বোরহানউদ্দিন উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''বোরহানউদ্দিন উপজেলা''' ([[ভোলা জেলা|ভোলা জেলা]])  আয়তন: ২৮৪.৬৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২১´ থেকে ২২°৩৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৫´ থেকে ৯০°৫১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলা, দক্ষিণে লালমোহন উপজেলা, পূর্বে তজুমদ্দিন উপজেলা, পশ্চিমে বাউফল উপজেলা।
'''বোরহানউদ্দিন উপজেলা''' ([[ভোলা জেলা|ভোলা জেলা]])  আয়তন: ২৮৪.৬৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২১´ থেকে ২২°৩৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৫´ থেকে ৯০°৫১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলা, দক্ষিণে লালমোহন উপজেলা, পূর্বে তজুমদ্দিন উপজেলা, পশ্চিমে বাউফল উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৪৪১৩৭; পুরুষ ১২৫৮২৮, মহিলা ১১৮৩০৯। মুসলিম ২৩০৯০০, হিন্দু ১৩১৭৪, বৌদ্ধ ১৪ এবং অন্যান্য ৪৯।
''জনসংখ্যা'' ২৩৩৮৬০; পুরুষ ১১৫০৩৩, মহিলা ১১৮৮২৭ (আদমশুমারি ২০১১)। মুসলিম ২৩০৯০০, হিন্দু ১৩১৭৪, বৌদ্ধ ১৪ এবং অন্যান্য ৪৯ (আদমশুমারি ২০০১)।


''জলাশয়'' তেঁতুলিয়া, বেতুয়া ও গঙ্গাপুর নদী এবং দেউলা বিল ও মেঘনা-শাহবাজপুর চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' তেঁতুলিয়া, বেতুয়া ও গঙ্গাপুর নদী এবং দেউলা বিল ও মেঘনা-শাহবাজপুর চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ৯ || ৫৭ || ৫৮  || ৩৫৬৫৭  || ২০৮৪৮০  || ৮৫৮  || ৫০.৯ || ৩৪.
| ১ || ৯ || ৫৭ || ৪৬ || ৩৮৪০১ || ১৯৫৪৫৯ || ৮২২ || ৫০.৯ (২০০১) || ৪৫.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৩.২৭ || ৯ || ১৩ || ৯৬০৪  || ২৯৩৭ || ৫৭.৯৫
| ৩.২৭ (২০০১) || ৯ || ১৩ || ১৩১১০ || ২৯৩৭ (২০০১) || ৬৯.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩২ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ২৫.৬৬ || ৩ || ২৬০৫৩  || ১০১৫ || ৪৮.১৮
| ২৫.৬৬ (২০০১) || ৩ || ২৫২৯১ || ১০১৫ (২০০১) || ৫৬.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৪২ নং লাইন: ৪২ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| কচিয়া ৪৭ || ৭২০৯  || ১৫৭০৩ || ১৫৪৪৮  || ৪০.০০
| কচিয়া ৪৭ || ৬৪০৮ || ১৬৮০৮ || ১৬৯১৪ || ৪৮.
|-
|-
| কুতুবা ৫৭ || ৫৮৮৪  || ১১৫৫০ || ১১২৪২  || ৪৩.২৪
| কুতুবা ৫৭ || ৫৭০২ || ১০৮৬৮ || ১১৩৭৮ || ৫৮.
|-
|-
| গঙ্গাপুর ২৮ || ১২৯৯৬  || ১৩৯৫৬ || ১০৫৬১  || ৩০.০১
| গঙ্গাপুর ২৮ || ১০৯৮২ || ৮২৪৫ || ৮৪৭৯ || ৪৫.
|-
|-
| টবগী ৯৫ || ৬৩৩৮  || ১৩৬৪৭ || ১৩২৩৮  || ৩৭.১৩
| টবগী ৯৫ || ৬৩৩৭ || ১৫৬৫৩ || ১৬০৬০ || ৫০.
|-
|-
| দেউলা ১৯ || ৬১৯৫  || ১০৬৩৮ || ১১৩০৫  || ২৬.৪২
| দেউলা ১৯ || ৬১৯২ || ১০১৩৫ || ১১৩৬৬ || ৩৪.
