ঝিনাইদহ সদর উপজেলা

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা (ঝিনাইদহ জেলা)  আয়তন: ৪৬৭.৭৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৬´ থেকে ২৩°৩৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৭´ থেকে ৮৯°২০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে হরিণাকুন্ড ও শৈলকূপা উপজেলা, দক্ষিণে কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) ও শালিখা উপজেলা, পূর্বে মাগুরা সদর উপজেলা, পশ্চিমে কোটচাঁদপুর ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩৯৪১৫২; পুরুষ ২০৪২৫৬, মহিলা ১৮৯৮৯৬। মুসলিম ৩৪৯৭০৫, হিন্দু ৪৪৩২৩, বৌদ্ধ ৮৫, খ্রিস্টান ৮ এবং অন্যান্য ৩১।

জলাশয় প্রধান নদী: বেগবতী, নবগঙ্গা।

প্রশাসন ঝিনাইদহ থানা গঠিত হয় ১৭৯৩ সালে এবং  উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৭ ২৬৮ ২৮৩ ৮৮৬৮৭ ৩০৫৪৬৫ ৮৪৩ ৬৩.৮ ৪২.৫
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার(%)
৩৯.৬২ ০৯ ৩৪ ৮৬৯১৯ ২১৯৩ ৬৪.৩
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৯.৭৫ ১৭৬৮ ৫৯ ৪৩.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন(একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার(%)
পুরুষ মহিলা
কালীচরণপুর ৪২ ৪১৮০ ৭০৮৪ ৬৫৯৩ ৪৪.৬৭
কুমড়াবাড়িয়া ৪৭ ৬০৭৯ ৯২০৩ ৮৫৬৪ ৪১.২৪
গন্না ১৫ ৮৬৫৯ ১৩০৩৬ ১২৫৫৬ ৩৯.২৬
ঘোরশাল ২১ ৬৬৮৫ ৮৮৫৯ ৮০৯০ ৪২.৩৮
দোগাছি ১১ ৪৫০২ ৬১১৭ ৫৮৭৮ ৪৭.০২
নলডাংগা ৬৩ ৮৩৯৮ ১০৯৮৫ ১০২৬৬ ৪৯.৯২
পদ্মকর ৬৮ ৪৩০৮ ৮২৪১ ৭৮৬০ ৪২.৪২
পাগলা কানাই ৭৩ ২৯৮০ ৭১১৬ ৬৬৭৩ ৪৪.৫০
পোড়াহাটি ৭৯ ৮১৭৪ ১১৪৯৫ ১০৬৮০ ৪২.৮২
ফুরসন্ডি ১৩ ৭০১৬ ৮০৭৬ ৭৬২৫ ৩৯.২২
মধুহাটি ৫২ ৯১২৭ ১১৫৭৭ ১১১৯০ ৩৫.২৮
মহারাজপুর ৫৮ ৮৭৬৩ ১২১৭১ ১১৫৪৭ ৪৫.১৬
সাগান্না ৮৪ ৪৮৮১ ৯৪৮৫ ৮৮৭৩ ৩৯.৪৯
সাধুহাটি ৮৯ ৬২১৮ ৯৯৯২ ৯৫৮৭ ৪২.২৮
সুরাত ৯৪ ৪১৪৪ ৬৫২৯ ৬০০০ ৪৪.৭৬
হরিশংকরপুর ৩১ ৬৬৬৬ ৯০৩৬ ৮৫৭৫ ৪৪.১১
হালিধানি ২৬ ৫০১৪ ৮৯৬৬ ৮৭০৮ ৪২.১৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ নলডাঙ্গার রাজার বাড়ি, সেলিম চৌধুরীর বাড়ি (১৮২২ সাল), পঞ্চরত্ন মন্দির, বেড়বাড়িতে পাগলা কানাইয়ের মাযার, কে. পি. বসুর বাড়ি, মধুপুর নীলকুঠি ও ঢোল সমুদ্র।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল সদর উপজেলার বিষখালীতে বেগবতী নদীর তীরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং আরও অনেকে আহত হন।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৩৫, মন্দির ৩, গির্জা ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৪৭.৪%; পুরুষ ৫২.৩%, মহিলা ৪২.১%। কলেজ ১৫, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮৬, মাদ্রাসা ৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি কে.সি কলেজ (১৯৬০), ঝিনাইদহ  ক্যাডেট কলেজ (১৯৬৩), সরকারী নুরুন্নাহার মহিলা কলেজ (১৯৮৫), ঝিনাইদহ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৭), ওয়াজির আলী হাইস্কুল (১৯০৩), ঝিনাইদহ সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৫৪), কাঞ্চননগর মডেল হাইস্কুল, হরিশংকরপুর জে.সি বিদ্যাপিঠ (১৯১৮), ঝিনাইদহ সিদ্দিকিয়া আলিম মাদ্রাসা (১৯৬৭)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  বর্তমান: দৈনিক ঝিনাইদহ, দৈনিক অধিবেশন, দৈনিক ঝিনাইদহের বাণী। সাপ্তাহিক: অনির্বাণ, বীর দর্পণ।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৩০, সিনেমা হল ৫, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ৭, মহিলা সমিতি ৪১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬০.১২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.২৮%, শিল্প ১.১৬%, ব্যবসা ১৫.৩৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৫.২১%, চাকরি ৭.৪৫%, নির্মাণ ১.৯১%, ধর্মীয় সেবা ০.১৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৮১% এবং অন্যান্য ৪.৫২%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬১.৪৭%, ভূমিহীন ৩৮.৫৩%। শহরে ৪৭.৪৮% এবং গ্রামে ৬৫.৩৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আখ, গম, যব, পান, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, মিষ্টি আলু, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ১৩, হাঁস-মুরগি ২৮১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৪৬ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ডালমিল, ফ্লাওয়ার মিল, তেলকল, ধানকল, বরফকল।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩৮। ঝিনাইদহ সদর হাট, গোপালপুর হাট, ভাটই হাট, তেঁতুলতলা হাট, বিষখালী হাট, নারিকেলবাড়ীয়া হাট, মধুপুর হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, পাট, পান, কলা, খেজুর গুড়, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি  ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩১.৫৭% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯১.৬৮%, পুকুর ০.১৭%, ট্যাপ ৫.৫৭% এবং অন্যান্য ২.৫৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৫.২৭% (গ্রামে ১৬.৪৫% ও শহরে ৫৭.০৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.০৪% (গ্রামে ৪৪.২৩% ও শহরে ২৯.৫০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩৩.৭০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, শিশু হাসপাতাল ১, চক্ষু হাসপাতাল ১, ডায়াবেটিক হাসপাতাল ১, মাতৃমঙ্গল ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১, মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [মো. মসিউর রহমান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ঝিনাইদহ সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।