৭৩৭.২৮ || ২৬২,৭৫৭
|}
''উৎস''  বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১০ (অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার)।
''উৎস''  বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১০ (অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার)।


''সারণি'' ২  ফেব্রুয়ারি ২০২০ এ বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহ  
''সারণি'' ২  ফেব্রুয়ারি ২০২০ এ বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহ
অবস্থান চালু নতুন বিনিয়োগ (মিলিয়ন ডলার) রপ্তানি (মিলিয়ন ডলার) কর্মসংস্থান (সংখ্যা)
{| class="table table-bordered table-hover"
চট্টগ্রাম ১৫৭ ৯ ১৭৬০.৮৫ ৩২৮৬৯.৮১ ১৮৫০৬৩
|-
ঢাকা ৯৯ ৯ ১৫০৪.১৬ ২৮৩৯১.০৫ ৯৩৩৪৬
| rowspan="2" | অবস্থান || rowspan="2" | চালু || colspan="3" | নতুন || colspan="2" | বিনিয়োগ (মিলিয়ন ডলার) || রপ্তানি (মিলিয়ন ডলার) || কর্মসংস্থান (সংখ্যা)
আদমজী ৫১ ১৮ ৫৪৮.৯৯ ৫০৫০.৬৮ ৫৯১০৩
|-
কুমিল্লা ৪৭ ৯ ৩৭২.৩৫ ৩২৭৪.৮৮ ৩৪৯১৪
| চট্টগ্রাম || ১৫৭ || || ১৭৬০.৮৫ || ৩২৮৬৯.৮১ || ১৮৫০৬৩
কর্ণফুলি ৪৫ ৬ ৬০৮.২০ ৬৫৩৯.২৬ ৭৫৮৩৮
|-
ইশ্বরদী ২০ ১২ ১৫১.৮৩ ৯২৭.৮৩ ১২৫৭০
| ঢাকা || ৯৯ || || ১৫০৪.১৬ || ২৮৩৯১.০৫ || ৯৩৩৪৬
মংলা ৩৪ ১৩ ৮২.৪৩ ৭০২.৫১ ৫৯৭৫
|-
উত্তরা ২১ ৭ ১৯৭.৫৮ ১২৭০.৩০ ৩৪৫৪৬
| আদমজী || ৫১ || ১৮ || ৫৪৮.৯৯ || ৫০৫০.৬৮ || ৫৯১০৩
মোট ৪৭৪ ৮৩ ৫২২৬.৪০ ৭৯০২৬.৩১ ৫০১৩৫৫
|-
| কুমিল্লা || ৪৭ || || ৩৭২.৩৫ || ৩২৭৪.৮৮ || ৩৪৯১৪
|-
| কর্ণফুলি || ৪৫ || || ৬০৮.২০ || ৬৫৩৯.২৬ || ৭৫৮৩৮
|-
| ইশ্বরদী || ২০ || ১২ || ১৫১.৮৩ || ৯২৭.৮৩ || ১২৫৭০
|-
| মংলা || ৩৪ || ১৩ || ৮২.৪৩ || ৭০২.৫১ || ৫৯৭৫
|-
| উত্তরা || ২১ || || ১৯৭.৫৮ || ১২৭০.৩০ || ৩৪৫৪৬
|-
| মোট || ৪৭৪ || ৮৩ || ৫২২৬.৪০ || ৭৯০২৬.৩১ || ৫০১৩৫৫
|}
''উৎস''  অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ইকনোমিক রিভিউ ২০২০
''উৎস''  অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ইকনোমিক রিভিউ ২০২০


৩৪ নং লাইন: ৫৯ নং লাইন:


