নড়াইল সদর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৭ নং লাইন: ৭ নং লাইন:


''প্রশাসন'' নড়াইল থানা গঠিত হয় ১৮৬১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।
''প্রশাসন'' নড়াইল থানা গঠিত হয় ১৮৬১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।


{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
১৩ নং লাইন: ১২ নং লাইন:
| colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
| rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১  || ১৩  || ১৮০  || ২৩১  || ৪৬৯০৯  || ২২২৫১৪  || ৭০৬  || ৬২.২২  || ৫৩.১১  
| ১  || ১৩  || ১৮০  || ২৩১  || ৪৬৯০৯  || ২২২৫১৪  || ৭০৬  || ৬২.২২  || ৫৩.১১  
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
|পৌরসভা
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
|-
|-
| ২৭.৭২  || ৯  || ২৪  || ৩৭০১৮  || ১৩৩৫  || ৬৪.৯৬  
| ২৭.৭২  || ৯  || ২৪  || ৩৭০১৮  || ১৩৩৫  || ৬৪.৯৬  
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" |  উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১০.৩৫  || ১১  || ৯৮৯১  || ৯৫৬  || ৫২.০৬  
| ১০.৩৫  || ১১  || ৯৮৯১  || ৯৫৬  || ৫২.০৬  
 
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন  
| colspan="9" |  ইউনিয়ন  
 
|-
|-
| ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || আয়তন(একর)  || লোকসংখ্যা  || শিক্ষার হার(%)  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)  
 
|-
|-
| <nowiki> ||  || </nowiki>পুরূষ  || মহিলা  ||  
| পুরূষ  || মহিলা  ||  


|-
|-
৮১ নং লাইন: ৭১ নং লাইন:
|-
|-
| সাহবাদ ৭৪  || ৪৬৪৭  || ৬৩৪৩  || ৬২২৯  || ৬০.৫২  
| সাহবাদ ৭৪  || ৪৬৪৭  || ৬৩৪৩  || ৬২২৯  || ৬০.৫২  
|-
|-
| শেখহাটি ৮১  || ৯০৫৬  || ১১০১১  || ১০৪৯৮  || ৫০.১০  
| শেখহাটি ৮১  || ৯০৫৬  || ১১০১১  || ১০৪৯৮  || ৫০.১০  
|-
|-
| সিংগাশোলপুর ৮৮  || ৪৬৯৮  || ৭৯৪৬  || ৭৭৩০  || ৪৮.৫৩  
| সিংগাশোলপুর ৮৮  || ৪৬৯৮  || ৭৯৪৬  || ৭৭৩০  || ৪৮.৫৩  
|-
|-
| হবখালী ৪০  || ৫৯৮৪  || ৮৭৬৯  || ৮৪১২  || ৪২.৮৬  
| হবখালী ৪০  || ৫৯৮৪  || ৮৭৬৯  || ৮৪১২  || ৪২.৮৬  
৯৩ নং লাইন: ৮০ নং লাইন:
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:NarailSadarUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' গোয়ালবাথান মসজিদ (১৬৫৪)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' গোয়ালবাথান মসজিদ (১৬৫৪)।


