ওদন্তপুরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৪ নং লাইন: ৪ নং লাইন:
ভারতীয় মহাবিদ্যালয় সমূহের মধ্যে ওদন্তপুরী ছিলো দ্বিতীয় প্রাচীন মহাবিদ্যালয়। রাজা গোপাল (৬৬০-৭০৫) এ মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রথম পৃষ্ঠপোসকতা প্রদান করেছিলেন। তিববতীয় রেকর্ড অনুযায়ী জানা যায় যে, ওদন্তপুরী মহাবিদ্যালয়ে  প্রায় বারো হাজার (১২০০০) ছাত্র অধ্যয়ন করত। শক্য মাস্টার জামগন আমে জাব (১৫৯৭-১৬৫৯ খ্রি.) কর্তৃক প্রণীত তিববতীয় ইতিহাস ‘কালচক্র তন্ত্রে’ বর্ণিত হয়েছে যে, ওদন্তপুরীর প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতেন সেন্ধাপারা (Sendhapas)। পালরাজাদের ও পালরাজ্যের পৃষ্ঠপোষকতা ও আনুকূল্যে, ওদন্তপুরী মহাবিদ্যালকে আশ্রয় করে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ জগতে বাংলা ও বাঙালির রাষ্ট্র গৌরবময় স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছিল।'''   '''
ভারতীয় মহাবিদ্যালয় সমূহের মধ্যে ওদন্তপুরী ছিলো দ্বিতীয় প্রাচীন মহাবিদ্যালয়। রাজা গোপাল (৬৬০-৭০৫) এ মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রথম পৃষ্ঠপোসকতা প্রদান করেছিলেন। তিববতীয় রেকর্ড অনুযায়ী জানা যায় যে, ওদন্তপুরী মহাবিদ্যালয়ে  প্রায় বারো হাজার (১২০০০) ছাত্র অধ্যয়ন করত। শক্য মাস্টার জামগন আমে জাব (১৫৯৭-১৬৫৯ খ্রি.) কর্তৃক প্রণীত তিববতীয় ইতিহাস ‘কালচক্র তন্ত্রে’ বর্ণিত হয়েছে যে, ওদন্তপুরীর প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতেন সেন্ধাপারা (Sendhapas)। পালরাজাদের ও পালরাজ্যের পৃষ্ঠপোষকতা ও আনুকূল্যে, ওদন্তপুরী মহাবিদ্যালকে আশ্রয় করে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ জগতে বাংলা ও বাঙালির রাষ্ট্র গৌরবময় স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছিল।'''   '''


[[বখতিয়ার খলজী|বখতিয়ার খলজী]] যে ’হিসার-ই-বিহার’ বা বিহার দুর্গ আক্রমণ এবং অধিকার করে তার ধনরত্ন লুণ্ঠন করেন, গ্রন্থ পোড়ান এবং অধিকাংশকে হত্যা করেন, ওদন্তপুরী বিহার ছিলো তার মধ্যে একটি। উঁচু দেয়ার ঘেরা স্থাপত্যিক কাঠামোকে মুসলিম আক্রমনকারীরা সম্ভবত বৌদ্ধ বিহারকে দুর্গ বলে ভুল করেছিল এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে মনে করেছিল ন্যাড়া মাথার সনাতন ব্রাহ্মণ। বিহারের ভিক্ষু আচার্য শাক্যশ্রী ভদ্র এ সময়ে মগধে বেড়াতে এসে এ ধ্বংসযজ্ঞ দেখে জগদ্দল বিহারে পালিয়ে যান। ওদন্তপুরী এবং নালন্দার প্রথম পর্বের বিদ্যার্থী এবং আচার্যদের মধ্যে অধিকাংশই বাঙালি ছিলেন। [নাসরীন আক্তার]
[[বখতিয়ার খলজী|বখতিয়ার খলজী]] যে ’হিসার-ই-বিহার’ বা বিহার দুর্গ আক্রমণ এবং অধিকার করে তার ধনরত্ন লুণ্ঠন করেন, গ্রন্থ পোড়ান এবং অধিকাংশকে হত্যা করেন, ওদন্তপুরী বিহার ছিলো তার মধ্যে একটি। উঁচু দেয়ার ঘেরা স্থাপত্যিক কাঠামোকে মুসলিম আক্রমনকারীরা সম্ভবত বৌদ্ধ বিহারকে দুর্গ বলে ভুল করেছিল এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে মনে করেছিল ন্যাড়া মাথার সনাতন ব্রাহ্মণ। বিহারের ভিক্ষু আচার্য শাক্যশ্রী ভদ্র এ সময়ে মগধে বেড়াতে এসে এ ধ্বংসযজ্ঞ দেখে জগদ্দল বিহারে পালিয়ে যান। ওদন্তপুরী এবং নালন্দার প্রথম পর্বের বিদ্যার্থী এবং আচার্যদের মধ্যে অধিকাংশই বাঙালি ছিলেন। [নাসরীন আক্তার]


