কাহারোল উপজেলা

কাহারোল উপজেলা (দিনাজপুর জেলা)  আয়তন: ২০৫.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৪৪´ থেকে ২৫°৫৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৩০´ থেকে ৮৯°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বীরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে দিনাজপুর সদর ও বিরল উপজেলা, পূর্বে খানসামা ও দিনাজপুর সদর উপজেলা, পশ্চিমে বোচাগঞ্জ উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৫৪৪৩২; পুরুষ ৭৭২৫৩, মহিলা ৭৭১৭৯। মুসলিম ৮৩২৩৪, হিন্দু ৬৮০৪৩, খ্রিস্টান ১২৪০ এবং অন্যান্য ১৯১৫। এ উপজেলায় সাঁওতাল আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় পূনর্ভবা, আত্রাই ও দ্বেপা নদী এবং কাঞ্চন ও হাঁস বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ১৯০৪ সালে থানা গঠিত হয় এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৫২ ১৫২ ৭৩৫৫ ১৪৭০৭৭ ৭৫১ ৬৩.৪ ৫০.৭
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪.৬৪ ৭৩৫৫ ১৫৮৫ ৬৩.৪
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ডাবর ১৫ ৮৪৬৫ ১২২৭০ ১২৪২২ ৫৭.৪
তারগাঁও ৯৪ ৮৬৭৬ ১১২৮২ ১১৫০১ ৫৩.০
মুকুন্দপুর ৩১ ৮২৮১ ১৫৬৭৫ ১৫২৫৫ ৫৪.৩
রসুলপুর ৬৩ ৮৬১৬ ১১৭৮৩ ১১৮৬৯ ৫৩.২
রামচন্দ্রপুর ৪৭ ৮৪৬৬ ১২৭৬৫ ১২৫৬৯ ৪৫.৯
সুন্দরপুর ৭৯ ৮২৮৫ ১৩৪৭৮ ১৩৫৬৩ ৪৪.৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

কাহারোল উপজেলা

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ কান্তজী মন্দির (১৭৫২, তারগাঁও) ও নয়াবাদ মসজিদ (রামচন্দ্রপুর)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মদনপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর লড়াইয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ও বেশ সংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়। উপজেলার ১টি স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন কাহারোল উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৩৭, মন্দির ১২৫, গির্জা ৫।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫১.৩%; পুরুষ ৫৬.৪%, মহিলা ৪৬.৩%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৩, মাদ্রাসা ২০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কাহারোল কলেজ (১৯৮৩), পূর্ব মল্লিকপুর এইচ এম কলেজ (১৯৯০), কাহারোল মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৭), কাহারোল হাইস্কুল (১৯৪০), ইসানপুর স্কুল (১৯৫৩), রামচন্দ্রপুর স্কুল (১৯৬২), কাহারোল বাজার ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৮৫)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ১৫, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৭.২২%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৫%, ব্যবসা ৯.৪৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.১০%, চাকরি ৩.০৮%, নির্মাণ ০.৯২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৭% এবং অন্যান্য ৩.৭১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৪.২২%, ভূমিহীন ৪৫.৭৮%। শহরে ৩৭.৪৮% এবং গ্রামে ৫৫.০৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, ভূট্টা, আখ, আলু, ডাল, তৈলবীজ।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউস ধান, তিল, কাউন।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কলা, কাঁঠাল, লিচু।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ৬৯.৩ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৩১৮.৩ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ধান কল, আটা কল।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠের কাজ, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৬, মেলা ১। কান্তজী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, চাল, পাট, গম, আলু, কলা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৬.২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৮.৭%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ১.০%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৪.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩১.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৩.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ১, এনজিও পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, গ্রাম বিকাশ, কেয়ার, প্রশিকা, কারিতাস।  [মোঃ আলী হোসেন]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কাহারোল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।