জয়পুরহাট জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''জয়পুরহাট জেলা''' ([[রাজশাহী বিভাগ|রাজশাহী বিভাগ]])  আয়তন: ৯৬৫.৪৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫১´ থেকে ২৫°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৫´ থেকে ৮৮°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দিনাজপুর জেলা, দক্ষিণে বগুড়া ও নওগাঁ জেলা, পূর্বে গাইবান্ধা ও বগুড়া জেলা, পশ্চিমে নওগাঁ জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।
'''জয়পুরহাট জেলা''' ([[রাজশাহী বিভাগ|রাজশাহী বিভাগ]])  আয়তন: ১০১২.৪১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫১´ থেকে ২৫°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৫´ থেকে ৮৮°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দিনাজপুর জেলা, দক্ষিণে বগুড়া ও নওগাঁ জেলা, পূর্বে গাইবান্ধা ও বগুড়া জেলা, পশ্চিমে নওগাঁ জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।


''জনসংখ্যা'' ৮৪৬৬৯৬; পুরুষ ৪৩৪৬১৬, মহিলা ৪১২০৮০। মুসলিম ৭৫৮৩২৪, হিন্দু ৭৬০৩৩, বৌদ্ধ ৪৭১৫, খ্রিস্টান ১৮৩ এবং অন্যান্য ৭৪৪১। এ উপজেলায় সাঁওতাল, মুন্ডা, ওরাওঁ, কোচ, রাজবংশী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ৯১৩৭৬৮; পুরুষ ৪৫৯২৮৪, মহিলা ৪৫৪৪৮৪। মুসলিম ৮১৯২৩৫, হিন্দু ৮০৬৯৬, বৌদ্ধ ১২৭, খ্রিস্টান ৪৮২২ এবং অন্যান্য ৮৮৮৮। এ উপজেলায় সাঁওতাল, মুন্ডা, ওরাওঁ, কোচ, রাজবংশী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: ছোট যমুনা, তুলসিগঙ্গা, হরবতী নদী।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: ছোট যমুনা, তুলসিগঙ্গা, হরবতী নদী।


''প্রশাসন'' ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত জয়পুরহাট জেলা বগুড়া জেলার একমাত্র মহকুমা ছিল। ১৯৮৪ সালে মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে পাঁচবিবি সর্ববৃহৎ (২৭৮.৫৩ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২৮.৮৫% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা আক্কেলপুর (১৩৯.৪৭ বর্গ কিমি)।
''প্রশাসন'' ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত জয়পুরহাট জেলা বগুড়া জেলার একমাত্র মহকুমা ছিল। ১৯৮৪ সালে মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে পাঁচবিবি সর্ববৃহৎ (৩১১.৭৭ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২৮.৮৫% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা ক্ষেতলাল (১৪২.৬১ বর্গ কিমি)।


