খাসনগর দিঘি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
(Text replacement - "\[মুয়ায্যম হুসায়ন খান\]" to "[মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]")
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''খাসনগর দিঘি'''  সোনারগাঁয়ে পানামের প্রায় এক মাইল দক্ষিণে খাসনগর গ্রামের সন্নিকটে অবস্থিত একটি প্রাচীন দিঘি। এটি বর্তমানে সোনারগাঁ দিঘি নামেও পরিচিত। দিঘিটি খননের সময় অজ্ঞাত। দিঘিটির দৈর্ঘ উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত বিধায় এটিকে হিন্দু শাসনামলের দিঘি বলে ধারণা করা হয়। কথিত আছে, দিঘিটি খননকালে প্রায় বিশ একর জমির উপর বিস্তৃত ছিল। পরবর্তী সময়ে জেমস ওয়াইজ (১৮৭২) দিঘিটির আয়তন নিরূপণ করতে গিয়ে এটিকে ৯.৭৫ একর ভূমির উপর বিস্তৃত বলে মন্তব্য করেছেন। পক্ষান্তরে আলেকজান্ডার কার্নিংহাম (১৮৭৯-১৮৮০) এর পরিমাপ উল্লেখ করেছেন দৈর্ঘ্যে ১২০০ ফুট এবং প্রস্থে ৬০০ ফুট। সোনারগাঁয়ে একসময় [[মসলিন|মসলিন]] নামে অতি সূক্ষ্ম এবং সর্বোচ্চ মানের সূতিবস্ত্র তৈরি হতো। এই মসলিন বস্ত্রের মধ্যে সর্বাধিক সূক্ষ্ম ও উন্নত মানের বস্ত্রের নাম ছিল ‘খাস’। সূক্ষ্ম মসলিন বস্ত্র ‘খাস’ থেকেই সম্ভবত বর্তমান খাসনগর গ্রাম ও খাসনগর দিঘির নামকরণ হয়ে থাকবে। আর এর থেকে এমনটিও অনুমান করা যায় যে, একসময় এই খাসনগর ছিল সর্বাধিক সূক্ষ্ম ও উন্নতমানের মসলিন বস্ত্র ‘খাস’  উৎপাদনের সরগরম প্রাণকেন্দ্র। এমন তথ্য আছে যে, এককালে খাসনগর দিঘির পাড় জুড়ে বিস্তৃত ছিল তাঁতীদের আবাসস্থল। কথিত আছে, এ দিঘির পানিতে ধৌত মসলিন বস্ত্র অত্যুজ্জ্বল শুভ্রতা লাভ করত। আইন-ই-আকবরীতে সোনারগাঁয়ে যে বিশাল দিঘির উল্লেখ রয়েছে যার পানিতে ধৌত বস্ত্র এক ধরনের বিশেষ শুভ্রতা লাভ করে, তাতে স্পষ্টত খাসনগর দিঘিকেই নির্দেশ করা হয়েছে।  [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]
'''খাসনগর দিঘি'''  সোনারগাঁয়ে পানামের প্রায় এক মাইল দক্ষিণে খাসনগর গ্রামের সন্নিকটে অবস্থিত একটি প্রাচীন দিঘি। এটি বর্তমানে সোনারগাঁ দিঘি নামেও পরিচিত। দিঘিটি খননের সময় অজ্ঞাত। দিঘিটির দৈর্ঘ উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত বিধায় এটিকে হিন্দু শাসনামলের দিঘি বলে ধারণা করা হয়। কথিত আছে, দিঘিটি খননকালে প্রায় বিশ একর জমির উপর বিস্তৃত ছিল। পরবর্তী সময়ে জেমস ওয়াইজ (১৮৭২) দিঘিটির আয়তন নিরূপণ করতে গিয়ে এটিকে ৯.৭৫ একর ভূমির উপর বিস্তৃত বলে মন্তব্য করেছেন। পক্ষান্তরে আলেকজান্ডার কার্নিংহাম (১৮৭৯-১৮৮০) এর পরিমাপ উল্লেখ করেছেন দৈর্ঘ্যে ১২০০ ফুট এবং প্রস্থে ৬০০ ফুট। সোনারগাঁয়ে একসময় [[মসলিন|মসলিন]] নামে অতি সূক্ষ্ম এবং সর্বোচ্চ মানের সূতিবস্ত্র তৈরি হতো। এই মসলিন বস্ত্রের মধ্যে সর্বাধিক সূক্ষ্ম ও উন্নত মানের বস্ত্রের নাম ছিল ‘খাস’। সূক্ষ্ম মসলিন বস্ত্র ‘খাস’ থেকেই সম্ভবত বর্তমান খাসনগর গ্রাম ও খাসনগর দিঘির নামকরণ হয়ে থাকবে। আর এর থেকে এমনটিও অনুমান করা যায় যে, একসময় এই খাসনগর ছিল সর্বাধিক সূক্ষ্ম ও উন্নতমানের মসলিন বস্ত্র ‘খাস’  উৎপাদনের সরগরম প্রাণকেন্দ্র। এমন তথ্য আছে যে, এককালে খাসনগর দিঘির পাড় জুড়ে বিস্তৃত ছিল তাঁতীদের আবাসস্থল। কথিত আছে, এ দিঘির পানিতে ধৌত মসলিন বস্ত্র অত্যুজ্জ্বল শুভ্রতা লাভ করত। আইন-ই-আকবরীতে সোনারগাঁয়ে যে বিশাল দিঘির উল্লেখ রয়েছে যার পানিতে ধৌত বস্ত্র এক ধরনের বিশেষ শুভ্রতা লাভ করে, তাতে স্পষ্টত খাসনগর দিঘিকেই নির্দেশ করা হয়েছে।  [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]


