বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন '''(বিমক)  বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আদেশ (রাষ্ট্রপতির ১০ নম্বর আদেশ ১৯৭৩) বলে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের শীর্ষপদে আছেন একজন চেয়ারম্যান। তাকে সহায়তা করার জন্য ৫ জন পূর্ণকালীন ও ৯ জন খন্ডকালীন সদস্য রয়েছেন। খন্ডকালীন সদস্যগণ হচ্ছেন: বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্যবৃন্দের মধ্য থেকে (পর্যায়ক্রমে) ৩ জন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অধ্যাপক ও ডিনদের মধ্য থেকে প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত সদস্য (পর্যায়ক্রমে) ৩ জন এবং সরকার কর্তৃক মনোনীত সদস্য ৩ জন (শিক্ষা সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্য এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি)। কমিশনের নিয়মিত জনবলের মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান, পূর্ণকালীন সদস্যবর্গ এবং ১১৪ কর্মী, যার ৩৩ জন প্রথম শ্রেণির, ৩৭ জন তৃতীয় শ্রেণির এবং ৩৪ জন চতুর্থ শ্রেণির। কমিশনের প্রধান ভূমিকা ও দায়িত্ব হচ্ছে: বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার চাহিদা নিরূপণ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আর্থিক চাহিদা নির্ধারণ, সরকারের নিকট থেকে তহবিল গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য বরাদ্দকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিভাগ, ইনস্টিটিটিউট ও অন্যান্য অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম মূল্যায়ন করা এবং নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সম্প্রসারণ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শদান।
'''বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন''' (বিমক)  বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আদেশ (রাষ্ট্রপতির ১০ নম্বর আদেশ ১৯৭৩) বলে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের শীর্ষপদে আছেন একজন চেয়ারম্যান। তাকে সহায়তা করার জন্য ৫ জন পূর্ণকালীন ও ৯ জন খন্ডকালীন সদস্য রয়েছেন। খন্ডকালীন সদস্যগণ হচ্ছেন: বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্যবৃন্দের মধ্য থেকে (পর্যায়ক্রমে) ৩ জন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অধ্যাপক ও ডিনদের মধ্য থেকে প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত সদস্য (পর্যায়ক্রমে) ৩ জন এবং সরকার কর্তৃক মনোনীত সদস্য ৩ জন (শিক্ষা সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্য এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি)। কমিশনের নিয়মিত জনবলের মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান, পূর্ণকালীন সদস্যবর্গ এবং ১১৪ কর্মী, যার ৩৩ জন প্রথম শ্রেণির, ৩৭ জন তৃতীয় শ্রেণির এবং ৩৪ জন চতুর্থ শ্রেণির। কমিশনের প্রধান ভূমিকা ও দায়িত্ব হচ্ছে: বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার চাহিদা নিরূপণ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আর্থিক চাহিদা নির্ধারণ, সরকারের নিকট থেকে তহবিল গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য বরাদ্দকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিভাগ, ইনস্টিটিটিউট ও অন্যান্য অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম মূল্যায়ন করা এবং নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সম্প্রসারণ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শদান।


বর্তমানে (২০১১) বাংলাদেশে ৩১টি সরকারি এবং ৬২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কমিশন সরকারের কাছে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উচ্চশিক্ষা উন্নয়নের ওপর বার্ষিক প্রতিবেদন দিয়ে থাকে এবং এ প্রতিবেদন জাতীয় সংসদেও উত্থাপিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা-ব্যবস্থাপনা ছাড়া কমিশন তিনটি মূল শাখায় (কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও কারিগরি) গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করে। কমিশন বিদেশি ডিগ্রির মান ও সমতা নিরূপণ করে। ১৯৭৭-৭৮ সাল থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে গবেষণা করে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজ শিক্ষকদের উৎসাহিত করতে কমিশন জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ চালু করে। ১৯৯০ সালে এ ফেলোশিপের নাম পরিবর্তন করে ইউজিসি পিএইচ.ডি ফেলোশিপ রাখা হয়েছে এবং বর্তমানে (২০১১) এ কার্যক্রমের অধীনে ফেলোশিপের সংখ্যা ৬৪। এছাড়া ১৯৯০ সালে পিএইচ.ডি পর্যায়ে ৪টি নজরুল ফেলোশিপ এবং ১৯৯৭ সালে এম.ফিল পর্যায়ে ২০টি ইউজিসি এম.ফিল ফেলোশিপ চালু করা হয়েছে।
বর্তমানে (২০১১) বাংলাদেশে ৩১টি সরকারি এবং ৬২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কমিশন সরকারের কাছে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উচ্চশিক্ষা উন্নয়নের ওপর বার্ষিক প্রতিবেদন দিয়ে থাকে এবং এ প্রতিবেদন জাতীয় সংসদেও উত্থাপিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা-ব্যবস্থাপনা ছাড়া কমিশন তিনটি মূল শাখায় (কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও কারিগরি) গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করে। কমিশন বিদেশি ডিগ্রির মান ও সমতা নিরূপণ করে। ১৯৭৭-৭৮ সাল থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে গবেষণা করে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজ শিক্ষকদের উৎসাহিত করতে কমিশন জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ চালু করে। ১৯৯০ সালে এ ফেলোশিপের নাম পরিবর্তন করে ইউজিসি পিএইচ.ডি ফেলোশিপ রাখা হয়েছে এবং বর্তমানে (২০১১) এ কার্যক্রমের অধীনে ফেলোশিপের সংখ্যা ৬৪। এছাড়া ১৯৯০ সালে পিএইচ.ডি পর্যায়ে ৪টি নজরুল ফেলোশিপ এবং ১৯৯৭ সালে এম.ফিল পর্যায়ে ২০টি ইউজিসি এম.ফিল ফেলোশিপ চালু করা হয়েছে।

