মৃধা, খোদাবক্স: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''মৃধা, খোদাবক্স '''(১৯৪৫-২০১০)  ধারাভাষ্যকার, ক্রীড়া সংগঠক, শিক্ষক। তিনি ১৯৪৫ সালের ২২ জানুয়ারি রাজশাহীর হেতেমখাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬১ সালে রাজশাহীর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
'''মৃধা, খোদাবক্স '''(১৯৪৫-২০১০)  ধারাভাষ্যকার, ক্রীড়া সংগঠক, শিক্ষক। তিনি ১৯৪৫ সালের ২২ জানুয়ারি রাজশাহীর হেতেমখাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬১ সালে রাজশাহীর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।


[[Image:MridhaKhodaBox.jpg|thumb|right|400px|খোদাবক্স মৃধা]]
খোদাবক্স ১৯৬০ সালে রাজশাহী শহরের হেতেমখাঁয় গড়ে তোলেন ‘সানরাইজ ক্লাব’। রাজশাহী অঞ্চলের জনপ্রিয় ক্রিকেট দল হিসেবে বিশ শতকের ষাটের দশকে অনেক টুর্নামেন্টে জয়লাভ করে ক্লাবটি। স্বাধীনতা-উত্তরকালে শেরে বাংলা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে একাধিকবার সেমিফাইনাল খেলেছে রাজশাহীর সানরাইজ ক্লাব।
খোদাবক্স ১৯৬০ সালে রাজশাহী শহরের হেতেমখাঁয় গড়ে তোলেন ‘সানরাইজ ক্লাব’। রাজশাহী অঞ্চলের জনপ্রিয় ক্রিকেট দল হিসেবে বিশ শতকের ষাটের দশকে অনেক টুর্নামেন্টে জয়লাভ করে ক্লাবটি। স্বাধীনতা-উত্তরকালে শেরে বাংলা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে একাধিকবার সেমিফাইনাল খেলেছে রাজশাহীর সানরাইজ ক্লাব।


৭ নং লাইন: ৮ নং লাইন:


খোদাবক্স মৃধা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাহী সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি রাজশাহী জেলার ক্রীড়া সংস্থা ও রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সের সদস্য ছিলেন। তবে খোদাবক্স মৃধা সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পান ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে।
খোদাবক্স মৃধা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাহী সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি রাজশাহী জেলার ক্রীড়া সংস্থা ও রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সের সদস্য ছিলেন। তবে খোদাবক্স মৃধা সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পান ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে।
[[Image:MridhaKhodaBox.jpg|thumb|right|খোদাবক্স মৃধা]]


১৯৭২ সালে কলকাতা ইস্ট বেঙ্গল বনাম রাজশাহী জেলা ফুটবল দলের একটি প্রদর্শনী ম্যাচ রাজশাহী বেতারে সম্প্রচার হয়েছিল, ধারাভাষ্যে খোদা বক্সের অভিষেক সে ম্যাচ দিয়েই। এরপর ১৯৭৮ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে যেসব টুর্নামেন্টের ধারাভাষ্য দিয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: এশিয়ান যুব ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ, উইলস এশিয়া কাপ ক্রিকেট, এশিয়ান ইয়ুথ অনুর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবল, সাফ গেমস, এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ক্রিকেট, সার্ক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট, নিটল-টাটা জাতীয় ফুটবল লিগ, এশিয়ান মহিলা জুনিয়র হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপ। এছাড়াও তিনি পাকিস্তান, ভারত, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরকালে টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচের ধারাভাষ্য দিয়েছেন। ধারাভাষ্য দেওয়ার সুবাদে তিনি নেপাল, পাকিস্তান, ও নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। ধারাভাষ্যকার হিসেবে ৩৮ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি সর্বশেষ ২০১০ সালের ২১ মার্চ চট্টগ্রাম এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত খেলার ধারাভাষ্য দেন।
১৯৭২ সালে কলকাতা ইস্ট বেঙ্গল বনাম রাজশাহী জেলা ফুটবল দলের একটি প্রদর্শনী ম্যাচ রাজশাহী বেতারে সম্প্রচার হয়েছিল, ধারাভাষ্যে খোদা বক্সের অভিষেক সে ম্যাচ দিয়েই। এরপর ১৯৭৮ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে যেসব টুর্নামেন্টের ধারাভাষ্য দিয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: এশিয়ান যুব ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ, উইলস এশিয়া কাপ ক্রিকেট, এশিয়ান ইয়ুথ অনুর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবল, সাফ গেমস, এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ক্রিকেট, সার্ক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট, নিটল-টাটা জাতীয় ফুটবল লিগ, এশিয়ান মহিলা জুনিয়র হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপ। এছাড়াও তিনি পাকিস্তান, ভারত, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরকালে টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচের ধারাভাষ্য দিয়েছেন। ধারাভাষ্য দেওয়ার সুবাদে তিনি নেপাল, পাকিস্তান, ও নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। ধারাভাষ্যকার হিসেবে ৩৮ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি সর্বশেষ ২০১০ সালের ২১ মার্চ চট্টগ্রাম এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত খেলার ধারাভাষ্য দেন।

