ছাগলনাইয়া উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১২ নং লাইন: ১২ নং লাইন:
| colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
! rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ৫ || ৪৬ || ৬৬  || ৫৮১৩৮  || ১১২৩৮৬ || ১২৬২ || ৭০.৭১ || ৬১.৬৩
| ১ || ৫ || ৪৬ || ৬৬  || ৫৮১৩৮  || ১১২৩৮৬ || ১২৬২ || ৭০.৭১ || ৬১.৬৩
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
|পৌরসভা
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ২৪.৯৬ || ৯ || - || ৩৫৪৬৭ || ১৪২১ || ৬৬.৪৪
| ২৪.৯৬ || ৯ || - || ৩৫৪৬৭ || ১৪২১ || ৬৬.৪৪
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" |  উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১৩.৯৮  || ৪  || ২২৬৭১  || ১৬২২  || ৭০.৭১
| ১৩.৯৮  || ৪  || ২২৬৭১  || ১৬২২  || ৭০.৭১
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" |  ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
৫৭ নং লাইন: ৪৩ নং লাইন:
|-  
|-  
| গোপাল ৪৭  || ৪৮৫৪  || ১২২১৪  || ১২৭০৩  || ৬৭.৬০
| গোপাল ৪৭  || ৪৮৫৪  || ১২২১৪  || ১২৭০৩  || ৬৭.৬০
|-
|-
| পাঠাননগর ৭৬  || ৬১৪৩  || ১৬৫২৩  || ১৭৭৬১  || ৬৩.৯৯
| পাঠাননগর ৭৬  || ৬১৪৩  || ১৬৫২৩  || ১৭৭৬১  || ৬৩.৯৯
|-
|-
| মহামায়া ৫৭  || ৫৭৯৬  || ১০০৪২  || ৯৬৮৭  || ৫২.৮৫
| মহামায়া ৫৭  || ৫৭৯৬  || ১০০৪২  || ৯৬৮৭  || ৫২.৮৫
|-
|-
| রাধানগর ৮৫  || ৪৮৩৬  || ১৩৮৪৭  || ১৩৪২৬  || ৬২.৭২
| রাধানগর ৮৫  || ৪৮৩৬  || ১৩৮৪৭  || ১৩৪২৬  || ৬২.৭২
৬৯ নং লাইন: ৫২ নং লাইন:
| শুভপুর ৯৫  || ৫১১৮  || ১৪১৩৬  || ১৪৭১৮  || ৬০.৯৭
| শুভপুর ৯৫  || ৫১১৮  || ১৪১৩৬  || ১৪৭১৮  || ৬০.৯৭
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
 
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' চাঁদগাজী ভূঞা মসজিদ, জগন্নাথ কালীমন্দির, শিলুয়ার শিল, বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি ও সাত মন্দির, শমসের গাজীর রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ, কৈয়ারা দিঘি।


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ১৯৫০ সালে এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ছাগলনাইয়া উপজেলার ৪৫ জন লোক নিহত হয় এবং অনেক টাকার সম্পদ লুণ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে শুভপুর ব্রিজ পার হতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে দুই কোম্পানি পাকসেনা নিহত হয়। মে মাসে কালাপুরে (কালাব্রিজ) পাকসেনাদের প্রতিরক্ষা অবস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৯ মে গোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুর সিংহনগরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩০০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। জুলাই মাসে শুভপুরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। জুলাই মাসে মধুগ্রাম এলাকায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। নভেম্বরের শেষদিকে শুভপুরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন
[[Image:ChagalnaiaUpazila.jpg|thumb|right]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' চাঁদগাজী ভূঞা মসজিদ, জগন্নাথ কালীমন্দির, শিলুয়ার শিল, বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি সাত মন্দির, শমসের গাজীর রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ, কৈয়ারা দিঘি।


[[Image:ChagalnaiaUpazila.jpg|thumb|right|ছাগলনাইয়া উপজেলা]]
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি''  ১৯৫০ সালে এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ছাগলনাইয়া উপজেলার ৪৫ জন লোক নিহত হয় এবং অনেক টাকার সম্পদ লুণ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে শুভপুর ব্রিজ পার হতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে দুই কোম্পানি পাকসেনা নিহত হয়। মে মাসে কালাপুরে (কালাব্রিজ) পাকসেনাদের প্রতিরক্ষা অবস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৯ মে গোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুর ও সিংহনগরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩০০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। জুলাই মাসে শুভপুরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। জুলাই মাসে মধুগ্রাম এলাকায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। নভেম্বরের শেষদিকে শুভপুরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' স্মৃতিস্তম্ভ ২।
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' স্মৃতিস্তম্ভ ২।
৮৩ নং লাইন: ৬৫ নং লাইন:
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৬৩.০৩%; পুরুষ ৬৬.৯৩%, মহিলা ৫৯.২৩%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:  ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজ (১৯৭২), আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৫), মৌলভী শামসুল করিম কলেজ (১৯৯৫), ছাগলনাইয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), জয়পুর সরোজিনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), ছাগলনাইয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭২), ছাগলনাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০০), ছাগলনাইয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা (১৯৩৭)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৬৩.০৩%; পুরুষ ৬৬.৯৩%, মহিলা ৫৯.২৩%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:  ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজ (১৯৭২), আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৫), মৌলভী শামসুল করিম কলেজ (১৯৯৫), ছাগলনাইয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), জয়পুর সরোজিনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), ছাগলনাইয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭২), ছাগলনাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০০), ছাগলনাইয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা (১৯৩৭)।