''সারণি'' ৩  সরকারি বিনিয়োগ ও উশুলের হার (মিলিয়ন টাকায়)।
''সারণি'' ৩  সরকারি বিনিয়োগ ও উশুলের হার (মিলিয়ন টাকায়)।
বছর বিনিয়োগ                           আয় বার্ষিক উশুল
{| class="table table-bordered table-hover"
জমি ফ্যাক্টরি বিল্ডিং মোট জমি ফ্যাক্টরি বিল্ডিং
|-
সিইপিজেড
| rowspan="2" | বছর || colspan="3" | বিনিয়োগ || colspan="3" | আয় || colspan="3" | বার্ষিক উশুল
১৯৭৪-৮৫ ২৪৮.৯ ১.৫ ৩.৪ ৪.৯ ০.৬২ ১.৩৫
|-
১৯৮৫-৯৩ ৪৫২.৬ ৬৩.৩ ১৩৬.৩ ১৯৯.৬ ৮.১৮ ১৭.৬৪
| জমি || ফ্যাক্টরি বিল্ডিং || মোট || জমি || ফ্যাক্টরি বিল্ডিং
১৯৯৩-৯৮ ৩৬০.৩ ২২৮.১ ২১১.৩ ৪৩৯.৪ ২৫ ৩০.৪৭
|-
ডিইপিজেড
| সিইপিজেড ||
১৯৮৯-৯৮ ৭২৪.৪ ৭৮.৮ ২৪৮.৪ ৩২৭.২ ১০.৮৭ ৩২.৩০
|-
| ১৯৭৪-৮৫ || ২৪৮.৯ || ১.৫ || ৩.৪ || ৪.৯ || ০.৬২ || ১.৩৫
|-
| ১৯৮৫-৯৩ || ৪৫২.৬ || ৬৩.৩ || ১৩৬.৩ || ১৯৯.৬ || ৮.১৮ || ১৭.৬৪
|-
| ১৯৯৩-৯৮ || ৩৬০.৩ || ২২৮.১ || ২১১.৩ || ৪৩৯.৪ || ২৫ || ৩০.৪৭
|-
| ডিইপিজেড  
|-
| ১৯৮৯-৯৮ || ৭২৪.৪ || ৭৮.৮ || ২৪৮.৪ || ৩২৭.২ || ১০.৮৭ || ৩২.৩০
|}
''উৎস''  বেজপা।
''উৎস''  বেজপা।


৫১ নং লাইন: ৮৬ নং লাইন:


''সারণি'' ৪  ইপিজেডসমূহে বিনিয়োগ এবং তাদের রপ্তানি (মিলিয়ন মার্কিন ডলার)
''সারণি'' ৪  ইপিজেডসমূহে বিনিয়োগ এবং তাদের রপ্তানি (মিলিয়ন মার্কিন ডলার)
ইপিজেড এলাকা ২০১০-১১ ২০১৮-১৯
{| class="table table-bordered table-hover"
বিনিয়োগ রপ্তানি বিনিয়োগ রপ্তানি
|-
ঢাকা ৭২.৩৮ ১৫২১.৭৮ ৭৬.১৪ ২২০৬.৩১
| rowspan="2" | ইপিজেড এলাকা || colspan="2" | ২০১০-১১ || colspan="2" | ২০১৮-১৯
চট্টগ্রাম ৮৫.৮৪ ১৬৬৬.৮৮ ৭৫.৬৯ ২৩৯১.৬৯
|-
মংলা ০.৭৭ ২৭.৯৩ ১০.১৪ ৮৯.৪৪
| বিনিয়োগ || রপ্তানি || বিনিয়োগ || রপ্তানি
কুমিল্লা ৩৬.২৬ ১৪৫.৪৬ ৩১.০৮ ৪৯০.৭৬
|-
উত্তরা ১১.৯৮ ৬.৭৭ ৩২.০২ ২৯৩.৭৬
| ঢাকা || ৭২.৩৮ || ১৫২১.৭৮ || ৭৬.১৪ || ২২০৬.৩১
ইশ্বরদী ২১.৪০ ২৫.৯৬ ৮.১৮ ১৫০.২২
|-
আদমজী ৩৭.০৫ ১৬৪.৬৮ ৫০.২২ ৮২৬.৪৪
| চট্টগ্রাম || ৮৫.৮৪ || ১৬৬৬.৮৮ || ৭৫.৬৯ || ২৩৯১.৬৯
কর্ণফুলি ৪৭.৫৬ ১৩৮.১৬ ৫০.৯০ ১০৭৫.৫২
|-
| মংলা || ০.৭৭ || ২৭.৯৩ || ১০.১৪ || ৮৯.৪৪
|-
| কুমিল্লা || ৩৬.২৬ || ১৪৫.৪৬ || ৩১.০৮ || ৪৯০.৭৬
|-
| উত্তরা || ১১.৯৮ || ৬.৭৭ || ৩২.০২ || ২৯৩.৭৬
|-
| ইশ্বরদী || ২১.৪০ || ২৫.৯৬ || ৮.১৮ || ১৫০.২২
|-
| আদমজী || ৩৭.০৫ || ১৬৪.৬৮ || ৫০.২২ || ৮২৬.৪৪
|-
| কর্ণফুলি || ৪৭.৫৬ || ১৩৮.১৬ || ৫০.৯০ || ১০৭৫.৫২
|}
''উৎস''  অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ইকোনমিক রিভিউ, ২০২০
''উৎস''  অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ইকোনমিক রিভিউ, ২০২০


