নেহরু রিপোর্ট: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(fix: </u>]])
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''নেহরু রিপোর্ট'''  ১৯২৭ সালের নভেম্বরে ভারতীয় শাসনতান্ত্রিক সমস্যা বিবেচনা করার জন্য [[105885|সাইমন কমিশন]] নামে বহুল পরিচিত একটি ব্রিটিশ সংসদীয় কমিশন (যার সকল সদস্যই ছিলেন ব্রিটিশ) নিয়োগের ব্যাপারে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়া। ১৯২৮ সালের জানুয়ারি মাসে পন্ডিত মতিলাল নেহরুকে সভাপতি করে সর্বদলীয় সম্মেলনে একটি কমিটি গঠিত হয়, যার কাজ ছিল ভবিষ্যৎ ভারতীয় শাসনতন্ত্রের মূলনীতিসমূহ বিবেচনা ও নির্ধারণ করা, বিশেষত সাম্প্রদায়িক সমস্যাটি সামগ্রিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা ও শাসনতন্ত্রের সাথে এর সম্পর্ক নিরূপণ করা। ঐ সম্মেলনে ভারতীয় সমাজের বিভিন্ন মতামতের প্রায় ২৮টি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিত্ব করে। মতিলাল নেহরু ছাড়া অন্যান্য সদস্য ছিলেন আলী ইমাম, শোয়েব কোরেশী, এম.এস অ্যানী, এম.আর জয়াকর, জি.আর প্রধান, সরদার মঙ্গল সিং, তেজ বাহাদুর সপ্রু ও এম.এন যোশী। ঐ সময়কার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পন্ডিত জওহরলাল নেহরু কমিটির সচিব হিসেবে কাজ করেন। যেহেতু শাসনতন্ত্রের প্রকৃতি কি হবে তা’ নিয়ে বামপন্থি ও ডানপন্থিদের মধ্যে প্রচন্ড মতভেদ ছিল, তাই কমিটি একটি ফর্মুলা অবলম্বন করে যাতে বলা হয় যে ‘স্ব-শাসিত ডোমিনিয়নগুলির শাসনতন্ত্রের মডেলে পূর্ণ দায়িত্বশীল সরকার’ গঠন করা হবে।  
'''নেহরু রিপোর্ট'''  ১৯২৭ সালের নভেম্বরে ভারতীয় শাসনতান্ত্রিক সমস্যা বিবেচনা করার জন্য [[সাইমন কমিশন|সাইমন কমিশন]] নামে বহুল পরিচিত একটি ব্রিটিশ সংসদীয় কমিশন (যার সকল সদস্যই ছিলেন ব্রিটিশ) নিয়োগের ব্যাপারে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়া। ১৯২৮ সালের জানুয়ারি মাসে পন্ডিত মতিলাল নেহরুকে সভাপতি করে সর্বদলীয় সম্মেলনে একটি কমিটি গঠিত হয়, যার কাজ ছিল ভবিষ্যৎ ভারতীয় শাসনতন্ত্রের মূলনীতিসমূহ বিবেচনা ও নির্ধারণ করা, বিশেষত সাম্প্রদায়িক সমস্যাটি সামগ্রিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা ও শাসনতন্ত্রের সাথে এর সম্পর্ক নিরূপণ করা। ঐ সম্মেলনে ভারতীয় সমাজের বিভিন্ন মতামতের প্রায় ২৮টি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিত্ব করে। মতিলাল নেহরু ছাড়া অন্যান্য সদস্য ছিলেন আলী ইমাম, শোয়েব কোরেশী, এম.এস অ্যানী, এম.আর জয়াকর, জি.আর প্রধান, সরদার মঙ্গল সিং, তেজ বাহাদুর সপ্রু ও এম.এন যোশী। ঐ সময়কার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পন্ডিত জওহরলাল নেহরু কমিটির সচিব হিসেবে কাজ করেন। যেহেতু শাসনতন্ত্রের প্রকৃতি কি হবে তা’ নিয়ে বামপন্থি ও ডানপন্থিদের মধ্যে প্রচন্ড মতভেদ ছিল, তাই কমিটি একটি ফর্মুলা অবলম্বন করে যাতে বলা হয় যে ‘স্ব-শাসিত ডোমিনিয়নগুলির শাসনতন্ত্রের মডেলে পূর্ণ দায়িত্বশীল সরকার’ গঠন করা হবে।  


