মির্জাগঞ্জ উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''মির্জাগঞ্জ উপজেলা''' ([[পটুয়াখালী জেলা|পটুয়াখালী জেলা]])  আয়তন: ১৭৫.৪৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১৩´ থেকে ২২°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং  ৯০°০৮´ থেকে ৯০°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাকেরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বরগুনা সদর উপজেলা, পূর্বে রাজগঞ্জ নদী ও পটুয়াখালী সদর ও দুমকি উপজেলা, পশ্চিমে বেতাগী উপজেলা।
'''মির্জাগঞ্জ উপজেলা''' ([[পটুয়াখালী জেলা|পটুয়াখালী জেলা]])  আয়তন: ১৬৭.১৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১৩´ থেকে ২২°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং  ৯০°০৮´ থেকে ৯০°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাকেরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বরগুনা সদর উপজেলা, পূর্বে রাজগঞ্জ নদী ও পটুয়াখালী সদর ও দুমকি উপজেলা, পশ্চিমে বেতাগী উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ১১৮০৫৪; পুরুষ ৫৯০০৩, মহিলা ৫৯০৫১। মুসলিম ১০৭৯১২, হিন্দু ১০১০৮ এবং অন্যান্য ৩৪।
''জনসংখ্যা'' ১২১৭১৬; পুরুষ ৫৯২৯২, মহিলা ৬২৪২৪। মুসলিম ১১১৮৯১, হিন্দু ৯৮১৭  বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ৩ এবং অন্যান্য ৪।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: রাজগঞ্জ, বুড়িশ্বরী ও শ্রীমন্ত।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: রাজগঞ্জ, বুড়িশ্বরী ও শ্রীমন্ত।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ৬ || ৬৮ || ৭৩ || ২০০৮৪  || ৯৭৯৭০  || ৬৭৩  || ৬০.১  || ৬০.
| - || ৬ || ৬৮ || ৭৩ || ২২৪০৬ || ৯৯৩১০ || ৭২৮ || ৬০.|| ৫৯.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১৭.৬৩ || ৫ || ২০০৮৪  || ১১৩৯  || ৬০.০৬
| ১৭.৬৩ || ৫ || ২২৪০৬ || ১২৭১ || ৬০.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| আমড়াগাছিয়া ১৩ || ৭৪৭০ || ১১০০৪ || ১১১৭৫  || ৬২.৮০
| আমড়াগাছিয়া ১৩ || ৭৪৭০ || ১০৮৫১ || ১১৬৭৩ || ৫৮.
|-
|-
| কাঁকড়াবুনিয়া ৪০ || ৬৬২৬ || ৮১১৫ || ৮১৩৯  || ৫৫.৮৮
| কাঁকড়াবুনিয়া ৪০ || ৬৬২৬ || ৮৭৮২ || ৮৯৫০ || ৫৮.
|-
|-
| দেউলি সুবিদখালী ২৭ || ৬৩৯৪ || ১০২২৩ || ৯৭৭৯  || ৬২.৭১
| দেউলি সুবিদখালী ২৭ || ৬৩৯৪ || ১১০৩৯ || ১০৮৮৬ || ৬০.
|-
|-
| মজিদবাড়ীয়া ৬৭ || ৬২০২ || ৮১১৬ || ৮২৭৪  || ৬২.৬০
| মজিদবাড়ীয়া ৬৭ || ৬২০২ || ৭৬৮৪ || ৮২২৫ || ৫৮.
|-
|-
| মাধবখালী ৫৪  || ৬৯৯৫ || ১০৪৭২ || ১০৬৫৭  || ৬৩.৭১
| মাধবখালী ৫৪  || ৬৯৯৫ || ৯৮২১ || ১০৮২০ || ৬২.
|-
|-
| মির্জাগঞ্জ ৮১  || ৬৯৩৩  || ১১০৭৩ || ১১০২৭  || ৫৪.১৭
| মির্জাগঞ্জ ৮১  || ৭৬২৫ || ১১১১৫ || ১১৮৭০ || ৫৭.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:MirzaganjUpazila.jpg|thumb|400px]]
[[Image:MirzaganjUpazila.jpg|thumb|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' মজিদবাড়ীয়ায় একগম্বুজ শাহী মসজিদ, রাধাগোবিন্দ মন্দির (কাঁঠালতলী)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' মজিদবাড়ীয়ায় একগম্বুজ শাহী মসজিদ, রাধাগোবিন্দ মন্দির (কাঁঠালতলী)।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে এ উপজেলার দেউলি গ্রামে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বহুসংখ্যক তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মির্জাগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং বহু পাকসেনা হতাহত হয়। ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা মির্জাগঞ্জ থানা দখল করে। এ সময় কয়েকজন রাজাকার নিহত হয়।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে এ উপজেলার দেউলি গ্রামে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বহুসংখ্যক তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মির্জাগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং বহু পাকসেনা হতাহত হয়। ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা মির্জাগঞ্জ থানা দখল করে। এ সময় কয়েকজন রাজাকার নিহত হয়।
 