ইপিজেড সংলগ্ন এলাকায় যেসব পরিষেবা প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট, কন্টেইনার সার্ভিস, কুরিয়ার সার্ভিস, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। ইপিজেড-এর সকল প্রতিষ্ঠান মোট যে পরিমাণ মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে এ সকল পরিষেবা প্রতিষ্ঠানের আয় তার প্রায় ২ শতাংশ। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ তার শ্রমিকদের মজুরি ও ভাতা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদির বিল এবং স্টেশনারিজ ও অন্যান্য মালামাল কেনার মূল্য হিসেবে যত অর্থ ব্যয় করে তা স্থানীয় মূল্য সংযোজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানীয় শ্রমিকদের বছরে মজুরি এবং তাদের কল্যাণ খাতে যেমন, খাদ্য/টিফিন ভাতা, যাতায়াত ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ইত্যাদিতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। ইপিজেড-এ কর্মরত বিদেশি কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের একেকজন প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১,০০০ ডলার আয় করে এবং তারা এই আয়ের প্রায় ৪০%-এর সমপরিমাণ টাকা স্থানীয়ভাবে ব্যয় করে। এই অর্থও স্থানীয় মূল্য সংযোজনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ইপিজেড-ই হচ্ছে বাংলাদেশে গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সেবার সবচেয়ে বড় একক গ্রাহক এবং এসব খাতে ইপিজেড-এর বার্ষিক পরিশোধকৃত বিলের পরিমাণ প্রায় ৪২০ কোটি টাকা। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ টেলিফোন বিল হিসেবে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করে। এসব প্রতিষ্ঠান মোট যে পরিমাণ মূল্য সংযোজন ঘটায় তার একটি অংশের উৎস হচ্ছে দেশীয় কাঁচামাল ও নানারকম মাধ্যমিক পণ্যসামগ্রী। এছাড়া ইপিজেড-এ প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানীয় বাজার থেকে স্টেশনারিজ, [[আসবাবপত্র|আসবাবপত্র]], [[খাদ্যপণ্য|খাদ্যপণ্য]], পেট্রোলিয়াম ও ল্যুব্রিকান্ট এবং যন্ত্রসরঞ্জাম কেনার অর্থ ব্যয় করে। এসবই ইপিজেড সংলগ্ন এলাকায় অর্থনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। [এস. এম মাহফুজুর রহমান]
ইপিজেড সংলগ্ন এলাকায় যেসব পরিষেবা প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট, কন্টেইনার সার্ভিস, কুরিয়ার সার্ভিস, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। ইপিজেড-এর সকল প্রতিষ্ঠান মোট যে পরিমাণ মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে এ সকল পরিষেবা প্রতিষ্ঠানের আয় তার প্রায় ২ শতাংশ। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ তার শ্রমিকদের মজুরি ও ভাতা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদির বিল এবং স্টেশনারিজ ও অন্যান্য মালামাল কেনার মূল্য হিসেবে যত অর্থ ব্যয় করে তা স্থানীয় মূল্য সংযোজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানীয় শ্রমিকদের বছরে মজুরি এবং তাদের কল্যাণ খাতে যেমন, খাদ্য/টিফিন ভাতা, যাতায়াত ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ইত্যাদিতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। ইপিজেড-এ কর্মরত বিদেশি কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের একেকজন প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১,০০০ ডলার আয় করে এবং তারা এই আয়ের প্রায় ৪০%-এর সমপরিমাণ টাকা স্থানীয়ভাবে ব্যয় করে। এই অর্থও স্থানীয় মূল্য সংযোজনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ইপিজেড-ই হচ্ছে বাংলাদেশে গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সেবার সবচেয়ে বড় একক গ্রাহক এবং এসব খাতে ইপিজেড-এর বার্ষিক পরিশোধকৃত বিলের পরিমাণ প্রায় ৪২০ কোটি টাকা। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ টেলিফোন বিল হিসেবে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করে। এসব প্রতিষ্ঠান মোট যে পরিমাণ মূল্য সংযোজন ঘটায় তার একটি অংশের উৎস হচ্ছে দেশীয় কাঁচামাল ও নানারকম মাধ্যমিক পণ্যসামগ্রী। এছাড়া ইপিজেড-এ প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানীয় বাজার থেকে স্টেশনারিজ, [[আসবাবপত্র|আসবাবপত্র]], [[খাদ্যসামগ্রী|খাদ্যসামগ্রী]], পেট্রোলিয়াম ও ল্যুব্রিকান্ট এবং যন্ত্রসরঞ্জাম কেনার অর্থ ব্যয় করে। এসবই ইপিজেড সংলগ্ন এলাকায় অর্থনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। [এস এম মাহফুজুর রহমান]