{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-  
|-  
| ৯৬৫.৪৪  || ৫ || ৩  || ৩২ || ৭১৯  || ৮৯৬  || ১২১৩০৫  || ৭২৫৩৯১  || ৮৭৭  || ৪৯.
| ১০১২.৪১ || ৫ || || ৩২ || ৬৭৬ || ৮৮৭ || ১৪৩৯১০ || ৭৬৯৮৫৮ || ৯০৩ || ৫৭.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| উপজেলা নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলা নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-  
|-  
| আক্কেলপুর || ১৩৯.৪৭  || ১ || ৫ || ১১৬  || ১৪৫ || ১২৮৯৫২  || ৯২৫  || ৫৪.
| আক্কেলপুর || ১৫৪.৯৪ || ১ || ৫ || ১০৩ || ১৪৫ || ১৩৭৬১৯ || ৮৮৮ || ৫৬.
|-  
|-
| কালাই || ১৬৬.৩০  || || ৫ || ১০৯  || ১৬০  || ১২৯৩২৯  || ৭৭৮  || ৪০.
| কালাই || ১৬৬.২৯ || || ৫ || ১০১ || ১৪৮ || ১৪৩১৯৭ || ৮৬১ || ৪৯.
|-  
|-
| ক্ষেতলাল || ১৪২.৬০  || - || ৫ || ৮৮ || ১৫৫ || ১১৫৯১৮  || ৮১৩  || ৪৫.
| ক্ষেতলাল || ১৪২.৬১ || - || ৫ || ৮৮ || ১৫৫ || ১০৮৩২৬ || ৭৬০ || ৫৩.
|-  
|-
| জয়পুরহাট সদর || ২৩৮.৫৪  || ১ || ৯ || ১৮৪  || ১৯২ || ২৫৬৬৯১  || ১০৭৬  || ৫২.
| জয়পুরহাট সদর || ২৩৬.৭৯ || ১ || ৯ || ১৭৪ || ১৯২ || ২৮৯০৫৮ || ১২২১ || ৬৫.
|-  
|-
| পাঁচবিবি || ২৭৮.৫৩  || ১ || ৮ || ২২২  || ২৪৪  || ২১৫৮০৬  || ৭৭৫  || ৫১.
| পাঁচবিবি || ৩১১.৭৭ || ১ || ৮ || ২১০ || ২৪৭ || ২৩৫৫৬৮ || ৭৫৬ || ৫৪.
|}
|}
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:JoypurhatDistrict.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:JoypurhatDistrict.jpg|thumb|right|400px]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে জয়পুরহাট ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ২০ এপ্রিল পাকবাহিনী পাঁচবিবি বাজার আক্রমণ করে বহু লোককে হত্যা করে এবং বাজারে অগ্নিসংযোগ করে। আয়সা রসুলপুর ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ২৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৬ এপ্রিল জয়পুরহাট থানার বম্বু ইউনিয়নের বড়াই-কাদিপুর গ্রামে পাকসেনারা ৩৭১ জন গ্রামবাসিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁচবিবি উপজেলার হাজীপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৯ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ৫ অক্টোবর পাকসেনারা জয়পুরহাট সদর উপজেলার পাগলা দেওয়ান গ্রামে জুম্মার নামাজে শরীক প্রায় তিনশতাধিক নিরীহ লোককে হত্যা করে। ১৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাট জেলা শত্রুমুক্ত হয়।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ৬; বধ্যভূমি ১; স্মৃতিস্তম্ভ ২।
''মুক্তিযুদ্ধ''   ১৯৭১ সালে জয়পুরহাট ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ২০ এপ্রিল পাকবাহিনী পাঁচবিবি বাজার আক্রমণ করে বহু লোককে হত্যা করে এবং বাজারে অগ্নিসংযোগ করে। আয়সা রসুলপুর ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ২৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৬ এপ্রিল জয়পুরহাট থানার বম্বু ইউনিয়নের বড়াই-কাদিপুর গ্রামে পাকসেনারা ৩৭১ জন গ্রামবাসীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁচবিবি উপজেলার হাজীপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৯ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ৫ অক্টোবর পাকসেনারা জয়পুরহাট সদর উপজেলার পাগলা দেওয়ান গ্রামে জুম্মার নামাজে শরীক প্রায় তিনশতাধিক নিরীহ লোককে হত্যা করে। ১৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাট জেলা শত্রুমুক্ত হয়। জেলার ৬টি স্থানে গণকবর ও ১টি স্থানে বধ্যভূমি রয়েছে, ২টি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৯.%; পুরুষ ৫৫.