দোতারা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''দোতারা'''  তত জাতীয়  [[লোকবাদ্যযন্ত্র|লোকবাদ্যযন্ত্র]]। উত্তরবঙ্গের  [[ভাওয়াইয়া|ভাওয়াইয়া]] গানে প্রধানত দোতারা বাজানো হয়। দোতারার কোরডং কোরডং ধ্বনির সঙ্গে ভাওয়াইয়ার ভাঁজযুক্ত দীর্ঘ টানা কণ্ঠধ্বনির নিগূঢ় সম্পর্কের কারণে উক্ত গানকে ‘দোতারার গান’ নামেও অভিহিত করা হয়।
'''দোতারা'''  তত জাতীয়  [[লোকবাদ্যযন্ত্র|লোকবাদ্যযন্ত্র]]। উত্তরবঙ্গের  [[ভাওয়াইয়া|ভাওয়াইয়া]] গানে প্রধানত দোতারা বাজানো হয়। দোতারার কোরডং কোরডং ধ্বনির সঙ্গে ভাওয়াইয়ার ভাঁজযুক্ত দীর্ঘ টানা কণ্ঠধ্বনির নিগূঢ় সম্পর্কের কারণে উক্ত গানকে ‘দোতারার গান’ নামেও অভিহিত করা হয়।
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
| [[Image:DotaraKhulna.jpg]] || [[Image:DotaraRangpur.jpg]] || [[Image:DotaraPanchagor.jpg]] || [[Image:Dotara.jpg]]
|-
| দোতারা (খুলনা) || দোতারা (রংপুর) || দোতারা (পঞ্চগড়) || দোতারা (ঢাকা)
|}


নাম অনুসারে দোতারার তারের সংখ্যা সব সময় দুটিতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, চার থেকে ছটিও হয়। তারগুলি পিতল বা রেশমের পাকানো সুতা দিয়ে তৈরি। মাঝারি আকারের ডই-এর মতো কাঠের ফ্রেমে চামড়া ও তার বেঁধে দোতারা তৈরি করা হয়। তারগুলিকে ফ্রেমের নিচ থেকে উঠিয়ে মাথায় কানের সঙ্গে পেঁচিয়ে বাঁধা হয়, যাতে কান ঘুরিয়ে সেগুলির ধ্বনি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
নাম অনুসারে দোতারার তারের সংখ্যা সব সময় দুটিতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, চার থেকে ছটিও হয়। তারগুলি পিতল বা রেশমের পাকানো সুতা দিয়ে তৈরি। মাঝারি আকারের ডই-এর মতো কাঠের ফ্রেমে চামড়া ও তার বেঁধে দোতারা তৈরি করা হয়। তারগুলিকে ফ্রেমের নিচ থেকে উঠিয়ে মাথায় কানের সঙ্গে পেঁচিয়ে বাঁধা হয়, যাতে কান ঘুরিয়ে সেগুলির ধ্বনি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


দোতারার মাথায় কাঠ কেটে ময়ূরাদি পাখির নকশা করা হয়। এর ‘কটি’ তৈরি করা হয় গরু-মহিষের শিং, হাড় বা কাঠের টুকরা দিয়ে।  [[রংপুর জেলা|রংপুর]] অঞ্চলে একে বলা হয় ‘চুটকি’ বা ‘খুটনি’। আনুমানিক দেড়-দুই হাত লম্বা এ বাদ্যযন্ত্রটি বসা অবস্থায় পায়ের ওপর রেখে এবং দাঁড়ানো অবস্থায় গলার সঙ্গে ঝুলিয়ে বাম হাতে আড়াআড়িভাবে ধরে ডান হাতে কটির ঘর্ষণ দিয়ে বাজানো হয়। #[[Image:দোতারা_html_88407781.png]]
দোতারার মাথায় কাঠ কেটে ময়ূরাদি পাখির নকশা করা হয়। এর ‘কটি’ তৈরি করা হয় গরু-মহিষের শিং, হাড় বা কাঠের টুকরা দিয়ে।  [[রংপুর জেলা|রংপুর]] অঞ্চলে একে বলা হয় ‘চুটকি’ বা ‘খুটনি’। আনুমানিক দেড়-দুই হাত লম্বা এ বাদ্যযন্ত্রটি বসা অবস্থায় পায়ের ওপর রেখে এবং দাঁড়ানো অবস্থায় গলার সঙ্গে ঝুলিয়ে বাম হাতে আড়াআড়িভাবে ধরে ডান হাতে কটির ঘর্ষণ দিয়ে বাজানো হয়।
 
[[Image:DotaraKhulna.jpg]]#[[Image:দোতারা_html_88407781.png]]
 
[[Image:DotaraRangpur.jpg]]#[[Image:দোতারা_html_88407781.png]]
 
