বক: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৭ নং লাইন: ৭ নং লাইন:
ঠোঁট লম্বা ও আগা চোখা। গলা অস্বাভাবিক লম্বা এবং দেখতে ইংরেজি S অক্ষরের মতো, বিশ্রামের সময় গলা প্রসারিত আর ওড়ার সময় গুটিয়ে যায়, কর্মরত অবস্থায় গলা খাড়া বা আধা-গুটানো থাকে। পুচ্ছ সাধারণত খাটো, তাতে ১২টি পুচ্ছপালক থাকে। দীর্ঘ ও প্রশস্ত পাখনায় ১০টি প্রাথমিক পালক। হেরনের মাথা, গলা ও বুকে প্রায়শ সুতার মতো সরু ও সুন্দর রঙিন প্রজনন-পালক দেখা যায়। হেরনরা পানির কাছাকাছি থাকে, একত্রে গাছে বসে রাত কাটায় ও সেই গাছেই বাসা বানায়।  
ঠোঁট লম্বা ও আগা চোখা। গলা অস্বাভাবিক লম্বা এবং দেখতে ইংরেজি S অক্ষরের মতো, বিশ্রামের সময় গলা প্রসারিত আর ওড়ার সময় গুটিয়ে যায়, কর্মরত অবস্থায় গলা খাড়া বা আধা-গুটানো থাকে। পুচ্ছ সাধারণত খাটো, তাতে ১২টি পুচ্ছপালক থাকে। দীর্ঘ ও প্রশস্ত পাখনায় ১০টি প্রাথমিক পালক। হেরনের মাথা, গলা ও বুকে প্রায়শ সুতার মতো সরু ও সুন্দর রঙিন প্রজনন-পালক দেখা যায়। হেরনরা পানির কাছাকাছি থাকে, একত্রে গাছে বসে রাত কাটায় ও সেই গাছেই বাসা বানায়।  


[[Image:HeronIndianPond.jpg|thumb|400px|left|কানা বা কানি বক]]
[[Image:HeronIndianPond.jpg|thumb|400px|left|কানা বা কানিবক]]
এদের বসার ও বাসা বানানোর জায়গাকে সারসশালা (Heronry) বলে। কখনও কখনও এরা পানকৌড়ি ও অন্যান্য Ciconiiformes, কোদালি বক ও আইবিসের সঙ্গে সহাবস্থান করে। হেরন মাংসাশী, প্রধানত মাছ ও ব্যাঙ খায়। সাধারণত এরা পানিতে অথবা পানিতে ভাসমান বা পানি থেকে উঁচানো কোন বস্ত্তর উপর ঠায় বসে থাকে এবং সামনে দিয়ে শিকার যাওয়ার সময় হঠাৎ শিকারকে ঠোঁট দিয়ে ধরে ফেলে। গো-বক মাঠে চরা গবাদি পশুর পিছন পিছন ঘুরে বেড়ায় এবং এদের তাড়া-খাওয়া কীটপতঙ্গ, ব্যাঙ ও ছোট ছোট সরীসৃপ শিকার করে।
এদের বসার ও বাসা বানানোর জায়গাকে সারসশালা (Heronry) বলে। কখনও কখনও এরা পানকৌড়ি ও অন্যান্য Ciconiiformes, কোদালি বক ও আইবিসের সঙ্গে সহাবস্থান করে। হেরন মাংসাশী, প্রধানত মাছ ও ব্যাঙ খায়। সাধারণত এরা পানিতে অথবা পানিতে ভাসমান বা পানি থেকে উঁচানো কোন বস্ত্তর উপর ঠায় বসে থাকে এবং সামনে দিয়ে শিকার যাওয়ার সময় হঠাৎ শিকারকে ঠোঁট দিয়ে ধরে ফেলে। গো-বক মাঠে চরা গবাদি পশুর পিছন পিছন ঘুরে বেড়ায় এবং এদের তাড়া-খাওয়া কীটপতঙ্গ, ব্যাঙ ও ছোট ছোট সরীসৃপ শিকার করে।


বাংলাদেশের সাধারণ বকদের মধ্যে আছে কানা বা কানি বক (Pond Heron বা Paddy Heron, ''Ardeola grayii''); গো-বক (Cattle Egret, ''Bubulcus ibis''); ছোট সাদাবক (Little Egret, ''Egretta garzetta''); মাঝারি সাদাবক (Medium Egret, ''Mesophyox intermedia''); বড় বা জাতুয়া বক (Large Egret, ''Casmerodius albus''); ধূসর বক (Grey Heron, ''Ardea cinerea''); বেগুনি বক (Purple Heron, ''Ardea purpurea''); বৃহৎ বা মহাকায় বক (Giant বা Goliath Heron, ''Ardea goliath''); ওয়াক বা নিশিবক (Black-crowned Night Heron, ''Nycticorax nycticorax''); বাঘাবক (Tiger Bittern, ''Gorsachius melanolpus'')। নিশিবক বা বাঘাবক ছাড়া অন্য সব বকই দিবাচর এবং এ দুটি প্রজাতি নিশাচর বা গোধূলিচর। বাংলাদেশে সর্বত্র ও সহজ দৃষ্ট হলো কানিবক, ছোট সাদা বক ও গো-বক।  [আলী রেজা খান]
বাংলাদেশের সাধারণ বকদের মধ্যে আছে কানা বা কানিবক (Pond Heron বা Paddy Heron, ''Ardeola grayii''); গো-বক (Cattle Egret, ''Bubulcus ibis''); ছোট সাদাবক (Little Egret, ''Egretta garzetta''); মাঝারি সাদাবক (Medium Egret, ''Mesophyox intermedia''); বড় বা জাতুয়া বক (Large Egret, ''Casmerodius albus''); ধূসর বক (Grey Heron, ''Ardea cinerea''); বেগুনি বক (Purple Heron, ''Ardea purpurea''); বৃহৎ বা মহাকায় বক (Giant বা Goliath Heron, ''Ardea goliath''); ওয়াক বা নিশিবক (Black-crowned Night Heron, ''Nycticorax nycticorax''); বাঘাবক (Tiger Bittern, ''Gorsachius melanolpus'')। নিশিবক বা বাঘাবক ছাড়া অন্য সব বকই দিবাচর এবং এ দুটি প্রজাতি নিশাচর বা গোধূলিচর। বাংলাদেশে সর্বত্র ও সহজ দৃষ্ট হলো কানিবক, ছোট সাদাবক ও গো-বক।  [আলী রেজা খান]