কমিটি একটি খসড়া শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে গিয়ে যে সকল সুপারিশের কথা বলে তার মধ্যে একটি ধারার ছিল সুদূরপ্রসারী প্রভাব যা ১৯১৬ সালের হিন্দু-মুসলিম সমঝোতাকে পুরোপুরি পাল্টে দেয়। রিপোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুগণ যে মুসলমানদের উপর কর্তৃত্ব করবে এমন সম্ভাবনাকে অমূলক ভীতি হিসেবে অভিহিত করা হয়। এটি পৃথক নির্বাচনের ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং যে সকল প্রদেশে মুসলমানগণ সংখ্যালঘু শুধু সেখানে তাদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করে। তড়িঘড়ি করে প্রণীত খসড়া রিপোর্টটির অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হলো: পূর্ণ দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার প্রতি দৃষ্টি রেখে ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস অর্জন; দেশিয় রাজ্যসমূহের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধাদি অক্ষুণ্ণ রেখে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনতন্ত্রের ব্যবস্থা রাখা; উত্তর পশ্চিম সীমান্ত এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের জন্য একটি পূর্ণ মর্যাদার প্রদেশ প্রতিষ্ঠা; এবং শাসনতন্ত্রে অধিকারসমূহের ঘোষণা অন্তর্ভুক্ত করা।
কমিটি একটি খসড়া শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে গিয়ে যে সকল সুপারিশের কথা বলে তার মধ্যে একটি ধারার ছিল সুদূরপ্রসারী প্রভাব যা ১৯১৬ সালের হিন্দু-মুসলিম সমঝোতাকে পুরোপুরি পাল্টে দেয়। রিপোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুগণ যে মুসলমানদের উপর কর্তৃত্ব করবে এমন সম্ভাবনাকে অমূলক ভীতি হিসেবে অভিহিত করা হয়। এটি পৃথক নির্বাচনের ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং যে সকল প্রদেশে মুসলমানগণ সংখ্যালঘু শুধু সেখানে তাদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করে। তড়িঘড়ি করে প্রণীত খসড়া রিপোর্টটির অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হলো: পূর্ণ দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার প্রতি দৃষ্টি রেখে ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস অর্জন; দেশিয় রাজ্যসমূহের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধাদি অক্ষুণ্ণ রেখে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনতন্ত্রের ব্যবস্থা রাখা; উত্তর পশ্চিম সীমান্ত এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের জন্য একটি পূর্ণ মর্যাদার প্রদেশ প্রতিষ্ঠা; এবং শাসনতন্ত্রে অধিকারসমূহের ঘোষণা অন্তর্ভুক্ত করা।
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
নেহরু রিপোর্ট বাংলার মুসলিম রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর মর্মবেদনার কারণ হয়েছিল। তারা এর মাঝে হিন্দু আধিপত্যবাদের অপচ্ছায়া দেখতে পায়। প্রথম নির্বাচনের মূলনীতি ছিল বাংলায় মুসলিম রাজনীতির অপরিহার্য শর্ত, এবং হঠাৎ করে এর প্রত্যাখান মুসলমানগণ প্রতিপক্ষ হিন্দুদের দ্বারা মুসলিম স্বার্থের উপর বিশ্বাসঘাতকতা বলে গণ্য করে। তারা দাবি করে যে, যেহেতু এ প্রদেশটিতে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ তাই তাদেরকে আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন প্রদান করা উচিত, এবং তাদেরকে হিন্দুদের অর্থনৈতিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে শোষণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। হিন্দুরা এ দাবিগুলির ভিতর কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পায়নি; বরং তারা দাবি করে যে, যদিও তারা সংখ্যালঘু, তবুও তাদের অতীতের কার্যাবলি ও বর্তমানের যোগ্যতার ভিত্তিতে সংসদে তাদের বর্তমান সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্পূর্ণভাবে ন্যায্য।
নেহরু রিপোর্ট বাংলার মুসলিম রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর মর্মবেদনার কারণ হয়েছিল। তারা এর মাঝে হিন্দু আধিপত্যবাদের অপচ্ছায়া দেখতে পায়। প্রথম নির্বাচনের মূলনীতি ছিল বাংলায় মুসলিম রাজনীতির অপরিহার্য শর্ত, এবং হঠাৎ করে এর প্রত্যাখান মুসলমানগণ প্রতিপক্ষ হিন্দুদের দ্বারা মুসলিম স্বার্থের উপর বিশ্বাসঘাতকতা বলে গণ্য করে। তারা দাবি করে যে, যেহেতু এ প্রদেশটিতে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ তাই তাদেরকে আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন প্রদান করা উচিত, এবং তাদেরকে হিন্দুদের অর্থনৈতিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে শোষণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। হিন্দুরা এ দাবিগুলির ভিতর কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পায়নি; বরং তারা দাবি করে যে, যদিও তারা সংখ্যালঘু, তবুও তাদের অতীতের কার্যাবলি ও বর্তমানের যোগ্যতার ভিত্তিতে সংসদে তাদের বর্তমান সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্পূর্ণভাবে ন্যায্য।


