গুপ্ত, দীনেশচন্দ্র: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:GuptaDineshChandra.jpg|thumb|400px|right|দীনেশচন্দ্র গুপ্ত]]
'''গুপ্ত, দীনেশচন্দ্র''' (১৯১১-১৯৩১)  বিপ্লবী। ১৯১১ সালের ৬ ডিসেম্বর  [[ঢাকা|ঢাকা]] জেলার বিক্রমপুরের যশোলং গ্রামে তাঁর জন্ম। এলাকায় তিনি ‘নসু’ নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। দীনেশচন্দ্র ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করেন।
'''গুপ্ত, দীনেশচন্দ্র''' (১৯১১-১৯৩১)  বিপ্লবী। ১৯১১ সালের ৬ ডিসেম্বর  [[ঢাকা|ঢাকা]] জেলার বিক্রমপুরের যশোলং গ্রামে তাঁর জন্ম। এলাকায় তিনি ‘নসু’ নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। দীনেশচন্দ্র ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করেন।


৫ নং লাইন: ৬ নং লাইন:


১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিনয় বসুর নেতৃত্বে  [[গুপ্ত, বাদল|বাদল গুপ্ত]] ও দীনেশচন্দ্র কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিং-এ আক্রমণ চালিয়ে কারা বিভাগের অত্যাচারী ইন্সপেক্টর-জেনারেল সিম্পসনকে হত্যা এবং অন্য কয়েকজন উচ্চপদস্থ ইউরোপীয় কর্মচারীকে গুরুতরভাবে আহত করেন। এ ঘটনায় গ্রেফতার এড়ানোর উদ্দেশ্যে এ বিপ্লবিত্রয় উগ্র বিষপানে ও নিজেদের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এতে বিনয় ও বাদলের মৃত্যু হয় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় দীনেশকে হাসপাতালে নিয়ে বহু চেষ্টায় বাঁচিয়ে তোলা হয়। কিন্তু দীনেশের দেশপ্রেম এতই গভীর ছিল যে, বহু চেষ্টা করেও সরকার তাঁর কাছ থেকে কোনো স্বীকারোক্তি আদায় করতে সক্ষম হয়নি।
১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিনয় বসুর নেতৃত্বে  [[গুপ্ত, বাদল|বাদল গুপ্ত]] ও দীনেশচন্দ্র কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিং-এ আক্রমণ চালিয়ে কারা বিভাগের অত্যাচারী ইন্সপেক্টর-জেনারেল সিম্পসনকে হত্যা এবং অন্য কয়েকজন উচ্চপদস্থ ইউরোপীয় কর্মচারীকে গুরুতরভাবে আহত করেন। এ ঘটনায় গ্রেফতার এড়ানোর উদ্দেশ্যে এ বিপ্লবিত্রয় উগ্র বিষপানে ও নিজেদের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এতে বিনয় ও বাদলের মৃত্যু হয় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় দীনেশকে হাসপাতালে নিয়ে বহু চেষ্টায় বাঁচিয়ে তোলা হয়। কিন্তু দীনেশের দেশপ্রেম এতই গভীর ছিল যে, বহু চেষ্টা করেও সরকার তাঁর কাছ থেকে কোনো স্বীকারোক্তি আদায় করতে সক্ষম হয়নি।
[[Image:GuptaDineshChandra.jpg|thumb|400px|right|দীনেশচন্দ্র গুপ্ত]]