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ১৯৪৬ সালে কমিউনিস্টকর্মী নূরজালালের নেতৃত্বে এ উপজেলায়  [[তেভাগা আন্দোলন|তেভাগা আন্দোলন]] শুরু হয়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিয়া নড়াইল অস্ত্রাগার ভেঙ্গে লোহাগড়ায় নিয়ে যায়। ২ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা রূপগঞ্জ পাকসেনা-ক্যাম্প আক্রমণ করে এবং এখান থেকে পালিয়ে যাওয়া ৬০ জন পাকসেনাকে ধরে নড়াইল ফেরিঘাটে হত্যা করে। ৩ এপ্রিল পাকসেনারা নড়াইল শহর আক্রমণ করে। ৬ এপ্রিল পাকসেনাদের বিমান আক্রমণে নড়াইল শহরের কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শহর জনশূণ্য হয়ে যায়। ১৩ এপ্রিল পাকসেনারা নড়াইলে ঘাঁটি স্থাপন করে। মে মাসের প্রথমদিকে স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকসেনারা রামসিদ্ধি থেকে কালিয়া পাইলট হাইস্কুলের শিক্ষক শেখ আব্দুস ছালামকে ধরে নিয়ে ১৩ মে যশোর সেনানিবাসে হত্যা করে। ১৭ জুলাই স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকসেনারা তুলারামপুর গ্রাম থেকে ৮ জন নিরীহ মানুষকে ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করে। ৭ ডিসেম্বর মাছিমদিয়া গ্রামে পাকসেনা ও রাজাকারদের হাতে কলেজ ছাত্র মিজানুর রহমান শহীদ হন। ৯ ডিসেম্বর পাকসেনাদের ঘাঁটিতে মুক্তিযোদ্ধারা সর্বাত্মক আক্রমণ চালায় এবং এ আক্রমণে মতিয়ার রহমান নামে একজন ছাত্র শহীদ হন। ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে একযোগে আক্রমণ চালিয়ে নড়াইল শহর পাকসেনা মুক্ত করেন। ১৪ ডিসেম্বর ৮ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর  [[মঞ্জুর, মেজর জেনারেল মুহম্মদ আবুল|আবুল মঞ্জুর]] নড়াইল ডাকবাংলোর সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ১৯৪৬ সালে কমিউনিস্টকর্মী নূরজালালের নেতৃত্বে এ উপজেলায়  [[তেভাগা আন্দোলন|তেভাগা আন্দোলন]] শুরু হয়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিয়া নড়াইল অস্ত্রাগার ভেঙ্গে লোহাগড়ায় নিয়ে যায়। ২ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা রূপগঞ্জ পাকসেনা-ক্যাম্প আক্রমণ করে এবং এখান থেকে পালিয়ে যাওয়া ৬০ জন পাকসেনাকে ধরে নড়াইল ফেরিঘাটে হত্যা করে। ৩ এপ্রিল পাকসেনারা নড়াইল শহর আক্রমণ করে। ৬ এপ্রিল পাকসেনাদের বিমান আক্রমণে নড়াইল শহরের কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শহর জনশূণ্য হয়ে যায়। ১৩ এপ্রিল পাকসেনারা নড়াইলে ঘাঁটি স্থাপন করে। মে মাসের প্রথমদিকে স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকসেনারা রামসিদ্ধি থেকে কালিয়া পাইলট হাইস্কুলের শিক্ষক শেখ আব্দুস ছালামকে ধরে নিয়ে ১৩ মে যশোর সেনানিবাসে হত্যা করে। ১৭ জুলাই স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকসেনারা তুলারামপুর গ্রাম থেকে ৮ জন নিরীহ মানুষকে ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করে। ৭ ডিসেম্বর মাছিমদিয়া গ্রামে পাকসেনা ও রাজাকারদের হাতে কলেজ ছাত্র মিজানুর রহমান শহীদ হন। ৯ ডিসেম্বর পাকসেনাদের ঘাঁটিতে মুক্তিযোদ্ধারা সর্বাত্মক আক্রমণ চালায় এবং এ আক্রমণে মতিয়ার রহমান নামে একজন ছাত্র শহীদ হন। ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে একযোগে আক্রমণ চালিয়ে নড়াইল শহর পাকসেনা মুক্ত করেন। ১৪ ডিসেম্বর ৮ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর  [[মঞ্জুর, মেজর জেনারেল মুহম্মদ আবুল|আবুল মঞ্জুর]] নড়াইল ডাকবাংলোর সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
[[Image:নড়াইল সদর উপজেলা_html_88407781.png]]
[[Image:NarailSadarUpazila.jpg]]


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১।
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৭৫, মন্দির ৭৫, গির্জা ১, মাযার ২, তীর্থস্থান ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: গোয়ালবাথান মসজিদ, রূপগঞ্জ জামে মসজিদ।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ২৭৫, মন্দির ৭৫, গির্জা ১, মাযার ২, তীর্থস্থান ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: গোয়ালবাথান মসজিদ, রূপগঞ্জ জামে মসজিদ।


