মাটিরাঙ্গা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''মাটিরাঙ্গা উপজেলা''' (খাগড়াছড়ি জেলা)  আয়তন: ৪৯৫.৩৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৬´ থেকে ২৩°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯১°৫৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর ও পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে রামগড় উপজেলা, পূর্বে পানছড়ি, খাগড়াছড়ি সদর ও মহালছড়ি উপজেলা।
'''মাটিরাঙ্গা উপজেলা''' ([[খাগড়াছড়ি জেলা|খাগড়াছড়ি জেলা]])  আয়তন: ৪০৪.৭৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৬´ থেকে ২৩°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯১°৫৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর ও পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে রামগড় উপজেলা, পূর্বে পানছড়ি, খাগড়াছড়ি সদর ও মহালছড়ি উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ১০৬৩২২; পুরুষ ৫৫৩৭০, মহিলা ৫০৯৫২। মুসলিম ৭১০৫৫, হিন্দু ২৩৩০৩, বৌদ্ধ ১৭৮, খ্রিস্টান ১১৬৯০ এবং অন্যান্য ৯৬। এ উপজেলায় ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ১১১৫৩৮; পুরুষ ৫৬০৭৭, মহিলা ৫৫৪৬১। মুসলিম ৮০৩৯৭, হিন্দু ২২৯৮৪, বৌদ্ধ ৭৪৯৯, খ্রিস্টান ৪৪৩ এবং অন্যান্য ২১৫। এ উপজেলায় ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' গোমতি, পিলাক ও ফেনী নদী এবং ধলিয়া খাল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' গোমতি, পিলাক ও ফেনী নদী এবং ধলিয়া খাল উল্লেখযোগ্য।
১৪ নং লাইন: ১৪ নং লাইন:
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| || ৭ || ২৮  || ৩৪২  || ৮৩০৬  || ৯৮০১৬  || ২১৫  || ৫৭.৮  || ৩৬.
| || ৭ || ২৩ || ২৯৬ || ২৩৯১৩ || ৮৭৬২৫ || ২৭৬ || ৬০.|| ৩৯.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)   || ওয়ার্ড  ||  মহল্লা  || লোকসংখ্যা   || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)   || শিার হার (%)  
|-
|-
| .৫৯  || ১  || ৮৩০৬  || ৩২০৭  || ৫৭.৮৩
| ২৫.৫০ || || ৫৩ || ২৩৯১৩ || ৯৩৮ || ৬০.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" |  ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
৩৮ নং লাইন: ৩৩ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| গুইমারা ৩৫  || ২২৪০০  || ৮৩৬৭ || ৭৫১৫  || ৩৮.২৭
| আমতলী ১৩ || ৮১৬ || ৪১৫৫ || ৪১৭১ || ৩৯.
 
|-
|-
| গুমতি ৪৭ || ২৫৬০০ || ৮৬৩৬ || ৮১৬৭  || ৩৫.২৪
| গুমতি ৪৭ || ২৫৬০০ || ৬১৪৭ || ৬১৬৯ || ৪০.
 
|-
|-
| তবলছড়ি ৭৬ || ৭৬৮০ || ৮১৩৯ || ৭৬৭৩  || ৩৫.৪৯
| তবলছড়ি ৭৬ || ৭৬৮০ || ৯০৭২ || ৯২৭২ || ৪৩.
 
|-
|-
| তাইনডং ৮৩ || ১০৮৮০ || ৬৫৪৫ || ৬৪৫৯  || ৩৭.৬৯
| তাইনডং ৮৩ || ১০৮৮০ || ৬৯৫৯ || ৬৯৭৬ || ৪২.
 
|-
|-
| বড়নালা ১১ || ৯৬০০ || ৪৮৭৭ || ৪১৫৩  || ৪১.৬১
| বড়নালা  ১৭ || ৯৬০০ || ৪৯৪১ || ৪৬৪৫ || ৩৮.
 
|-
|-
| বেলছড়ি ২৩ || ১১৫২০ || ৫৫৯১ || ৫১৪৫  || ৩৯.৬৯
| বেলছড়ি ২৩ || ১১৫২০ || ৬৩৮৮ || ৬৫৯৪ || ৪৩.
 