[[en:Export Processing Zone]]
[[en:Export Processing Zone]]

১৪:৩০, ৩ জুন ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানাদি স্থাপনের জন্য নির্ধারিত বিশেষ এলাকা। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১৫ এপ্রিল ১৯৮১ তারিখে গঠন করা হয় এবং এই প্রতিষ্ঠানটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা ব্যবস্থাপনা ও এগুলোর কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করে। ইপিজেড-এর লক্ষ্যসমূহের মধ্যে থাকে বিদেশি পুঁজি আকর্ষণ, দ্রুত শিল্পায়ন, স্থানীয় জনশক্তির জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, প্রযুক্তি হস্তান্তর ত্বরান্বিতকরণ এবং বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন বৃদ্ধির জন্য রপ্তানি সম্প্রসারণ। সেই সাথে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা, উচ্চ বেকারত্ব, মূলধনের স্বল্পতা, অপর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবমোচনও ছিল ইপিজেড গঠনের লক্ষ্য।

বাংলাদেশে ১৯৮০ সালে সংসদ প্রণীত একটি আইনের ভিত্তিতে ১৯৮৩ সালে প্রথম ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়। দ্বিতীয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় এর দশ বছর পর, ১৯৯৩ সালে ঢাকার সাভারে। এছাড়া মংলা, উত্তরা, ঈশ্বরদী, কুমিল্লা, কর্ণফুলি ও আদমজী আরও ছয়টি ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার চট্টগ্রামে একটি কোরীয় ইপিজেড প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কোরিয়া সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। সারণি ১ এবং ২-এ দেশে ইপিজেডগুলিতে মোট চালু শিল্পইউনিট ও বাস্তবায়নধীন ইউনিটের সংখ্যা এবং উভয়ক্ষেত্রে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ মোট রপ্তানি আয় ও নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা দেওয়া হলো:

