পরশুরাম উপজেলা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:২৫, ৬ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))

পরশুরাম উপজেলা (ফেনী জেলা)  আয়তন: ৯৭.৫৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১০´ থেকে ২৩°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°২৩´ থেকে ৯১°৩১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং দক্ষিণে ফুলগাজী  উপজেলা।

জনসংখ্যা ৯৪৩৭৮; পুরুষ ৪৬৯২৭, মহিলা ৪৭৪৫১। মুসলিম ৮৯৮৬৯, হিন্দু ৪৪৯৯  এবং অন্যান্য ১০।

জলাশয় প্রধান নদী: সিলোনিয়া, কহুয়া ও মুহুরী।

প্রশাসন পরশুরাম থানা গঠিত হয় ৭ মে ১৮৭৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৬৬ ৭৬ ৪১৩৭৫ ৬৮২৪৪ ৯৬৭ ৫৮.০৩ ৫৪.২৯
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৯.৭৪ ১৫২২৩ ১৫৬৩ ৬০.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
চিথোলিয়া ২৩ ৫৯৮৪ ১২৪১৭ ১২৭২৩ ৫৬.৯৩
বখ্শ মোহাম্মদ ৪০ ৬৭৫৮ ১০২৭৮ ১০৫১৪ ৫১.৭৫
মির্জানগর ৪৭ ৫৮৪০ ১১০০৯ ১১৩০৩ ৫৪.১৮

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শমসের গাজীর খননকৃত দীঘি (সাতকুচিয়া)।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এ উপজেলায় মিত্রবাহিনীর বিমান অবতরণের জন্য রানওয়ে তৈরি হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ৭ নভেম্বর বিলোনিয়া বিওপিতে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে অনেক পাকসেনা নিহত হয় এবং ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। একই দিনে চিথোলিয়ার পাকসেনা ঘাঁটি পুনর্দখল করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা প্রাণ হারায় এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২২৪, মাযার ৫, মন্দির ৫।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৫.১১%; পুরুষ ৫৭.৮৩%, মহিলা ৫২.৫২%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৫, মাদ্রাসা ২০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পরশুরাম সরকারি কলেজ (১৯৭২), খন্ডল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ (১৯৩৪), সুবার বাজার মাদ্রাসা (১৯৩৪)।


পরশুরাম উপজেলা


পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মাসিক: সম্প্রীতি, ঝরাপাতা (অনিয়মিত); ত্রৈমাসিক: ধানসিঁড়ি।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রেরি ৫,  ক্লাব ১৫, সিনেমা হল ১।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বিলোনিয়া রেলস্টেশন, কাস্টমস হাউজ, বিলোনিয়া সীমান্ত পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৮.৩২%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৪%, শিল্প ০.৬৫%, ব্যবসা ১১.৮১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.২৫%, চাকরি ১৪.৫৬%, নির্মাণ ১.১৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৭.৯২% এবং অন্যান্য ৯.৪০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.৭৯%, ভূমিহীন ৩৫.২১%। শহরে ৫৩% এবং গ্রামে ৬৫.৬৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আখ, রবিশস্য।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, নারিকেল, জাম, আনারস।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১০, হাঁস-মুরগি ৮, হ্যাচারি ২।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭৬.৪৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৭.৭৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৩৪.৭৭ কিমি; রেলপথ ১০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১১, মেলা ২। পরশুরাম হাট, সুবার বাজার, বটতলী বাজার, শালধর বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪১.২৫% (শহরে ৫৩.৪৫% ও গ্রামে ৪০.৩২%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.১০%, পুকুর ২.৪৩%, ট্যাপ ০.৬১% এবং অন্যান্য ৪.৮৬%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬২.৩২% (গ্রামে ৬১.০৪% ও শহরে ৭৮.৪০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৯.৮৯% (গ্রামে ৩১.১৪% ও শহরে ১৩.৫৩%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৭.৭৯% (গ্রামে ৭.৭৭% ও শহরে ৪.০৭%)  পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৪।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার কাঁচা ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [মোহাম্মদ ইয়াকুব]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পরশুরাম উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।