জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৪:৪২, ১৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ (২৮ নং আইন) বলে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ আইন বলে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কর্মকান্ড শুরু হয়। পূর্বতন জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে গণ্য করা হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয়টি ১১.১১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। একটি প্রশাসনিক ভবন, কলা ভবন, বিজ্ঞান ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন, ভাষা শহীদ রফিক ভবন, নতুন নির্মিত ১৩ তলা ভবন, শিক্ষক ডরমিটরিসহ এখানে ১০টি ভবন রয়েছে। একটি শহীদ মিনার এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠাকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ৪টি অনুষদ, ২২টি বিভাগে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির প্রফেসর ড. সিরাজুল ইসলাম খান। দ্বিতীয় ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, দুই মেয়াদে তৃতীয় ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. মীজানুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালটির বর্তমান (চতুর্থ) ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে গত ২ জুন ২০২১ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মো: ইমদাদুল হক দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বর্তমানে (২০২১ সালে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদ, ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউটে মোট ২০ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে।

কলা অনুষদে অন্তর্ভুক্ত বিভাগগুলির মধ্যে রয়েছে: বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইসলামিক স্টাডিজ, দর্শন, সংগীত, চারুকলা ও নাট্যকলা বিভাগ। বিজ্ঞান অনুষদে রয়েছে, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, পরিসংখ্যান, গণিত, এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে রয়েছে: রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, নৃবিজ্ঞান, লোক প্রশাসন এবং ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগ। বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে রয়েছে: একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, ফিন্যান্স এবং মার্কেটিং বিভাগ। আইন অনুষদে রয়েছে, আইন এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ। লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদে রয়েছে, প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ, মনোবিজ্ঞান, ফার্মেসি, অণুজীববিজ্ঞান, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ। ইনস্টিটিউট হিসেবে রয়েছে, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ও আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট। শিক্ষক সংখ্যা ৬৮০ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারির সংখ্যা ৪৫৬। শিক্ষকদের মধ্যে অধ্যাপক ১০৬, সহযোগী অধ্যাপক ১৬০, সহকারী অধ্যাপক ৩৩৮ এবং প্রভাষক ৭৬। বিশ্ববিদ্যালয়ে পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল নামে একটি স্কুল রয়েছে। নতুন ভবনের ৬ তলায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটি বেশ সমৃদ্ধ। গ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। গ্রন্থাগারে ইন্টারনেট সুবিধাসহ দেশি-বিদেশি জার্নালের সংগ্রহ রয়েছে। এছাড়া ৬টি অনুষদ থেকে পৃথক পৃথক গবেষণা জার্নাল প্রকাশিত হচ্ছে। ২০২০ সালে ৬০০ ছাত্রীর আবাসন সুবিধা সংবলিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল উদ্বোধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য পরিবহন সুবিধা রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব চিকিৎসা ও শরীরচর্চা কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও পরীক্ষার ফরম পুরণের যাবতীয় কাজ অনলাইনে সম্পন্ন হয়ে থাকে। প্রতিবছরের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়। এছাড়া অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় নানা কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান উদ্যাপন করে। বিশেষ করে আড়ম্বরের সাথে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি পূরনো ঢাকার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের কার্যক্রম পালন করে থাকে। [মো. নূরে আলম আব্দুল্লাহ্]

আরও দেখুন জগন্নাথ কলেজ