দুরবীন

দুরবীন  সাপ্তাহিক ফারসি পত্রিকা। ১৮৫৩ সালে আবদুল লতিফের তত্ত্বাবধানে  কলকাতা থেকে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এর সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহ সৈয়দ রিয়াজতুল্লাহ। মুসলিম আমলে ভারতবর্ষে এক সময় ফারসি ছিল রাজভাষা। তখন ফারসি জানলে উচ্চপদে চাকরি পাওয়া সহজ হতো। তাছাড়া মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকান্ডেও আরবির পাশাপাশি ফারসির প্রয়োজন হতো। এসব কারণে ফারসি ভাষাকে পত্রিকাটির মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল।

পত্রিকাটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দূরের বিষয়কে লেখনীর মাধ্যমে সর্ব সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। উনিশ শতকের ত্রিশ-চল্লিশের দশকে মুসলমানদের আধুনিক শিক্ষার যে ভিত রচিত হয়েছিল, পঞ্চাশ-ষাটের দশকে এসে মুসলিম লেখকরা এ ধরনের পত্রপত্রিকা ও বইপুস্তকের মাধ্যমে সেটিকেই আরও জোরদার করে তোলেন। শিক্ষার প্রসার এবং ভাষা ও সাহিত্যচর্চাও এ পত্রিকার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। এ পত্রিকার মাধ্যমে তখন অনেক নতুন লেখকের আবির্ভাব ঘটে। তৎকালীন পাঠকরা এর মাধ্যমে জ্ঞানবিজ্ঞান ও সাহিত্যরসের স্পর্শ পেয়েছেন। তৎকালীন অন্যান্য পত্রিকার মতো এ পত্রিকায়ও ধর্মীয় ও সামাজিক সমস্যাবলি তুলে ধরা হতো। আর এগুলি প্রকাশ করা হতো কবিসাহিত্যিকদের বক্তৃতা, প্রবন্ধপাঠ ও সমালোচনার মাধ্যমে। মূলত ধর্মীয় ও যুগোপযোগী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রচার করাই এ পত্রিকার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল। এ পত্রিকায় যাঁরা লিখতেন তাঁদের মধ্যে সৈয়দ শামসুল হুদার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।  [মোঃ মাসুদ পারভেজ]