ঝিনাইদহ জেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৯:৩০, ২৮ মে ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (হালনাগাদ)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ঝিনাইদহ জেলা (খুলনা বিভাগ)  আয়তন: ১৯৬৪.৭৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৩´ থেকে ২৩°৪৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪২´ থেকে ৮৯°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুষ্টিয়া জেলা, দক্ষিণে যশোর জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, পূর্বে রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলা, পশ্চিমে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।

জনসংখ্যা ১৭৭১৩০৪; পুরুষ ৮৮৬৪০২, মহিলা ৮৮৪৯০২। মুসলিম ১৬০১০৮৬, হিন্দু ১৬৭৮৮০, বৌদ্ধ ২৮, খ্রিস্টান ৯৭৫ এবং অন্যান্য ১৩৩৫।

জলাশয় প্রধান নদ-নদী: গড়াই, কুমার, নবগঙ্গা, চিত্রা, ভৈরব, কপোতাক্ষ, বেতনা, কালীগঙ্গা; খাল: পুটিমারী, সোনালীডাঙ্গা, ডাকুয়ার, তত্তিপুর; বিল: কন্যাদহ, কাজলি, শিকির, পাতার, রুইমারি, দোবিলা-আজমপুর, উড়কি, উত্তর বিল (মাগুরা-তত্তিপুর); বাঁওড়: বলুহর, মর্জাদ, সর্জাদ, মাজদীয়া, বারফার।

প্রশাসন ইংরেজ শাসনের শুরুতে এখানে একটি ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়। ১৭৯৩ সালে ইংরেজরা এই ফাঁড়িকে থানায় উন্নীত করে। ১৮৬২ সালে থানাটি মহকুমায় এবং ১৯৮৪ সালে জেলায় রূপান্তরিত হয়। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে ঝিনাইদহ সদর সর্ববৃহৎ (৪৭০.১১ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২৩.৯৯% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা কোটচাঁদপুর  (১৬৫.৬৩ বর্গ কিমি)।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
১৯৬৪.৭৭ ৬৭ ৮৮৬ ১১৪৪ ২৮০১৯২ ১৪৯১১১২ ৯০২ ৪৮.৪
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলা নাম আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
কালীগঞ্জ ৩১০.১৯ ১১ ১৭৮ ১৯৮ ২৮২৩৬৬ ৯১০ ৫২.০
কোটচাঁদপুর ১৬৫.৬৩ ৭৪ ৭৯ ১৪১১২১ ৮৫২ ৫০.৪
ঝিনাইদহ সদর ৪৭০.১১ ১৭ ২৪৮ ২৮৪ ৪৫৫৯৩২ ৯৭০ ৫১.৮
মহেশপুর ৪১৭.৮৫ ১২ ১৪৪ ১৯৬ ৩৩২৫১৪ ৭৯৬ ৪৪.৮
শৈলকূপা ৩৭৩.৪৩ ১৪ ১৬৮ ২৬৫ ৩৬১৬৪৮ ৯৬৮ ৪৭.২
হরিণাকুণ্ড ২২৭.৫৪ ৭৪ ১২২ ১৯৭৭২৩ ৮৬৯ ৪২.৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল কালীগঞ্জ উপজেলার মহিষাহাটি গ্রামের মান্দারতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকসেনাদের লড়াইয়ে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং আনুমানিক ১০০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৪ এপ্রিল একই উপজেলার দুলালমুন্দিয়ায় পাকসেনাদের আক্রমণে আনুমানিক ১৫০ থেকে ২০০ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৬ এপ্রিল সদর উপজেলার বিষখালীতে বেগবতী নদীর তীরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৬ নভেম্বর শৈলকূপা উপজেলার কামান্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জেলার ৭টি স্থানে গণকবর ও ৩টি স্থানে বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৮.৪%; পুরুষ ৫০.৫%, মহিলা ৪৬.৩%। বিশ্ববিদ্যালয় ১, কলেজ ৫৪, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩০৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮০৪, মাদ্রাসা ২৮৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কে.সি কলেজ (১৯৬০), ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ (১৯৬৩), মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৬), শৈলকূপা সরকারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৯), ঝিনাইদহ সিটি কলেজ (১৯৮১), মহেশপুর হাইস্কুল (১৮৬৩), হরিণাকুন্ডু প্রিয়নাথ হাইস্কুল (১৮৭২), জোড়াদহ উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭২), ঝিনাইদহ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৭), নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৮২), শৈলকূপা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৩), কোটচাঁদপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৯৯), রায়গ্রাম বানিকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭০), ঝিনাইদহ সিদ্দিকিয়া আলিম মাদ্রাসা (১৯৬৭)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯৩%, শিল্প ১.৫৯%, ব্যবসা ১৪.২৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৮৩%, চাকরি ৪.৯৩%, নির্মাণ ১.১৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৬% এবং অন্যান্য ৩.৭৩%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  দৈনিক: ঝিনাইদহ, ঝিনেদার বাণী, অধিবেশন, নবগঙ্গা, বীর দর্পণ, মুক্তসমাজ ও নবচিত্র। সাপ্তাহিক: চলন্তিকা, অনির্বাণ, সীমান্তের বাণী, চেতনা, চলন্তিকা, জনতার ডাক ও বীর দর্পণ। সাময়িকী: কোটচাঁদপুর, কহন, কুমার, দুঃসাহস, জনরব, অগ্নিশিখা, প্রতীতি, দিশা, বইপত্র, মাটি মন, শুকতারা, ছড়াপত্র, খেজুরতলা, সবুজপত্র, জয়বাংলা, উল্লাস, চেতনা, সীমান্ত, দিশারী, অনুরাগ, বিশ্ববাণী ও শৈলবার্তা।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বাংলদেশ টেলিভিশনের উপ-কেন্দ্র (১৯৯৫)।  [বি.এম রেজাউল করিম]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ঝিনাইদহ জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; ঝিনাইদহ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।