কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর''' (Crystalline Basement)'''  '''কেলাসিত অবস্থায় বিদ্যমান [[মণিক|শিলা ও মণিক]] দ্বারা গঠিত শিলাস্তর। বাংলাদেশে কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর বলতে সকল [[কয়লা|কয়লা]] ধারণকারী গন্ডোয়ানা পাললিক শিলাদল থেকে মধুপুর কর্দমস্তর পর্যন্ত বিস্তৃত পাললিক স্তরসমষ্টির ভিত্তি গঠনকারী আগ্নেয় এবং রূপান্তরিত শিলাস্তরকে নির্দেশ করে। কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরের উপরে অবস্থিত পাললিক শিলাদল-স্তরসমষ্টির পুরুত্ব দেশের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন হয়ে থাকে, বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহে এ পুরুত্ব ০.১২ কিমি থেকে ৩ কিমি পর্যন্ত এবং অববাহিকীয় অংশে ৩ কিমি থেকে ২১ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
'''কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর''' (Crystalline Basement)   কেলাসিত অবস্থায় বিদ্যমান [[মণিক|শিলা ও মণিক]] দ্বারা গঠিত শিলাস্তর। বাংলাদেশে কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর বলতে সকল [[কয়লা|কয়লা]] ধারণকারী গন্ডোয়ানা পাললিক শিলাদল থেকে মধুপুর কর্দমস্তর পর্যন্ত বিস্তৃত পাললিক স্তরসমষ্টির ভিত্তি গঠনকারী আগ্নেয় এবং রূপান্তরিত শিলাস্তরকে নির্দেশ করে। কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরের উপরে অবস্থিত পাললিক শিলাদল-স্তরসমষ্টির পুরুত্ব দেশের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন হয়ে থাকে, বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহে এ পুরুত্ব ০.১২ কিমি থেকে ৩ কিমি পর্যন্ত এবং অববাহিকীয় অংশে ৩ কিমি থেকে ২১ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।


দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত প্রি-ক্যামব্রিয়ান ইন্ডিয়ান প্লাটফর্ম এলাকায় ভূতাত্ত্বিক খননকার্য পরিচালনার সময় কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এ ভিত্তি শিলাস্তর গ্রানাইট, গ্রানোডায়োরাইট, টোনালাইট, ডায়োরাইট, গ্যাব্রো, ডোলেরাইট, নাইস, সিস্ট ও অ্যাম্ফিবোলাইট শিলা দ্বারা গঠিত। তবে গ্রানাইট ও নাইস জাতীয় শিলার প্রাধান্যই বেশি। গ্রানাইট জাতীয় শিলাসমূহ প্রধানত কোয়ার্টজ, কে-ফেল্ডস্পার, সোডিক প্লাজিওক্লেস, বায়োটাইট ও হর্নব্লেন্ড মণিক দ্বারা গঠিত। এখানে হর্নব্লেন্ড ও বায়োটাইট মণিকের ক্লোরাইটিকরণ (chloritisation) লক্ষণীয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসকল মণিক ঋজুপার্শ্ব অসমকণ (hypidiomorphic inequigranular) বুনট প্রদর্শন করে। গ্রানাইট জাতীয় কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরে পারথাইট, মিরমেকাইট, গ্রাফিক ইন্টারগ্রোথ প্রভৃতি বুনট সাধারণভাবে পরিদৃষ্ট হয়। মৌলিক কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর প্রধানত প্লাজিওক্লেস, পাইরক্সিন ও হর্নব্লেন্ড মণিক দ্বারা গঠিত। নাইসসমূহের মণিকতাত্ত্বিক গঠন (mineralogical composition) গ্রানাইট জাতীয়  শিলা গঠনের প্রায় হুবহু সমরূপ। কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর গভীর চ্যুতি গঠনের শিকার হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহে কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরে তামা, লৌহ ও অন্যান্য ধাতব খনিজের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত প্রি-ক্যামব্রিয়ান ইন্ডিয়ান প্লাটফর্ম এলাকায় ভূতাত্ত্বিক খননকার্য পরিচালনার সময় কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এ ভিত্তি শিলাস্তর গ্রানাইট, গ্রানোডায়োরাইট, টোনালাইট, ডায়োরাইট, গ্যাব্রো, ডোলেরাইট, নাইস, সিস্ট ও অ্যাম্ফিবোলাইট শিলা দ্বারা গঠিত। তবে গ্রানাইট ও নাইস জাতীয় শিলার প্রাধান্যই বেশি। গ্রানাইট জাতীয় শিলাসমূহ প্রধানত কোয়ার্টজ, কে-ফেল্ডস্পার, সোডিক প্লাজিওক্লেস, বায়োটাইট ও হর্নব্লেন্ড মণিক দ্বারা গঠিত। এখানে হর্নব্লেন্ড ও বায়োটাইট মণিকের ক্লোরাইটিকরণ (chloritisation) লক্ষণীয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসকল মণিক ঋজুপার্শ্ব অসমকণ (''hypidiomorphic inequigranular'') বুনট প্রদর্শন করে। গ্রানাইট জাতীয় কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরে পারথাইট, মিরমেকাইট, গ্রাফিক ইন্টারগ্রোথ প্রভৃতি বুনট সাধারণভাবে পরিদৃষ্ট হয়। মৌলিক কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর প্রধানত প্লাজিওক্লেস, পাইরক্সিন ও হর্নব্লেন্ড মণিক দ্বারা গঠিত। নাইসসমূহের মণিকতাত্ত্বিক গঠন (mineralogical composition) গ্রানাইট জাতীয়  শিলা গঠনের প্রায় হুবহু সমরূপ। কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর গভীর চ্যুতি গঠনের শিকার হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহে কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরে তামা, লৌহ ও অন্যান্য ধাতব খনিজের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।   [ইউনুস আকন]
 
