বিডন, স্যার সেসিল

বিডন, স্যার সেসিল (১৮১৬-১৮৮০)  ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের সদস্য এবং বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর (এপ্রিল, ১৮৬২- এপ্রিল, ১৮৬৭)। ইটন এবং হেইলিবেরির পাবলিক স্কুলে শিক্ষা শেষে ১৮ বছর বয়সে  বিডন বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। লেফটেন্যান্ট গভর্নর হিসেবে যোগদানের পূর্বে তিনি ১৮৪৩ সালে বঙ্গীয় সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি, ১৮৪৭ সালে বোর্ড অব রেভিনিউ-এর সেক্রেটারি, ১৮৫২ সালে বঙ্গীয় সরকারের সেক্রেটারি, ১৮৫৪ সালে ভারত সরকারের হোম সেক্রেটারি এবং ১৮৫৯ সালে ভারত সরকারের ফরেন সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। লেফটেন্যান্ট গভর্নর হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির অব্যবহিত পূর্বে তিনি সুপ্রিম কাউন্সিলের সদস্য (১৮৬০-৬২) ছিলেন।

১৮৫৭ সালের সিপাহি বিপ্লব এর সময় তিনি হোম সেক্রেটারি ছিলেন এবং বিদ্রোহ দমনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষের প্রশংসা অর্জন করেন। অভিযোগ উঠে যে, বিদ্রোহ দমনে বিডনের অনেক পদক্ষেপ ছিল অত্যন্ত কঠোর ও অমানবিক। তবে তাঁর এসব পদক্ষেপের সাফল্য তাঁকে ইঙ্গ-ভারতীয়দের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলে। বিডন ছিলেন ভুটানে যুদ্ধাভিযান পরিচালনার মূল পরিকল্পনাকারী, যার ফলে ভুটান ব্রিটিশদের করদরাজ্যে পরিণত হয়।

১৮৬২-৬৩ সালে বিদ্রোহী খাসি ও নাগাদের আবাসস্থল ধ্বংসের জন্যও লেফটেন্যান্ট গভর্নর হিসেবে বিডনকে দায়ী করা হয়। ১৮৬৪ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং ১৮৬৬-৬৭ সালের দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় অব্যবস্থাপনার জন্যও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এই দুর্ভিক্ষ যখন উড়িষ্যা এবং বিহারে মারাত্মক আকার ধারণ করে, তখন বিডন বাংলার গ্রীষ্মকালীন খরতাপ এবং আর্দ্রতা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য দার্জিলিং-এ তাঁর সচিবালয় স্থানান্তর করেন। ১৮৬৭ সালে গঠিত Famine Commission দুর্ভিক্ষে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির জন্য বিডন-এর নানা পদক্ষেপকে দায়ী করে। ইংল্যান্ডের কমন্স সভায়ও বিডনের সমালোচনা হয়। প্রবল সমালোচনার মুখে সেসিল বিডন অবসর গ্রহণ করে ১৮৬৭ সালের এপ্রিল মাসে ভারত ত্যাগ করেন। বিডনের মৃত্যু ১৮ জুলাই ১৮৮০ সাল।  [সিরাজুল ইসলাম]