দেওয়ান মুনাওয়ার খান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
(Text replacement - "\[মুয়ায্যম হুসায়ন খান\]" to "[মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]")
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''দেওয়ান মুনাওয়ার খান'''  পূর্ববঙ্গের একজন জমিদার। তিনি মাসুম খানের পুত্র এবং ভাটির অধিপতি মুসা খান মসনদ-ই-আলার পৌত্র।  ১৬৬৬ সালে মুগলদের চট্টগ্রাম অভিযানে তিনি বাংলার জমিদারদের সম্মিলিত নৌবাহিনীর নেতৃত্ব দেন এবং যুদ্ধে অসাধারণ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। যুদ্ধে তাঁর অবদান ও বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ মুগল সম্রাট তাঁকে ৫০০ সওয়ারসহ এক হাজারি মনসবদার পদে নিয়োগ করেন। মুনাওয়ার খান ছিলেন কতকটা অবাধ্য ও উদ্ধত প্রকৃতির। স্থানীয় জনশ্রুতি রয়েছে যে, প্রায়শ তিনি ঢাকায় মুগল সুবাদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতেন। পিতা মাসুম খানের মৃত্যুর পর মুনাওয়ার খানের উপর জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্পিত হয়। সম্রাট আকবরের শাসনকালে বাংলায় ভূমি বন্দোবস্ত ব্যবস্থার সময় থেকে বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রংপুর, পাবনা ও বগুড়া জেলায় ২২ পরগনার জমিদারী এই পরিবারের আয়ত্বাধীন ছিল। মুনাওয়ার খানের সময়েই এই বিশাল জমিদারি তাদের চার ভাইয়ের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা হয়। মুনাওয়ার খান ময়মনসিংহের টপ্পা হাজরাদী এলাকায় তাঁর জমিদারির অংশ লাভ করেন। তখন থেকে মুনাওয়ার খান জঙ্গলবাড়িতে স্বীয় জমিদারী দপ্তর স্থাপন করেন। মুনাওয়ার খানের সময় থেকেই এই পরিবার দেওয়ান অভিধা গ্রহণ করে বলে প্রতীয়মান হয়। মুনাওয়ার খান সম্ভবত দেওয়ানবাগে তাঁর পারিবারিক আবাসস্থল স্থানান্তর করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার দেওয়ানবাগ গ্রামের পরবর্তী নামকরণ হয় ‘মুনাওয়ার খান বাগ’।  
'''দেওয়ান মুনাওয়ার খান'''  পূর্ববঙ্গের একজন জমিদার। তিনি মাসুম খানের পুত্র এবং ভাটির অধিপতি মুসা খান মসনদ-ই-আলার পৌত্র।  ১৬৬৬ সালে মুগলদের চট্টগ্রাম অভিযানে তিনি বাংলার জমিদারদের সম্মিলিত নৌবাহিনীর নেতৃত্ব দেন এবং যুদ্ধে অসাধারণ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। যুদ্ধে তাঁর অবদান ও বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ মুগল সম্রাট তাঁকে ৫০০ সওয়ারসহ এক হাজারি মনসবদার পদে নিয়োগ করেন। মুনাওয়ার খান ছিলেন কতকটা অবাধ্য ও উদ্ধত প্রকৃতির। স্থানীয় জনশ্রুতি রয়েছে যে, প্রায়শ তিনি ঢাকায় মুগল সুবাদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতেন। পিতা মাসুম খানের মৃত্যুর পর মুনাওয়ার খানের উপর জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্পিত হয়। সম্রাট আকবরের শাসনকালে বাংলায় ভূমি বন্দোবস্ত ব্যবস্থার সময় থেকে বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রংপুর, পাবনা ও বগুড়া জেলায় ২২ পরগনার জমিদারী এই পরিবারের আয়ত্বাধীন ছিল। মুনাওয়ার খানের সময়েই এই বিশাল জমিদারি তাদের চার ভাইয়ের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা হয়। মুনাওয়ার খান ময়মনসিংহের টপ্পা হাজরাদী এলাকায় তাঁর জমিদারির অংশ লাভ করেন। তখন থেকে মুনাওয়ার খান জঙ্গলবাড়িতে স্বীয় জমিদারী দপ্তর স্থাপন করেন। মুনাওয়ার খানের সময় থেকেই এই পরিবার দেওয়ান অভিধা গ্রহণ করে বলে প্রতীয়মান হয়। মুনাওয়ার খান সম্ভবত দেওয়ানবাগে তাঁর পারিবারিক আবাসস্থল স্থানান্তর করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার দেওয়ানবাগ গ্রামের পরবর্তী নামকরণ হয় ‘মুনাওয়ার খান বাগ’।  


নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জে অবস্থিত কদম রসুল দরগাহের সৌধটি মুনাওয়ার খানই প্রথম নির্মাণ করেন বলে কথিত আছে। মুনাওয়ার খান দেওয়ানবাগে মৃত্যুবরণ করেন এবং একটি মসজিদের (বর্তমান দেওয়ানবাগ মসজিদ) পূর্বদিকে সমাহিত হন।  [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]
নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জে অবস্থিত কদম রসুল দরগাহের সৌধটি মুনাওয়ার খানই প্রথম নির্মাণ করেন বলে কথিত আছে। মুনাওয়ার খান দেওয়ানবাগে মৃত্যুবরণ করেন এবং একটি মসজিদের (বর্তমান দেওয়ানবাগ মসজিদ) পূর্বদিকে সমাহিত হন।  [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]


<!-- imported from file: দেওয়ান মুনাওয়ার খান.html-->
<!-- imported from file: দেওয়ান মুনাওয়ার খান.html-->

১৬:১১, ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

দেওয়ান মুনাওয়ার খান  পূর্ববঙ্গের একজন জমিদার। তিনি মাসুম খানের পুত্র এবং ভাটির অধিপতি মুসা খান মসনদ-ই-আলার পৌত্র।  ১৬৬৬ সালে মুগলদের চট্টগ্রাম অভিযানে তিনি বাংলার জমিদারদের সম্মিলিত নৌবাহিনীর নেতৃত্ব দেন এবং যুদ্ধে অসাধারণ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। যুদ্ধে তাঁর অবদান ও বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ মুগল সম্রাট তাঁকে ৫০০ সওয়ারসহ এক হাজারি মনসবদার পদে নিয়োগ করেন। মুনাওয়ার খান ছিলেন কতকটা অবাধ্য ও উদ্ধত প্রকৃতির। স্থানীয় জনশ্রুতি রয়েছে যে, প্রায়শ তিনি ঢাকায় মুগল সুবাদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতেন। পিতা মাসুম খানের মৃত্যুর পর মুনাওয়ার খানের উপর জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্পিত হয়। সম্রাট আকবরের শাসনকালে বাংলায় ভূমি বন্দোবস্ত ব্যবস্থার সময় থেকে বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রংপুর, পাবনা ও বগুড়া জেলায় ২২ পরগনার জমিদারী এই পরিবারের আয়ত্বাধীন ছিল। মুনাওয়ার খানের সময়েই এই বিশাল জমিদারি তাদের চার ভাইয়ের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা হয়। মুনাওয়ার খান ময়মনসিংহের টপ্পা হাজরাদী এলাকায় তাঁর জমিদারির অংশ লাভ করেন। তখন থেকে মুনাওয়ার খান জঙ্গলবাড়িতে স্বীয় জমিদারী দপ্তর স্থাপন করেন। মুনাওয়ার খানের সময় থেকেই এই পরিবার দেওয়ান অভিধা গ্রহণ করে বলে প্রতীয়মান হয়। মুনাওয়ার খান সম্ভবত দেওয়ানবাগে তাঁর পারিবারিক আবাসস্থল স্থানান্তর করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার দেওয়ানবাগ গ্রামের পরবর্তী নামকরণ হয় ‘মুনাওয়ার খান বাগ’।

নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জে অবস্থিত কদম রসুল দরগাহের সৌধটি মুনাওয়ার খানই প্রথম নির্মাণ করেন বলে কথিত আছে। মুনাওয়ার খান দেওয়ানবাগে মৃত্যুবরণ করেন এবং একটি মসজিদের (বর্তমান দেওয়ানবাগ মসজিদ) পূর্বদিকে সমাহিত হন।  [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]