সারণি ১ ২০০৮-২০০৯-এ বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহ

অবস্থান, প্রতিষ্ঠানকাল ইউনিট সংখ্যা বিনিয়োগ (মিলিয়ন ডলার) রপ্তানি (মিলিয়ন ডলার) কর্মসংস্থান (সংখ্যা)
চালু আছে নতুন
চট্টগ্রাম, ১৯৮৩ ১৫৭ ১৭ ৭৭২.৬৪ ১১৫১১.৯১ ১৫০,৭৮৩
ঢাকা, ১৯৮৩ ৯৬ ৭১৩.৫৫ ৯৪৮৮.২২ ৭৪,৬২৮
কুমিল্লা, ২০০০ ২৩ ১০০.৩১ ৪১৮.৪৮ ৬,৯৬৪
মংলা, খুলনা, ১৯৯৯ ০৮ ০১ ৪.৩৬ ৪৬.৫৮ ৩৫২
উত্তরা, নীলফামারী, ২০০১ ০৬ ০১ ৪.৭৫ ২.৩১ ৩,৫৪৩
ঈশ্বরদী, পাবনা, ২০০১ ০৭ ০৫ ২৮.৪৯ ১৫.৩৯ ৩,০২৮
আদমজী, নারায়ণগঞ্জ, ২০০৬ ১৭ ১৬ ৯২.৬৩ ১৮৮.৫৭ ১১,৭৮৯
কর্ণফুলি, চট্টগ্রাম, ২০০৬ ১৯ ২৯ ৮৭.৭৩ ১০৫.৮০ ১১,৬৭৪
মোট ৩৩৩ ৮২ ১৮০৪.১৬ ২১৭৩৭.২৮ ২৬২,৭৫৭

উৎস বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১০ (অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার)।

সারণি ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ এ বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহ

অবস্থান চালু নতুন বিনিয়োগ (মিলিয়ন ডলার) রপ্তানি (মিলিয়ন ডলার) কর্মসংস্থান (সংখ্যা)
চট্টগ্রাম ১৫৭ ১৭৬০.৮৫ ৩২৮৬৯.৮১ ১৮৫০৬৩
ঢাকা ৯৯ ১৫০৪.১৬ ২৮৩৯১.০৫ ৯৩৩৪৬
আদমজী ৫১ ১৮ ৫৪৮.৯৯ ৫০৫০.৬৮ ৫৯১০৩
কুমিল্লা ৪৭ ৩৭২.৩৫ ৩২৭৪.৮৮ ৩৪৯১৪
কর্ণফুলি ৪৫ ৬০৮.২০ ৬৫৩৯.২৬ ৭৫৮৩৮
ইশ্বরদী ২০ ১২ ১৫১.৮৩ ৯২৭.৮৩ ১২৫৭০
মংলা ৩৪ ১৩ ৮২.৪৩ ৭০২.৫১ ৫৯৭৫
উত্তরা ২১ ১৯৭.৫৮ ১২৭০.৩০ ৩৪৫৪৬
মোট ৪৭৪ ৮৩ ৫২২৬.৪০ ৭৯০২৬.৩১ ৫০১৩৫৫

