গুপ্ত, বাদল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:GuptaBadal.jpg|thumb|400px|বাদল গুপ্ত]]
'''গুপ্ত, বাদল''' (১৯১২-১৯৩০)  ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী ও শহীদ। তাঁর প্রকৃত নাম সুধীর গুপ্ত। ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের পূর্বশিমুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম অবনী গুপ্ত।
'''গুপ্ত, বাদল''' (১৯১২-১৯৩০)  ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী ও শহীদ। তাঁর প্রকৃত নাম সুধীর গুপ্ত। ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের পূর্বশিমুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম অবনী গুপ্ত।


বিক্রমপুরের বানরীপাড়া স্কুলের শিক্ষক নিকুঞ্জ সেনের সংস্পর্শে বাদলের মধ্যে স্বদেশপ্রেমের উন্মেষ ঘটে। তাঁরই অনুপ্রেরণায় তিনি বিপ্লবী দল বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে (বিভি) যোগদান করেন। কর্মতৎপরতাগুণে অল্পদিনের মধ্যেই তিনি এই বাহিনীর অ্যাকশন স্কোয়াডের সদস্য থেকে লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত হন।
বিক্রমপুরের বানরীপাড়া স্কুলের শিক্ষক নিকুঞ্জ সেনের সংস্পর্শে বাদলের মধ্যে স্বদেশপ্রেমের উন্মেষ ঘটে। তাঁরই অনুপ্রেরণায় তিনি বিপ্লবী দল বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে (বিভি) যোগদান করেন। কর্মতৎপরতাগুণে অল্পদিনের মধ্যেই তিনি এই বাহিনীর অ্যাকশন স্কোয়াডের সদস্য থেকে লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত হন।


তখন বঙ্গের কারাপ্রধান (Inspector General of Prisons) সিম্পসন (NS Simpson) ছিলেন ভীষণ অত্যাচারী। তিনি কারাবন্দিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাতেন। তাই তাঁকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ দায়িত্ব পড়ে [[বসু, বিনয়কৃষ্ণ|বিনয়কপে ]][[বসু, বিনয়কৃষ্ণ|বসু]], বাদল গুপ্ত এবং [[গুপ্ত, দীনেশচন্দ্র|দীএনশচক্টদন্ড ]][[গুপ্ত, দীনেশচন্দ্র|গুপ]]ত'''-'''এর ওপর। তাঁরা ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিং-এ সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়ে সিম্পসনকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় কয়েকজন শ্বেতাঙ্গ কর্মচারীও আহত হয়। আক্রমণ-পরবর্তী গ্রেফতার এড়ানোর উদ্দেশ্যে তাঁরা আত্মহননের পথ বেছে নেন। তাঁরা ‘বন্দে মাতরম্’ ধ্বনি দিয়ে পটাসিয়াম সায়ানাইড নামক তীব্র বিষ পান করেন। এতে ঘটনাস্থলেই বাদলের মৃত্যু হয়। মৃত বাদলকে হাসপাতাল মর্গে এবং আহত বিনয় ও দীনেশকে জেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ১৩ ডিসেম্বর বিনয় মৃত্যুবরণ করেন। মুমূর্ষু দীনেশ চিকিৎসার ফলে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং কিছুকাল জেলে থাকার পর বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়। দেশ স্বাধীনের পর এই তরুণ বিপ্লবিত্রয়ের আত্মোৎসর্গ এবং স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কলকাতার ডালহৌসী স্কোয়ারকে ‘বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ’ (বি-বা-দী বাগ) নামে অভিহিত করা হয়।  [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]
তখন বঙ্গের কারাপ্রধান (Inspector General of Prisons) সিম্পসন (NS Simpson) ছিলেন ভীষণ অত্যাচারী। তিনি কারাবন্দিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাতেন। তাই তাঁকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ দায়িত্ব পড়ে [[বসু, বিনয়কৃষ্ণ|বিনয়কপে ]][[বসু, বিনয়কৃষ্ণ|বসু]], বাদল গুপ্ত এবং [[গুপ্ত, দীনেশচন্দ্র|দীনেশচন্দ্র গুপ্ত]]-এর ওপর। তাঁরা ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিং-এ সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়ে সিম্পসনকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় কয়েকজন শ্বেতাঙ্গ কর্মচারীও আহত হয়। আক্রমণ-পরবর্তী গ্রেফতার এড়ানোর উদ্দেশ্যে তাঁরা আত্মহননের পথ বেছে নেন। তাঁরা ‘বন্দে মাতরম্’ ধ্বনি দিয়ে পটাসিয়াম সায়ানাইড নামক তীব্র বিষ পান করেন। এতে ঘটনাস্থলেই বাদলের মৃত্যু হয়। মৃত বাদলকে হাসপাতাল মর্গে এবং আহত বিনয় ও দীনেশকে জেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ১৩ ডিসেম্বর বিনয় মৃত্যুবরণ করেন। মুমূর্ষু দীনেশ চিকিৎসার ফলে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং কিছুকাল জেলে থাকার পর বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়। দেশ স্বাধীনের পর এই তরুণ বিপ্লবিত্রয়ের আত্মোৎসর্গ এবং স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কলকাতার ডালহৌসী স্কোয়ারকে ‘বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ’ (বি-বা-দী বাগ) নামে অভিহিত করা হয়।  [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]