|-
|-
| পাকশিয়া ৬৬ || ৬৪৩৩ || ১৬৩২৮ || ১৪৯৭৩  || ৩৬.৪৩
| পাকশিয়া ৬৬ || ৬৪৩৩ || ১১৬৪১ || ১২০৪০ || ৪৩.
|-
|-
| বড় মানিকা ১৬ || ৭১৭২  || ১৭৩৮৯ || ১৬৮২৪  || ৩৯.৪৩
| বড় মানিকা ১৬ || ৬৯২৮ || ১৭৮৯৮ || ১৯০২৬ || ৪৫.
|-
|-
| সাচড়া ৭৬ || ৫২৫৪  || ১০৫৬৮ || ১০৫৬৬  || ২৩.১৪
| সাচড়া ৭৬ || ৫০৪৬ || ৯৫৪৫ || ৯৮৮৬ || ৩৬.
|-
|-
| হাসান নগর ৩৮ || ৫৬৯৩  || ১০৯৭৭ || ৯৬২০  || ৪৫.৯৪
| হাসান নগর ৩৮ || ৫২৯৩ || ৭৪৮৭ || ৭৩২১ || ৫৭.
|}
|}
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:BurhanuddinUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:BurhanuddinUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বোরহানউদ্দিন চৌধুরীবাড়ি মসজিদ, বিদ্যাসুন্দরীর দিঘি, হায়দার আলীর বাড়ি, দেউলা তালুকদার বাড়ি, মঙ্গলের দিঘি, সাজির কাচারী, মনিরাম মঠ।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বোরহানউদ্দিন চৌধুরীবাড়ি মসজিদ, বিদ্যাসুন্দরীর দিঘি, হায়দার আলীর বাড়ি, দেউলা তালুকদার বাড়ি, মঙ্গলের দিঘি, সাজির কাচারী, মনিরাম মঠ।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে সুবেদার সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে সচরা-দেউলা গ্রামে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াই হয়। ২২ অক্টোবর পাকবাহিনী তেতুঁলিয়া, বেতুয়া ও দেউলা গ্রামে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করে। সিদ্দিকুর রহমান সহযোদ্ধাদের নিয়ে দেউলা দিঘির পাড়ে পাকবাহিনীকে আক্রমণ করেন। এ লড়াইয়ে প্রায় অর্ধ-শতাধিক পাকসেনা এবং তাদের সহযোগী থানার ওসি নিহত হয়। ২৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা বোরহানউদ্দীন থানা আক্রমণ করে এবং পরে পাকসেনারা গ্রামে ঢুকে নিরীহ জনগণকে নির্বিচারে হত্যা করে।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে সুবেদার সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে সচরা-দেউলা গ্রামে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াই হয়। ২২ অক্টোবর পাকবাহিনী তেতুঁলিয়া, বেতুয়া ও দেউলা গ্রামে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করে। সিদ্দিকুর রহমান সহযোদ্ধাদের নিয়ে দেউলা দিঘির পাড়ে পাকবাহিনীকে আক্রমণ করেন। এ লড়াইয়ে প্রায় অর্ধ-শতাধিক পাকসেনা এবং তাদের সহযোগী থানার ওসি নিহত হয়। ২৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা বোরহানউদ্দীন থানা আক্রমণ করে এবং পরে পাকসেনারা গ্রামে ঢুকে নিরীহ জনগণকে নির্বিচারে হত্যা করে। বোরহানউদ্দিন উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ১টি স্মৃতিফলক স্থাপিত হয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' স্মৃতিফলক ১ (উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে)।
''বিস্তারিত দেখুন'' বোরহানউদ্দিন উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৪৫৭, মন্দির ২৫।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৪৫৭, মন্দির ২৫।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৭.%; পুরুষ ৪০.%, মহিলা ৩৪.%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৬, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১, কিন্ডার গার্টেন ৪, এনজিও স্কুল ৭০, মাদ্রাসা ১১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আব্দুল জববার মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), বোরহানউদ্দিন মহিলা ডিগ্রী কলেজ (১৯৯৫), বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল (১৯১৭), মির্জাকালু হাইস্কুল (১৯২০), কুতুবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৮৮), বোরহানউদ্দিন আলীয়া মাদ্রাসা (১৯২১)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৭.%; পুরুষ ৪৯.%, মহিলা ৪৬.%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৬, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১, কিন্ডার গার্টেন ৪, এনজিও স্কুল ৭০, মাদ্রাসা ১১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আব্দুল জববার মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), বোরহানউদ্দিন মহিলা ডিগ্রী কলেজ (১৯৯৫), বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল (১৯১৭), মির্জাকালু হাইস্কুল (১৯২০), কুতুবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৮৮), বোরহানউদ্দিন আলীয়া মাদ্রাসা (১৯২১)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' মাসিক: পল্লীচিত্র; দেয়ালিকা: আহবান (অনিয়মিত)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' মাসিক: পল্লীচিত্র; দেয়ালিকা: আহবান (অনিয়মিত)।