%, মহিলা ৪৪.%। কলেজ ২২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৪৪, কমিউনিটি স্কুল ৫, কিন্ডার গার্টেন ২, কারিগরি কলেজ ৭, কারিগরি স্কুল ১, কারিগরি ইনস্টিটিউট ২, মাদ্রাসা ১০৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জয়পুরহাট সরকারি কলেজ (১৯৪৬), মহিপুর হাজী মহসিন সরকারি কলেজ (১৯৬৯), জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজ (১৯৭২), জয়পুরহাট মহিলা ক্যাডেট কলেজ (২০০৬), কালাই ময়েনউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), সোনামুখী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), খঞ্জনপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), খঞ্জনপুর মিশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৯), উচাই জেরকা আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), তেঘর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), জয়পুরহাট সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭৭), কড়ই নুরুল হুদা আলিয়া মাদ্রাসা (১৯২৬), নাঙ্গাপীরহাট এস এ দ্বি-মুখী ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২৮), বানিয়াপাড়া মাদ্রাসা (১৯৩৬)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৭.%; পুরুষ ৬১.%, মহিলা ৫৩.%। কলেজ ২২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৪৪, কমিউনিটি স্কুল ৫, কিন্ডার গার্টেন ২, কারিগরি কলেজ ৭, কারিগরি স্কুল ১, কারিগরি ইনস্টিটিউট ২, মাদ্রাসা ১০৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জয়পুরহাট সরকারি কলেজ (১৯৪৬), মহিপুর হাজী মহসিন সরকারি কলেজ (১৯৬৯), জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজ (১৯৭২), জয়পুরহাট মহিলা ক্যাডেট কলেজ (২০০৬), কালাই ময়েনউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), সোনামুখী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), খঞ্জনপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), খঞ্জনপুর মিশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৯), উচাই জেরকা আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), তেঘর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), জয়পুরহাট সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭৭), কড়ই নুরুল হুদা আলিয়া মাদ্রাসা (১৯২৬), নাঙ্গাপীরহাট এস এ দ্বি-মুখী ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২৮), বানিয়াপাড়া মাদ্রাসা (১৯৩৬)।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৯.৫১%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৯%, শিল্প ১.১৮%, ব্যবসা ১১.৬৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯৭%, চাকরি ৫.১৪%, নির্মাণ ১.১৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২২% এবং অন্যান্য ৪.৯১%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৯.৫১%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৯%, শিল্প ১.১৮%, ব্যবসা ১১.৬৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯৭%, চাকরি ৫.১৪%, নির্মাণ ১.১৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২২% এবং অন্যান্য ৪.৯১%।
৫৩ নং লাইন: ৫২ নং লাইন:
''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; জয়পুরহাট জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; জয়পুরহাট জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; জয়পুরহাট জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; জয়পুরহাট জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Joypurhat District]]
[[en:Joypurhat District]]