উৎস অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ইকনোমিক রিভিউ ২০২০

বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ ইপিজেড কর্তৃপক্ষের (বেপজার) ওপর ন্যস্ত। ইপিজেড-এ সরকারের কার্যাবলির মধ্যে আছে অবকাঠামো (ভবন, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সংযোগ, গুদামঘর, রাস্তা ইত্যাদি) নির্মাণ, শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার আবেদনপত্রসমূহ যাচাই-বাছাই ও বিবেচনা, জমি বা বিল্ডিং স্পেস বরাদ্দকরণ এবং দেশি বা বিদেশি ব্যাংক ও বীমা কোম্পানি, ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট, কুরিয়ার কোম্পানি, ডাকঘর ইত্যাদির জন্য জায়গা বরাদ্দকরণ। ইপিজেড-এ যারা বিনিয়োগ করে তাদের বিনিয়োগ ও ব্যবসায় যাতে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হতে পারে ও যাতে মালিক-শ্রমিক বিরোধ দেখা না দেয় তা নিশ্চিত করতেও সরকার সচেষ্ট থাকে। এছাড়া ইপিজেড-এ বিনিয়োগকারীরা সরকারের নিকট থেকে ঋণ পেতে পারে এবং শিল্প-সহায়ক সকল প্রকার সমর্থন আশা করতে পারে। সরকার ইপিজেড প্রতিষ্ঠা করে এবং তাতে শিল্পস্থাপনার উপযোগী নানা কাঠামো তৈরি করে নিজেই ইপিজেডকে নিজের একটি বিনিয়োগ ক্ষেত্র হিসেবে দেখে এবং স্থাপনা ও ভবন ভাড়া, ইজারা বা স্থায়ী বরাদ্দের মাধ্যমে মুনাফাসহ ব্যয় উশুলের চেষ্টা করে। তবে ইপিজেড-এ বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের সিংহভাগই আসে ঋণ হিসেবে। দীর্ঘ মেয়াদের জন্য লগ্নীকৃত পুঁজির একটি অংশের উৎস হচ্ছে ইপিজেড-এ সংস্থাপনকৃত স্থির পরিসম্পদের অবচিতি। ইপিজিড-এ সরকারের বিনিয়োগের প্রায় ৪০%-ই এমন সব খাতে ব্যয় হয় যেগুলি থেকে কোন আয় আসে না। এখানে নির্মিত অবকাঠামোগত সুবিধাদির (জমি, ভবন, পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগ ইত্যাদির) জন্য সরকার যে হারে চার্জ আদায় করে তা ঠিক ব্যয়মূল্য উশুলের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় না। এগুলি প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের ইপিজেড-এ ধরা রেটসমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ধার্য করতে হয়। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় বাংলাদেশ সরকারের বিনিয়োগ ও উশুলের হার সারণি ৩-এ দেখানো হলো:

সারণি ৩ সরকারি বিনিয়োগ ও উশুলের হার (মিলিয়ন টাকায়)।

বছর বিনিয়োগ আয় বার্ষিক উশুল
জমি ফ্যাক্টরি বিল্ডিং মোট জমি ফ্যাক্টরি বিল্ডিং
সিইপিজেড
১৯৭৪-৮৫ ২৪৮.৯ ১.৫ ৩.৪ ৪.৯ ০.৬২ ১.৩৫
১৯৮৫-৯৩ ৪৫২.৬ ৬৩.৩ ১৩৬.৩ ১৯৯.৬ ৮.১৮ ১৭.৬৪
১৯৯৩-৯৮ ৩৬০.৩ ২২৮.১ ২১১.৩ ৪৩৯.৪ ২৫ ৩০.৪৭
ডিইপিজেড
১৯৮৯-৯৮ ৭২৪.৪ ৭৮.৮ ২৪৮.৪ ৩২৭.২ ১০.৮৭ ৩২.৩০