শিক্ষার হার'','' শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৫৪.৭৩%; পুরুষ ৫৯.২২%, মহিলা ৫০.০৯%। কলেজ ১০, হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ১, কৃষি ও কারিগরি কলেজ ১, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৩, স্যাটেলাইট স্কুল ১০, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৬, অন্ধস্কুল ১, মাদ্রাসা ৭৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ (১৮৮৬), নড়াইল বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৪), নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল (১৮৫৭), নড়াইল ভিসি স্কুল (১৮৫৭), নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৩), মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৬), হবখালী হামিদুননেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), সিংগাশোলপুর কেপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), সিঙ্গিয়া-হাটবালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), পার্বতী বিদ্যাপিঠ (১৯২৩), বাঁশগ্রাম বিষ্ণুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩২), মাইজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩২), নড়াইল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (১৯৫৩), সাহবাদ মাজিদিয়া আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৫০)।  
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৫৪.৭৩%; পুরুষ ৫৯.২২%, মহিলা ৫০.০৯%। কলেজ ১০, হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ১, কৃষি ও কারিগরি কলেজ ১, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৩, স্যাটেলাইট স্কুল ১০, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৬, অন্ধস্কুল ১, মাদ্রাসা ৭৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ (১৮৮৬), নড়াইল বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৪), নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল (১৮৫৭), নড়াইল ভিসি স্কুল (১৮৫৭), নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৩), মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৬), হবখালী হামিদুননেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), সিংগাশোলপুর কেপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), সিঙ্গিয়া-হাটবালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), পার্বতী বিদ্যাপিঠ (১৯২৩), বাঁশগ্রাম বিষ্ণুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩২), মাইজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩২), নড়াইল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (১৯৫৩), সাহবাদ মাজিদিয়া আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৫০)।  


পত্র''-''পত্রিকা ও সাময়িকী  দৈনিক: ওশান; সাপ্তাহিক: প্রান্তিক, নড়াইল বার্তা; পাক্ষিক: কিরণ, ভোরের আলো (অবলুপ্ত); সাময়িকী: ভাস্কর, গ্রামের বাণী, জাগৃতি, রক্তঋণ, হাতছানি, বিজয়, সাহিত্যকলি, ফেরা, শেকড়ের সন্ধানে।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক: ওশান; সাপ্তাহিক: প্রান্তিক, নড়াইল বার্তা; পাক্ষিক: কিরণ, ভোরের আলো (অবলুপ্ত); সাময়িকী: ভাস্কর, গ্রামের বাণী, জাগৃতি, রক্তঋণ, হাতছানি, বিজয়, সাহিত্যকলি, ফেরা, শেকড়ের সন্ধানে।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ৫, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ১, যাত্রাপার্টি ৩, মহিলা সংগঠন ২।  
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ৫, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ১, যাত্রাপার্টি ৩, মহিলা সংগঠন ২।  
১২১ নং লাইন: ১০৫ নং লাইন:
প্রধান ফল''-''ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, জাম, জামরুল, খেজুর, পেয়ারা, নারিকেল।
প্রধান ফল''-''ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, জাম, জামরুল, খেজুর, পেয়ারা, নারিকেল।


''মৎস্য'', ''গবাদিপশু ও হাঁস''-''মুরগির খামার'' মৎস্য ২৩৫০ (চিংড়ি ১৩৪৫, অন্যান্য মাছ ১০০৫), গবাদিপশু ১০৭, হাঁস-মুরগি ৭৫, হ্যাচারি ১, নার্সারি ১৬।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২৩৫০ (চিংড়ি ১৩৪৫, অন্যান্য মাছ ১০০৫), গবাদিপশু ১০৭, হাঁস-মুরগি ৭৫, হ্যাচারি ১, নার্সারি ১৬।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৯৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৩০ কিমি; নৌপথ ৪৪.২৭ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৯৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৩০ কিমি; নৌপথ ৪৪.২৭ নটিক্যাল মাইল।
১২৯ নং লাইন: ১১৩ নং লাইন:
''শিল্প ও কলকারখানা'' টেক্সটাইল মিল, স’মিল, রাইসমিল, ফ্লাওয়ার মিল, আইস ফ্যাক্টরি, প্রিন্টিং প্রেস, ওয়েল্ডিং কারখানা।  
''শিল্প ও কলকারখানা'' টেক্সটাইল মিল, স’মিল, রাইসমিল, ফ্লাওয়ার মিল, আইস ফ্যাক্টরি, প্রিন্টিং প্রেস, ওয়েল্ডিং কারখানা।  


