ইসলাম, এ.কে.এম নূরুল

এ.কে.এম নূরুল ইসলাম

ইসলাম, এ.কে.এম নূরুল (১৯২৮-২০০৬)  জন্ম ২৭ অক্টোবর  ১৯২৮ সালে নাটোর শহরে। তিনি নওগাঁর কেডি হাই স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন (১৯৪৫) ও রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে আইএসসি পরীক্ষায় (১৯৪৭) উত্তীর্ণ হন এবং রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে বি.এস.সি (১৯৪৯), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এস.সি (উদ্ভিদবিদ্যা, ১৯৫১), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচ.ডি (শৈবালতত্ত্ব, ১৯৬০), ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনের আরম্ভ কুষ্টিয়া কলেজে জীববিদ্যার অধ্যাপক হিসাবে (১৯৫২)। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিদ্যার প্রভাষক (১৯৫২-৬২), রিডার (১৯৬২-৭২), অধ্যাপক (১৯৭২-৯০), অতিরিক্ত অধ্যাপক (১৯৯১-২০০০), অবৈতনিক অধ্যাপক (২০০১-০৬), জাতীয় অধ্যাপক (১৯০৬) পদগুলিতে ক্রমান্বয়ে আসীন ছিলেন সেই সঙ্গে বিভাগীয় প্রধান, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন, সিনেট সদস্য ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি ইরাক, নিউজিল্যান্ডসহ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক ও গবেষক হিসাবে কাজ করলেও অনুরোধ সত্ত্বেও কোথাও স্থায়ী কোনো পদ গ্রহণ করেননি।

শৈবালতত্ত্বে আকৃষ্ট কর্মজীবনের শুরুতে, নিবিষ্ট থেকেছেন আমৃত্যু। শৈবাল নিয়ে লিখিত এবং দেশ-বিদেশের নামী বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত তাঁর নিবন্ধের সংখ্যা ১৯৪। তিনি শৈবালের একটি নতুন গণ (জেনাস) ও দুই শতাধিক নতুন প্রজাতির আবিষ্কারক যেগুলির অধিকাংশ এখন শৈবালের বিশ্ব মনোগ্রাফে অন্তর্ভুক্ত। তিনি মৌলিক বিজ্ঞান ও জনপ্রিয় বিজ্ঞান নিয়ে যেসব বই লিখেছেন সেগুলির মধ্যে উল্লেখ্য: Revision of the Genus stigioclonium, Contribution to the Study of the Marine Algae  of Bangladesh (J. Cramer, Germany, 1963, (1976), Two Centuries of Plant Studies in Bangladesh and Ajacent Regions (Asiatic Society, Bangladesh, 1991), গাছগাছালি (বাংলা একাডেমী, ১৯৭৬), কোরানের গাছপালা (যন্ত্রস্থ) এবং একটি কাব্যগ্রন্থ অন্য কোনো সুর (হাসান-বুক হাউস, ১৯৯১)। ড. ইসলাম অনেকগুলি বই ও সংকলনের সম্পাদক: Plant Science and Man: Problems and Prospects (বাংলাদেশ উদ্ভিদবিজ্ঞান সমিতি, ১৯৯৪), বিজ্ঞান বিশ্বকোষ ১-৪ খন্ড (বাংলা একাডেমী, ১৯৯৮-২০০৬), ইত্যাদি।

অধ্যাপক ইসলামের পাওয়া বহু সম্মাননার মধ্যে আছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের স্বর্ণপদক (১৯৯৩, ২০০৪), বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী, বাংলাদেশ উদ্ভিদবিজ্ঞান সমিতিবাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলোসিপ (১৯৮০, ১৯৯৬, ২০০৪) ইত্যাদি। তিনি ১৯৯২-৯৪ মেয়াদে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি নির্বাচিত হন।

অধ্যাপক ইসলামের তত্ত্বাবধানে উল্লেখ্য সংখ্যক ছাত্রছাত্রী পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। সখ ছিল প্রকৃতিচর্চা, উদ্যান নির্মাণ, ডাকটিকিট সংগ্রহ ও প্রাচীন মুদ্রা সংগ্রহ। ২০০৬ সালের ১ জুলাই ঢাকায় প্রয়াত।  [দ্বিজেন শর্মা]