'''''গ্রন্থপঞ্জি'''  elizabeth english, Vajrayogini: Her Visualization, Rituals and Forms. Wisdom Publications; Butt Sukumar, George Allen and Unwin Ltd, Buddlist Monks and Monasteries of Indi, Their History and Contribution to Indian Culture, London-1962.''
'''গ্রন্থপঞ্জি'''  Elizabeth English, ''Vajrayogini: Her Visualization, Rituals and Forms'', Wisdom Publications; Butt Sukumar, ''Buddlist Monks and Monasteries of India, Their History and Contribution to Indian Culture'', George Allen and Unwin Ltd, London, 1962।


[[en:Odantapuri]]
[[en:Odantapuri]]

০৬:০২, ৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ওদন্তপুরী (ওদন্তপুরা)  পশ্চিমবঙ্গের বিহার প্রদেশে অবস্থিত একটি বৌদ্ধ বিহার। আট শতকে পাল সাম্রাজ্যের রাজা ধর্মপাল (৭৭০-৮১০ খ্রিস্টাব্দ) এই বিহারের প্রতিষ্ঠাতা। ওদন্তপুর বৌদ্ধ বিহারটি নালন্দা মহাবিহার থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরত্বে মগধে অবস্থিত এবং একে প্রাচীন ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাবিদ্যালয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। বিক্রমশীলা মহাবিহার এর অধ্যক্ষ শ্রীগঙ্গা ছিলেন এই মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র। মগধ এবং বাংলায় পাল শাসনামলে বেশ কিছু বৌদ্ধ বিহার গড়ে উঠেছিল। তিববতীয় সূত্রানুসারে এ সময়ে গড়ে উঠা উল্লেখযোগ্য পাঁচটি বিহার হল, বিক্রমশীলা (প্রথম ও প্রাচীনতম মহাবিদ্যালয়), নালন্দা (পৃথিবীর প্রথম আবাসিক মহাবিদ্যালয়), সোমপুর, ওদন্তপুরী এবং জগদ্দল মহবিহার। এই পাঁচটি মহাবিদ্যালয় বা বিহার, রাজ্যের কেন্দ্রীয় শক্তির তত্ত্বাবধানে একটি একক নেটওয়ার্কের মধ্যে পরিচালিত হত এবং প্রত্যেকের মধ্যে নিয়মিতভাবে সমন্বয়সাধন হত। পাল শাসকদের অধীনে পরিচালিত এই মহাবিহার পাঁচটির বৌদ্ধ পন্ডিতগণ সহজেই প্রত্যেকের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারতেন।

ভারতীয় মহাবিদ্যালয় সমূহের মধ্যে ওদন্তপুরী ছিলো দ্বিতীয় প্রাচীন মহাবিদ্যালয়। রাজা গোপাল (৬৬০-৭০৫) এ মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রথম পৃষ্ঠপোসকতা প্রদান করেছিলেন। তিববতীয় রেকর্ড অনুযায়ী জানা যায় যে, ওদন্তপুরী মহাবিদ্যালয়ে  প্রায় বারো হাজার (১২০০০) ছাত্র অধ্যয়ন করত। শক্য মাস্টার জামগন আমে জাব (১৫৯৭-১৬৫৯ খ্রি.) কর্তৃক প্রণীত তিববতীয় ইতিহাস ‘কালচক্র তন্ত্রে’ বর্ণিত হয়েছে যে, ওদন্তপুরীর প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতেন সেন্ধাপারা (Sendhapas)। পালরাজাদের ও পালরাজ্যের পৃষ্ঠপোষকতা ও আনুকূল্যে, ওদন্তপুরী মহাবিদ্যালকে আশ্রয় করে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ জগতে বাংলা ও বাঙালির রাষ্ট্র গৌরবময় স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছিল।  

বখতিয়ার খলজী যে ’হিসার-ই-বিহার’ বা বিহার দুর্গ আক্রমণ এবং অধিকার করে তার ধনরত্ন লুণ্ঠন করেন, গ্রন্থ পোড়ান এবং অধিকাংশকে হত্যা করেন, ওদন্তপুরী বিহার ছিলো তার মধ্যে একটি। উঁচু দেয়ার ঘেরা স্থাপত্যিক কাঠামোকে মুসলিম আক্রমনকারীরা সম্ভবত বৌদ্ধ বিহারকে দুর্গ বলে ভুল করেছিল এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে মনে করেছিল ন্যাড়া মাথার সনাতন ব্রাহ্মণ। বিহারের ভিক্ষু আচার্য শাক্যশ্রী ভদ্র এ সময়ে মগধে বেড়াতে এসে এ ধ্বংসযজ্ঞ দেখে জগদ্দল বিহারে পালিয়ে যান। ওদন্তপুরী এবং নালন্দার প্রথম পর্বের বিদ্যার্থী এবং আচার্যদের মধ্যে অধিকাংশই বাঙালি ছিলেন। [নাসরীন আক্তার]

গ্রন্থপঞ্জি  Elizabeth English, Vajrayogini: Her Visualization, Rituals and Forms, Wisdom Publications; Butt Sukumar, Buddlist Monks and Monasteries of India, Their History and Contribution to Indian Culture, George Allen and Unwin Ltd, London, 1962।