কিশোর, এন্ড্রু: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

("right|thumbnail|200px|এন্ড্রু কিশোর '''কিশোর, এন্ড্রু''' (১৯৫৫-২০২০) বাংলাদেশের প্লে-ব্যাক গানের খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী। এন্ড্রু কিশোর ১৯৫৫ সালের ৪ঠা নভেম্বর রাজশাহী শহরে জন্মগ..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১২ নং লাইন: ১২ নং লাইন:
এন্ড্রু কিশোর ২০১৮ সালে নন-হজকিন লিম্ফোমা নামক ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং দীর্ঘ নয় মাস তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকায়, তিনি ক্যানসার নিয়েই দেশে ফেরেন। ২০২০ সালের ৬ই জুলাই ৬৪ বছর বয়সে রাজশাহীতে নিজ বাসভবনে শিল্পী এন্ড্রু কিশোর মৃত্যুবরণ করেন।  [শাহনাজ নাসরীন ইলা]
এন্ড্রু কিশোর ২০১৮ সালে নন-হজকিন লিম্ফোমা নামক ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং দীর্ঘ নয় মাস তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকায়, তিনি ক্যানসার নিয়েই দেশে ফেরেন। ২০২০ সালের ৬ই জুলাই ৬৪ বছর বয়সে রাজশাহীতে নিজ বাসভবনে শিল্পী এন্ড্রু কিশোর মৃত্যুবরণ করেন।  [শাহনাজ নাসরীন ইলা]


[[bn:Kishore, Andrew]]
[[en:Kishore, Andrew]]

১৬:৩৫, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এন্ড্রু কিশোর

কিশোর, এন্ড্রু (১৯৫৫-২০২০) বাংলাদেশের প্লে-ব্যাক গানের খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী। এন্ড্রু কিশোর ১৯৫৫ সালের ৪ঠা নভেম্বর রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম এন্ড্রু কিশোর কুমার বাড়ৈ। পিতার নাম ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ এবং মাতার নাম মিনু বাড়ৈ। এন্ড্রু কিশোরের সংগীতানুরাগী মাতার প্রিয় শিল্পী ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী কিশোর কুমার। প্রিয় শিল্পীর নামানুসারে তিনি পুত্রের নাম রাখেন কিশোর। মায়ের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণাতে এন্ড্রু কিশোর সংগীত জগৎ-এ পদার্পণ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে পড়াশোনা করেন। এন্ড্রু কিশোর ৬ বছর বয়স থেকে আব্দুল আজিজ বাচ্চুর কাছে সংগীত শিক্ষা শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বেতার আয়োজিত প্রতিভা অন্বেষণ অনুষ্ঠানে দেবু ভট্টাচার্য রচিত ‘সোহেলি ও সোহেলি’ গানটি গেয়ে হাজারো শ্রেতার মন জয় করে নেন। এর পরই বাংলাদেশ বেতার তাঁকে রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, লোকসংগীত, আধুনিক গান ও দেশাত্মবোধক গানের জন্য তালিকাভুক্ত করে নেয়।

এন্ড্রু কিশোর চলচ্চিত্রে নেপথ্য কন্ঠশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৭৭ সালে। ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে প্রখ্যাত সুরকার আলম খান রচিত ‘অচিন পুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানটির মধ্য দিয়ে তাঁর যাত্রা শুরু। ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘প্রতীজ্ঞা’ চলচ্চিত্রের ‘এক চোর যায় চলে’ গানটি গেয়ে এই প্রতিভাবান শিল্পী বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তখন থেকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক গায়ক হিসেবে তাঁর আসন স্থায়ী হয়ে যায়। এর পর দীর্ঘ শিল্পী-জীবনে তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। এছাড়াও ‘ডাক দিয়াছে দয়াল আমারে’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘আমার সারা দেহ খেয়োগো মাটি’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘সবাইতো ভালোবাসা চায়’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকী অল্প’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’ প্রভৃতি তাঁর জনপ্রিয় গান।

বড় ভালো লোক ছিল (১৯৮২), সারেন্ডার (১৯৮৭), ক্ষতিপূরণ (১৯৮৯), পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৯১), কবুল (১৯৯৬), আজ গায়ে হলুদ (২০০০), সাজঘর (২০০৭) এবং কী যাদু করিলা (২০০৮) চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কন্ঠশিল্পী বিভাগে তিনি আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া সেরা পুরুষ প্লে-ব্যাক গায়ক হিসেবে প্রিন্সেস টিনা খান (১৯৮৪), স্বামী-স্ত্রী (১৯৮৭), প্রেমের তাজমহল (২০০১), মনে প্রাণে আছ তুমি (২০০৮) এবং গোলাপী এখন বিলাতে (২০১০) সিনেমার জন্য পাঁচবার বাচসাস পুরস্কার প্রাপ্ত হন। বর্ণাঢ্য সংগীত-জীবনে এন্ড্রু কিশোর ১৯৮৮-২০০০ সময়ে পরপর তিনবার সেরা একক পুরুষ গায়ক হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।

প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের স্ত্রী প্রকৌশলী লিপিকা এন্ড্রু ইতি। তাঁর কন্যা মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা এবং পুত্র জয় এন্ড্রু সপ্তক যথাক্রমে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছে। ১৯৮৭ সালে এন্ড্রু কিশোর সমমনা আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ‘প্রবাহ’ নামে একটি বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

বাংলাদেশের সংগীত জগতে প্লে-ব্যাক গানের সম্রাট খ্যাত এন্ড্রু কিশোর পনেরো হাজারেরও অধিক গান গেয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেন। সিনেমা, রেডিও, টেলিভিশন, ইউটিউব ইত্যাদি মিডিয়ায় প্রচারিত তাঁর অসংখ্য গানের মধ্যে শিল্পী এন্ড্রু কিশোর দীর্ঘদিন তাঁর ভক্তদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।

এন্ড্রু কিশোর ২০১৮ সালে নন-হজকিন লিম্ফোমা নামক ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং দীর্ঘ নয় মাস তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকায়, তিনি ক্যানসার নিয়েই দেশে ফেরেন। ২০২০ সালের ৬ই জুলাই ৬৪ বছর বয়সে রাজশাহীতে নিজ বাসভবনে শিল্পী এন্ড্রু কিশোর মৃত্যুবরণ করেন। [শাহনাজ নাসরীন ইলা]