বোদা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''বোদা উপজেলা''' ([[পঞ্চগড় জেলা|পঞ্চগড় জেলা]])  আয়তন: ৩৪৯.৪৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৬ন০৫ন থেকে ২৬ন২৩ন উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ন২৭ন থেকে ৮৮ন৪৬ন পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা, দক্ষিণে ঠাকুরগাঁও সদর ও দেবীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে দেবীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে আটোয়ারী এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলা। এ উপজেলায় ভারতের ছিটমহলগুলো হচ্ছে নাজিরগ, শালবাড়ি, মেয়েলিয়া, দৈখাতা ও ময়দানদিঘি।
'''বোদা উপজেলা''' ([[পঞ্চগড় জেলা|পঞ্চগড় জেলা]])  আয়তন: ৩৪৯.৪৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৬ন০৫ন থেকে ২৬ন২৩ন উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ন২৭ন থেকে ৮৮ন৪৬ন পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা, দক্ষিণে ঠাকুরগাঁও সদর ও দেবীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে দেবীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে আটোয়ারী এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলা। এ উপজেলায় ভারতের ছিটমহলগুলো হচ্ছে নাজিরগ, শালবাড়ি, মেয়েলিয়া, দৈখাতা ও ময়দানদিঘি।


''জনসংখ্যা'' ২০০৬৯৩; পুরুষ ১০৩২২৯, মহিলা ৯৭৪৬৪। মুসলিম ১৫২২৮২, হিন্দু ৪৭৯২৮, বৌদ্ধ ৩২০ এবং অন্যান্য ১৬৩।
''জনসংখ্যা'' ২৩২১২৪; পুরুষ ১১৬৫৫৫, মহিলা ১১৫৫৬৯। মুসলিম ১৭৭৪৬২, হিন্দু ৫৩৯৮৯, বৌদ্ধ ২, খ্রিস্টান ৩৯৯ এবং অন্যান্য ২৭২।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: করতোয়া, টাংগন, পাথরাজ।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: করতোয়া, টাংগন, পাথরাজ।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ১০  || ১৭৪ || ২৩৯ || ৬৯৩০ || ১৯৩৭৬৩ || ৫৭৪  || ৫৮.২  || ৪২.
| - || ১০ || ১৫১ || ২১৯ || ১৭০৩০ || ২১৫০৯৪ || ৬৬৪ || ৫৮.২ (২০০১) || ৫০.৭
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%)
|-
| - || ৯ || ৩২ || ১৪৭৮৭ || - || ৬৬.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৪.১৭ || ৩  || ৬৯৩০  || ১৬৬২ || ৫৮.
| ৪.১৭ (২০০১) || || ২২৪৩ || ১৬৬২ (২০০১) || ৬০.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৪২ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| কাজলদিঘি কালিয়াগঞ্জ ৫৮ || ১০১৮১  || ১২০০৬ || ১১৩০০  || ৩৭.৪৮
| কাজলদিঘি কালিয়াগঞ্জ ৫৮ || ১০৭৮০ || ১২৯২৪ || ১৩০৬৪ || ৪৪.
|-
|-
| চন্দনবাড়ি ২৯ || ৬৯৯৮  || ৯৮৭৩ || ৯৩৭৪  || ৪৩.৪০
| চন্দনবাড়ি ২৯ || ৬৫৭৮ || ১০১১১ || ১০০৭৯ || ৪৪.
|-
|-
| ঝলইশালশিড়ি ৫১ || ৬৯৪২ || ৮৫১৮ || ৮১০৬  || ৪৫.৪৫
| ঝলইশালশিড়ি ৫১ || ৬৯৪২ || ৯৬৫৬ || ৯৭১৮ || ৫০.
|-
|-
| পাঁচপীর ৮৭ || ৬৮৬৪ || ৯৬৯৩ || ৯১২৫  || ৪৪.৮২
| পাঁচপীর ৮৭ || ৬৮৬৪ || ১০১৯৭ || ১০২১৪ || ৫২.
|-
|-
| বড়শশী || ১৮০৮০  || ১২৫৫০ || ১২২৭৬  || ৩৮.৬৯
| বড়শশী ১২ || ১৮৯৭৯ || ১৪১২৮ || ১৪২১৭ || ৫৮.
|-
|-
| বেংহারী বনগ্রাম ১৪ || ৭৯৯১ || ১০৬৮৮ || ৯৫০৪  || ৪০.৮৮
| বেংহারী বনগ্রাম ১৪ || ৭৯৯১ || ১২১৫৮ || ১১৬৫০ || ৫১.
|-
|-
| বোদা ২১ || ৭৯৯১  || ১২০২৩ || ১১৩৬১  || ৫১.৬০
| বোদা ২১ || ৫১৪৯ || ৭১০৪ || ৬৯২৭ || ৫৮.
|-
|-
| ময়দানদিঘি ৭৩ || ৭৫৫৫  || ৯৬৬২ || ৯১১৮  || ৪৬.০৯
| ময়দানদিঘি ৭৩ || ৭৬৭৭ || ১১৮৫২ || ১১৪৬২ || ৫৭.
|-
|-
| মারেয়া বামনহাট ৮০ || ৭১৩১  || ৯৪৮৬ || ৯২৩৭  || ৪০.৪৬
| মারেয়া বামনহাট ৮০ || ৭১৮১ || ১১২১১ || ১১০০০ || ৪৬.
|-
|-
| সাকোয়া ৯৪ || ৬১৭১ || ৮৭৩০ || ৮০৬৩  || ৪২.১১
| সাকোয়া ৯৪ || ৬১৭১ || ৯৭৮৬ || ৯৮৭৯ || ৪৫.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:BodaUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:BodaUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' চন্দনবাড়ি মসজিদ, বোদেশ্বরী মন্দির, গোবিন্দ মন্দির, গোলোকধাম মন্দির।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' চন্দনবাড়ি মসজিদ, বোদেশ্বরী মন্দির, গোবিন্দ মন্দির, গোলোকধাম মন্দির।