০৫:৩৮, ৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মৃধা, খোদাবক্স (১৯৪৫-২০১০)  ধারাভাষ্যকার, ক্রীড়া সংগঠক, শিক্ষক। তিনি ১৯৪৫ সালের ২২ জানুয়ারি রাজশাহীর হেতেমখাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬১ সালে রাজশাহীর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

খোদাবক্স মৃধা

খোদাবক্স ১৯৬০ সালে রাজশাহী শহরের হেতেমখাঁয় গড়ে তোলেন ‘সানরাইজ ক্লাব’। রাজশাহী অঞ্চলের জনপ্রিয় ক্রিকেট দল হিসেবে বিশ শতকের ষাটের দশকে অনেক টুর্নামেন্টে জয়লাভ করে ক্লাবটি। স্বাধীনতা-উত্তরকালে শেরে বাংলা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে একাধিকবার সেমিফাইনাল খেলেছে রাজশাহীর সানরাইজ ক্লাব।

খেলাধুলার ধারাভাষ্যকার হিসেবে সমধিক পরিচিত খোদাবক্স পেশায় ছিলেন একজন শিক্ষক। তিনি ১৯৬৮ সালে সিলেটের এম.সি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন। এরপর তিনি রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ এবং রাজশাহী সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ১৯৯৪ সালের মে মাসে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন শরীয়তপুরের নড়িয়া সরকারি কলেজে। তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ২০০৩ সালে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

খোদাবক্স মৃধা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাহী সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি রাজশাহী জেলার ক্রীড়া সংস্থা ও রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সের সদস্য ছিলেন। তবে খোদাবক্স মৃধা সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পান ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে।

১৯৭২ সালে কলকাতা ইস্ট বেঙ্গল বনাম রাজশাহী জেলা ফুটবল দলের একটি প্রদর্শনী ম্যাচ রাজশাহী বেতারে সম্প্রচার হয়েছিল, ধারাভাষ্যে খোদা বক্সের অভিষেক সে ম্যাচ দিয়েই। এরপর ১৯৭৮ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে যেসব টুর্নামেন্টের ধারাভাষ্য দিয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: এশিয়ান যুব ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ, উইলস এশিয়া কাপ ক্রিকেট, এশিয়ান ইয়ুথ অনুর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবল, সাফ গেমস, এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ক্রিকেট, সার্ক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট, নিটল-টাটা জাতীয় ফুটবল লিগ, এশিয়ান মহিলা জুনিয়র হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপ। এছাড়াও তিনি পাকিস্তান, ভারত, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরকালে টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচের ধারাভাষ্য দিয়েছেন। ধারাভাষ্য দেওয়ার সুবাদে তিনি নেপাল, পাকিস্তান, ও নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। ধারাভাষ্যকার হিসেবে ৩৮ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি সর্বশেষ ২০১০ সালের ২১ মার্চ চট্টগ্রাম এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত খেলার ধারাভাষ্য দেন।

অধ্যাপনা ও ক্রীড়ার বাইরে সঙ্গীতেও অনুরক্ত ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী ও খন্ডকালীন সংবাদপাঠক। এছাড়াও তিনি ২০১০ সালে জাগো চলচ্চিত্রে অতিথি শিল্পী হিসেবে ধারাভাষ্যকার চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০০১ ও ২০০৫ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন থেকে কৃতী নাগরিক সংবর্ধনা ও ২০০৫ সালে ‘জাফর ইমাম স্মৃতি’ পুরস্কার পান তিনি। খোদাবক্স ২০১০ সালের ৩০ মার্চ ৬৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।  [সারা সুলতানা]