উৎস বেজপা।

প্রায় ৩০টিরও অধিক দেশ তম্মধ্যে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, চীন, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইউএসএ, ইউকে, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, সুইডেন, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, ভারত এবং পাকিস্তান বাংলাদেশের ইপিজেড-এর বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। তৈরি পোশাক শিল্পেই সর্বাধিক পরিমাণ শিল্প ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে (মার্চ ২০০৯ পর্যন্ত ২৯৭টির মধ্যে ৬৮টি)। ২০২০ সালে বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহে ৩৮টি বিভিন্ন দেশ তাদের কারখানা প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা পরিচালনা করছিল। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কারখানা ছিল পোশাক তৈরির (১৩৫ টি)। এর পাশাপাশি পোশাক শিল্পের আনুষঙ্গিক উপকরণ তৈরি কারখানা (৯২টি), নিটওয়ার (৩২টি, ২০০৯-এ), টেরিটাওয়েল (১৬টি, ২০০৯-এ) বৈদ্যুতিক এবং ইলেকট্রিক পণ্য (১৯টি), প্লাস্টিক দ্রব্য (১৪টি, ২০০৯-এ), পাদুকা ও চামড়াজাত দ্রব্য (২৭) এবং ইস্পাত দ্রব্য (১২, ২০০৯-এ)। ইপিজেড-এ প্রস্তুত অন্যান্য দ্রব্যের মধ্যে টুপি, তাবু, প্যাকেজিং পণ্য, দড়ি, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে ইপিজেড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইপিজেড-এর রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের লেনদেন ভারসাম্যের ঘাটতি কমাতে সাহায্যে করে। এই বৈদেশিক মুদ্রার একটি অংশ দেশীয় মুদ্রায় রূপান্তর করে তা দিয়ে স্থানীয় বাজার থেকে ইপিজেড-এর জন্য বিভিন্ন পণ্য ও সেবা ক্রয় করা হয়। ১৯৯০-৯১ সালে ইপিজেড থেকে রপ্তানি করা হয় দেশের মোট রপ্তানির ২.৭% আর ১৯৯৭/৯৮ সালে এই অনুপাত দাঁড়ায় ১২.৩%। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশের ইপিজেডগুলি থেকে সর্বমোট ২১,৭৩৭.২ মিলিয়ন টাকা মূল্যের রপ্তানি সম্পন্ন হয়েছে। এ সময়ে ইপিজেড মোট ২৬২,৭৫৭ বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান করেছে। ২০২০ সালে ইপিজেড এলাকাসমূহে মোট কর্মসংস্থান ছিল ৫০০,০০০ যায় অর্থ ইপিজেডে কর্মরত ব্যক্তিদের আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল আনুমানিক ৩০ লক্ষ মানুষ।

প্রায় ক্ষেত্রেই ইপিজেড-এ বিদেশি বিনিয়োগের সঙ্গে থাকে উন্নততর বিদেশি প্রযুক্তি। ফলে স্থানীয় শ্রমিক, কারিগর, প্রকৌশলি ও ব্যবস্থাপকরা প্রযুক্তি হস্তান্তরের সুবিধা পায়, অর্জন করে উন্নততর কর্মকৌশল। দেশের যেসব এলাকায় ইপিজেড স্থাপিত হয়েছে সেগুলি একেকটি প্রবৃদ্ধি কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে, সেগুলিতে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন রাস্তা, পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস লাইন, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা, ফায়ার ব্রিগেড, ডাকঘর, ব্যাংক ইত্যাদি ভৌত ও পরিসেবা সুবিধা। ইপিজেড সংলগ্ন এলাকায় নানাধরনের শপিং সেন্টার ও বাজার, পরিবহন, আবাসিক ব্যবস্থা, বিনোদন ইত্যাদির ব্যবসায় বিকাশ লাভ করেছে এবং এসবের মাধ্যমে বৃদ্ধি পেয়েছে সার্বিক অর্থনৈতিক তৎপরতা। নতুন সৃষ্ট অর্থনৈতিক কর্মকা-সমূহের গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে ইপিজেড-এর শিল্প প্রতিষ্ঠানাদির সম্মুখ বা পশ্চাৎ-অন্বয়ী শিল্পস্থাপনা। ইপিজেড-এর অনেক প্রতিষ্ঠানই এদেরকে উৎপাদন কাজের অংশ সাব-কন্ট্রাক্ট দেয়। সাব-কন্ট্রাক্টসহ ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহের বার্ষিক উৎপাদনের মোট মূল্য প্রায় ১ কোটি ডলার। সারণি ৪-এ বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকাসমূহে ২০১০-১১ এবং ২০১৮-১৯ সালে বিনিয়োগ ও রপ্তানির একটি তুলনামূলক চিত্র দেখা হলো।