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি''  দেবীসিংহের বিরুদ্ধে কৃষক বিদ্রো্হ (অষ্টাদশ শতকের শেষাংশ), সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রো্হ (১৭৬৩-১৮০০), সিপাহী বিদ্রো্হ (১৮৫৭), তেভাগা আন্দোলন (১৯৩৮-১৯৪৭), কৃষক আন্দোলন (১৯৫৮-৬৮), ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনে এ উপজেলার লোকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। বোদা উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাস সংঘটিত হয় গেরিলা যুদ্ধ। যুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকার ও পাকবাহিনী সাধারণ মানুষের উপর চালায় অকথ্য নির্যাতন। পাকবাহিনী ১৮ এপ্রিল বোদা শহর দখল করে। ১ ডিসেম্বর বোদা শত্রুমুক্ত হয়।
''ঐতিহাসিক ঘটনা'' দেবীসিংহের বিরুদ্ধে কৃষক বিদ্রোহ (অষ্টাদশ শতকের শেষাংশ), সন্ন্যাসী ও বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০), সিপাহী বিদ্রোহ (১৮৫৭), তেভাগা আন্দোলন (১৯৩৮-১৯৪৭), কৃষক আন্দোলন (১৯৫৮-৬৮), ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনে এ উপজেলার লোকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।
 
''মুক্তিযুদ্ধ''  মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাস উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গেরিলা যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকার ও পাকবাহিনী সাধারণ মানুষের উপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। পাকবাহিনী ১৮ এপ্রিল বোদা শহর দখল করে। ১ ডিসেম্বর বোদা শত্রুমুক্ত হয়।
 