নেহরু রিপোর্ট একটি সর্বাত্মক দলিল হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রণীত হয় নি, শুধু শাসনতন্ত্রের ধরন কি হবে তা নিয়ে একটি আন্তঃদলীয় চুক্তি প্রণয়নই ছিল এর উদ্দেশ্য। তাই এটি নতুনভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলা ছাড়া তেমন অর্থবহ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে নি। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, [[102083|মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ]]এর চৌদ্দ দফা, নেহরু রিপোর্টের সংশোধনী হিসেবে পেশ করা হয় এবং তার মধ্যে মুসলমানদের স্বার্থ বিশেষভাবে সংরক্ষণের উপাদানসমূহ এতে সন্নিবেশিত হয়েছিল।  [এনায়েতুর রহিম]
নেহরু রিপোর্ট একটি সর্বাত্মক দলিল হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রণীত হয় নি, শুধু শাসনতন্ত্রের ধরন কি হবে তা নিয়ে একটি আন্তঃদলীয় চুক্তি প্রণয়নই ছিল এর উদ্দেশ্য। তাই এটি নতুনভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলা ছাড়া তেমন অর্থবহ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে নি। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, [[জিন্নাহমোহাম্মদ আলী|মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ]]-এর চৌদ্দ দফা, নেহরু রিপোর্টের সংশোধনী হিসেবে পেশ করা হয় এবং তার মধ্যে মুসলমানদের স্বার্থ বিশেষভাবে সংরক্ষণের উপাদানসমূহ এতে সন্নিবেশিত হয়েছিল।  [এনায়েতুর রহিম]
 
 


[[en:Nehru Report]]
[[en:Nehru Report]]

০৫:৩৭, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

নেহরু রিপোর্ট  ১৯২৭ সালের নভেম্বরে ভারতীয় শাসনতান্ত্রিক সমস্যা বিবেচনা করার জন্য সাইমন কমিশন নামে বহুল পরিচিত একটি ব্রিটিশ সংসদীয় কমিশন (যার সকল সদস্যই ছিলেন ব্রিটিশ) নিয়োগের ব্যাপারে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়া। ১৯২৮ সালের জানুয়ারি মাসে পন্ডিত মতিলাল নেহরুকে সভাপতি করে সর্বদলীয় সম্মেলনে একটি কমিটি গঠিত হয়, যার কাজ ছিল ভবিষ্যৎ ভারতীয় শাসনতন্ত্রের মূলনীতিসমূহ বিবেচনা ও নির্ধারণ করা, বিশেষত সাম্প্রদায়িক সমস্যাটি সামগ্রিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা ও শাসনতন্ত্রের সাথে এর সম্পর্ক নিরূপণ করা। ঐ সম্মেলনে ভারতীয় সমাজের বিভিন্ন মতামতের প্রায় ২৮টি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিত্ব করে। মতিলাল নেহরু ছাড়া অন্যান্য সদস্য ছিলেন আলী ইমাম, শোয়েব কোরেশী, এম.এস অ্যানী, এম.আর জয়াকর, জি.আর প্রধান, সরদার মঙ্গল সিং, তেজ বাহাদুর সপ্রু ও এম.এন যোশী। ঐ সময়কার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পন্ডিত জওহরলাল নেহরু কমিটির সচিব হিসেবে কাজ করেন। যেহেতু শাসনতন্ত্রের প্রকৃতি কি হবে তা’ নিয়ে বামপন্থি ও ডানপন্থিদের মধ্যে প্রচন্ড মতভেদ ছিল, তাই কমিটি একটি ফর্মুলা অবলম্বন করে যাতে বলা হয় যে ‘স্ব-শাসিত ডোমিনিয়নগুলির শাসনতন্ত্রের মডেলে পূর্ণ দায়িত্বশীল সরকার’ গঠন করা হবে।

