মুজিবনগর উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা (মেহেরপুর জেলা)  আয়তন: ১১১.৫১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৬´ থেকে ২৩°৪৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৩৪´ থেকে ৮৮°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মেহেরপুর সদর উপজেলা, পূর্বে দামুড়হুদা ও মেহেরপুর সদর উপজেলা, দক্ষিণ ও পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।

জনসংখ্যা ৯৯১৪৩; পুরুষ ৪৯০৮৪, মহিলা ৫০০৫৯। মুসলিম ৯২৯৭০, হিন্দু ৯৪৫, বৌদ্ধ ১৩, খ্রিস্টান ৫২০০ এবং অন্যান্য ১৫।

জলাশয় ভৈরব নদী, সরস্বতী খাল ও দাতপুর বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন মুজিবনগর উপজেলা গঠিত হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০০০ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ২৯ ৩৩ ১০০২১ ৮৯১২২ ৮৮৯ ৬১.৯ ৪৯.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৮.৭৭ ১০০২১ ১১৪৩ ৬১.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
দরিয়াপুর ৪৭ ৫৯৫৩ ৯৬৪১ ৯৯৮৮ ৫২.৭
বাগোয়ান ২৮ ১০৭০১ ১৯৬৭১ ২০০৩৬ ৬১.৯
মহাজনপুর ৭৬ ৬৩৪৮ ৯৫২১ ৯৬০৬ ৪৩.৯
মোনাখালী ৮৫ ৪৫৫২ ১০২৫১ ১০৪২৯ ৪৪.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শেখ ফরিদের দরগাহ, বল্লভপুর মিশন ও গির্জা।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে (পূর্ব নাম: ভবেরপাড়া বৈদ্যনাথতলা) স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী এমএনএ। একই দিনে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে। উপজেলার মুজিবনগর, বল্লভপুর বটতলা, রতনপুর ঘাট, সেগুনবাগান, মানিকনগর ক্যাম্প, মোনাখালী পাকসেনা ক্যাম্প প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়।

বিস্তারিত দেখুন মুজিবনগর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৮।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ১০১, মন্দির ৪, মাযার ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫০.৫%; পুরুষ ৫০.৪%, মহিলা ৫০.৬%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৭, কিন্ডার গার্টেন ৪, কমিউনিটি ও এনজিও স্কুল ৪, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৩), মুজিবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৭), দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৬)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মাসিক: সাধক (অবলুপ্ত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৪।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ ও কমপ্লেক্স।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৩.৭৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৩৮%, শিল্প ০.৯০%, ব্যবসা ১৩.২৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৪৫%, চাকরি ২.৭০%, নির্মাণ ০.৭৩%, ধর্মীয় সেবা ০.০৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪% এবং অন্যান্য ৪.৩২%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৫.৮৯%, ভূমিহীন ৩৪.১১%। শহরে ৬৭.৭০% এবং গ্রামে ৬৫.৬৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, তামাক, আখ, ভুট্টা, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি অড়হর, আউশ ধান, সরিষা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, নারিকেল, তাল, পেয়ারা, লিচু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৫, গবাদিপশু ১৯৫, হাঁস-মুরগি ৪০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৩, কাঁচারাস্তা ৬৮৯ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, পাটশিল্প, নকশি কাঁথা, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১১। দরিয়াপুর হাট, আনন্দবাস হাট, কেদারগঞ্জ হাট, গৌরিনগর হাট ও রতনপুর হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   পাট, কলা, আলু, আখের গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৩.৭% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৫%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ৬.০%। এ উপজেলার ১১.৬৮% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৬.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৪.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৯.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৩।

এনজিও প্রশিকা, আশা, ব্র্যাক, দারিদ্র বিমোচন সংস্থা। [মো:মুরাদ হোসেন]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মুজিবনগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।