ঘোড়াঘাট উপজেলা

ঘোড়াঘাট উপজেলা (দিনাজপুর জেলা)  আয়তন: ১৪৮.৬৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৩´ থেকে ২৫°২২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৮´ থেকে ৮৯°১৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নবাবগঞ্জ ও পীরগঞ্জ  উপজেলা (রংপুর), দক্ষিণে পাঁচবিবি ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে পলাশবাড়ী ও পীরগঞ্জ উপজেলা (রংপুর), পশ্চিমে হাকিমপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলা।

জনসংখ্যা ১১৭৭৪০; পুরুষ ৫৯০০১, মহিলা ৫৮৭৩৯। মুসলিম ১০১০১৪, হিন্দু ৭৩০২, বৌদ্ধ ১৯, খ্রিস্টান ৬০৬২ এবং অন্যান্য ৩৩৪৩। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: যমুনেশ্বরী।

প্রশাসন ঘোড়াঘাট থানা গঠিত হয় ১৮৯৫ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১০৩ ১০৩ ২৩৫৫৪ ৯৪১৮৬ ৭৯২ ৪৬.৩ (২০০১) ৪৪.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ২৯ ২২৭১৭ - ৫১.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.০৭ (২০০১) ৮৩৭ ৮৯৮ (২০০১) ৪৯.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ঘোড়াঘাট ৩৮ ৪০০৪ ৫৬৪১ ৫৭১১ ৪৩.৯
পালসা ৫৭ ৯৮১৪ ১২৩৯০ ১২৫০০ ৪৭.৫
বুলাকীপুর ১৯ ৯২৭২ ১৩৭৯২ ১৩৪২০ ৩৮.৬
সিংড়া ৭৬ ৯০৪৫ ১৫৭৭৩ ১৫৭৯৬ ৪৮.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি এবং প্রত্নসম্পদ  ছোরগাছা মসজিদ (মুগল আমল), শাহ ইসমাইল গাজীর মাযার, বদরে আরেফীনের মাযার এবং  সৌর মসজিদ।

মুক্তিযুদ্ধ উপজেলার রুদ্রানী, জলপাইতলী, পানিকাটা, রাণীনগর প্রভৃতি স্থান ও পাশ্ববর্তী হিলি ও নবাবগঞ্জ উজেলার কয়েকটি স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়।

বিস্তারিত দেখুন ঘোড়াঘাট উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৬.০%; পুরুষ ৪৮.৪%, মহিলা ৪৩.৬%। কলেজ ৮, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৩, ব্র্যাক স্কুল ২৯, কেজি স্কুল ২, মাদ্রাসা ৩৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ঘোড়াঘাট ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৪), ঘোড়াঘাট মহিলা কলেজ (১৯৯৪), রানীগঞ্জ মহিলা কলেজ (১৯৯৪), ডুগডুগিরহাট কারিগরী কলেজ (২০০৩), রানীগঞ্জ দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৫), চাটশাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৬), বলাহার মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৮), বলগাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৬), গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৭২), কৃষ্ণরামপুর ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৪৬), দেওগাঁ রহমানিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৭)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ১০, সিনেমা হল ৫।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৮.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৮৪%, শিল্প ০.৫০%, ব্যবসা ১২.৯৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৯১%, চাকরি ৪.৩৫%, নির্মাণ ০.৫৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৭% এবং অন্যান্য ৭.০৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫১.০৩%, ভূমিহীন ৪৮.৯৭%। শহরে ৩৯.২৯% এবং গ্রামে ৫১.৫৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, ভূট্টা, আলু, সরিষা, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আখ।

প্রধান  ফল-ফলাদি  তরমুজ, আম, কলা, কাঁঠাল।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯১৪৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৮৪.৭৭ কিমি; নৌপথ ১৬ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৭, মেলা ২। রানীগঞ্জ হাট, ওসমানপুর হাট ও ঘোড়াঘাট হাট এবং ঋষিঘাট মেলা ও গোপালপুর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, কলা, তরমুজ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৯.২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.২%, ট্যাপ ১.২% এবং অন্যান্য ৩.৬%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৯.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩০.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৩।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, হিড বাংলাদেশ, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [শামসুজ্জামান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ঘোড়াঘাট উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।