অবশেষে সরকারবিরোধী কার্যকলাপ এবং হত্যার অভিযোগে বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয়। নির্ভীক দীনেশ ফাঁসির প্রতীক্ষায় থাকাকালীন সময়ে কারান্তরালে বসে কয়েকটি মূল্যবান পত্র লেখেন, যাতে বিপ্লবীদের বীরত্বগাথা, আত্মত্যাগের মহিমা এবং গভীর দেশপ্রেম ব্যক্ত হয়েছে। পত্রগুলি সুধীসমাজে রসোত্তীর্ণ সাহিত্য হিসেবে স্বীকৃত ও সমাদৃত। ১৯৩১ সালের ৭ জুলাই মাত্র ১৯ বছর বয়সে আলিপুর জেলে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। পরবর্তীকালে কলকাতার প্রসিদ্ধ লালদীঘি ময়দান বিনয়-বাদল-দীনেশ এ তিন নবীন বীরের স্মরণে উৎসর্গ করা হয়, যা সংক্ষেপে ‘বিবাদী বাগ’ নামে পরিচিত।  [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]
অবশেষে সরকারবিরোধী কার্যকলাপ এবং হত্যার অভিযোগে বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয়। নির্ভীক দীনেশ ফাঁসির প্রতীক্ষায় থাকাকালীন সময়ে কারান্তরালে বসে কয়েকটি মূল্যবান পত্র লেখেন, যাতে বিপ্লবীদের বীরত্বগাথা, আত্মত্যাগের মহিমা এবং গভীর দেশপ্রেম ব্যক্ত হয়েছে। পত্রগুলি সুধীসমাজে রসোত্তীর্ণ সাহিত্য হিসেবে স্বীকৃত ও সমাদৃত। ১৯৩১ সালের ৭ জুলাই মাত্র ১৯ বছর বয়সে আলিপুর জেলে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। পরবর্তীকালে কলকাতার প্রসিদ্ধ লালদীঘি ময়দান বিনয়-বাদল-দীনেশ এ তিন নবীন বীরের স্মরণে উৎসর্গ করা হয়, যা সংক্ষেপে ‘বিবাদী বাগ’ নামে পরিচিত।  [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]


[[en:Gupta, Dinesh Chandra]]
[[en:Gupta, Dinesh Chandra]]

০৫:০৭, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

দীনেশচন্দ্র গুপ্ত

গুপ্ত, দীনেশচন্দ্র (১৯১১-১৯৩১)  বিপ্লবী। ১৯১১ সালের ৬ ডিসেম্বর  ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের যশোলং গ্রামে তাঁর জন্ম। এলাকায় তিনি ‘নসু’ নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। দীনেশচন্দ্র ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করেন।

সাহসিকতাপূর্ণ কর্মতৎপরতার জন্য দীনেশচন্দ্র বিপ্লবী সংগঠন বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স (বিভি) বাহিনীর সাধারণ সদস্য থেকে ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। ঢাকা জেলায় এবং পরে মেদিনীপুরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেন। এ সংগঠনের প্রভাবেই বিপ্লবী দল মেদিনীপুরে একে একে তিন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সমর্থ হয়।

১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিনয় বসুর নেতৃত্বে  বাদল গুপ্ত ও দীনেশচন্দ্র কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিং-এ আক্রমণ চালিয়ে কারা বিভাগের অত্যাচারী ইন্সপেক্টর-জেনারেল সিম্পসনকে হত্যা এবং অন্য কয়েকজন উচ্চপদস্থ ইউরোপীয় কর্মচারীকে গুরুতরভাবে আহত করেন। এ ঘটনায় গ্রেফতার এড়ানোর উদ্দেশ্যে এ বিপ্লবিত্রয় উগ্র বিষপানে ও নিজেদের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এতে বিনয় ও বাদলের মৃত্যু হয় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় দীনেশকে হাসপাতালে নিয়ে বহু চেষ্টায় বাঁচিয়ে তোলা হয়। কিন্তু দীনেশের দেশপ্রেম এতই গভীর ছিল যে, বহু চেষ্টা করেও সরকার তাঁর কাছ থেকে কোনো স্বীকারোক্তি আদায় করতে সক্ষম হয়নি।

অবশেষে সরকারবিরোধী কার্যকলাপ এবং হত্যার অভিযোগে বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয়। নির্ভীক দীনেশ ফাঁসির প্রতীক্ষায় থাকাকালীন সময়ে কারান্তরালে বসে কয়েকটি মূল্যবান পত্র লেখেন, যাতে বিপ্লবীদের বীরত্বগাথা, আত্মত্যাগের মহিমা এবং গভীর দেশপ্রেম ব্যক্ত হয়েছে। পত্রগুলি সুধীসমাজে রসোত্তীর্ণ সাহিত্য হিসেবে স্বীকৃত ও সমাদৃত। ১৯৩১ সালের ৭ জুলাই মাত্র ১৯ বছর বয়সে আলিপুর জেলে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। পরবর্তীকালে কলকাতার প্রসিদ্ধ লালদীঘি ময়দান বিনয়-বাদল-দীনেশ এ তিন নবীন বীরের স্মরণে উৎসর্গ করা হয়, যা সংক্ষেপে ‘বিবাদী বাগ’ নামে পরিচিত।  [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]