চুলকানি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ২টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''চুলকানি''' (Itching) ত্বকের পৃষ্ঠে এক প্রকার অস্বস্তিকর সংবেদন। চুলকানি সমস্ত শরীর জুড়ে বা একটি ছোট স্থানে দেখা দিতে পারে। ত্বকের ক্ষত, বাম্প, ফোসকা, ফুসকুড়ি, লালভাব ইত্যাদি উপসর্গসহ বা ছাড়াই চুলকানি হতে পারে। হালকা স্বল্পস্থায়ী চুলকানি সাধারণ তবে সমস্যাটি মাঝে মাঝে গুরুতর এবং আশঙ্কাজনক হতে পারে। শুধুমাত্র গুরুতর চুলকানির ক্ষেত্রে কখনও কখনও আমরা আঁচড়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। চুলকানির দ্বারা মশার কামড়, চিকেনপক্স বা একজিমার মতো দীর্ঘস্থায়ী চর্মরোগ হতে স্বল্পস্থায়ী মুক্তি সম্ভব কিন্তু পরবর্তীতে তা সমস্যাটিকে আরও গুরুতর করতে পারে।
'''চুলকানি''' (Scabies)  অতীব ছোঁয়াচে চর্মরোগ। এ রোগের কারণ ক্ষুদ্র এক ধরনের মাইট, Sarcoptes scabiei hominis-এর সংক্রমণ। খোস-পাঁচড়া সমস্ত পৃথিবীতেই দেখতে পাওয়া যায় এবং বাংলাদেশে সব বয়সের এবং সব ধরনের মানুষের মধ্যে এ চর্মরোগ খুব বেশি হতে দেখা যায়। একজনের শরীরের স্পর্শ থেকে অন্যজনে সরাসরি এটি সংক্রমিত হয়। কাপড়-চোপড় এবং বিছানাপত্র থেকে এ রোগ সংক্রমিত হতে খুব কম দেখা যায়। কোনো কোনো সময় গোটা পরিবার এ রোগে আক্রান্ত হয়। খোস-পাঁচড়া সৃষ্টিকারী মাইট চামড়ায় গর্ত করে সেখানে ডিম পাড়ে। এ অবস্থায় ডিমপাড়া ওই  জায়গাগুলিতে বিশেষ বৈশিষ্ট্যযুক্ত সুড়ঙ্গ তৈরি হয় যা দেখতে লাগে অনেকটা পেনসিলের দাগের মতো। ডিম থেকে পূর্ণাবস্থা মাইট হতে সময় লাগে একুশ দিন। চুলকানিজনিত ফুসকুড়ি হচ্ছে মাকড়ের বিরুদ্ধে শরীরের এক ধরনের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া। শিশুদের ত্বকে মাইট খুব বেশি আক্রমণ করে। এর ফলে শিশুদের দেহে সর্বত্র ফুসকুড়ি এবং হাত ও পায়ের তালুতে ফোস্কার সৃষ্টি হয়। ছোট ছেলেমেয়েদের মাথা, ঘাড়, গলা, হাত পায়ের তালু আক্রান্ত হয়। একটু বেশি বয়সী বাচ্চাদের হাত, কব্জি এবং পেটে এ চর্মরোগের আক্রমণ হতে দেখা যায়।


এই রোগের লক্ষণসমূহ হচ্ছে চুলকানি, বিশেষ করে রাতের বেলায়; ত্বকের উপর হাল্কা পেনসিলের মতো দাগ এবং ফুসকুড়ি। খোস-পাঁচড়া বা চুলকানি বিরক্তিকর হলেও তা মারাত্মক কোনো রোগ নয়। তবে অত্যধিক চুলকানোর ফলে আনুষঙ্গিক সংক্রমণ হতে পারে।  [মোঃ শহীদুল্লাহ]
[[Image:Itching.jpg|right|thumbnail|400px|চুলকানির কারণ (a) পয়জন আইভি এবং (b) বিষাক্ত ওক গাছ]]
মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা অন্যান্য মানসিক সমস্যার কারণে চুলকানি দেখা দিতে পারে। শুষ্ক ত্বক, দীর্ঘক্ষণ সূর্যের সংস্পর্শে থাকা ইত্যাদি কারণেও চুলকানি হতে পারে। চুলকানির অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ত্বকের অবস্থা (যেমন একজিমা); পরজীবী সংক্রমণ (যেমন স্ক্যাবিস); পোকামাকড়ের হুল এবং মশা বা মাছির কামড়; কিডনীর রোগ; ওষুধের প্রতিক্রিয়া, রক্তের রোগ (যেমন, পলিসাইথেমিয়া) এবং কিছু ক্যান্সার, বিশেষ করে Hodgkin's disease। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া যেমন খাদ্যের অ্যালার্জি, সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমাটোসাস (এসএলই), আমবাত, jock itch, দাদ এবং ল্যাটেক্স অ্যালার্জির মতো অটোইমিউন রোগের সাথে চুলকানির উর্দ্রেক সাধারণ। যেসব সংক্রমণের কারণে চুলকানি হতে পারে সেগুলো হলো হাম, ছত্রাকের সংক্রমণ, চিকেনপক্স, পোকামাকড়ের কামড়, পিনওয়ার্ম, স্ক্যাবিস এবং শরীরের উকুন।


