করিম, শাহ আবদুল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:KarimShahAbdul.jpg|thumb|400px|right|শাহ আবদুল করিম]]
'''করিম, শাহ আবদুল''' (১৯১৬-২০০৯) লোকসঙ্গীত শিল্পী, গীতিকার, সুরকার। জন্ম ১৯১৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধলআশ্রম গ্রামে। পিতা ইব্রাহিম আলী ছিলেন একজন দরিদ্র কৃষক, মাতা নাইওরজান বিবি।
'''করিম, শাহ আবদুল''' (১৯১৬-২০০৯) লোকসঙ্গীত শিল্পী, গীতিকার, সুরকার। জন্ম ১৯১৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধলআশ্রম গ্রামে। পিতা ইব্রাহিম আলী ছিলেন একজন দরিদ্র কৃষক, মাতা নাইওরজান বিবি।


৫ নং লাইন: ৬ নং লাইন:


সেখানেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে নিজের চেষ্টায় তিনি স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন। কৈশোরকাল থেকেই গণসঙ্গীতের প্রতি শাহ আবদুল করিমের আকর্ষণ ছিল। সম্ভবত জীবনের বাস্তবতা তাঁকে গণসঙ্গীত রচনায় উদ্বুদ্ধ করে। তাঁর একটি বিখ্যাত গণসঙ্গীতের কয়েক পংক্তি এ রকম:  
সেখানেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে নিজের চেষ্টায় তিনি স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন। কৈশোরকাল থেকেই গণসঙ্গীতের প্রতি শাহ আবদুল করিমের আকর্ষণ ছিল। সম্ভবত জীবনের বাস্তবতা তাঁকে গণসঙ্গীত রচনায় উদ্বুদ্ধ করে। তাঁর একটি বিখ্যাত গণসঙ্গীতের কয়েক পংক্তি এ রকম:  
[[Image:KarimShahAbdul.jpg|thumb|400px|right|শাহ আবদুল করিম]]


এই দেশের দুর্দশার কথা
এই দেশের দুর্দশার কথা

০৮:২৯, ৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

শাহ আবদুল করিম

করিম, শাহ আবদুল (১৯১৬-২০০৯) লোকসঙ্গীত শিল্পী, গীতিকার, সুরকার। জন্ম ১৯১৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধলআশ্রম গ্রামে। পিতা ইব্রাহিম আলী ছিলেন একজন দরিদ্র কৃষক, মাতা নাইওরজান বিবি।

শাহ আবদুল করিম বাল্যকালে শিক্ষালাভের কোনো সুযোগ পাননি। বারো বছর বয়সে তিনি নিজ গ্রামের এক নৈশবিদ্যালয়ে কিছুকাল পড়াশোনা করেন।

সেখানেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে নিজের চেষ্টায় তিনি স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন। কৈশোরকাল থেকেই গণসঙ্গীতের প্রতি শাহ আবদুল করিমের আকর্ষণ ছিল। সম্ভবত জীবনের বাস্তবতা তাঁকে গণসঙ্গীত রচনায় উদ্বুদ্ধ করে। তাঁর একটি বিখ্যাত গণসঙ্গীতের কয়েক পংক্তি এ রকম:

এই দেশের দুর্দশার কথা

কইতে মনে লাগে ব্যথা

খোরাক বিনা যথাতথা

মানুষ মারা যায়।

তাঁর জীবনের প্রথমপর্বে সঙ্গীতের দীক্ষা ঘটেছিল বাংলা ভাবসাধক ও বাউল পরিমন্ডলে। প্রথম জীবনে তিনি বাউল, ভক্তিমূলক, জারি, সারি, রাধাকৃষ্ণবিষয়ক পালাগান গেয়েছেন। কিন্তু পরিণত বয়সে তিনি গণসঙ্গীত রচনা ও পরিবেশনে খ্যাতি অর্জন করেন। সঙ্গীতজীবনের একদিকে তিনি ছিলেন গণচেতনার সঙ্গীত রচয়িতা, সুরকার ও গায়ক, অন্যদিকে ছিলেন বাউল-আঙ্গিকের সঙ্গীতশিল্পী। এক পর্যায়ে তিনি সাধক দুর্বীণ শাহের সঙ্গে বৃহত্তর সিলেট জেলার বিভিন্ন গ্রামে ‘মালজোড়া গান’ পরিবেশন করে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তিনি বাউলশিল্পী কামালউদ্দিনসহ বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় গণসঙ্গীত পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেন। উল্লেখ্য যে, ওই সময় বা তারও আগে অনুষ্ঠানাদির শুরু ও শেষ করা হতো সঙ্গীতের মাধ্যমে। সরকারি সহায়তায় তিনি সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য বেশ কয়েকবার লন্ডন গমন করেন।

১৯৫৪ সালে শাহ আবদুল করিম প্রণীত গণসঙ্গীত গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রকাশিত অন্যান্য গানের সংকলন হলো আফতাব সঙ্গীত (১৯৪৮), কালনীর ঢেউ (১৯৮১), ভাটির চিঠি (১৯৯৮), ধলমেলা (১৯৯০), কালনীর কূলে (২০০১)।

তাঁর প্রায় সমুদয় গ্রন্থেই তত্ত্বগানের পাশাপাশি গণচেতনার গান মুদ্রিত হয়েছে। তাঁর রচিত তত্ত্বগানের পাশাপাশি গণচেতনার গান এতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করে যে, তিনি কিংবদন্তিতে পরিণত হন। অথচ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে তাঁর গণচেতনার মূল পরিচয়কে বাদ দিয়ে তাঁকে ‘বাউলসম্রাট’ নামে অভিহিত করা হয়। তবে বাংলা একাডেমী প্রণীত ও প্রকাশিত বাংলাদেশের লোকসংগীত গ্রন্থে শাহ আবদুল করিমের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে (১৯৯২) বহু আগেই তাঁর গণচেতনার তথা গণশিল্পী পরিচয়কেই উপস্থাপন করা হয়েছে।

শাহ আবদুল করিম ২০০০ সালে আব্দুর রউফ চৌধুরী কর্তৃক ’দ্রোহী কথা সাহিত্যিক’ সম্মানে ভূষিত হন। তিনি তাঁর সঙ্গীতপ্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সিলেটে তাঁর মৃত্যু হয়। [সাইমন জাকারিয়া]