সারণি ৪ ইপিজেডসমূহে বিনিয়োগ এবং তাদের রপ্তানি (মিলিয়ন মার্কিন ডলার)

ইপিজেড এলাকা ২০১০-১১ ২০১৮-১৯
বিনিয়োগ রপ্তানি বিনিয়োগ রপ্তানি
ঢাকা ৭২.৩৮ ১৫২১.৭৮ ৭৬.১৪ ২২০৬.৩১
চট্টগ্রাম ৮৫.৮৪ ১৬৬৬.৮৮ ৭৫.৬৯ ২৩৯১.৬৯
মংলা ০.৭৭ ২৭.৯৩ ১০.১৪ ৮৯.৪৪
কুমিল্লা ৩৬.২৬ ১৪৫.৪৬ ৩১.০৮ ৪৯০.৭৬
উত্তরা ১১.৯৮ ৬.৭৭ ৩২.০২ ২৯৩.৭৬
ইশ্বরদী ২১.৪০ ২৫.৯৬ ৮.১৮ ১৫০.২২
আদমজী ৩৭.০৫ ১৬৪.৬৮ ৫০.২২ ৮২৬.৪৪
কর্ণফুলি ৪৭.৫৬ ১৩৮.১৬ ৫০.৯০ ১০৭৫.৫২

উৎস অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ইকোনমিক রিভিউ, ২০২০

ইপিজেড সংলগ্ন এলাকায় যেসব পরিষেবা প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট, কন্টেইনার সার্ভিস, কুরিয়ার সার্ভিস, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। ইপিজেড-এর সকল প্রতিষ্ঠান মোট যে পরিমাণ মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে এ সকল পরিষেবা প্রতিষ্ঠানের আয় তার প্রায় ২ শতাংশ। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ তার শ্রমিকদের মজুরি ও ভাতা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদির বিল এবং স্টেশনারিজ ও অন্যান্য মালামাল কেনার মূল্য হিসেবে যত অর্থ ব্যয় করে তা স্থানীয় মূল্য সংযোজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানীয় শ্রমিকদের বছরে মজুরি এবং তাদের কল্যাণ খাতে যেমন, খাদ্য/টিফিন ভাতা, যাতায়াত ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ইত্যাদিতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। ইপিজেড-এ কর্মরত বিদেশি কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের একেকজন প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১,০০০ ডলার আয় করে এবং তারা এই আয়ের প্রায় ৪০%-এর সমপরিমাণ টাকা স্থানীয়ভাবে ব্যয় করে। এই অর্থও স্থানীয় মূল্য সংযোজনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ইপিজেড-ই হচ্ছে বাংলাদেশে গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সেবার সবচেয়ে বড় একক গ্রাহক এবং এসব খাতে ইপিজেড-এর বার্ষিক পরিশোধকৃত বিলের পরিমাণ প্রায় ৪২০ কোটি টাকা। ইপিজেড-এর প্রতিষ্ঠানসমূহ টেলিফোন বিল হিসেবে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করে। এসব প্রতিষ্ঠান মোট যে পরিমাণ মূল্য সংযোজন ঘটায় তার একটি অংশের উৎস হচ্ছে দেশীয় কাঁচামাল ও নানারকম মাধ্যমিক পণ্যসামগ্রী। এছাড়া ইপিজেড-এ প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানীয় বাজার থেকে স্টেশনারিজ, আসবাবপত্র, খাদ্যসামগ্রী, পেট্রোলিয়াম ও ল্যুব্রিকান্ট এবং যন্ত্রসরঞ্জাম কেনার অর্থ ব্যয় করে। এসবই ইপিজেড সংলগ্ন এলাকায় অর্থনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। [এস এম মাহফুজুর রহমান]