তিতাস উপজেলা

তিতাস উপজেলা (কুমিল্লা জেলা)  আয়তন: ১০৯.৩০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩২´ থেকে ২৩°৩৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪২´ থেকে ৯০°৫১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে হোমনা উপজেলা, দক্ষিণে দাউদকান্দি উপজেলা, পূর্বে মুরাদনগর উপজেলা, পশ্চিমে মেঘনা উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৮৪৬১৭; পুরুষ ৮৭১০০, মহিলা ৯৭৫১৭। মুসলিম ১৭৭৮৪৬, হিন্দু ৬৭৭০ এবং অন্যান্য ১।

জলাশয় প্রধান নদী: মেঘনা।

প্রশাসন ২০০৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দাউদকান্দি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন নিয়ে তিতাস উপজেলা গঠিত হয়েছে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৬৩ ১৩৮ ৩৫৩২ ১৮১০৮৫ ১৬৮৯ ৬১.১ ৪২.৭
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২.৬১ ৩৫৩২ ১৩৫৩ ৬১.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার(%)
পুরুষ মহিলা
কড়িকান্দি ১১ ২৯৭৯ ৯৭৪০ ১০৯১৬ ৫২.৭
কালাকান্দি ৬২ ১৭৮৬ ৫৫৩৪ ৬১৩৪ ৩৭.৫
জিয়ারকান্দি ৪৫ ২৪৮৩ ৮৭৭০ ৯৬১৮ ৪৯.৫
জগৎপুর ৬০ ৩৪৯৪ ১০১২৫ ১০৯০৫ ৪৩.৯
নারায়ণদিয়া ৭৭ ২৪০০ ৭৭৯২ ৮৭৮৩ ৩৪.৮
বলরামপুর ১০ ২৮২৭ ১১৫৬০ ১২৪০৫ ৪৮.২
বিটিকান্দি ১৭ ৩৭৪৭ ১২২২৯ ১৪২২৯ ৪০.৭
মজিদপুর ৬৯ ৪৯৫০ ১৪১০৮ ১৬২৯৩ ৩৬.৮
সাতানী ৫৬ ২৩৪৪ ৭২৪২ ৮২৩৪ ৪২.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পীর শাহবাজের মাযার শরীফ (গাজীপুর)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে উপজেলার দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশগ্রহণ শুরু করেন। নদী তীরবর্তী নি¤œভূমি অধ্যুষিত তিতাস উপজেলায় পাকবাহিনী স্থায়ীভাবে ঘাঁটি গড়েনি, তবে মাঝে মধ্যেই হানা দিত বলে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রতিহত করে এবং এসব যুদ্ধের মধ্যে বাতাকান্দিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পাকসেনারা লঞ্চযোগে ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়।

বিস্তারিত দেখুন তিতাস উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৩.০%; পুরুষ ৪৪.৩%, মহিলা ৪২.০%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৬, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯, মাদ্রাসা ১১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নারান্দিয়া মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), মজিদপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), জগৎপুর সাধন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), মঙ্গলাকান্দি ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৯)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৯.৯৪%, অকৃষি শ্রমিক ৩.০২%, শিল্প ১.০০%, ব্যবসা ১৯.০৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.১৪%, চাকরি ৬.২৩%, নির্মাণ ০.৭৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.০৭% এবং অন্যান্য ১৭.৫৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৮.৭৮%, ভূমিহীন ৩১.২২%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, ডাল।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৬০ কিমি; নৌপথ ১০৬ কিমি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, দারুশিল্প, নকশি কাঁথা, বাঁশের কাজ উল্লেখযোগ্য।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার  ১৭।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৮১.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ আছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.০%, ট্যাপ ২.৩% এবং অন্যান্য ৩.৭%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮২.৮% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৫.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৯। [এ.কে.এম জসীম উদ্দীন]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; তিতাস উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।