''বিস্তারিত দেখুন''  মির্জাগঞ্জ উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৮।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩৬০, মন্দির ৪৫, দরগাহ ২, মাযার ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: উপজেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, দরগাহ শরীফ জামে মসজিদ, চৈতা দরবার শরীফ জামে মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির, কাঁঠালতলী রাধাগোবিন্দ মন্দির, ইয়ারউদ্দিন খলিফার মাযার।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩৬০, মন্দির ৪৫, দরগাহ ২, মাযার ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: উপজেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, দরগাহ শরীফ জামে মসজিদ, চৈতা দরবার শরীফ জামে মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির, কাঁঠালতলী রাধাগোবিন্দ মন্দির, ইয়ারউদ্দিন খলিফার মাযার।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৬০.৪%; পুরুষ ৬৫.%, মহিলা ৫৫.%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১, কারিগরি বিদ্যালয় ৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৩, কিন্ডার গার্টেন ৩, মাদ্রাসা ৫৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সুবিদখালী ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), সুবিদখালী মহিলা  কলেজ (২০০০), আখতার হোসেন চৌধুরী মোমোরিয়াল কলেজ (২০০২), সুবিদখালী র. ই. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৩), সুবিদখালী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৪), ঝাটিবুনিয়া ম. ই. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৫), কাঁঠালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৩), চৈতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৮), সুবিদখালী আর কে বালিকা বিদ্যালয় (১৯৯০), কাঁঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯২৪), সুবিদখালী দারুস্ সুন্নাহ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৬০), চৈতা নেছারিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৪০)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৯.৪%; পুরুষ ৬২.%, মহিলা ৫৬.%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১, কারিগরি বিদ্যালয় ৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৩, কিন্ডার গার্টেন ৩, মাদ্রাসা ৫৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সুবিদখালী ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), সুবিদখালী মহিলা  কলেজ (২০০০), আখতার হোসেন চৌধুরী মোমোরিয়াল কলেজ (২০০২), সুবিদখালী র. ই. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৩), সুবিদখালী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৪), ঝাটিবুনিয়া ম. ই. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৫), কাঁঠালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৩), চৈতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৮), সুবিদখালী আর কে বালিকা বিদ্যালয় (১৯৯০), কাঁঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯২৪), সুবিদখালী দারুস্ সুন্নাহ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৬০), চৈতা নেছারিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৪০)।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ১৫,  লাইব্রেরি ৩১, সিনেমা হল ১।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ১৫,  লাইব্রেরি ৩১, সিনেমা হল ১।
৭১ নং লাইন: ৭৩ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১১২, গবাদিপশু ১৫, হাঁস-মুরগি ২৫. হ্যাচারি ৩।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১১২, গবাদিপশু ১৫, হাঁস-মুরগি ২৫. হ্যাচারি ৩।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৯৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৫৩ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৮২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৯৫ কিমি; নৌপথ ৬২ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' ঘোড়ার গাড়ি, পালকি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' ঘোড়ার গাড়ি, পালকি।
৮৩ নং লাইন: ৮৫ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  কলা, ডাল, শাকসবজি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  কলা, ডাল, শাকসবজি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৯.৫২% (শহরে ২৯.৩২% এবং গ্রামে ১৭.৬২%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৩.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯০.১১%, পুকুর ৭.৬৩%, ট্যাপ .৪০% এবং অন্যান্য .৮৬%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৬.%, ট্যাপ ১.০% এবং অন্যান্য .%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫৪.৮১% (গ্রামে ৫০.১১% ও শহরে ৭৯.০৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪০.৫০% (গ্রামে ৪৪.৬৭% ও শহরে ১৯.০২%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .৬৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৮২.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৬.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ক্লিনিক ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ক্লিনিক ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬।
৯৫ নং লাইন: ৯৭ নং লাইন:
''এনজিও'' আশা, ব্র্যাক, কেয়ার।  [মো. মিজানুর রহমান]
''এনজিও'' আশা, ব্র্যাক, কেয়ার।  [মো. মিজানুর রহমান]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মির্জাগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মির্জাগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Mirzaganj Upazila]]
[[en:Mirzaganj Upazila]]

১৫:০৩, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মির্জাগঞ্জ উপজেলা (পটুয়াখালী জেলা)  আয়তন: ১৬৭.১৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১৩´ থেকে ২২°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং  ৯০°০৮´ থেকে ৯০°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাকেরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বরগুনা সদর উপজেলা, পূর্বে রাজগঞ্জ নদী ও পটুয়াখালী সদর ও দুমকি উপজেলা, পশ্চিমে বেতাগী উপজেলা।

