তাড়াস জমিদারি

তাড়াস জমিদারি সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াস উপজেলায় অবস্থিত। সতের শতকে জনৈক বাসুদেব তালুকদার এ জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। মুর্শিদাবাদের নবাবের অধীনে রাজস্ব বিভাগে চাকরি গ্রহণের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা হয়। তাঁর সততা ও আনুগত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ নবাব তাঁকে তাড়াস মহাল বরাদ্দ দেন এবং তাঁকে ‘রায় চৌধুরী’ উপাধিতে ভূষিত করেন। বাসুদেবের পৌত্র বলরাম দাস ছিলেন নাটোর জমিদারীর অধীন একজন কর্মচারী। একটি শিলালিপি অনুসারে ১৭১১ সালে তিনি ‘রায়’ উপাধি গ্রহণ করেন বলে জানা যায়। উনিশ শতকের প্রথম দিকে বলরাম রায়ের পঞ্চম অধস্তন পুরুষ রামসুন্দর রায় নিঃসন্তান হওয়ায় মূল বংশের বিলুপ্তি ঘটে এবং তাঁর পরবর্তী চারজন উত্তরাধিকারী ছিলেন দত্তক পুত্র।তাড়াসের জমিদারদের মধ্যে বনওয়ারী লাল রায় খ্যাতিমান ছিলেন। তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ প্রতিষ্ঠায় অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। বনওয়ারী লাল রায়কে ব্রিটিশ সরকার ১৮৯৪ সালে ‘রায় বাহাদুর’ উপাধি প্রদান করে। ১৯০৫ সালে তাঁর মৃত্যুর পর দত্তকপুত্র বনমালী রায় তাড়াসের পরবর্তী জমিদার হন। তিনিও একজন খ্যাতিমান জমিদার ছিলেন। বনমালী রায় পাবনা শহরে ‘ইলিয়ট বনমালী টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট’ এবং সিরাজগঞ্জে ‘বনওয়ারী উচ্চ বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করেন। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের নতুন ভবন নির্মাণেও তিনি অর্থ প্রদান করেন। তিনি ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ‘রায় বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯১৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর দুই পুত্র ক্ষিতিশভূষণ ও রাধিকাভূষণ ১৯৫০ সালের জমিদারি প্রথা বিলোপ পর্যন্ত তাড়াসের জমিদারি পরিচালনা করেন।  [কাজী মোস্তাফিজুর রহমান]