দৌলতপুর উপজেলা (মানিকগঞ্জ)

দৌলতপুর উপজেলা (মানিকগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২১৮.৩৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৫৪´ থেকে ২৪°০২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪১´ থেকে ৮৯°৫৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চৌহালি ও নাগরপুর উপজেলা, দক্ষিণে শিবালয় ও ঘিওর উপজেলা, পূর্বে সাটুরিয়া উপজেলা, পশ্চিমে বেড়া উপজেলা ও যমুনা নদী।

জনসংখ্যা ১৬৭০২৬; পুরুষ ৮০৪৮৯, মহিলা ৮৬৫৩৭। মুসলিম ১৫৮২৭৫, হিন্দু ৮৭০৮, খ্রিস্টান ২৯ এবং অন্যান্য ১৪।

জলাশয় প্রধান নদী: যমুনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি; গাইঘাটা খাল ও খলসি বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ১৯১৯ সালে থানা গঠিত হয় এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৫২ ১৮৮ ৬৯১৮ ১৬০১০৮ ৭৬৫ ৫১.৮ ৩৪.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪.২৬ ৬৯১৮ ১৬২৪ ৫১.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কলিয়া ৭৬ ৫৬৬৬ ৯৮৩৩ ১০৫৮৯ ৪২.৪
খলসী ৮৫ ৫৫৯১ ১০২০৮ ১১০১৫ ৩৭.০
চক মিরপুর ২৮ ৬০৯৭ ১১৮৯৬ ১২৫৩৫ ৪৮.৭
চরকাটারী ৩৮ ৪৬৯৮ ৬৯৭০ ৭০২৩ ২৮.১
জিয়নপুর ৬৬ ৪৯০৩ ৯৫৭৮ ১০৪১০ ৪১.৩
ধামস্বর ৫৭ ৫৭৬০ ৯৮৬০ ১০৬১৫ ৩৪.২
বাঘুটিয়া ১৯ ১১৫৮৬ ৯৯৮১ ১০৭৪৫ ২৬.৫
বাঁচামারা ১৭ ৯৬৫২ ১২১৬৩ ১৩৬০৫ ১৭.৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ দৌলতপুর উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি স্থানে যুদ্ধ হয়। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কাকনার যুদ্ধ, নিরালী যুদ্ধ এবং নিলুয়ার যুদ্ধ। এসব যুদ্ধে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়।

বিস্তারিত দেখুন দৌলতপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২০৬, মন্দির ৬২, মাযার ২০। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ধামস্বর মাযার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৩৪.৯%; পুরুষ ৪০.৪%, মহিলা ২৯.৮%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫৮, মাদ্রাসা ২৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: তালূকনগর কলেজ (১৯৭২), দৌলতপুর মতিলাল কলেজ (১৯৭২), বাঁচামারা কলেজ (১৯৭২), দৌলতপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৯), বাঁচামারা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), কালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৪), বাঘুটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৪), তালুকনগর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৫), চরকাটারী সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৬), চরমাস্ত্তল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), কাকনা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), খলসি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২৩, নাট্যদল ৫, মহিলা সংগঠন।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭২.৩০%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪২%, শিল্প ০.৭৭%, ব্যবসা ৯.৯২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৫৩%, চাকরি ৫.৮৭%, নির্মাণ ০.৯৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪০% এবং অন্যান্য ৪.৬৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭২.০৮%, ভূমিহীন ২৭.৯২%। শহরে ৩৫.১১% এবং গ্রামে ৭৩.৫৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল পাট, সরিষা, চীনাবাদাম।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি যব, তিসি, কাউন।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, পেঁপে, কলা, পেয়ারা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫০ কিমি; নৌপথ ২৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইস অ্যান্ড ফ্লাওয়ার মিল ১০৬, অয়েল মিল ৩২, বিড়ি কারখানা ২।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৩, মেলা ১০। দৌলতপুর হাট, জিয়রাপুর হাট, কালিয়া হাট, ধামস্বর হাট, বাঁচামারা হাট, চরকাটারী হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  চীনাবাদাম।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩২.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.০%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ৫.৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৬.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫০.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, এনজিও পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১।

এনজিও আশা, ব্র্যাক।  [মনোরঞ্জন মন্ডল]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দৌলতপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।