[[en:Khasnagar Dighi]]
[[en:Khasnagar Dighi]]

১৬:২০, ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

খাসনগর দিঘি  সোনারগাঁয়ে পানামের প্রায় এক মাইল দক্ষিণে খাসনগর গ্রামের সন্নিকটে অবস্থিত একটি প্রাচীন দিঘি। এটি বর্তমানে সোনারগাঁ দিঘি নামেও পরিচিত। দিঘিটি খননের সময় অজ্ঞাত। দিঘিটির দৈর্ঘ উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত বিধায় এটিকে হিন্দু শাসনামলের দিঘি বলে ধারণা করা হয়। কথিত আছে, দিঘিটি খননকালে প্রায় বিশ একর জমির উপর বিস্তৃত ছিল। পরবর্তী সময়ে জেমস ওয়াইজ (১৮৭২) দিঘিটির আয়তন নিরূপণ করতে গিয়ে এটিকে ৯.৭৫ একর ভূমির উপর বিস্তৃত বলে মন্তব্য করেছেন। পক্ষান্তরে আলেকজান্ডার কার্নিংহাম (১৮৭৯-১৮৮০) এর পরিমাপ উল্লেখ করেছেন দৈর্ঘ্যে ১২০০ ফুট এবং প্রস্থে ৬০০ ফুট। সোনারগাঁয়ে একসময় মসলিন নামে অতি সূক্ষ্ম এবং সর্বোচ্চ মানের সূতিবস্ত্র তৈরি হতো। এই মসলিন বস্ত্রের মধ্যে সর্বাধিক সূক্ষ্ম ও উন্নত মানের বস্ত্রের নাম ছিল ‘খাস’। সূক্ষ্ম মসলিন বস্ত্র ‘খাস’ থেকেই সম্ভবত বর্তমান খাসনগর গ্রাম ও খাসনগর দিঘির নামকরণ হয়ে থাকবে। আর এর থেকে এমনটিও অনুমান করা যায় যে, একসময় এই খাসনগর ছিল সর্বাধিক সূক্ষ্ম ও উন্নতমানের মসলিন বস্ত্র ‘খাস’  উৎপাদনের সরগরম প্রাণকেন্দ্র। এমন তথ্য আছে যে, এককালে খাসনগর দিঘির পাড় জুড়ে বিস্তৃত ছিল তাঁতীদের আবাসস্থল। কথিত আছে, এ দিঘির পানিতে ধৌত মসলিন বস্ত্র অত্যুজ্জ্বল শুভ্রতা লাভ করত। আইন-ই-আকবরীতে সোনারগাঁয়ে যে বিশাল দিঘির উল্লেখ রয়েছে যার পানিতে ধৌত বস্ত্র এক ধরনের বিশেষ শুভ্রতা লাভ করে, তাতে স্পষ্টত খাসনগর দিঘিকেই নির্দেশ করা হয়েছে।  [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]