[ইউনুস আকন]


[[en:Crystalline Basement]]
[[en:Crystalline Basement]]

০৯:২৫, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর (Crystalline Basement) কেলাসিত অবস্থায় বিদ্যমান শিলা ও মণিক দ্বারা গঠিত শিলাস্তর। বাংলাদেশে কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর বলতে সকল কয়লা ধারণকারী গন্ডোয়ানা পাললিক শিলাদল থেকে মধুপুর কর্দমস্তর পর্যন্ত বিস্তৃত পাললিক স্তরসমষ্টির ভিত্তি গঠনকারী আগ্নেয় এবং রূপান্তরিত শিলাস্তরকে নির্দেশ করে। কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরের উপরে অবস্থিত পাললিক শিলাদল-স্তরসমষ্টির পুরুত্ব দেশের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন হয়ে থাকে, বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহে এ পুরুত্ব ০.১২ কিমি থেকে ৩ কিমি পর্যন্ত এবং অববাহিকীয় অংশে ৩ কিমি থেকে ২১ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত প্রি-ক্যামব্রিয়ান ইন্ডিয়ান প্লাটফর্ম এলাকায় ভূতাত্ত্বিক খননকার্য পরিচালনার সময় কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এ ভিত্তি শিলাস্তর গ্রানাইট, গ্রানোডায়োরাইট, টোনালাইট, ডায়োরাইট, গ্যাব্রো, ডোলেরাইট, নাইস, সিস্ট ও অ্যাম্ফিবোলাইট শিলা দ্বারা গঠিত। তবে গ্রানাইট ও নাইস জাতীয় শিলার প্রাধান্যই বেশি। গ্রানাইট জাতীয় শিলাসমূহ প্রধানত কোয়ার্টজ, কে-ফেল্ডস্পার, সোডিক প্লাজিওক্লেস, বায়োটাইট ও হর্নব্লেন্ড মণিক দ্বারা গঠিত। এখানে হর্নব্লেন্ড ও বায়োটাইট মণিকের ক্লোরাইটিকরণ (chloritisation) লক্ষণীয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসকল মণিক ঋজুপার্শ্ব অসমকণ (hypidiomorphic inequigranular) বুনট প্রদর্শন করে। গ্রানাইট জাতীয় কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরে পারথাইট, মিরমেকাইট, গ্রাফিক ইন্টারগ্রোথ প্রভৃতি বুনট সাধারণভাবে পরিদৃষ্ট হয়। মৌলিক কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর প্রধানত প্লাজিওক্লেস, পাইরক্সিন ও হর্নব্লেন্ড মণিক দ্বারা গঠিত। নাইসসমূহের মণিকতাত্ত্বিক গঠন (mineralogical composition) গ্রানাইট জাতীয়  শিলা গঠনের প্রায় হুবহু সমরূপ। কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তর গভীর চ্যুতি গঠনের শিকার হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহে কেলাসিত ভিত্তি শিলাস্তরে তামা, লৌহ ও অন্যান্য ধাতব খনিজের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। [ইউনুস আকন]