পত্র-পত্রিকা  সাপ্তাহিক: আপিল (অবলুপ্ত); মাসিক: ছাগলনাইয়া, হায়দার।
''পত্র-পত্রিকা''  সাপ্তাহিক: আপিল (অবলুপ্ত); মাসিক: ছাগলনাইয়া, হায়দার।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ১০, ক্লাব ৩৯, থিয়েটার গ্রুপ ১, মহিলা সংগঠন ১, সঙ্গীত বিদ্যালয় ১, উদ্যান ১, খেলার মাঠ ২৫।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ১০, ক্লাব ৩৯, থিয়েটার গ্রুপ ১, মহিলা সংগঠন ১, সঙ্গীত বিদ্যালয় ১, উদ্যান ১, খেলার মাঠ ২৫।
৯৫ নং লাইন: ৭৭ নং লাইন:
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তিসি, ডাল, কাউন, তামাক, পাট।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তিসি, ডাল, কাউন, তামাক, পাট।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' আম, কাঁঠাল, কলা, জাম, তাল, আনারস, কুল।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, কলা, জাম, তাল, আনারস, কুল।


মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার  মৎস্য ২, গবাদিপশু ২৮, হাঁস-মুরগি ৩৫।
মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার  মৎস্য ২, গবাদিপশু ২৮, হাঁস-মুরগি ৩৫।
১০৯ নং লাইন: ৯১ নং লাইন:
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৮, মেলা ৩। করৈয়ার বাজার, দারোগা বাজার, আমজাদ মজুমদার হাট, চাঁদগাজী বাজার, মির্জার বাজার, জমাদ্দার বাজার, বাংলা বাজার ও পাঠাননগর বাজার এবং অাঁধার মানিক মেলা ও কালী গাছতলা মেলা উল্লেখযোগ্য।
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৮, মেলা ৩। করৈয়ার বাজার, দারোগা বাজার, আমজাদ মজুমদার হাট, চাঁদগাজী বাজার, মির্জার বাজার, জমাদ্দার বাজার, বাংলা বাজার ও পাঠাননগর বাজার এবং অাঁধার মানিক মেলা ও কালী গাছতলা মেলা উল্লেখযোগ্য।


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, কাঠের তৈরী ফার্নিচার।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, কাঠের তৈরী ফার্নিচার।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৪.১২% (শহরে ৮১.৮৮% ও গ্রামে ৬১.৫৩%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৪.১২% (শহরে ৮১.৮৮% ও গ্রামে ৬১.৫৩%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
১১৭ নং লাইন: ৯৯ নং লাইন:
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৭৩.৫১% (গ্রামে ৭১.৩২% ও শহরে ৮৮.৪৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২১.৩৭% (গ্রামে ২৩.০৮% ও শহরে ৯.৬৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.১২% (গ্রামে ৫.৬০% ও শহরে ১.৮১%) পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৭৩.৫১% (গ্রামে ৭১.৩২% ও শহরে ৮৮.৪৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২১.৩৭% (গ্রামে ২৩.০৮% ও শহরে ৯.৬৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.১২% (গ্রামে ৫.৬০% ও শহরে ১.৮১%) পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪।
 
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার অনেক লোক প্রাণ হারায়। ১৯৬৩ সালের ঘূর্ণিঝড় ও ১৯৮০ সালের টর্নেডোতে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।


''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, স্বনির্ভর বাংলাদেশ।
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার অনেক লোক প্রাণ হারায়। ১৯৬৩ সালের ঘূর্ণিঝড় ও ১৯৮০ সালের টর্নেডোতে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।


[আর. কে শামীম পাটোয়ারী]
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, স্বনির্ভর বাংলাদেশ।  [আর. কে শামীম পাটোয়ারী]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ছাগলনাইয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ছাগলনাইয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Chhagalnaiya Upazila]]
[[en:Chhagalnaiya Upazila]]

০৬:০৭, ২৭ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ছাগলনাইয়া উপজেলা (ফেনী জেলা)  আয়তন: ১৩৩.৪৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৪´ থেকে ২৩°০৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°২৬´ থেকে ৯১°৩৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ফুলগাজী উপজেলা, দক্ষিণে মিরসরাই ও ফেনী সদর উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পশ্চিমে পরশুরাম ও ফেনী সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৭০৫২৪; পুরুষ ৮৫২৮৪, মহিলা ৮৫২৪০। মুসলিম ১৬৫৪৬৩, হিন্দু ৪৯৯৫, খ্রিস্টান ২১ এবং অন্যান্য ৪৫।