[[en:Gupta, Badal]]
[[en:Gupta, Badal]]

০৫:১১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বাদল গুপ্ত

গুপ্ত, বাদল (১৯১২-১৯৩০)  ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী ও শহীদ। তাঁর প্রকৃত নাম সুধীর গুপ্ত। ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের পূর্বশিমুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম অবনী গুপ্ত।

বিক্রমপুরের বানরীপাড়া স্কুলের শিক্ষক নিকুঞ্জ সেনের সংস্পর্শে বাদলের মধ্যে স্বদেশপ্রেমের উন্মেষ ঘটে। তাঁরই অনুপ্রেরণায় তিনি বিপ্লবী দল বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে (বিভি) যোগদান করেন। কর্মতৎপরতাগুণে অল্পদিনের মধ্যেই তিনি এই বাহিনীর অ্যাকশন স্কোয়াডের সদস্য থেকে লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত হন।

তখন বঙ্গের কারাপ্রধান (Inspector General of Prisons) সিম্পসন (NS Simpson) ছিলেন ভীষণ অত্যাচারী। তিনি কারাবন্দিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাতেন। তাই তাঁকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ দায়িত্ব পড়ে বিনয়কপে বসু, বাদল গুপ্ত এবং দীনেশচন্দ্র গুপ্ত-এর ওপর। তাঁরা ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিং-এ সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়ে সিম্পসনকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় কয়েকজন শ্বেতাঙ্গ কর্মচারীও আহত হয়। আক্রমণ-পরবর্তী গ্রেফতার এড়ানোর উদ্দেশ্যে তাঁরা আত্মহননের পথ বেছে নেন। তাঁরা ‘বন্দে মাতরম্’ ধ্বনি দিয়ে পটাসিয়াম সায়ানাইড নামক তীব্র বিষ পান করেন। এতে ঘটনাস্থলেই বাদলের মৃত্যু হয়। মৃত বাদলকে হাসপাতাল মর্গে এবং আহত বিনয় ও দীনেশকে জেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ১৩ ডিসেম্বর বিনয় মৃত্যুবরণ করেন। মুমূর্ষু দীনেশ চিকিৎসার ফলে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং কিছুকাল জেলে থাকার পর বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়। দেশ স্বাধীনের পর এই তরুণ বিপ্লবিত্রয়ের আত্মোৎসর্গ এবং স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কলকাতার ডালহৌসী স্কোয়ারকে ‘বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ’ (বি-বা-দী বাগ) নামে অভিহিত করা হয়।  [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]