|-
|-
| মাটিরাঙ্গা ৫৯ || ৩৩৯২০ || ১৩২১৫ || ১১৮৪০  || ৩৯.০৩
| মাটিরাঙ্গা ৫৯ || ৩৩৯২০ || ৬১৬০ || ৫৯৭৬ || ৩২.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:MatirangaUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' আলুটিলা চৈত্য বৌদ্ধ বিহার, ভগবান টিলা।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' আলুটিলা চৈত্য বৌদ্ধ বিহার, ভগবান টিলা।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৫৫, মন্দির ২৭, প্যাগোডা ২৫, তীর্থস্থান ১ (মাতাই পুখিরি)। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মাটিরাঙ্গা জামে মসজিদ, তৈলাফাং শিব মন্দির, গুমতি শিব মন্দির।
''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালের মে মাসে এলাকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ইপিআর সদস্যদের সহায়তায় উপজেলার ৫০-৬০ জন তরুণের একটি দলের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। পরবর্তীতে শিলাছড়ি ও অন্যান্য স্থানের আরও প্রায় ৬০ জনকে সংগঠিত করে হরিণা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধারা ডাইনছড়ির প্রতিরোধ যুদ্ধ ও ফেনী খাল যুদ্ধসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ ও অপারেশনে অংশ নেন।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৭.৯%; পুরুষ ৪৬.১%, মহিলা ২৯%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৫, কমিউনিটি স্কুল ১২, বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র ৪, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মাটিরাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯২), মাটিরাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মাটিরাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তবলছড়ি টি.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), তবলছড়ি কদমতলি হাইস্কুল (১৯৫৯), মাটিরাঙ্গা কারিগরি ইনস্টিটিউট, তাইনডং ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৮২)।
''বিস্তারিত দেখুন'' মাটিরাঙ্গা উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।


[[Image:MatirangaUpazila.jpg|thumb|right|মাটিরাঙ্গা উপজেলা]]
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৫৫, মন্দির ২৭, প্যাগোডা ২৫, তীর্থস্থান ১ (মাতাই পুখিরি)। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মাটিরাঙ্গা জামে মসজিদ, তৈলাফাং শিব মন্দির, গুমতি শিব মন্দির।
 
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪২.৪%; পুরুষ  ৪৭.৪%, মহিলা ৩৮.০%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৫, কমিউনিটি স্কুল ১২, বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র ৪, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মাটিরাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯২), মাটিরাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মাটিরাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তবলছড়ি টি.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), তবলছড়ি কদমতলি হাইস্কুল (১৯৫৯), মাটিরাঙ্গা কারিগরি ইনস্টিটিউট, তাইনডং ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৮২)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: পার্বত্য বাণী।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: পার্বত্য বাণী।
৮০ নং লাইন: ৭২ নং লাইন:
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' পাট, কাউন, সরিষা, তিল, মানকচু।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' পাট, কাউন, সরিষা, তিল, মানকচু।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' কাঁঠাল, কলা, আম, জাম, লিচু, পেঁপে, লেবু, আনারস, কুল, আতা, পেয়ারা, কামরাঙা, বেল, বাতাবি লেবু।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' কাঁঠাল, কলা, আম, জাম, লিচু, পেঁপে, লেবু, আনারস, কুল, আতা, পেয়ারা, কামরাঙা, বেল, বাতাবি লেবু।


''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৬৩, হাঁস-মুরগি ৪০, হ্যাচারি ১।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৬৩, হাঁস-মুরগি ৪০, হ্যাচারি ১।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকারাস্তা ১২৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫২৬ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' গরুর গাড়ি।
৯২ নং লাইন: ৮৬ নং লাইন:
''হাটবাজার ও মেলা'' মাটিরাঙ্গা হাট, গুইমারা হাট, তবলছড়ি হাট, বেলছড়ি হাট, গুমতি হাট, তাইনডং হাট ও ক্যাজরী চৌধুরীর মেলা উল্লেখযোগ্য।
''হাটবাজার ও মেলা'' মাটিরাঙ্গা হাট, গুইমারা হাট, তবলছড়ি হাট, বেলছড়ি হাট, গুমতি হাট, তাইনডং হাট ও ক্যাজরী চৌধুরীর মেলা উল্লেখযোগ্য।


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   কাঠ, ধান, তুলা, কলা, পেঁপে।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' কাঠ, ধান, তুলা, কলা, পেঁপে।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে .১৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৮.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৫৬.%, ট্যাপ ০.২৬%, পুকুর ৪.৬৬% এবং অন্যান্য ৩৮.২৮%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৬৮.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য ৩১.%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ১৯.৮৬% (গ্রামে ১৫.৭১% এবং শহরে ৭৫.৭৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৪.৮১% (গ্রামে ৬৮.০৩% এবং শহরে ২১.৩৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১৫.৩৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৩৩.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৫.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১১.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, পল্লীস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, পল্লীস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩।
১০৪ নং লাইন: ৯৮ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক।  [প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা]
''এনজিও'' ব্র্যাক।  [প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মাটিরাঙ্গা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মাটিরাঙ্গা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Matiranga Upazila]]
[[en:Matiranga Upazila]]

১১:১২, ৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মাটিরাঙ্গা উপজেলা (খাগড়াছড়ি জেলা)  আয়তন: ৪০৪.৭৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৬´ থেকে ২৩°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯১°৫৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর ও পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে রামগড় উপজেলা, পূর্বে পানছড়ি, খাগড়াছড়ি সদর ও মহালছড়ি উপজেলা।