জনসংখ্যা ১২১৭১৬; পুরুষ ৫৯২৯২, মহিলা ৬২৪২৪। মুসলিম ১১১৮৯১, হিন্দু ৯৮১৭ বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ৩ এবং অন্যান্য ৪।

জলাশয় প্রধান নদী: রাজগঞ্জ, বুড়িশ্বরী ও শ্রীমন্ত।

প্রশাসন মির্জাগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৮১২ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৬৮ ৭৩ ২২৪০৬ ৯৯৩১০ ৭২৮ ৬০.৪ ৫৯.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৭.৬৩ ২২৪০৬ ১২৭১ ৬০.৪
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আমড়াগাছিয়া ১৩ ৭৪৭০ ১০৮৫১ ১১৬৭৩ ৫৮.৩
কাঁকড়াবুনিয়া ৪০ ৬৬২৬ ৮৭৮২ ৮৯৫০ ৫৮.৩
দেউলি সুবিদখালী ২৭ ৬৩৯৪ ১১০৩৯ ১০৮৮৬ ৬০.৯
মজিদবাড়ীয়া ৬৭ ৬২০২ ৭৬৮৪ ৮২২৫ ৫৮.৩
মাধবখালী ৫৪ ৬৯৯৫ ৯৮২১ ১০৮২০ ৬২.৯
মির্জাগঞ্জ ৮১ ৭৬২৫ ১১১১৫ ১১৮৭০ ৫৭.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মজিদবাড়ীয়ায় একগম্বুজ শাহী মসজিদ, রাধাগোবিন্দ মন্দির (কাঁঠালতলী)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে এ উপজেলার দেউলি গ্রামে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বহুসংখ্যক তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মির্জাগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং বহু পাকসেনা হতাহত হয়। ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা মির্জাগঞ্জ থানা দখল করে। এ সময় কয়েকজন রাজাকার নিহত হয়।

বিস্তারিত দেখুন মির্জাগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৮।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩৬০, মন্দির ৪৫, দরগাহ ২, মাযার ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: উপজেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, দরগাহ শরীফ জামে মসজিদ, চৈতা দরবার শরীফ জামে মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির, কাঁঠালতলী রাধাগোবিন্দ মন্দির, ইয়ারউদ্দিন খলিফার মাযার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৯.৪%; পুরুষ ৬২.২%, মহিলা ৫৬.৭%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১, কারিগরি বিদ্যালয় ৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৩, কিন্ডার গার্টেন ৩, মাদ্রাসা ৫৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সুবিদখালী ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), সুবিদখালী মহিলা  কলেজ (২০০০), আখতার হোসেন চৌধুরী মোমোরিয়াল কলেজ (২০০২), সুবিদখালী র. ই. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৩), সুবিদখালী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৪), ঝাটিবুনিয়া ম. ই. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৫), কাঁঠালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৩), চৈতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৮), সুবিদখালী আর কে বালিকা বিদ্যালয় (১৯৯০), কাঁঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯২৪), সুবিদখালী দারুস্ সুন্নাহ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৬০), চৈতা নেছারিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৪০)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১৫,  লাইব্রেরি ৩১, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬২.৪৬%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৮৪%, শিল্প ০.৮১%, ব্যবসা ১২.২০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.২৯%, চাকরি ১০.৩৫%, নির্মাণ ১.৬১%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩১% এবং অন্যান্য ৬.৮৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৮১.৪১%, ভূমিহীন ১৮.৫৯%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, ডাল, চীনাবাদাম, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তামাক, পাট, আখ।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, তরমুজ, ফুটি।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১১২, গবাদিপশু ১৫, হাঁস-মুরগি ২৫. হ্যাচারি ৩।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৯৫ কিমি; নৌপথ ৬২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়ার গাড়ি, পালকি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, আটাকল, বরফকল, করাতকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫০, মেলা ২। মির্জাগঞ্জ বাজার, মির্জাগঞ্জ হাট, সুবিদখালী হাট, কাঁকড়াবুনিয়া হাট, মজিদবাড়ীয়া হাট ও কাঁঠালতলী হাট, কাঁঠালতলী বাজার, মাধবখালী বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  কলা, ডাল, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৩.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.০%, ট্যাপ ১.০% এবং অন্যান্য ৩.০%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮২.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৬.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ০.৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ক্লিনিক ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮২২ ও ১৯৬০ সালের প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় এবং ১৮৭৬ সালের বন্যায়  বহুলোকের প্রাণহানি ঘটে এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও আশা, ব্র্যাক, কেয়ার। [মো. মিজানুর রহমান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মির্জাগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।