ভাষা আন্দোলন জাদুঘর

ভাষা আন্দোলন জাদুঘর  আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাভাষার পরিচয়, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, এ আন্দোলনের যাবতীয় তথ্যাবলী এবং ভাষা শহীদ ও ভাষাসৈনিকদের যাবতীয় স্মৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘর। ভাষা আন্দোলন জাদুঘর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অধ্যাপক এম.এ বার্ণিকের উদ্যোগে সর্বপ্রথম একটি অর্গানাইজিং কমিটি গঠন করা হয় ১৯৮৯ সালে। কমিটিতে অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলামকে আহবায়ক, আবুল কাসেম, মোস্তফা মাহবুবুল আলম, কাজী আব্দুর রহিম, মাহমুদ বিন কাসেম, এম.আর মাহবুবুকে সদস্য এবং এম.এ বার্ণিককে সদস্য-সম্পাদক করে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু হয়। পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. শামসুল হককে নির্বাচন করা হয়। ১৯৮৯ সালের ২ জুন ঢাকাস্থ বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

জাদুঘরের প্রথম অফিস অস্থায়ীভাবে ড. নূরুল হক ভূইয়ার আসাদ গেটস্থ বাসভবন ২/৯, ব্লক-এ, লালমাটিয়া স্থাপন করা হয়। পরে ১৬ ওয়েস্ট অ্যান্ড স্ট্রিট, ধানমন্ডি অধ্যাপক আবুল কাসেমের বাসভবন ও ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট হয়ে ২০০৬ সালে কাজী গোলাম মাহবুবের বাসভবনে স্থানান্তরিত হয়ে। কাজী গোলাম মাহবুব ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের আর্থিক সহযোগিতায় জাদুঘরের আলাদা প্রদর্শন বিভাগ ও অন্যান্য কার্যক্রমে গতি সঞ্চার হয়। বর্তমানে জাদুঘর যে সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো:

ভাষা-আন্দোলনের মুখপত্র সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকা, সিলেট থেকে প্রকাশিত নওবেলাল পত্রিকা এবং সমকালীন অন্যান্য পত্রপত্রিকা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিষয়ক তথ্যবহুল গ্রন্থ প্রকাশ;

ভাষা-আন্দোলন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ, সাময়িকী সংগ্রহ এবং একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি গড়ে তোলার জন্য গ্রন্থ সংগ্রহ;

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বর্ষপঞ্জিকে ভিত্তি করে মুহম্মদ তকীয়ুল্লাহ কর্তৃক প্রণীত ‘প্রমিত বাংলা বর্ষপঞ্জি’ ভাষা আন্দোলন জাদুঘর কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রচারের পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে;

ভাষাশহীদ অহিউল্লাহর ছবি জ্ঞাত ছিল না, জাদুঘরের উদ্যোগে অহিউল্লাহর গঠনপ্রকৃতির বিবরণের ভিত্তিতে শিল্পী শ্যামল বিশ্বাসকে দিয়ে উক্ত শহীদের একটি ছবি অঙ্কন করা হয়েছে;

২০০৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে জাদুঘরের ‘প্রদর্শন বিভাগ’ চালু করা হয়েছে;

জীবিত ভাষাসৈনিকদের স্মৃতিচারণমূলক সাক্ষাৎকার গ্রহণ, সকল ভাষাসৈনিক ও ভাষাশহীদদের স্মৃতিচিহ্ন সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে। এ পর্যন্ত ভাষাসৈনিকের শতাধিক পূর্ণাঙ্গ জীবনী সংগৃহীত হয়েছে;

এবং ভাষাশহীদ পরিবার, ভাষাসৈনিক পরিবার, জীবিত  ভাষাসৈনিক এবং আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও  প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্মৃতিচিহ্ন বা স্মারক সংগৃহীত হয়েছে। [এম.আর মাহবুব]