৮৯ নং লাইন: ৮৯ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৪৬, গবাদিপশু ১, হাঁস-মুরগি ৩৮, হ্যাচারি ৪৭।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৪৬, গবাদিপশু ১, হাঁস-মুরগি ৩৮, হ্যাচারি ৪৭।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৮৫.৮৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫.৩০ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৬০.কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৫৪.৬৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৯.২৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৩১.৩৩ কিমি; নৌপথ ৪৮.৫ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি।
১০১ নং লাইন: ১০১ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, পাট, পান, সুপারি, মাছ, শাকসবজি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, পাট, পান, সুপারি, মাছ, শাকসবজি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে .৬৬% (শহরে ২৩.৩৪% এবং গ্রামে ৫.৯৯ %) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৫.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''প্রাকৃতিক সম্পদ''  শাহবাজপুরে গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
''প্রাকৃতিক সম্পদ''  শাহবাজপুরে গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৭০.৬৩%, ট্যাপ ০.১১%, পুকুর .৮২% এবং অন্যান্য ২৬.৪৪%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৭.%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য .%।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২৭.৭৫% (শহরে ৫৩.৭৫% এবং গ্রামে ২৩.০৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৩.২৪% (শহরে ৩৮.৬৯% এবং গ্রামে ৬৭.৭০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে .০১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৬৩.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩১.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৮, পশু হাসপাতাল ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৮, পশু হাসপাতাল ১।
১১৩ নং লাইন: ১১৩ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা।  [সৈয়দ মুজতবা আহমদ খান]
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা।  [সৈয়দ মুজতবা আহমদ খান]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।




[[en:Burhanuddin Upazila]]
[[en:Burhanuddin Upazila]]

০৯:৩৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বোরহানউদ্দিন উপজেলা (ভোলা জেলা)  আয়তন: ২৮৪.৬৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২১´ থেকে ২২°৩৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৫´ থেকে ৯০°৫১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলা, দক্ষিণে লালমোহন উপজেলা, পূর্বে তজুমদ্দিন উপজেলা, পশ্চিমে বাউফল উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৩৩৮৬০; পুরুষ ১১৫০৩৩, মহিলা ১১৮৮২৭ (আদমশুমারি ২০১১)। মুসলিম ২৩০৯০০, হিন্দু ১৩১৭৪, বৌদ্ধ ১৪ এবং অন্যান্য ৪৯ (আদমশুমারি ২০০১)।

জলাশয় তেঁতুলিয়া, বেতুয়া ও গঙ্গাপুর নদী এবং দেউলা বিল ও মেঘনা-শাহবাজপুর চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন বোরহানউদ্দিন থানা গঠিত হয় ১৯২৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৫ এপ্রিল ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৫৭ ৪৬ ৩৮৪০১ ১৯৫৪৫৯ ৮২২ ৫০.৯ (২০০১) ৪৫.৪
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.২৭ (২০০১) ১৩ ১৩১১০ ২৯৩৭ (২০০১) ৬৯.০
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৫.৬৬ (২০০১) ২৫২৯১ ১০১৫ (২০০১) ৫৬.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কচিয়া ৪৭ ৬৪০৮ ১৬৮০৮ ১৬৯১৪ ৪৮.২
কুতুবা ৫৭ ৫৭০২ ১০৮৬৮ ১১৩৭৮ ৫৮.৬
গঙ্গাপুর ২৮ ১০৯৮২ ৮২৪৫ ৮৪৭৯ ৪৫.০
টবগী ৯৫ ৬৩৩৭ ১৫৬৫৩ ১৬০৬০ ৫০.৬
দেউলা ১৯ ৬১৯২ ১০১৩৫ ১১৩৬৬ ৩৪.৩
পাকশিয়া ৬৬ ৬৪৩৩ ১১৬৪১ ১২০৪০ ৪৩.৯
বড় মানিকা ১৬ ৬৯২৮ ১৭৮৯৮ ১৯০২৬ ৪৫.০
সাচড়া ৭৬ ৫০৪৬ ৯৫৪৫ ৯৮৮৬ ৩৬.১