কমিটি একটি খসড়া শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে গিয়ে যে সকল সুপারিশের কথা বলে তার মধ্যে একটি ধারার ছিল সুদূরপ্রসারী প্রভাব যা ১৯১৬ সালের হিন্দু-মুসলিম সমঝোতাকে পুরোপুরি পাল্টে দেয়। রিপোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুগণ যে মুসলমানদের উপর কর্তৃত্ব করবে এমন সম্ভাবনাকে অমূলক ভীতি হিসেবে অভিহিত করা হয়। এটি পৃথক নির্বাচনের ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং যে সকল প্রদেশে মুসলমানগণ সংখ্যালঘু শুধু সেখানে তাদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করে। তড়িঘড়ি করে প্রণীত খসড়া রিপোর্টটির অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হলো: পূর্ণ দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার প্রতি দৃষ্টি রেখে ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস অর্জন; দেশিয় রাজ্যসমূহের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধাদি অক্ষুণ্ণ রেখে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনতন্ত্রের ব্যবস্থা রাখা; উত্তর পশ্চিম সীমান্ত এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের জন্য একটি পূর্ণ মর্যাদার প্রদেশ প্রতিষ্ঠা; এবং শাসনতন্ত্রে অধিকারসমূহের ঘোষণা অন্তর্ভুক্ত করা।

নেহরু রিপোর্ট বাংলার মুসলিম রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর মর্মবেদনার কারণ হয়েছিল। তারা এর মাঝে হিন্দু আধিপত্যবাদের অপচ্ছায়া দেখতে পায়। প্রথম নির্বাচনের মূলনীতি ছিল বাংলায় মুসলিম রাজনীতির অপরিহার্য শর্ত, এবং হঠাৎ করে এর প্রত্যাখান মুসলমানগণ প্রতিপক্ষ হিন্দুদের দ্বারা মুসলিম স্বার্থের উপর বিশ্বাসঘাতকতা বলে গণ্য করে। তারা দাবি করে যে, যেহেতু এ প্রদেশটিতে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ তাই তাদেরকে আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন প্রদান করা উচিত, এবং তাদেরকে হিন্দুদের অর্থনৈতিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে শোষণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। হিন্দুরা এ দাবিগুলির ভিতর কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পায়নি; বরং তারা দাবি করে যে, যদিও তারা সংখ্যালঘু, তবুও তাদের অতীতের কার্যাবলি ও বর্তমানের যোগ্যতার ভিত্তিতে সংসদে তাদের বর্তমান সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্পূর্ণভাবে ন্যায্য।

নেহরু রিপোর্ট একটি সর্বাত্মক দলিল হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রণীত হয় নি, শুধু শাসনতন্ত্রের ধরন কি হবে তা নিয়ে একটি আন্তঃদলীয় চুক্তি প্রণয়নই ছিল এর উদ্দেশ্য। তাই এটি নতুনভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলা ছাড়া তেমন অর্থবহ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে নি। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ-এর চৌদ্দ দফা, নেহরু রিপোর্টের সংশোধনী হিসেবে পেশ করা হয় এবং তার মধ্যে মুসলমানদের স্বার্থ বিশেষভাবে সংরক্ষণের উপাদানসমূহ এতে সন্নিবেশিত হয়েছিল।  [এনায়েতুর রহিম]