দিদার

দিদার  সমবায় সমিতি। কুমিল্লা শহরের নিকটবর্তী কাশিনাথপুর ও বলরামপুর গ্রামের আটজন রিকশাচালক ও একজন ক্ষুদ্র দোকানদারের উদ্যোগে ১৯৬০ সালে দিদার সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। সামান্য সদস্য পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও কালক্রমে দিদার একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এ সংগঠনের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে আয় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করা এবং এর সদস্যদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার খরচ যোগানো।

বর্তমানে দিদারের সদস্য সংখ্যা ১৫০০। সমিতির সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত ৯ সদস্যের একটি কার্যনির্বাহী কমিটি এর কর্মকান্ড পরিচালনা করে। সমিতির রয়েছে ইটভাটা, সরিষার তেলের মিল, ন্যায্য মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রির সমবায় স্টোর, সার ও কীটনাশকের দোকান, তিনটি গভীর নলকূপ, তিনটি ধান ও গম ভাঙার কল এবং একুশটি রিকশা। সমিতির অধীনে রয়েছে একটি হাইস্কুল ও একটি কিন্ডারগার্টেন। দিদারের সদস্যবৃন্দ অনেক সামাজিক কর্মকান্ডে সক্রিয়। এগুলির মধ্যে রয়েছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, মাছ চাষ প্রকল্প এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি প্রভৃতি।

যে দুটি গ্রামে শুরু থেকে দিদারের কর্মকান্ড চালু রয়েছে সেখানে আজ দারিদ্রে্যর চিহ্ন প্রায় নেই। কৃষি উৎপাদন বেড়েছে চারগুণ। গ্রাম দুটিতে শিক্ষার হার জাতীয় গড় হারের চেয়ে অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় গড় হারের তুলনায় বেকারত্বও হ্রাস পেয়েছে। সমাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৪ সালে দিদার স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করে। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীও তার রজতজয়ন্তীতে এ সমিতিকে পুরস্কৃত করে। দিদারের প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ ইয়াসিন ১৯৮৮ সালে এশিয়ার বিখ্যাত র‌্যামন ম্যাগাস্যাসে পুরস্কার লাভ করেন।  [শামসুজ্জামান]