''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, খাদ্যশিল্প, বুননশিল্প,'' ''বাঁশশিল্প, বেত ও কাঠের কাজ, সেলাই কাজ ইত্যাদি।
''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, খাদ্যশিল্প, বুননশিল্প,'' ''বাঁশশিল্প, বেত ও কাঠের কাজ, সেলাই কাজ ইত্যাদি।


''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ১৭, মেলা ১০। রূপগঞ্জ, গোবরা, সিঙ্গিয়া, তুলারামপুর, মির্জাপুর, মাইজপাড়া, নাকমি ও চালিতাতলা বাজার এবং সুলতান মেলা, নিশিনাথতলা মেলা, রূপগঞ্জ মেলা ও হিজল ডাঙ্গার মেলা উল্লেখযোগ্য।  
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ১৭, মেলা ১০। রূপগঞ্জ, গোবরা, সিঙ্গিয়া, তুলারামপুর, মির্জাপুর, মাইজপাড়া, নাকমি ও চালিতাতলা বাজার এবং সুলতান মেলা, নিশিনাথতলা মেলা, রূপগঞ্জ মেলা ও হিজল ডাঙ্গার মেলা উল্লেখযোগ্য।  


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   পান, পেঁপে, খেজুর গুড়, নারিকেল।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  পান, পেঁপে, খেজুর গুড়, নারিকেল।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৯৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৯৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.৮৬%, পুকুর ০.৩৫%, ট্যাপ ১.৫৮% এবং অন্যান্য ২.২১%। এ উপজেলার ২১% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.৮৬%, পুকুর ০.৩৫%, ট্যাপ ১.৫৮% এবং অন্যান্য ২.২১%। এ উপজেলার ২১% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৩৭.৭৭% (গ্রামে ৩৩.৪২% ও শহরে ৫৮.৪৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.১০% (গ্রামে ৪৩.৯৩% ও শহরে ২৭.৬৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২১.১২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৩৭.৭৭% (গ্রামে ৩৩.৪২% ও শহরে ৫৮.৪৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.১০% (গ্রামে ৪৩.৯৩% ও শহরে ২৭.৬৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২১.১২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
১৪৫ নং লাইন: ১২৯ নং লাইন:
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯০৯, ১৯৬১ ও ১৯৮৮ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার শতাধিক লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, গাছপালা ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬), ১৯৪৩ ও ১৯৫০ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়। ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় কাঁচা ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯০৯, ১৯৬১ ও ১৯৮৮ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার শতাধিক লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, গাছপালা ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬), ১৯৪৩ ও ১৯৫০ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়। ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় কাঁচা ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।


''এনজিও'' কেয়ার, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা।  [এনামুল কবির টুকু]  
''এনজিও'' কেয়ার, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা।  [এনামুল কবির টুকু]  


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নড়াইল সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নড়াইল সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
<!-- imported from file: নড়াইল সদর উপজেলা.html-->
[[en:Narail Sadar Upazila]]
[[en:Narail Sadar Upazila]]


[[en:Narail Sadar Upazila]]
[[en:Narail Sadar Upazila]]

০৬:০৯, ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

নড়াইল সদর উপজেলা (নড়াইল জেলা)  আয়তন: ৩৮১.৭৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০২´ থেকে ২৩°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৩´ থেকে ৮৯°৩৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লোহাগড়া ও শালিখা উপজেলা, দক্ষিণে কালিয়া ও অভয়নগর উপজেলা, পূর্বে লোহাগড়া উপজেলা, পশ্চিমে বাঘারপাড়া ও যশোর সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৬৯৪২৩; পুরুষ ১৩৭২৩৪, মহিলা ১৩২১৮৯। মুসলিম ১৮৭২০৭, হিন্দু ৮১৯৮৫, বৌদ্ধ ১৪০, খ্রিস্টান ১৫ এবং অন্যান্য ৭৬।

