নাসিম, মোহাম্মদ

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৮:০৩, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ ("right|thumbnail|200px|মোহাম্মদ নাসিম '''নাসিম, মোহাম্মদ''' (১৯৪৮-২০২০) রাজনীতিবিদ, পাঁচ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্য। তিনি ১৯৪৮ সালের ২রা এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জে..." দিয়ে পাতা তৈরি)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
মোহাম্মদ নাসিম

নাসিম, মোহাম্মদ (১৯৪৮-২০২০) রাজনীতিবিদ, পাঁচ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্য। তিনি ১৯৪৮ সালের ২রা এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী, স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র ও তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী। মাতা আমেনা মনসুর। ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর দুই পুত্রের মধ্যে বড় ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম।

মোহাম্মদ নাসিম ১৯৬৫ সালে এস.এস.সি পাশ করে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন। এ সময় থেকে তিনি ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় হন। শুরুর দিকে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ছাত্রলীগ করতে শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে এডওয়ার্ড কলেজ ছাত্র সংসদে সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক নির্বাচিত হন। এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশের পর ঢাকার জগন্নাথ কলেজে থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। রাজনীতির বিভিন্ন পর্যায়ে মোহাম্মদ নাসিমকে অনেকবার কারাবন্দি হতে হয়েছে। ১৯৬৬ সালে এইচএসসি ক্লাসে অধ্যয়নকালীন পাকিস্তান সরকারের ভুট্টা খাওয়ানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পিতা এম মনসুর আলীর সঙ্গে তাঁকেও কারাগারে যেতে হয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্মম স্বপরিবারে হত্যাকা-ের শিকার এবং একই বছর ৩রা নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় ৩ জাতীয় নেতার সঙ্গে পিতা ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর হত্যাকা-ের পর অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মোহাম্মদ নাসিমও কারারুদ্ধ হন। ২০০৭ সালের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও অনেক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পিতা ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীসহ পুরো পরিবার ভারত চলে যান। এ সময় মোহাম্মদ নাসিম মুজিবনগর সরকার (বাংলাদেশের প্রথম সরকার)-এর পক্ষে শরণার্থীদের সহায়তা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্তি ও প্রশিক্ষণে ভূমিকা রাখেন। স্বাধীনতাপরবর্তী ১৯৭৩ সালে তিনি আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠিত হলে পাবনা জেলায় তিনি এর সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে মোহাম্মদ নাসিম যুব সম্পাদক মনোনীত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হন। আওয়ামী লীগের ১৯৯২ এবং ১৯৯৭ সালের জাতীয় সম্মেলনে তাঁকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০১২ সালের কাউন্সিলে তাঁকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত করা হয়।

মোহাম্মদ নাসিম ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সিরাজগঞ্জ থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬, ২০০১, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে পুনরায় একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ‘অবৈধ সম্পদ অর্জন’ এবং ‘সম্পদের তথ্য গোপন করার’ অভিযোগে মামলাজনিত কারণে তিনি ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এ সময় তাঁর পুত্র তানভীর শাকিল জয় এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মোহাম্মদ নাসিম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সংসদীয় বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্র হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

২০২০ সালের ১৩ই জুন মোহাম্মদ নাসিম মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর পুত্র তানভীর শাকিল জয় পুনরায় সিরাজগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মোহাম্মদ নাসিমের স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ বীথি। এ দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। [মনিরুজ্জামান শাহীন]