ধুনারি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''ধুনারি'''  বিছানা-পত্র প্রস্ত্ততকারী পেশাজীবী সম্প্রদায়। এরা তুলা থেকে বিচি ও খোসা বের করে তুলাকে লেপ, তোশক, বালিশ, জাজিম ইত্যাদি তৈরির উপযোগী করে এবং দক্ষতার সঙ্গে এসব প্রস্ত্তত করেন। কখনও কখনও তারা জাজিম তৈরির সময় নারিকেলের ছোবড়া টুকরা করে ব্যবহার করে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ খুঁজে বের করে লেপ তোশক তৈরি করা ধুনারি পেশার অতি পুরানো নিয়ম। তারা সরাসরি ভোক্তাদের দোরগোড়ায় গিয়ে ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজন মেটায়।
'''ধুনারি'''  বিছানা-পত্র প্রস্ত্ততকারী পেশাজীবী সম্প্রদায়। এরা তুলা থেকে বিচি ও খোসা বের করে তুলাকে লেপ, তোশক, বালিশ, জাজিম ইত্যাদি তৈরির উপযোগী করে এবং দক্ষতার সঙ্গে এসব প্রস্ত্তত করেন। কখনও কখনও তারা জাজিম তৈরির সময় নারিকেলের ছোবড়া টুকরা করে ব্যবহার করে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ খুঁজে বের করে লেপ তোশক তৈরি করা ধুনারি পেশার অতি পুরানো নিয়ম। তারা সরাসরি ভোক্তাদের দোরগোড়ায় গিয়ে ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজন মেটায়।


[[Image:Dhunari.jpg|thumb|400px|right|ধুনারি]]
[[Image:Dhunari.jpg|thumb|300px|right|ধুনারি]]
অতি প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার বস্ত্র বুননের কার্যক্রম চলে আসছে এবং ধারণা করা হয় যে, বাংলায় ধুনারিদের অবস্থানও সেই প্রাচীনকাল থেকেই। অতীতে হয়তো তাদের অন্য বাণিজ্যিক নাম ছিল। মধ্যযুগেও ধুনারিরা লেপ, তোশক, বালিশ, জাজিম এসব তৈরি করত। আফগান, তুর্কি ও মুগলরা ব্যাপকভাবে বালিশ, কুশন, জাজিম ইত্যাদি ব্যবহার করতেন এবং বাংলায় সর্বপ্রথম মুসলিম শাসকরা তুলা শোধন বা ধুনার বাণিজ্যিক প্রসার ঘটান। এ কারণে ধারণা করা হয় যে, ধুনারিরা মুসলমান।  
অতি প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার বস্ত্র বুননের কার্যক্রম চলে আসছে এবং ধারণা করা হয় যে, বাংলায় ধুনারিদের অবস্থানও সেই প্রাচীনকাল থেকেই। অতীতে হয়তো তাদের অন্য বাণিজ্যিক নাম ছিল। মধ্যযুগেও ধুনারিরা লেপ, তোশক, বালিশ, জাজিম এসব তৈরি করত। আফগান, তুর্কি ও মুগলরা ব্যাপকভাবে বালিশ, কুশন, জাজিম ইত্যাদি ব্যবহার করতেন এবং বাংলায় সর্বপ্রথম মুসলিম শাসকরা তুলা শোধন বা ধুনার বাণিজ্যিক প্রসার ঘটান। এ কারণে ধারণা করা হয় যে, ধুনারিরা মুসলমান।  



১০:৩১, ২০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ধুনারি  বিছানা-পত্র প্রস্ত্ততকারী পেশাজীবী সম্প্রদায়। এরা তুলা থেকে বিচি ও খোসা বের করে তুলাকে লেপ, তোশক, বালিশ, জাজিম ইত্যাদি তৈরির উপযোগী করে এবং দক্ষতার সঙ্গে এসব প্রস্ত্তত করেন। কখনও কখনও তারা জাজিম তৈরির সময় নারিকেলের ছোবড়া টুকরা করে ব্যবহার করে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ খুঁজে বের করে লেপ তোশক তৈরি করা ধুনারি পেশার অতি পুরানো নিয়ম। তারা সরাসরি ভোক্তাদের দোরগোড়ায় গিয়ে ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজন মেটায়।

ধুনারি

অতি প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার বস্ত্র বুননের কার্যক্রম চলে আসছে এবং ধারণা করা হয় যে, বাংলায় ধুনারিদের অবস্থানও সেই প্রাচীনকাল থেকেই। অতীতে হয়তো তাদের অন্য বাণিজ্যিক নাম ছিল। মধ্যযুগেও ধুনারিরা লেপ, তোশক, বালিশ, জাজিম এসব তৈরি করত। আফগান, তুর্কি ও মুগলরা ব্যাপকভাবে বালিশ, কুশন, জাজিম ইত্যাদি ব্যবহার করতেন এবং বাংলায় সর্বপ্রথম মুসলিম শাসকরা তুলা শোধন বা ধুনার বাণিজ্যিক প্রসার ঘটান। এ কারণে ধারণা করা হয় যে, ধুনারিরা মুসলমান।

ধুনারিদের প্রধান হাতিয়ার ধুনট। এটা আকারে ধনুকের মতো দেখতে এবং তৈরি করা হয় বাঁশ, বেত অথবা কাঠ দিয়ে। ধনুকের শেষপ্রান্ত গরুর শুষ্ক পেশিতন্তু দিয়ে তৈরি রশি দ্বারা শক্তভাবে আটকিয়ে রাখা হয়। ধুনটে রক্ষিত শক্ত রশির ক্রমাগত দ্রুত স্পন্দনের মাধ্যমে তুলা পরিষ্কার ও শোধন করে নেওয়া হয়।রশির স্পন্দনের ছন্দ কাঠের তৈরি মাকু বা হাতলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কার্যপ্রক্রিয়া শুরু করে। তুলা লেপ-তোশক প্রস্ত্ততের উপযোগী করার পর নকশা ও আকার অনুসারে লেপ, তোশক, বালিশ, কুশন ইত্যাদি তৈরি করা হয়। শীত মৌসুমের প্রাক্কালে ধুনারিরা লেপ, তোশক, জাজিম তৈরির বহু চাহিদাপত্র পেয়ে থাকে।

ধুনারি একটি ভ্রাম্যমাণ পেশাজীবী দল। শহর ও গ্রামাঞ্চলে শীত মৌসুমের প্রাক্কালে এখনও ধুনারিদের ধুনা ফেরি করতে দেখা যায়।  [শারমিন নাজ]