''বিস্তারিত দেখুন''  বোদা উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩৬৮, মন্দির ১২, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: চন্দনবাড়ি মসজিদ, বোদেশ্বরী মন্দির, গোলোকধাম মন্দির, বড়শশী মাযার, মানিকপীর মাযার।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৬৮, মন্দির ১২, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: চন্দনবাড়ি মসজিদ, বোদেশ্বরী মন্দির, গোলোকধাম মন্দির, বড়শশী মাযার, মানিকপীর মাযার।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৩.%; পুরুষ ৪৮.%, মহিলা ৩৬.%। কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৮, স্যাটেলাইট ৮০, মাদ্রাসা ৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পাথরাজ মহাবিদ্যালয় (১৯৭৩), বোদা ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৮), বোদা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৮), ময়নাদিঘি বিএল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), নয়াদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮২৮), গোয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৩০), বোদা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৭৩)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫১.%; পুরুষ ৫৫.%, মহিলা ৪৮.%। কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৮, স্যাটেলাইট ৮০, মাদ্রাসা ৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পাথরাজ মহাবিদ্যালয় (১৯৭৩), বোদা ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৮), বোদা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৮), ময়নাদিঘি বিএল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), নয়াদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮২৮), গোয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৩০), বোদা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৭৩)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সূর্য উঠে (১৯৭২), গণপত্র (১৯৮৮), চেতনা (২০০৬)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সূর্য উঠে (১৯৭২), গণপত্র (১৯৮৮), চেতনা (২০০৬)।
৮১ নং লাইন: ৯৩ নং লাইন:
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, সুপারি।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, সুপারি।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৭০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৪৩.৬৬ কিমি; রেলপথ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৮৪.৮৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৫৮.১৬ কিমি; রেলপথ ৮.৫ কিমি; নৌপথ ১.৫ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
৯৩ নং লাইন: ১০৫ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, পাট, সুপারি, গম।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, পাট, সুপারি, গম।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে .৫৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২১.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
 
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮১.৬৬%, পুকুর ০.৪৮%, ট্যাপ ০.২৩% এবং অন্যান্য ১৭.৬২%।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২৮.৩৮% (গ্রামে ২৭.০৮% এবং শহরে ৬৪.৭৭%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৭.% (গ্রামে ১৭.৯৭% এবং শহরে ১২.৯৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫৩.৮২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য ৪.১%।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ৫৭.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৮.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । ১৪.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৫।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৫।
১০৩ নং লাইন: ১১৫ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, কেয়ার, আশা।  [মো. আহসান হাবিব]
''এনজিও'' ব্র্যাক, কেয়ার, আশা।  [মো. আহসান হাবিব]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বোদা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বোদা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Boda Upazila]]
[[en:Boda Upazila]]

০৪:৪৬, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বোদা উপজেলা (পঞ্চগড় জেলা)  আয়তন: ৩৪৯.৪৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৬ন০৫ন থেকে ২৬ন২৩ন উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ন২৭ন থেকে ৮৮ন৪৬ন পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা, দক্ষিণে ঠাকুরগাঁও সদর ও দেবীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে দেবীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে আটোয়ারী এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলা। এ উপজেলায় ভারতের ছিটমহলগুলো হচ্ছে নাজিরগ, শালবাড়ি, মেয়েলিয়া, দৈখাতা ও ময়দানদিঘি।

জনসংখ্যা ২৩২১২৪; পুরুষ ১১৬৫৫৫, মহিলা ১১৫৫৬৯। মুসলিম ১৭৭৪৬২, হিন্দু ৫৩৯৮৯, বৌদ্ধ ২, খ্রিস্টান ৩৯৯ এবং অন্যান্য ২৭২।