জলাশয় প্রধান নদী: নবগঙ্গা, চিত্রা, ভৈরব। গোবরা খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন নড়াইল থানা গঠিত হয় ১৮৬১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৩ ১৮০ ২৩১ ৪৬৯০৯ ২২২৫১৪ ৭০৬ ৬২.২২ ৫৩.১১
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৭.৭২ ২৪ ৩৭০১৮ ১৩৩৫ ৬৪.৯৬
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.৩৫ ১১ ৯৮৯১ ৯৫৬ ৫২.০৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরূষ মহিলা
আউড়িয়া ১১ ৮০১৩ ১১৬৩০ ১১২৬৭ ৬১.৯০
কলোড়া ৪৭ ৬৯৮৪ ১০৩৪২ ৯৯১২ ৫১.৭১
চন্ডীবরপুর ৩৩ ৬১৯৫ ৮৯১৩ ৮৮৩৯ ৫৪.০৫
তুলারামপুর ৯৪ ৮২৫৮ ৮৮৯৭ ৮৬৬৭ ৬৩.০৮
বাঁশগ্রাম ১৩ ৯৭৮৮ ৮৮৭৫ ৭৫৭৮ ৫৪.৯৮
বিছালি ২৭ ৮১৪২ ১০০৮২ ৯৯১২ ৫২.৪২
ভদ্রবিলা ২০ ৬০১১ ৯০৮৩ ৯০৬২ ৪৮.৮০
মাইজপাড়া ৫৪ ৬৮৬৫ ১০৯৯৯ ১০৫১৮ ৪৮.৭২
মুলিয়া ৬১ ২৫৫৫ ৫০৬৯ ৪৮২২ ৫২.০৬
সাহবাদ ৭৪ ৪৬৪৭ ৬৩৪৩ ৬২২৯ ৬০.৫২
শেখহাটি ৮১ ৯০৫৬ ১১০১১ ১০৪৯৮ ৫০.১০
সিংগাশোলপুর ৮৮ ৪৬৯৮ ৭৯৪৬ ৭৭৩০ ৪৮.৫৩
হবখালী ৪০ ৫৯৮৪ ৮৭৬৯ ৮৪১২ ৪২.৮৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ গোয়ালবাথান মসজিদ (১৬৫৪)।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ১৯৪৬ সালে কমিউনিস্টকর্মী নূরজালালের নেতৃত্বে এ উপজেলায়  তেভাগা আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিয়া নড়াইল অস্ত্রাগার ভেঙ্গে লোহাগড়ায় নিয়ে যায়। ২ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা রূপগঞ্জ পাকসেনা-ক্যাম্প আক্রমণ করে এবং এখান থেকে পালিয়ে যাওয়া ৬০ জন পাকসেনাকে ধরে নড়াইল ফেরিঘাটে হত্যা করে। ৩ এপ্রিল পাকসেনারা নড়াইল শহর আক্রমণ করে। ৬ এপ্রিল পাকসেনাদের বিমান আক্রমণে নড়াইল শহরের কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শহর জনশূণ্য হয়ে যায়। ১৩ এপ্রিল পাকসেনারা নড়াইলে ঘাঁটি স্থাপন করে। মে মাসের প্রথমদিকে স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকসেনারা রামসিদ্ধি থেকে কালিয়া পাইলট হাইস্কুলের শিক্ষক শেখ আব্দুস ছালামকে ধরে নিয়ে ১৩ মে যশোর সেনানিবাসে হত্যা করে। ১৭ জুলাই স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকসেনারা তুলারামপুর গ্রাম থেকে ৮ জন নিরীহ মানুষকে ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করে। ৭ ডিসেম্বর মাছিমদিয়া গ্রামে পাকসেনা ও রাজাকারদের হাতে কলেজ ছাত্র মিজানুর রহমান শহীদ হন। ৯ ডিসেম্বর পাকসেনাদের ঘাঁটিতে মুক্তিযোদ্ধারা সর্বাত্মক আক্রমণ চালায় এবং এ আক্রমণে মতিয়ার রহমান নামে একজন ছাত্র শহীদ হন। ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে একযোগে আক্রমণ চালিয়ে নড়াইল শহর পাকসেনা মুক্ত করেন। ১৪ ডিসেম্বর ৮ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর  আবুল মঞ্জুর নড়াইল ডাকবাংলোর সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৭৫, মন্দির ৭৫, গির্জা ১, মাযার ২, তীর্থস্থান ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: গোয়ালবাথান মসজিদ, রূপগঞ্জ জামে মসজিদ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৫৪.৭৩%; পুরুষ ৫৯.২২%, মহিলা ৫০.০৯%। কলেজ ১০, হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ১, কৃষি ও কারিগরি কলেজ ১, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৩, স্যাটেলাইট স্কুল ১০, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৬, অন্ধস্কুল ১, মাদ্রাসা ৭৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ (১৮৮৬), নড়াইল বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৪), নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল (১৮৫৭), নড়াইল ভিসি স্কুল (১৮৫৭), নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৩), মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৬), হবখালী হামিদুননেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), সিংগাশোলপুর কেপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), সিঙ্গিয়া-হাটবালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), পার্বতী বিদ্যাপিঠ (১৯২৩), বাঁশগ্রাম বিষ্ণুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩২), মাইজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩২), নড়াইল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (১৯৫৩), সাহবাদ মাজিদিয়া আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৫০)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  দৈনিক: ওশান; সাপ্তাহিক: প্রান্তিক, নড়াইল বার্তা; পাক্ষিক: কিরণ, ভোরের আলো (অবলুপ্ত); সাময়িকী: ভাস্কর, গ্রামের বাণী, জাগৃতি, রক্তঋণ, হাতছানি, বিজয়, সাহিত্যকলি, ফেরা, শেকড়ের সন্ধানে।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৫, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ১, যাত্রাপার্টি ৩, মহিলা সংগঠন ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৪.৯৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৩%, শিল্প ১.৭৮%, ব্যবসা ১২.০৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৫৫%, চাকরি ৮.৭৪%, নির্মাণ ১.০২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৩% এবং অন্যান্য ৪.৪৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭১.৬০%, ভূমিহীন ২৮.৪০%। শহরে ৬১.৪১% এবং গ্রামে ৭৩.৭৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, ডাল, তৈল, পান, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি নীল, চিনা, কাউন, মেস্তা (পাট)।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, জাম, জামরুল, খেজুর, পেয়ারা, নারিকেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৩৫০ (চিংড়ি ১৩৪৫, অন্যান্য মাছ ১০০৫), গবাদিপশু ১০৭, হাঁস-মুরগি ৭৫, হ্যাচারি ১, নার্সারি ১৬।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৩০ কিমি; নৌপথ ৪৪.২৭ নটিক্যাল মাইল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা টেক্সটাইল মিল, স’মিল, রাইসমিল, ফ্লাওয়ার মিল, আইস ফ্যাক্টরি, প্রিন্টিং প্রেস, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, খাদ্যশিল্প, বুননশিল্প, বাঁশশিল্প, বেত ও কাঠের কাজ, সেলাই কাজ ইত্যাদি।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৭, মেলা ১০। রূপগঞ্জ, গোবরা, সিঙ্গিয়া, তুলারামপুর, মির্জাপুর, মাইজপাড়া, নাকমি ও চালিতাতলা বাজার এবং সুলতান মেলা, নিশিনাথতলা মেলা, রূপগঞ্জ মেলা ও হিজল ডাঙ্গার মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পান, পেঁপে, খেজুর গুড়, নারিকেল।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৯৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৮৬%, পুকুর ০.৩৫%, ট্যাপ ১.৫৮% এবং অন্যান্য ২.২১%। এ উপজেলার ২১% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৭.৭৭% (গ্রামে ৩৩.৪২% ও শহরে ৫৮.৪৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.১০% (গ্রামে ৪৩.৯৩% ও শহরে ২৭.৬৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২১.১২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৯, মাতৃসদন ১৪, ক্লিনিক ৩২।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯০৯, ১৯৬১ ও ১৯৮৮ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার শতাধিক লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, গাছপালা ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬), ১৯৪৩ ও ১৯৫০ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়। ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় কাঁচা ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও কেয়ার, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা।  [এনামুল কবির টুকু]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নড়াইল সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।