১৯:৪১, ২৮ মে ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

জয়পুরহাট জেলা (রাজশাহী বিভাগ)  আয়তন: ১০১২.৪১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫১´ থেকে ২৫°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৫´ থেকে ৮৮°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দিনাজপুর জেলা, দক্ষিণে বগুড়া ও নওগাঁ জেলা, পূর্বে গাইবান্ধা ও বগুড়া জেলা, পশ্চিমে নওগাঁ জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।

জনসংখ্যা ৯১৩৭৬৮; পুরুষ ৪৫৯২৮৪, মহিলা ৪৫৪৪৮৪। মুসলিম ৮১৯২৩৫, হিন্দু ৮০৬৯৬, বৌদ্ধ ১২৭, খ্রিস্টান ৪৮২২ এবং অন্যান্য ৮৮৮৮। এ উপজেলায় সাঁওতাল, মুন্ডা, ওরাওঁ, কোচ, রাজবংশী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: ছোট যমুনা, তুলসিগঙ্গা, হরবতী নদী।

প্রশাসন ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত জয়পুরহাট জেলা বগুড়া জেলার একমাত্র মহকুমা ছিল। ১৯৮৪ সালে মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে পাঁচবিবি সর্ববৃহৎ (৩১১.৭৭ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২৮.৮৫% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা ক্ষেতলাল (১৪২.৬১ বর্গ কিমি)।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
১০১২.৪১ ৩২ ৬৭৬ ৮৮৭ ১৪৩৯১০ ৭৬৯৮৫৮ ৯০৩ ৫৭.৫
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলা নাম আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
আক্কেলপুর ১৫৪.৯৪ ১০৩ ১৪৫ ১৩৭৬১৯ ৮৮৮ ৫৬.৯
কালাই ১৬৬.২৯ ১০১ ১৪৮ ১৪৩১৯৭ ৮৬১ ৪৯.৮
ক্ষেতলাল ১৪২.৬১ - ৮৮ ১৫৫ ১০৮৩২৬ ৭৬০ ৫৩.৫
জয়পুরহাট সদর ২৩৬.৭৯ ১৭৪ ১৯২ ২৮৯০৫৮ ১২২১ ৬৫.৪
পাঁচবিবি ৩১১.৭৭ ২১০ ২৪৭ ২৩৫৫৬৮ ৭৫৬ ৫৪.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে জয়পুরহাট ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ২০ এপ্রিল পাকবাহিনী পাঁচবিবি বাজার আক্রমণ করে বহু লোককে হত্যা করে এবং বাজারে অগ্নিসংযোগ করে। আয়সা রসুলপুর ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ২৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৬ এপ্রিল জয়পুরহাট থানার বম্বু ইউনিয়নের বড়াই-কাদিপুর গ্রামে পাকসেনারা ৩৭১ জন গ্রামবাসীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁচবিবি উপজেলার হাজীপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৯ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ৫ অক্টোবর পাকসেনারা জয়পুরহাট সদর উপজেলার পাগলা দেওয়ান গ্রামে জুম্মার নামাজে শরীক প্রায় তিনশতাধিক নিরীহ লোককে হত্যা করে। ১৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাট জেলা শত্রুমুক্ত হয়। জেলার ৬টি স্থানে গণকবর ও ১টি স্থানে বধ্যভূমি রয়েছে, ২টি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৭.৫%; পুরুষ ৬১.৪%, মহিলা ৫৩.৫%। কলেজ ২২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৪৪, কমিউনিটি স্কুল ৫, কিন্ডার গার্টেন ২, কারিগরি কলেজ ৭, কারিগরি স্কুল ১, কারিগরি ইনস্টিটিউট ২, মাদ্রাসা ১০৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জয়পুরহাট সরকারি কলেজ (১৯৪৬), মহিপুর হাজী মহসিন সরকারি কলেজ (১৯৬৯), জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজ (১৯৭২), জয়পুরহাট মহিলা ক্যাডেট কলেজ (২০০৬), কালাই ময়েনউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), সোনামুখী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), খঞ্জনপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), খঞ্জনপুর মিশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৯), উচাই জেরকা আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), তেঘর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), জয়পুরহাট সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭৭), কড়ই নুরুল হুদা আলিয়া মাদ্রাসা (১৯২৬), নাঙ্গাপীরহাট এস এ দ্বি-মুখী ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২৮), বানিয়াপাড়া মাদ্রাসা (১৯৩৬)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৯.৫১%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৯%, শিল্প ১.১৮%, ব্যবসা ১১.৬৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯৭%, চাকরি ৫.১৪%, নির্মাণ ১.১৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২২% এবং অন্যান্য ৪.৯১%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: নবান্ন; অর্ধসাপ্তাহিক: উত্তর সীমান্ত (১৯৯৬-৯৯); সাপ্তাহিক: সীমান্ত (১৯৮২-৮৯), জয়পুরহাট বার্তা (১৯৮৭-৮৮), বঙ্গ ধ্বনি (১৯৮৫-৮৮), বালিঘাটা, পাঁচমাথা; পাক্ষিক: দিগন্ত (১৯৮১-৮৪); মাসিক: মহুয়া। এছাড়াও আলোড়ন (১৯৪৯-৫২), সোনার বাংলা (১৯৭২-৭৫), সেবক (১৯৭৮-৮২) উল্লেখযোগ্য।

লোকসংস্কৃতি ভাওয়াইয়া, পল্লী গীতি, মারফতি, দেহতত্ত্ব, জারি গান, মর্সিয়া, যাত্রাপালা, বিয়ের গীত।

দর্শনীয় স্থান শিশু উদ্যান, খঞ্জপুর খ্রি্ষ্টীয় মিশন (জয়পুরহাট সদর), আছরাঙ্গা বিল (ক্ষেতলাল), পাথরঘাটা (পাঁচবিবি)। [মোঃ আজিজুল হক]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; জয়পুরহাট জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; জয়পুরহাট জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।