[[Image:DotaraPanchagor.jpg]]#[[Image:দোতারা_html_88407781.png]]
 
[[Image:Dotara.jpg]]
 
#দোতারা(খুলনা)#দোতারা(রংপুর)#দোতারা(পঞ্চগড়)#দোতারা(ঢাকা)


দোতারার তারগুলি ধ্বনির বিচারে জিল তার, সুর তার, বম তার ও গম তার এ চার ভাগে বিভক্ত।ভাওয়াইয়া গান ছাড়াও  [[মুর্শিদি গান|মুর্শিদি]], মারফতি,  [[জারি গান|জারি]] ও কবিগানে অন্যান্য যন্ত্রের সঙ্গে দোতারাও বাজানো হয়। মধ্যযুগে পদ্মাপুরাণ, ধ্যানমালা ইত্যাদি গ্রন্থে দোতারার উল্লেখ আছে। যন্ত্রটি ‘স্বরাজ’ ও ‘সুরসংগ্রহ’ নামেও পরিচিত।  [ওয়াকিল আহমদ]
দোতারার তারগুলি ধ্বনির বিচারে জিল তার, সুর তার, বম তার ও গম তার এ চার ভাগে বিভক্ত।ভাওয়াইয়া গান ছাড়াও  [[মুর্শিদি গান|মুর্শিদি]], মারফতি,  [[জারি গান|জারি]] ও কবিগানে অন্যান্য যন্ত্রের সঙ্গে দোতারাও বাজানো হয়। মধ্যযুগে পদ্মাপুরাণ, ধ্যানমালা ইত্যাদি গ্রন্থে দোতারার উল্লেখ আছে। যন্ত্রটি ‘স্বরাজ’ ও ‘সুরসংগ্রহ’ নামেও পরিচিত।  [ওয়াকিল আহমদ]
[[en:Dotara]]


[[en:Dotara]]
[[en:Dotara]]

১০:১৬, ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

দোতারা  তত জাতীয়  লোকবাদ্যযন্ত্র। উত্তরবঙ্গের  ভাওয়াইয়া গানে প্রধানত দোতারা বাজানো হয়। দোতারার কোরডং কোরডং ধ্বনির সঙ্গে ভাওয়াইয়ার ভাঁজযুক্ত দীর্ঘ টানা কণ্ঠধ্বনির নিগূঢ় সম্পর্কের কারণে উক্ত গানকে ‘দোতারার গান’ নামেও অভিহিত করা হয়।

দোতারা (খুলনা) দোতারা (রংপুর) দোতারা (পঞ্চগড়) দোতারা (ঢাকা)

নাম অনুসারে দোতারার তারের সংখ্যা সব সময় দুটিতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, চার থেকে ছটিও হয়। তারগুলি পিতল বা রেশমের পাকানো সুতা দিয়ে তৈরি। মাঝারি আকারের ডই-এর মতো কাঠের ফ্রেমে চামড়া ও তার বেঁধে দোতারা তৈরি করা হয়। তারগুলিকে ফ্রেমের নিচ থেকে উঠিয়ে মাথায় কানের সঙ্গে পেঁচিয়ে বাঁধা হয়, যাতে কান ঘুরিয়ে সেগুলির ধ্বনি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

দোতারার মাথায় কাঠ কেটে ময়ূরাদি পাখির নকশা করা হয়। এর ‘কটি’ তৈরি করা হয় গরু-মহিষের শিং, হাড় বা কাঠের টুকরা দিয়ে।  রংপুর অঞ্চলে একে বলা হয় ‘চুটকি’ বা ‘খুটনি’। আনুমানিক দেড়-দুই হাত লম্বা এ বাদ্যযন্ত্রটি বসা অবস্থায় পায়ের ওপর রেখে এবং দাঁড়ানো অবস্থায় গলার সঙ্গে ঝুলিয়ে বাম হাতে আড়াআড়িভাবে ধরে ডান হাতে কটির ঘর্ষণ দিয়ে বাজানো হয়।

দোতারার তারগুলি ধ্বনির বিচারে জিল তার, সুর তার, বম তার ও গম তার এ চার ভাগে বিভক্ত।ভাওয়াইয়া গান ছাড়াও  মুর্শিদি, মারফতি,  জারি ও কবিগানে অন্যান্য যন্ত্রের সঙ্গে দোতারাও বাজানো হয়। মধ্যযুগে পদ্মাপুরাণ, ধ্যানমালা ইত্যাদি গ্রন্থে দোতারার উল্লেখ আছে। যন্ত্রটি ‘স্বরাজ’ ও ‘সুরসংগ্রহ’ নামেও পরিচিত।  [ওয়াকিল আহমদ]