জনসংখ্যা ১১১৫৩৮; পুরুষ ৫৬০৭৭, মহিলা ৫৫৪৬১। মুসলিম ৮০৩৯৭, হিন্দু ২২৯৮৪, বৌদ্ধ ৭৪৯৯, খ্রিস্টান ৪৪৩ এবং অন্যান্য ২১৫। এ উপজেলায় ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় গোমতি, পিলাক ও ফেনী নদী এবং ধলিয়া খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন মাটিরাঙ্গা থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮০ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
২৩ ২৯৬ ২৩৯১৩ ৮৭৬২৫ ২৭৬ ৬০.৪ ৩৯.৯
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিার হার (%)
২৫.৫০ ৫৩ ২৩৯১৩ ৯৩৮ ৬০.৪
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আমতলী ১৩ ৮১৬ ৪১৫৫ ৪১৭১ ৩৯.৫
গুমতি ৪৭ ২৫৬০০ ৬১৪৭ ৬১৬৯ ৪০.৮
তবলছড়ি ৭৬ ৭৬৮০ ৯০৭২ ৯২৭২ ৪৩.২
তাইনডং ৮৩ ১০৮৮০ ৬৯৫৯ ৬৯৭৬ ৪২.০
বড়নালা ১৭ ৯৬০০ ৪৯৪১ ৪৬৪৫ ৩৮.১
বেলছড়ি ২৩ ১১৫২০ ৬৩৮৮ ৬৫৯৪ ৪৩.৫
মাটিরাঙ্গা ৫৯ ৩৩৯২০ ৬১৬০ ৫৯৭৬ ৩২.৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ আলুটিলা চৈত্য বৌদ্ধ বিহার, ভগবান টিলা।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের মে মাসে এলাকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ইপিআর সদস্যদের সহায়তায় উপজেলার ৫০-৬০ জন তরুণের একটি দলের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। পরবর্তীতে শিলাছড়ি ও অন্যান্য স্থানের আরও প্রায় ৬০ জনকে সংগঠিত করে হরিণা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধারা ডাইনছড়ির প্রতিরোধ যুদ্ধ ও ফেনী খাল যুদ্ধসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ ও অপারেশনে অংশ নেন।

বিস্তারিত দেখুন মাটিরাঙ্গা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৫৫, মন্দির ২৭, প্যাগোডা ২৫, তীর্থস্থান ১ (মাতাই পুখিরি)। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মাটিরাঙ্গা জামে মসজিদ, তৈলাফাং শিব মন্দির, গুমতি শিব মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪২.৪%; পুরুষ ৪৭.৪%, মহিলা ৩৮.০%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৫, কমিউনিটি স্কুল ১২, বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র ৪, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মাটিরাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯২), মাটিরাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মাটিরাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তবলছড়ি টি.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), তবলছড়ি কদমতলি হাইস্কুল (১৯৫৯), মাটিরাঙ্গা কারিগরি ইনস্টিটিউট, তাইনডং ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৮২)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: পার্বত্য বাণী।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ৫, মহিলা সংগঠন ৪, খেলার মাঠ ২০, ক্লাব ১০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬০.৫%, অকৃষি শ্রমিক ৯.৭৯%, শিল্প ০.৪৬%, ব্যবসা ১১.৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৫৩%, চাকরি ৫.৪৯%, নির্মাণ ০.৫৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৫% এবং অন্যান্য ১০.২৯%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৬.৯২%, ভূমিহীন ৬৩.০৮%। শহরে ২৬.৭৯% এবং গ্রামে ৩৭.৬৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, রাবার, আখ, আলু, ভূট্টা, তুলা, অড়হর, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি পাট, কাউন, সরিষা, তিল, মানকচু।

প্রধান ফল-ফলাদি কাঁঠাল, কলা, আম, জাম, লিচু, পেঁপে, লেবু, আনারস, কুল, আতা, পেয়ারা, কামরাঙা, বেল, বাতাবি লেবু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৬৩, হাঁস-মুরগি ৪০, হ্যাচারি ১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫২৬ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা স’মিল, আটাকল, প্লাইউড ফ্যাক্টরি, ব্রিকফিল্ড।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা মাটিরাঙ্গা হাট, গুইমারা হাট, তবলছড়ি হাট, বেলছড়ি হাট, গুমতি হাট, তাইনডং হাট ও ক্যাজরী চৌধুরীর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কাঠ, ধান, তুলা, কলা, পেঁপে।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৮.০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৬৮.৭%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ৩১.০%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৩.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৫.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১১.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, পল্লীস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩।

এনজিও ব্র্যাক।  [প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মাটিরাঙ্গা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।