জলাশয় প্রধান নদী: করতোয়া, টাংগন, পাথরাজ।

প্রশাসন বোদা থানা গঠিত হয় ১৮৮৩ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর এ উপজেলাকে দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমার অধীন এবং ১৯৮৪ সালে পঞ্চগড় জেলার অধীন করা হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১০ ১৫১ ২১৯ ১৭০৩০ ২১৫০৯৪ ৬৬৪ ৫৮.২ (২০০১) ৫০.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ৩২ ১৪৭৮৭ - ৬৬.৭
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪.১৭ (২০০১) ২২৪৩ ১৬৬২ (২০০১) ৬০.৭
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কাজলদিঘি কালিয়াগঞ্জ ৫৮ ১০৭৮০ ১২৯২৪ ১৩০৬৪ ৪৪.৪
চন্দনবাড়ি ২৯ ৬৫৭৮ ১০১১১ ১০০৭৯ ৪৪.১
ঝলইশালশিড়ি ৫১ ৬৯৪২ ৯৬৫৬ ৯৭১৮ ৫০.৫
পাঁচপীর ৮৭ ৬৮৬৪ ১০১৯৭ ১০২১৪ ৫২.৩
বড়শশী ১২ ১৮৯৭৯ ১৪১২৮ ১৪২১৭ ৫৮.১
বেংহারী বনগ্রাম ১৪ ৭৯৯১ ১২১৫৮ ১১৬৫০ ৫১.৩
বোদা ২১ ৫১৪৯ ৭১০৪ ৬৯২৭ ৫৮.৩
ময়দানদিঘি ৭৩ ৭৬৭৭ ১১৮৫২ ১১৪৬২ ৫৭.২
মারেয়া বামনহাট ৮০ ৭১৮১ ১১২১১ ১১০০০ ৪৬.১
সাকোয়া ৯৪ ৬১৭১ ৯৭৮৬ ৯৮৭৯ ৪৫.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ চন্দনবাড়ি মসজিদ, বোদেশ্বরী মন্দির, গোবিন্দ মন্দির, গোলোকধাম মন্দির।

ঐতিহাসিক ঘটনা দেবীসিংহের বিরুদ্ধে কৃষক বিদ্রোহ (অষ্টাদশ শতকের শেষাংশ), সন্ন্যাসী ও বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০), সিপাহী বিদ্রোহ (১৮৫৭), তেভাগা আন্দোলন (১৯৩৮-১৯৪৭), কৃষক আন্দোলন (১৯৫৮-৬৮), ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনে এ উপজেলার লোকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাস উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গেরিলা যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকার ও পাকবাহিনী সাধারণ মানুষের উপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। পাকবাহিনী ১৮ এপ্রিল বোদা শহর দখল করে। ১ ডিসেম্বর বোদা শত্রুমুক্ত হয়।

বিস্তারিত দেখুন বোদা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৬৮, মন্দির ১২, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: চন্দনবাড়ি মসজিদ, বোদেশ্বরী মন্দির, গোলোকধাম মন্দির, বড়শশী মাযার, মানিকপীর মাযার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫১.৮%; পুরুষ ৫৫.০%, মহিলা ৪৮.৬%। কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৮, স্যাটেলাইট ৮০, মাদ্রাসা ৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পাথরাজ মহাবিদ্যালয় (১৯৭৩), বোদা ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৮), বোদা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৮), ময়নাদিঘি বিএল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), নয়াদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮২৮), গোয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৩০), বোদা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৭৩)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সূর্য উঠে (১৯৭২), গণপত্র (১৯৮৮), চেতনা (২০০৬)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৫, ক্লাব ৪০, নাট্যমঞ্চ ১, সিনেমা হল ৪।

দর্শনীয় স্থান বোদেশ্বরী মন্দির, গোলোকধাম মন্দির, নয়নীবুরুজ, নয়াদিঘি।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৫.১৯%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯১%, শিল্প ০.৩২%,  ব্যবসা ৯.৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৬১%, চাকরি ৩.৬৩%, নির্মাণ ০.৯৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১% এবং অন্যান্য ২.৬৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.৯৫%, ভূমিহীন ৪০.০৫%। গ্রামে ৬০.৭৩% এবং শহরে ৩৮.১৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আখ, সরিষা।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান, কাউন, ধেমসি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, সুপারি।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮৪.৮৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৫৮.১৬ কিমি; রেলপথ ৮.৫ কিমি; নৌপথ ১.৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, ডালকল, বরফকল, চিড়াকল, আটাকল, হাসকিং মিল।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, নকশীকাঁথা।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৩৮, মেলা ৩। বোদা হাট, সাকোয়া হাট, সারেয়া হাট, ময়দানদিঘি হাট, পাঁচপীর হাট, ঝলইশালশিড়ি হাট, তেপুকুরিয়া হাট, ফুলতলা হাট, মন্ডলের হাট এবং বারুণী মেলা, বোয়ালমারী মেলা ও ময়দানদিঘির মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, পাট, সুপারি, গম।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২১.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৪%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ৪.১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৭.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৮.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । ১৪.৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৫।

এনজিও ব্র্যাক, কেয়ার, আশা।  [মো. আহসান হাবিব]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বোদা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।