[[en:Scabies]]
রক্তাল্পতা, সিরোসিস, থাইরয়েড রোগ এবং লিম্ফোমার মতো অভ্যন্তরীণ ব্যাধিসমূহ চুলকানির কারণ হতে পারে। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে কিডনি ডায়ালাইসিস, কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপিসহ বেশ কয়েকটি চিকিৎসা পদ্ধতির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। যৌনাঙ্গে চুলকানি বা মলদ্বার/যোনিতে চুলকানি যৌনাঙ্গে সংক্রমণের কারণে ঘটে, যেমন যৌনবাহিত রোগ (STDs)। অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিবায়োটিক এবং এমনকি ব্যথা উপশমকারী ওষুধগুলোও ব্যাপক চুলকানির কারণ হতে পারে।
 
পশম, কাপড়, প্রসাধনী, সাবান, বা অন্যান্য পদার্থের (poison ivy, poison oak, poison sumac, and wood nettle) সংস্পর্শ ত্বকের জ্বালা, ফুসকুড়ি এবং চুলকানির কারণ হতে পারে। খুশকিরসহ অবস্থানের কারণে মাথার ত্বকেও চুলকানি হতে পারে।  [ইশরাত জেবিন]
 
[[en:Itching]]

১৫:৫৮, ১৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

চুলকানি (Itching) ত্বকের পৃষ্ঠে এক প্রকার অস্বস্তিকর সংবেদন। চুলকানি সমস্ত শরীর জুড়ে বা একটি ছোট স্থানে দেখা দিতে পারে। ত্বকের ক্ষত, বাম্প, ফোসকা, ফুসকুড়ি, লালভাব ইত্যাদি উপসর্গসহ বা ছাড়াই চুলকানি হতে পারে। হালকা ও স্বল্পস্থায়ী চুলকানি সাধারণ তবে সমস্যাটি মাঝে মাঝে গুরুতর এবং আশঙ্কাজনক হতে পারে। শুধুমাত্র গুরুতর চুলকানির ক্ষেত্রে কখনও কখনও আমরা আঁচড়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। চুলকানির দ্বারা মশার কামড়, চিকেনপক্স বা একজিমার মতো দীর্ঘস্থায়ী চর্মরোগ হতে স্বল্পস্থায়ী মুক্তি সম্ভব কিন্তু পরবর্তীতে তা সমস্যাটিকে আরও গুরুতর করতে পারে।

চুলকানির কারণ (a) পয়জন আইভি এবং (b) বিষাক্ত ওক গাছ

মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা অন্যান্য মানসিক সমস্যার কারণে চুলকানি দেখা দিতে পারে। শুষ্ক ত্বক, দীর্ঘক্ষণ সূর্যের সংস্পর্শে থাকা ইত্যাদি কারণেও চুলকানি হতে পারে। চুলকানির অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ত্বকের অবস্থা (যেমন একজিমা); পরজীবী সংক্রমণ (যেমন স্ক্যাবিস); পোকামাকড়ের হুল এবং মশা বা মাছির কামড়; কিডনীর রোগ; ওষুধের প্রতিক্রিয়া, রক্তের রোগ (যেমন, পলিসাইথেমিয়া) এবং কিছু ক্যান্সার, বিশেষ করে Hodgkin's disease। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া যেমন খাদ্যের অ্যালার্জি, সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমাটোসাস (এসএলই), আমবাত, jock itch, দাদ এবং ল্যাটেক্স অ্যালার্জির মতো অটোইমিউন রোগের সাথে চুলকানির উর্দ্রেক সাধারণ। যেসব সংক্রমণের কারণে চুলকানি হতে পারে সেগুলো হলো হাম, ছত্রাকের সংক্রমণ, চিকেনপক্স, পোকামাকড়ের কামড়, পিনওয়ার্ম, স্ক্যাবিস এবং শরীরের উকুন।

রক্তাল্পতা, সিরোসিস, থাইরয়েড রোগ এবং লিম্ফোমার মতো অভ্যন্তরীণ ব্যাধিসমূহ চুলকানির কারণ হতে পারে। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে কিডনি ডায়ালাইসিস, কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপিসহ বেশ কয়েকটি চিকিৎসা পদ্ধতির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। যৌনাঙ্গে চুলকানি বা মলদ্বার/যোনিতে চুলকানি যৌনাঙ্গে সংক্রমণের কারণে ঘটে, যেমন যৌনবাহিত রোগ (STDs)। অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিবায়োটিক এবং এমনকি ব্যথা উপশমকারী ওষুধগুলোও ব্যাপক চুলকানির কারণ হতে পারে।

পশম, কাপড়, প্রসাধনী, সাবান, বা অন্যান্য পদার্থের (poison ivy, poison oak, poison sumac, and wood nettle) সংস্পর্শ ত্বকের জ্বালা, ফুসকুড়ি এবং চুলকানির কারণ হতে পারে। খুশকিরসহ অবস্থানের কারণে মাথার ত্বকেও চুলকানি হতে পারে। [ইশরাত জেবিন]