কসবা উপজেলা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:০২, ৬ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Robot: Automated text replacement (-\|\s''জনসংখ্যা''\s\|\| +| জনসংখ্যা ||))

কসবা উপজেলা (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা)  আয়তন: ২০৯.৭৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৯´ থেকে ২৩°৫২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০২´ থেকে ৯১°১৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে আখাউড়া ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা, পূর্বে আখাউড়া ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পশ্চিমে নবীনগর ও মুরাদনগর উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৭১২৩১; পুরুষ ১৩৫৭৪৭, মহিলা ১৩৫৪৮৪। মুসলিম ২৫৭৩৯২, হিন্দু ১৩৭৯৩, বৌদ্ধ ১৭ এবং অন্যান্য ২৯।

জলাশয় হাওড়া, তিতাস ও বুড়ি নদী এবং হাতনীর বিল, সিমরাইলের বিল ও কুটির বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন কসবা থানা গঠিত হয় ১৯০৮ সালে এবং ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১০ ১৬০ ২২২ ১৫৭৬৮ ২৫৫৪৬৩ ১২৯৩ ৫৫.২৩ ৪২.৭৯


পৌরসভা
আয়তন(বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৬.৭১ ২২ ১৫৭৬৮ ৯৪৪ ৫৫.২৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কসবা ৬৩ ৫৮৩০ ১১৮৯৫ ১২০৯৬ ৪০.৭১
কাইমপুর ৫৬ ৪৮২৭ ১৩৯১০ ১৪১৭০ ৪১.৯৩
কুটি ৬৯ ৫০২২ ১৭৪৪৪ ১৭০৬৬ ৩৯.০৭
খাড়েরা ৬৫ ৩২৯৩ ৮৪৬০ ৮৭৮৯ ৫৪.৪২
গোপীনাথপুর ৫০ ৭৬০৯ ১৫৪৪২ ১৪৭৭৩ ৪৫.৩০
বাদৈর ১৮ ৩০১৮ ৭৭৩৯ ৭৮৪০ ৪৩.৩১
বায়েক ৩১ ৬২৮২ ১৩৬১১ ১২৮৬৪ ৪০.০৮
বিনাউতি ৩৭ ৫৯২৬ ১৪৯৩৩ ১৫০১৮ ৪৩.৬৫
মূলগ্রাম ৯৪ ৫২০৫ ১২৯৮৫ ১৩৫৮৩ ৪০.৪৯
মেহারি ৮২ ৫৪৫০ ১১৩১৪ ১১৫৩১ ৪৩.৭১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ কুটি বড় মসজিদ ও মঈনপুর মসজিদ (আঠার শতক), আড়াইবাড়ি তিন গম্বুজ মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির (খেওড়া গ্রাম, সতের শতক)।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি মুক্তিযুদ্ধের সময় কসবা উপজেলা ২নং সেক্টরের বৃহত্তম রণাঙ্গন ছিল। ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর লতোয়ামুড়া ও চন্দ্রপুরে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং কুল্লাপাথরে অপর এক লড়াইয়ে ৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া এসময় উপজেলার আকছিনা, আড়াইবাড়ী, হরিয়াবহ, ক্ষীরণাল, চারগাছ ও বায়েক অঞ্চলে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন শহীদ সমাধি ৮ (লক্ষ্মীপুর, কোল্লাপাথর, শিমরাইল ও জমশেরপুর)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৭২, মন্দির ৬, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: কুটি বড় মসজিদ, মঈনপুর মসজিদ, আড়াইবাড়ি তিন গম্বুজ মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির, শাহসূফী আবু সাঈদ আসগর আহমদ আল কাদেরীর (র.) মাযার, শাহসূফী মাওলানা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের (র.) মাযার, আব্দুস সাত্তার মাশরেকী’র মাযার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৩.৫%; পুরুষ ৪৬.৫%, মহিলা ৪০.৭%। কলেজ ৮, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫৩, মাদ্রাসা ৩০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কসবা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯), কুটি অটল বিহারী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), জমশেরপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৩), খেওড়া আনন্দময়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৫)।

দৈনিক পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক অগ্নিবাণী; পাক্ষিক সকালের সূর্য।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১৫, লাইব্রেরি ২, প্রেসক্লাব ২, থিয়েটার গ্রুপ ২, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ২২, মিলনায়তন ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫২.০৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৭%, ব্যবসা ১৫.০৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.২০%, চাকরি ১০.০৬%, নির্মাণ ১.৫১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৬.৪০% এবং অন্যান্য ৯.৪২%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬০.৯৯%, ভূমিহীন ৩৯.০১%।  শহরে ৪৫.৩০% ও গ্রামে ৬১.৯২% পরিবারের কৃষিভূমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আলু, ভূট্টা।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি ডাল, তৈল জাতীয় শস্য।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, নারিকেল, পেঁপে, কুল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার  মৎস্য ১, হ্যাচারী ১৮, গবাদিপশু ২৭, হাঁস-মুরগি ৫৬, কৃত্রিম প্রজনন  কেন্দ্র ৪।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২২৫ কিমি; নৌপথ ৫ নটিকেল মাইল; রেললাইন ১৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, গরুর গাড়ি।

উল্লেখযোগ্য শিল্প ও কলকারখানা ময়দা কল, বরফ কল, ধান কল, তেল কল, ছাপাখানা, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, ইটভাটা,  মৎস্য-খাবার উৎপাদন কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।

উল্লেখযোগ্য কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার, মেলা   হাটবাজার ৩৮, মেলা ৫। কুটি বাজার, কসবা বাজার, মুসলিমগঞ্জ বাজার, চারগাছ বাজার, গোপীনাথপুর বাজার এবং চৌমূহনী মেলা, মনকাসাইর মেলা ও মেহারি মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, পাট।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪০.৫৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

খনিজ সম্পদ  বাংলাদেশের ১৯তম গ্যাস ক্ষেত্র (সালদা গ্যাস ক্ষেত্র) কসবায় অবস্থিত। মোট গ্যাসের মজুদ ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট। কূপ সংখ্যা ২।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৪৬%, পুকুর ১.৭৯%, ট্যাপ ০.২৮% এবং অন্যান্য ৩.৪৭%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৫৭.৪০% (গ্রামে ৫৬.৮৮% এবং শহরে ৬৬.২২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৪.৩১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৮.২৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপ-স্বাস্থকেন্দ্র ৪, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০০৪ সালের বন্যায় উপজেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, সেভ দ্য চিলড্রেন।

[মোঃ আবু রাসেল চৌধুরী]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কসবা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।