১০:৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (বিমক)  বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আদেশ (রাষ্ট্রপতির ১০ নম্বর আদেশ ১৯৭৩) বলে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের শীর্ষপদে আছেন একজন চেয়ারম্যান। তাকে সহায়তা করার জন্য ৫ জন পূর্ণকালীন ও ৯ জন খন্ডকালীন সদস্য রয়েছেন। খন্ডকালীন সদস্যগণ হচ্ছেন: বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্যবৃন্দের মধ্য থেকে (পর্যায়ক্রমে) ৩ জন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অধ্যাপক ও ডিনদের মধ্য থেকে প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত সদস্য (পর্যায়ক্রমে) ৩ জন এবং সরকার কর্তৃক মনোনীত সদস্য ৩ জন (শিক্ষা সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্য এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি)। কমিশনের নিয়মিত জনবলের মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান, পূর্ণকালীন সদস্যবর্গ এবং ১১৪ কর্মী, যার ৩৩ জন প্রথম শ্রেণির, ৩৭ জন তৃতীয় শ্রেণির এবং ৩৪ জন চতুর্থ শ্রেণির। কমিশনের প্রধান ভূমিকা ও দায়িত্ব হচ্ছে: বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার চাহিদা নিরূপণ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আর্থিক চাহিদা নির্ধারণ, সরকারের নিকট থেকে তহবিল গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য বরাদ্দকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিভাগ, ইনস্টিটিটিউট ও অন্যান্য অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম মূল্যায়ন করা এবং নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সম্প্রসারণ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শদান।

বর্তমানে (২০১১) বাংলাদেশে ৩১টি সরকারি এবং ৬২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কমিশন সরকারের কাছে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উচ্চশিক্ষা উন্নয়নের ওপর বার্ষিক প্রতিবেদন দিয়ে থাকে এবং এ প্রতিবেদন জাতীয় সংসদেও উত্থাপিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা-ব্যবস্থাপনা ছাড়া কমিশন তিনটি মূল শাখায় (কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও কারিগরি) গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করে। কমিশন বিদেশি ডিগ্রির মান ও সমতা নিরূপণ করে। ১৯৭৭-৭৮ সাল থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে গবেষণা করে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজ শিক্ষকদের উৎসাহিত করতে কমিশন জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ চালু করে। ১৯৯০ সালে এ ফেলোশিপের নাম পরিবর্তন করে ইউজিসি পিএইচ.ডি ফেলোশিপ রাখা হয়েছে এবং বর্তমানে (২০১১) এ কার্যক্রমের অধীনে ফেলোশিপের সংখ্যা ৬৪। এছাড়া ১৯৯০ সালে পিএইচ.ডি পর্যায়ে ৪টি নজরুল ফেলোশিপ এবং ১৯৯৭ সালে এম.ফিল পর্যায়ে ২০টি ইউজিসি এম.ফিল ফেলোশিপ চালু করা হয়েছে।

১৯৮২ সালে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গবেষণা কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সমর্থন ও সহযোগিতা দানের লক্ষ্যে কমিশন গবেষণা সহায়ক তহবিল নামে একটি তহবিল গঠন করেছে। এছাড়া কমিশন ১৯৮০ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকবৃন্দের মৌলিক গবেষণা ও প্রকাশনায় উৎসাহ প্রদান এবং স্বীকৃতিস্বরূপ ইউজিসি পুরস্কার চালু করেছে। এ পুরস্কারের সংখ্যা ৫টি, যার মধ্যে দুটি সামাজিক বিজ্ঞানে, দুটি বিজ্ঞান ও কৃষি বিজ্ঞানে এবং একটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যও ৪৯টি ইউজিসি মেধাবৃত্তি রয়েছে। এছাড়া দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা লভের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কমিশনের বিভিন্ন বিদেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সহযোগিতামূলক কার্যক্রম রয়েছে। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা ইত্যাদিতে যোগদানের জন্য কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মনোনয়ন দেয়। কমিশন সার্ক চেয়ার ফেলোশিপ ও স্কলারশিপ প্রদানের সুপারিশ করে থাকে এবং বিজ্ঞানের উন্নয়নে জাপান সমিতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বিনিময় করে থাকে।

কমিশন ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক যন্ত্রায়ন ইনস্টিটিটিউট-এর তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত। জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে উক্ত ইনস্টিটিটিউট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা এবং গবেষণায় ব্যবহূত অত্যাধুনিক ব্যয়বহুল সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু রক্ষণাক্ষেণ ও মেরামতের জন্য প্রযুক্তিকর্মী ও দক্ষ প্রকৌশলি সৃষ্টি করে থাকে।  [স্বপন কুমার বালা]