জলাশয় ফেনী ও মুহুরী নদী এবং কালীদাস খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ছাগলনাইয়া থানা গঠিত হয় ১৮৭৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১ অক্টোবর ১৯৮৩। পৌরসভা গঠিত হয় ৩ জুন ২০০২।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৪৬ ৬৬ ৫৮১৩৮ ১১২৩৮৬ ১২৬২ ৭০.৭১ ৬১.৬৩
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৪.৯৬ - ৩৫৪৬৭ ১৪২১ ৬৬.৪৪
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৩.৯৮ ২২৬৭১ ১৬২২ ৭০.৭১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গোপাল ৪৭ ৪৮৫৪ ১২২১৪ ১২৭০৩ ৬৭.৬০
পাঠাননগর ৭৬ ৬১৪৩ ১৬৫২৩ ১৭৭৬১ ৬৩.৯৯
মহামায়া ৫৭ ৫৭৯৬ ১০০৪২ ৯৬৮৭ ৫২.৮৫
রাধানগর ৮৫ ৪৮৩৬ ১৩৮৪৭ ১৩৪২৬ ৬২.৭২
শুভপুর ৯৫ ৫১১৮ ১৪১৩৬ ১৪৭১৮ ৬০.৯৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ চাঁদগাজী ভূঞা মসজিদ, জগন্নাথ কালীমন্দির, শিলুয়ার শিল, বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি ও সাত মন্দির, শমসের গাজীর রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ, কৈয়ারা দিঘি।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ১৯৫০ সালে এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ছাগলনাইয়া উপজেলার ৪৫ জন লোক নিহত হয় এবং অনেক টাকার সম্পদ লুণ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে শুভপুর ব্রিজ পার হতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে দুই কোম্পানি পাকসেনা নিহত হয়। মে মাসে কালাপুরে (কালাব্রিজ) পাকসেনাদের প্রতিরক্ষা অবস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৯ মে গোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুর ও সিংহনগরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩০০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। জুলাই মাসে শুভপুরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। জুলাই মাসে মধুগ্রাম এলাকায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। নভেম্বরের শেষদিকে শুভপুরে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিস্তম্ভ ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৭৫, মন্দির ১০, মাজার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: চাঁদগাজী ভূঞা মসজিদ, দক্ষিণ বল্লভপুর মসজিদ, পানুয়া পীরের মাজার, রৌশন ফকিরের মাজার, জগন্নাথ মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬৩.০৩%; পুরুষ ৬৬.৯৩%, মহিলা ৫৯.২৩%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:  ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজ (১৯৭২), আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৫), মৌলভী শামসুল করিম কলেজ (১৯৯৫), ছাগলনাইয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), জয়পুর সরোজিনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), ছাগলনাইয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭২), ছাগলনাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০০), ছাগলনাইয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা (১৯৩৭)।

পত্র-পত্রিকা  সাপ্তাহিক: আপিল (অবলুপ্ত); মাসিক: ছাগলনাইয়া, হায়দার।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১০, ক্লাব ৩৯, থিয়েটার গ্রুপ ১, মহিলা সংগঠন ১, সঙ্গীত বিদ্যালয় ১, উদ্যান ১, খেলার মাঠ ২৫।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩২.২৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৫%, শিল্প ০.৬৮%, ব্যবসা ১৪.৬১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৪২%, চাকরি ১৫.৭৪%, নির্মাণ ১.৪৯%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১৪.২৮% এবং অন্যান্য ১৩.৬০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.৭৯%, ভূমিহীন ৩৫.২১%। শহরে ৭০.৭৩% এবং গ্রামে ৬৩.৯২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, তিল, আখ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি, ডাল, কাউন, তামাক, পাট।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, জাম, তাল, আনারস, কুল।

মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার  মৎস্য ২, গবাদিপশু ২৮, হাঁস-মুরগি ৩৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০৪ কিমি; নৌপথ ৯ নটিক্যাল মাইল, রেলপথ ৬.৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, বরফকল, করাতকল, ওয়েল্ডিং প্রভৃতি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লোহার কাজ, মৃৎশিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ, বাঁশের কাজ প্রভৃতি।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৮, মেলা ৩। করৈয়ার বাজার, দারোগা বাজার, আমজাদ মজুমদার হাট, চাঁদগাজী বাজার, মির্জার বাজার, জমাদ্দার বাজার, বাংলা বাজার ও পাঠাননগর বাজার এবং অাঁধার মানিক মেলা ও কালী গাছতলা মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, কাঠের তৈরী ফার্নিচার।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৪.১২% (শহরে ৮১.৮৮% ও গ্রামে ৬১.৫৩%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৯৫%, পুকুর ১.৪৩%, ট্যাপ ১.০১% এবং অন্যান্য ৩.৬১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭৩.৫১% (গ্রামে ৭১.৩২% ও শহরে ৮৮.৪৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২১.৩৭% (গ্রামে ২৩.০৮% ও শহরে ৯.৬৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.১২% (গ্রামে ৫.৬০% ও শহরে ১.৮১%) পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার অনেক লোক প্রাণ হারায়। ১৯৬৩ সালের ঘূর্ণিঝড় ও ১৯৮০ সালের টর্নেডোতে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, স্বনির্ভর বাংলাদেশ। [আর. কে শামীম পাটোয়ারী]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ছাগলনাইয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।