মৃত্তিকা পরিলেখ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৪৭, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

মৃত্তিকা পরিলেখ (Soil Profile)  উল্লম্বভাবে কাটা মৃত্তিকাতে উৎপত্তিগতভাবে সম্পর্কিত উন্মুক্ত ক্ষিতিজসমূহ। অন্যভাবে বলা যায়, ক্ষিতিজসমূহের উল্লম্ব ক্রম মৃত্তিকা পরিলেখ তৈরি করে। মৃত্তিকা পরিলেখের উৎপত্তি শুরু হয় মৃত্তিকা পৃষ্ঠে এবং ক্রমশ নিচের দিকে বিস্তার লাভ করে। একটি অপরিপক্ক মৃত্তিকাতে সাধারণত দুর্বলভাবে উৎপন্ন অগভীর পরিলেখ এবং একটি পরিপক্ক পুরাতন মৃত্তিকাতে সুগঠিত গভীর পরিলেখ বিদ্যমান। মৃত্তিকা পরিলেখে বিদ্যমান মৃৎজনিভাবে (pedogenic) উৎপন্ন ক্ষিতিজগুলোকে প্রধান ক্ষিতিজ (master horizon) বলা হয়।

মৃত্তিকার প্রধান ক্ষিতিজগুলো হলো ও, ক, খ, গ, র (R)। একটি অপরিপক্ক মৃত্তিকা পরিলেখে কেবল ক ক্ষিতিজ থাকে। এ ধরনের পরিলেখকে ক গ পরিলেখ বলা হয়। পরিপক্ক মৃত্তিকাতে ক ও গ ক্ষিতিজ দেখা যায়। সুতরাং এ ধরনের পরিলেখকে ক খ গ পরিলেখ বলা হয়। যদি খ ক্ষিতিজের বৈশিষ্ট্য প্রকট না হয় তবে সেই পরিলেখকে ক (খ) গ দ্বারা চিহ্নিত করা হয। মৃত্তিকা শ্রেণীকরণের সূত্রাবলী দ্বারা শ্রেণীবিন্যাস প্রধানত এদের পরিলেখের অঙ্গসংস্থান সম্পর্কিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে করা হয়।

মাঠে মৃত্তিকা পরিলেখের অঙ্গসংস্থানিক বর্ণনা কার্যত এর ক্ষিতিজসমূহের বর্ণনাকেই বুঝায়। একটি মৃত্তিকা পরিলেখের অঙ্গসংস্থানিক বর্ণনাতে অন্তর্ভুক্ত তথ্যগুলো হলো: ক্ষিতিজসমূহের নাম, প্রতিটি ক্ষিতিজের পুরুত্ব, স্তম্ভের গভীরতা, রঙের ধরনসহ রং; প্রতিটি ক্ষিতিজের গ্রথন, সংযুতি ও সংবদ্ধতা, মৃত্তিকা বিক্রিয়া (পিএইচ), শিকড়ের বিস্তৃতি এবং ক্ষিতিজসমূহের সীমানার বর্ণনা।

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকারের ধূসর সোপান ও উপত্যকা (valley) মৃত্তিকার ক্ষেত্রে অন্তঃমৃত্তিকায় অবস্থিত ই-ক্ষিতিজের মতোই পৃষ্ঠস্তর (এর অবস্থানের কারণে ক ক্ষিতিজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়) অত্যধিক আয়রন শূন্য (ferrolysed) হতে পারে।

মৃত্তিকা পরিলেখ

যেসব স্থানে এ স্তরে জৈবপদার্থের পরিমাণ কম সেসব স্থানে রঙের দিক থেকে ই-ক্ষিতিজ সদৃশ হয়। ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাওয়া মৃত্তিকাতে পৃষ্ঠ স্তরটি আগের খ বা গ ক্ষিতিজে বিদ্যমান বস্ত্ততে তৈরি হতে পারে এবং এসব ক্ষিতিজ থেকে রং, সংযুতি, পেডের উপর প্রলেপন ইত্যাদি ধর্ম উত্তরাধিকারসূত্রে পেতে পারে। গাঢ় লাল-বাদামি, বাদামি কর্বুরিত (mottled) এবং গাঢ় ধূসর সোপান মৃত্তিকার ক্ষেত্রে লাল কর্বুরিত অন্তঃস্তরকে গ-ক্ষিতিজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কারণ এ অন্তঃস্তরের বস্ত্ত এখনকার মৃত্তিকা উৎপন্ন হওয়ায় পূর্বে অবক্ষয়িত হয়েছে বলে মনে হয় এবং এ অবক্ষয় প্রক্রিয়া বর্তমান জৈব ক্রিয়াকলাপের সীমানার নিচের গভীরতা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।  [মোহাম্মদ সুলতান হোসেন]