চৌধুরী, ইউসুফ আলী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:ChowdhuryYusufAli.jpg|thumb|400px|right|ইউসুফ আলী চৌধুরী]]
'''চৌধুরী, ইউসুফ আলী''' (১৯০৫-১৯৭১)  রাজনীতিক। মোহন মিয়া নামে সমধিক পরিচিত। তিনি ১৯০৫ সালে ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা চৌধুরী ময়েজউদ্দীন বিশ্বাস ছিলেন জমিদার। ব্রিটিশ শাসন বিরোধী আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল।
'''চৌধুরী, ইউসুফ আলী''' (১৯০৫-১৯৭১)  রাজনীতিক। মোহন মিয়া নামে সমধিক পরিচিত। তিনি ১৯০৫ সালে ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা চৌধুরী ময়েজউদ্দীন বিশ্বাস ছিলেন জমিদার। ব্রিটিশ শাসন বিরোধী আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল।


মোহন মিয়া ফরিদপুরের ঈশান স্কুলে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষালাভ করেন। কৈশোরে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ ঘটে। পাকিস্তান আন্দোলন এবং মুসলিম লীগ পুনর্গঠনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৩৭ সালে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন ফরিদপুর জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি (১৯৪১-১৯৫৩), বঙ্গীয় মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য (১৯৪১-১৯৪৭), পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক (১৯৪৭-১৯৫২)। ১৯৫৩ সালে তিনি দল থেকে বহিষৃকত হয়ে কৃষক-শ্রমিক পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে গণপরিষদ এবং ১৯৫৫ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং এ.কে ফজলুল হক মন্ত্রিসভার  কৃষি, বন ও পাট মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ইউসুফ আলী চৌধুরী ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য প্রতিষ্ঠা, এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৭ সালে কৃষক-প্রজা পার্টির গোড়াপত্তন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠন এবং পরবর্তী সময়ে পিডিএম ও পিডিপি প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা রাখেন।
মোহন মিয়া ফরিদপুরের ঈশান স্কুলে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষালাভ করেন। কৈশোরে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ ঘটে। পাকিস্তান আন্দোলন এবং মুসলিম লীগ পুনর্গঠনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৩৭ সালে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন ফরিদপুর জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি (১৯৪১-১৯৫৩), বঙ্গীয় মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য (১৯৪১-১৯৪৭), পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক (১৯৪৭-১৯৫২)। ১৯৫৩ সালে তিনি দল থেকে বহিষৃকত হয়ে কৃষক-শ্রমিক পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে গণপরিষদ এবং ১৯৫৫ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং এ.কে ফজলুল হক মন্ত্রিসভার  কৃষি, বন ও পাট মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ইউসুফ আলী চৌধুরী ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য প্রতিষ্ঠা, এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৭ সালে কৃষক-প্রজা পার্টির গোড়াপত্তন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠন এবং পরবর্তী সময়ে পিডিএম ও পিডিপি প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা রাখেন।
[[Image:ChowdhuryYusufAli.jpg|thumb|400px|right|ইউসুফ আলী চৌধুরী]]


সবশেষে তিনি নুরুল আমিনের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (পিডিপি) যোগ দেন। আইয়ুব শাসনামলে তিনি স্বৈরশাসন বিরোধী ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটি (ডাক) গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালে তিনি পিডিএম-এর সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই তিনি পাকিস্তান সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটিতে যোগ দেন। দলীয় প্রধান নুরুল আমিনের আহবানে ১৯৭১ সালের ১৮ নভেম্বর তিনি করাচি যান এবং ২৬ নভেম্বর সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।  [আবু মো. দেলোয়ার হোসেন]
সবশেষে তিনি নুরুল আমিনের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (পিডিপি) যোগ দেন। আইয়ুব শাসনামলে তিনি স্বৈরশাসন বিরোধী ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটি (ডাক) গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালে তিনি পিডিএম-এর সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই তিনি পাকিস্তান সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটিতে যোগ দেন। দলীয় প্রধান নুরুল আমিনের আহবানে ১৯৭১ সালের ১৮ নভেম্বর তিনি করাচি যান এবং ২৬ নভেম্বর সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।  [আবু মো. দেলোয়ার হোসেন]


[[en:Chowdhury, Yusuf Ali]]
[[en:Chowdhury, Yusuf Ali]]

০৬:৩৫, ২৩ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ইউসুফ আলী চৌধুরী

চৌধুরী, ইউসুফ আলী (১৯০৫-১৯৭১)  রাজনীতিক। মোহন মিয়া নামে সমধিক পরিচিত। তিনি ১৯০৫ সালে ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা চৌধুরী ময়েজউদ্দীন বিশ্বাস ছিলেন জমিদার। ব্রিটিশ শাসন বিরোধী আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল।

মোহন মিয়া ফরিদপুরের ঈশান স্কুলে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষালাভ করেন। কৈশোরে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ ঘটে। পাকিস্তান আন্দোলন এবং মুসলিম লীগ পুনর্গঠনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৩৭ সালে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন ফরিদপুর জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি (১৯৪১-১৯৫৩), বঙ্গীয় মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য (১৯৪১-১৯৪৭), পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক (১৯৪৭-১৯৫২)। ১৯৫৩ সালে তিনি দল থেকে বহিষৃকত হয়ে কৃষক-শ্রমিক পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে গণপরিষদ এবং ১৯৫৫ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং এ.কে ফজলুল হক মন্ত্রিসভার  কৃষি, বন ও পাট মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ইউসুফ আলী চৌধুরী ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য প্রতিষ্ঠা, এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৭ সালে কৃষক-প্রজা পার্টির গোড়াপত্তন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠন এবং পরবর্তী সময়ে পিডিএম ও পিডিপি প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা রাখেন।

সবশেষে তিনি নুরুল আমিনের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (পিডিপি) যোগ দেন। আইয়ুব শাসনামলে তিনি স্বৈরশাসন বিরোধী ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটি (ডাক) গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালে তিনি পিডিএম-এর সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই তিনি পাকিস্তান সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটিতে যোগ দেন। দলীয় প্রধান নুরুল আমিনের আহবানে ১৯৭১ সালের ১৮ নভেম্বর তিনি করাচি যান এবং ২৬ নভেম্বর সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।  [আবু মো. দেলোয়ার হোসেন]