হাসান নগর ৩৮ ৫২৯৩ ৭৪৮৭ ৭৩২১ ৫৭.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বোরহানউদ্দিন চৌধুরীবাড়ি মসজিদ, বিদ্যাসুন্দরীর দিঘি, হায়দার আলীর বাড়ি, দেউলা তালুকদার বাড়ি, মঙ্গলের দিঘি, সাজির কাচারী, মনিরাম মঠ।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে সুবেদার সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে সচরা-দেউলা গ্রামে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াই হয়। ২২ অক্টোবর পাকবাহিনী তেতুঁলিয়া, বেতুয়া ও দেউলা গ্রামে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করে। সিদ্দিকুর রহমান সহযোদ্ধাদের নিয়ে দেউলা দিঘির পাড়ে পাকবাহিনীকে আক্রমণ করেন। এ লড়াইয়ে প্রায় অর্ধ-শতাধিক পাকসেনা এবং তাদের সহযোগী থানার ওসি নিহত হয়। ২৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা বোরহানউদ্দীন থানা আক্রমণ করে এবং পরে পাকসেনারা গ্রামে ঢুকে নিরীহ জনগণকে নির্বিচারে হত্যা করে। বোরহানউদ্দিন উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ১টি স্মৃতিফলক স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন বোরহানউদ্দিন উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৪৫৭, মন্দির ২৫।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৭.৯%; পুরুষ ৪৯.২%, মহিলা ৪৬.৭%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৬, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১, কিন্ডার গার্টেন ৪, এনজিও স্কুল ৭০, মাদ্রাসা ১১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আব্দুল জববার মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), বোরহানউদ্দিন মহিলা ডিগ্রী কলেজ (১৯৯৫), বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল (১৯১৭), মির্জাকালু হাইস্কুল (১৯২০), কুতুবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৮৮), বোরহানউদ্দিন আলীয়া মাদ্রাসা (১৯২১)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মাসিক: পল্লীচিত্র; দেয়ালিকা: আহবান (অনিয়মিত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, সাহিত্য একাডেমি ১, নাট্যদল ৩, সিনেমা হল ৩, ক্লাব ২০৫, খেলার মাঠ ৫৭।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৩৭%, অকৃষি শ্রমিক ৪.০৯%, শিল্প ০.৩৫%, ব্যবসা ১১.২৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৬৫%, চাকরি ৬.১৪%, নির্মাণ ২.০৫%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৯৮% এবং অন্যান্য ৫.৭১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.৮৯%, ভূমিহীন ৪০.১১%। শহরে ৫৮.৯৬% এবং গ্রামে ৬০.০৬% পরিবারের  কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, বাদাম, ডাল, আখ, পান, সুপারি, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, সরিষা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, ফুটি, তরমুজ, নারিকেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪৬, গবাদিপশু ১, হাঁস-মুরগি ৩৮, হ্যাচারি ৪৭।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৫৪.৬৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৯.২৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৩১.৩৩ কিমি; নৌপথ ৪৮.৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা আটামিল, স’মিল, তেলকল।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩০, মেলা ৩। বোরহানউদ্দিন হাট, মির্জাকালু হাট, রানীগঞ্জ হাট ও খয়ের হাট এবং চড়ক মেলা, বোরহানগঞ্জের বটতলা মেলা ও চৈত্র সংক্রান্তি মেলা।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, পাট, পান, সুপারি, মাছ, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৫.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ  শাহবাজপুরে গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৫%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ২.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৩.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩১.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৫.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৮, পশু হাসপাতাল ১।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা।  [সৈয়দ মুজতবা আহমদ খান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।