[[en:Heron]]
[[en:Heron]]

০৪:২৫, ১৮ মে ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বড় সাদাবক

বক (Heron)  জলাভূমিতে বিচরণকারী Ardeidae গোত্রের কয়েক প্রজাতির পাখি, যাদের দীর্ঘ পা, গলা ও মাথা সরু ও লম্বা এবং ঠোঁট চোখা। এদের পালক সাধারণত সাদা। এক সময়ে প্রাচ্যের রাজকীয় পোশাকে এবং মহিলাদের টুপিতে এর পালক ব্যবহূত হতো। সারা পৃথিবীতে এদের প্রজাতি সংখ্যা ৮, তন্মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ৫ প্রজাতি।

বিটার্ন (Bittern), আইবিস (Ibis), কোদালি বক (Spoonbill), স্টর্ক (Stork) ইত্যাদি পাখিও এই দলভুক্ত। সব ইগ্রেট (Egret), সবুজ বক (Green Heron), হেরন (Heron) ও ওয়াক (Night Heron) সবই ‘হেরন‘ নামেই পরিচিত। এদের পানিতে হেঁটে-চলা পাখিও বলা হয়। এরা উরু পর্যন্ত পানিতে ডুবিয়ে হাঁটে, আকার ৪৫ সেমি (Pond Heron) থেকে ১৫০ সেমি (Goliath Heron)। পাগুলি নগ্ন বা পালকহীন, লিপ্তপদী নয়, তবে পা বেশ লম্বা।

ঠোঁট লম্বা ও আগা চোখা। গলা অস্বাভাবিক লম্বা এবং দেখতে ইংরেজি S অক্ষরের মতো, বিশ্রামের সময় গলা প্রসারিত আর ওড়ার সময় গুটিয়ে যায়, কর্মরত অবস্থায় গলা খাড়া বা আধা-গুটানো থাকে। পুচ্ছ সাধারণত খাটো, তাতে ১২টি পুচ্ছপালক থাকে। দীর্ঘ ও প্রশস্ত পাখনায় ১০টি প্রাথমিক পালক। হেরনের মাথা, গলা ও বুকে প্রায়শ সুতার মতো সরু ও সুন্দর রঙিন প্রজনন-পালক দেখা যায়। হেরনরা পানির কাছাকাছি থাকে, একত্রে গাছে বসে রাত কাটায় ও সেই গাছেই বাসা বানায়।

কানা বা কানিবক

এদের বসার ও বাসা বানানোর জায়গাকে সারসশালা (Heronry) বলে। কখনও কখনও এরা পানকৌড়ি ও অন্যান্য Ciconiiformes, কোদালি বক ও আইবিসের সঙ্গে সহাবস্থান করে। হেরন মাংসাশী, প্রধানত মাছ ও ব্যাঙ খায়। সাধারণত এরা পানিতে অথবা পানিতে ভাসমান বা পানি থেকে উঁচানো কোন বস্ত্তর উপর ঠায় বসে থাকে এবং সামনে দিয়ে শিকার যাওয়ার সময় হঠাৎ শিকারকে ঠোঁট দিয়ে ধরে ফেলে। গো-বক মাঠে চরা গবাদি পশুর পিছন পিছন ঘুরে বেড়ায় এবং এদের তাড়া-খাওয়া কীটপতঙ্গ, ব্যাঙ ও ছোট ছোট সরীসৃপ শিকার করে।

বাংলাদেশের সাধারণ বকদের মধ্যে আছে কানা বা কানিবক (Pond Heron বা Paddy Heron, Ardeola grayii); গো-বক (Cattle Egret, Bubulcus ibis); ছোট সাদাবক (Little Egret, Egretta garzetta); মাঝারি সাদাবক (Medium Egret, Mesophyox intermedia); বড় বা জাতুয়া বক (Large Egret, Casmerodius albus); ধূসর বক (Grey Heron, Ardea cinerea); বেগুনি বক (Purple Heron, Ardea purpurea); বৃহৎ বা মহাকায় বক (Giant বা Goliath Heron, Ardea goliath); ওয়াক বা নিশিবক (Black-crowned Night Heron, Nycticorax nycticorax); বাঘাবক (Tiger Bittern, Gorsachius melanolpus)। নিশিবক বা বাঘাবক ছাড়া অন্য সব বকই দিবাচর এবং এ দুটি প্রজাতি নিশাচর বা গোধূলিচর। বাংলাদেশে সর্বত্র ও সহজ দৃষ্ট হলো কানিবক, ছোট সাদাবক ও গো-বক।  [আলী রেজা খান]